bangla-sydney
bangla-sydney.com
News and views of Bangladeshi community in Australia












এই লিংক থেকে SolaimanLipi ডাউনলোড করে নিন



এক কাপ চা
আবু এন এম ওয়াহিদ



ভারতবর্ষে চা-চাষের ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, এটা শুরু হয়েছে ব্রিটিশ আমলে ১৮২০ দশকের শেষ দিকে আসাম অঞ্চলে। ১৮২৬ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি অহম রাজাদের কাছ থেকে ‘ইয়ান্দাবু’ চুক্তির মাধ্যমে বিশাল পরিমাণ পাহাড়ি জমির দখল নেয়। তারপর চীনা বীজ ও চাষাবাদ পদ্ধতিতে মানুষকে চা-চাষে উৎসাহিত করার জন্য ওই অঞ্চলে বড় বড় উদ্যোক্তাদের দীর্ঘমেয়াদে জমি বন্দোবস্ত দিতে শুরু করে। শুরুতে ব্যক্তিগত উদ্যোগে বাণিজ্যিকভাবে কেউ চা-চাষ করেছিলেন কিনা সে তথ্য আমার জানা নেই। তবে পারিবারিক ভাবে নিজের ব্যবহারের জন্য সবার আগে যিনি চা আবাদ করেন তাঁর নাম ছিল মণিরাম দেওয়ান। তিনি ১৮০৬ সালে জন্ম গ্রহণ করেন এবং সিপাহী বিদ্রোহে জড়িত থাকার কারণে ব্রিটিশ সরকার তাঁকে ১৮৫৮ সালে ফাঁসি দেয়। আসাম টি কোম্পানি বাণিজ্যিকভাবে ১৮৩৭ সালে আসাম তথা ভারতবর্ষের প্রথম চা-বাগান আবাদ করে আপার-আসামের চাবুয়াতে। চাবুয়া আসামের ডিব্রুগড় শহর থেকে ২০ মাইল পূবে অবস্থিত একটি ছোট্ট শহর। অহমীয়া ভাষায় ‘চাবুয়া’ শব্দটি এসেছে ‘চা’ (মানে চা) এবং ‘বুয়া’ মানে ‘লাগানো’ ইংরেজিতে যাকে বলে plantation. চাবুয়া চা-বাগানে প্রথম উৎপাদন শুরু হয় ১৮৪০ সালে।

বাংলাদেশে সবচেয়ে প্রথম চায়ের চাষ শুরু হয় আরেকটু পরে, ১৮৪০ সালে, চট্টগ্রামে। বর্তমানে যেখানে চট্টগ্রাম ক্লাব ঠিক সেই জায়গাতেই প্রথম চা-এর চারা লাগানো হয়েছিল। ১৮৫৪ সালে ডানকান ব্রাদারস সিলেটের সুরমা ভ্যালির মালনী ছড়ায় বাণিজ্যিকভাবে প্রথম চা-বাগান আবাদ করে। ১৮৫৭-তে শুরু হয় তার উৎপাদন। তারপর ১৮৬০ সালে তারা আরো দু’টো বাগান চালু করে, হবিগঞ্জের লালচান্দে এবং মৌলভী বাজারের মের্টিঙ্গাতে।

দেশীয় বাজারে চা বেচাকেনা শুরু হওয়ার আগে গ্রাম-গঞ্জের মানুষদের চা খাওয়া শেখানো এবং তাঁদের মধ্যে চা জনপ্রিয় করে তোলার কাজটি চলে। এ লক্ষ্য পূরণে তখন চা-কোম্পানিগুলো কী করত জানেন? তাঁরা হাটের দিন বাজারে বাজারে যেত এবং মানুষদের চা বানিয়ে খাওয়াত। প্রথম প্রথম লোকজন একেবারেই চা খেতে চাইত না। চা-কোম্পানির প্রতিনিধিরা অত্যন্ত ধৈর্যের সাথে বুঝিয়ে শুনিয়ে চা খাওয়াতে কাউকে কাউকে রাজি করাত। যারা চা খেতে সায় দিত তাঁদের বিনামূল্যে এক কাপ চা খাওয়াত এবং এক পুঁটলি চা-পাতা, একটা দিয়াশলাই ও একটা ‘তামার পয়সা’ বোনাস হিসেবে তাঁদের হাতে ধরিয়ে দিত। আজকাল পয়সা তো দূরে থাক, সিকি-আধুলি এমন কী টাকারই কোনো দাম নেই। তাই বলে সে সময়কার ‘তামার পয়সা’কে আপনারা এনকার করবেন না। ওই সময়ে বাজারে তারও একটা অর্থপূর্ণ ক্রয়ক্ষমতা ছিল। আমার এখনো মনে আছে, ছোটবেলা একটা কানা-পয়সা দিয়ে আমি লেবেনচুষ কিনেছি। এ ছাড়াও মোয়া, মুড়ি, বিস্কুট, মার্বেল ইত্যাদি এক পয়সায় কেনা যেত।

এত কিছুর পরও উনিশ শ’ পঞ্চাশ-ষাটের দশকে গ্রাম-গঞ্জে সবার বাড়িতে চা খাওয়ার চল ছিল না। তার কারণ যতটা না আর্থিক, তার চেয়ে বেশি সাংস্কৃতিক। অর্থাৎ তখনো গ্রামে চা খাওয়ার রেওয়াজটা গড়ে ওঠেনি। যারা সচ্ছল এবং সামাজিকভাবে একটু অগ্রসর ছিলেন শুধু তাঁদের বাড়িতে চা খাওয়ার চল ছিল। আমাদের একান্নবর্তী পরিবারে প্রতিদিন ভোরবেলা চায়ের জন্য সর্বপ্রথম চুলা জ্বালানো হত। চা বানিয়ে খালি পেটে খাওয়া হত। কদাচিৎ মুড়ি, টোস্ট, কিংবা কুকি-বিস্কুট থাকত। খালিপেটে চা খাওয়া যে ভালো নয়, সেটা ওই সময়ে নিশ্চয়ই আমাদের বাপ-চাচারা কেউ জানতেন না। জানলে এমন ধরণের চা-সংস্কৃতি বাড়িতে গড়ে উঠতে পারত না।

সে যা-ই হোক, এ চা-তে বাড়ির সবার সমান অধিকার নিশ্চিত ছিল না। চা পেতেন দাদি, মা-চাচি, বাবা-চাচা, স্কুলের মাস্টার, মসজিদের ইমাম, অতিথি-মুসাফির কেউ থাকলে তাঁরা। বাড়ির কাজের লোক এবং ছোট ছেলেমেয়েরা কেউ চা-য়ে ভাগ বসাতে পারত না। কাজের লোকদের মাঝে অবশ্য একজন ব্যতিক্রম ছিলেন। তিনি বংশানুক্রমে আমাদের বাড়িতে থাকতে থাকতে পুরোদস্তুর পরিবারের একজন সদস্যই বনে গিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন ‘মটর’-এর ছেলে ‘চটর’। আব্বা এবং বড় চাচা ছাড়া তাঁকে কেউ নাম ধরে ডাকতেন না। আমরা ডাকতাম ‘চটর’ চাচা। চা বানানোর পর রান্নাঘর থেকে ‘চটর’ চাচাই যাঁর যাঁর ঘরে চা পৌঁছে দিতেন, এবং সবার শেষে মা-চাচীদের সাথে রান্নাঘরে বসে তিনিও এক কাপ চা খেতে পেতেন।

আজকাল সচরাচর যেভাবে চা বানানো হয় - অর্থাৎ কেটলি ভরা গরম পানিতে টি-ব্যাগ চুবিয়ে রেখে, অথবা এক কাপ গরম পানিতে ব্যাগ চুবিয়ে নিয়ে যাঁর যাঁর পছন্দ মতন চা বানিয়ে ফেলা- সেযুগে এমনটি ছিল না। শহরে থাকলেও অন্তত গ্রাম-দেশে টি-ব্যাগের কোনো ব্যবহারই ছিল না। গুঁড়া চা-পাতা থেকেই তখন চা বনানোর নিয়ম ছিল। চুলায় পানি টগবগ করে ফুটে উঠলে পাত্রে নির্দিষ্ট পরিমাণ চা-পাতা ঢেলে দেওয়া হত এবং বেশ কিছুক্ষণ ফুটানোর পরে চায়ের কষ ঘন কালো হয়ে গেলে কাপের মুখে ছাঁকনি ধরে লিকার ঢেলে তারপর আন্দাজ মত দুধ-চিনি মিশিয়ে দিলে মজাদার একেক কাপ ‘সোনালি চা’ তৈরি হয়ে যেত। এখানে ছোট করে একটা কথা বলে রাখি, দুধ-চিনি ছাড়া শুধু হালকা লিকারের রঙ-চা শরীরের জন্য অনেক বেশি উপকারী। আরেকটি কথা, চা-পাতার গুণাগুণ বিবেচনায় black tea থেকে green tea এবং green tea থেকে white tea বেশি স্বাস্থ্যসম্মত।

গ্রামের অন্যসব ছেলেমেয়ের সাথে আমিও সকালবেলা ইমাম সাহেবের কাছে আরবি পড়তে আমাদের বাড়ির সাথে লাগোয়া মসজিদে যেতাম। মসজিদ-ঘরের বারান্দায় বসে আমরা সূরা মুখস্থ করতাম, কায়দা-কোরআন পড়তাম। মাঝখানে ইমাম সাহেব আমাকে ছুটি দিতেন তাঁর জন্য বাড়ি থেকে এক কাপ চা নিয়ে আসার জন্য। আমি যখন চা নিয়ে আসতাম তখন বিশেষ করে শীতের দিনে চায়ের কাপ থেকে বাষ্পধোঁয়া যখন কু-লি পাকিয়ে ওপরের দিকে উঠত তখন নাকে এসে চায়ের একটা খুশবু লাগত। এতে চা খাওয়ার জন্য আমার খুব লোভ হত, কিন্তু খেতে পারতাম না। যখন হাই স্কুলে গেলাম তখনও চা আমাদের জন্য নিষিদ্ধ ছিল। হলে কী হবে, হাতে দু-এক আনা জমলে লুকিয়ে লুকিয়ে বড়লেখা স্টেশন-বাজারে হবি'র চা এর স্টলে বসে মাঝে মধ্যে চা এস্তেমাল করতাম। কোনো কোনো সময় চা-এর কাপে টোস্ট চুবিয়ে চুবিয়েও খেয়েছি। চা খেতাম ঠিকই, কিন্তু যদি আব্বা দেখে ফেলেন সেই ভয়ে এত মজার চা খেয়েও আনন্দ পেতাম না। এখানে একটা কথা বলে রাখা দরকার। আমার আব্বা শুধু বাড়ির জবরদস্ত মুরব্বীই ছিলেন না, তিনি আমাদের হাই স্কুলের কড়া মাস্টারও ছিলেন।

তার আগে বেশ কয়েক বছর আমি নানার বাড়ি ছিলাম। সেখানে দেখেছি চা-এর সংস্কৃতি একটু অন্য রকম। নানার বাড়ি সকাল বেলা চা খাওয়া হত না। চা বানানো হত, আসরের নামাজের পর এবং প্রতিদিনই খাওয়া হত। জোহরের নামাজ পড়ে ভাত খেয়ে নানা ঘুমাতেন। ঘুম থেকে উঠে আসরের নামাজ পড়লেই চা ও পান-তামাকের জন্য হাঁকডাক শুরু করে দিতেন। তবে বাড়িতে মেহমান এলে দিন-দুপুরেও চা করা হত। একদিনের কথা আজও আমার মনে পড়ে। নানার মামার বাড়ি একই গ্রামে দীঘির এপার-ওপার। নানার এক মামাত ভাই ছিলেন সার্কেল অফিসার। একবার তিনি ছুটিতে বাড়ি এসেছেন। কাজে ফিরে যাওয়ার আগে নানার বাড়ি বেড়াতে এসেছেন তাঁর সাথে দেখা করতে। তাঁরা দু’জন মামাত-ফুফাতো ভাই। ওই নানাকে আমরা ডাকতাম ‘ছানু নানা’। তাঁর আসল নাম কী ছিল তা আমি কাউকে কোনো দিন জিজ্ঞেস করিনি এবং আজও জানি না। গল্পেরত দুই তুতো ভাইয়ের জন্য আমার ছোট-খালা যখন চা বানিয়ে নিয়ে এলেন, তখন ‘ছানু নানা’ তাঁর কাপ ফিরিয়ে দিয়ে বললেন, আরেকটা নিয়ে এসো without sugar. তখন আমি ইংরেজি শব্দ দু’টোর অর্থ বুঝি, আর বুঝি বলেই এক চিন্তায়ও পড়ে গেলাম। আমার ধারণা, দুধ-চিনি ছাড়া চা হয়-ই না, এবং ওই দিন আমি অনেক ভেবেও বুঝতে পারিনি যে, ‘ছানু নানা’ চিনি ছাড়া চা চাইলেনই বা কেন, চিনি ছাড়া তিনি চা খাবেনই বা কেমন করে। অনেক পরে জেনেছি ওই নানা ডায়াবেটিক পেশেন্ট ছিলেন।

চা-কফি (তখনো কফির সাথে আমার পরিচয় হয়নি) খাওয়ারও একটা আদব-কায়দা আছে। সেটা শিখেছি আইএ পাশ করার পর। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে এসেছি ঢাকায়। উঠেছি মেজ-মামার বাসায়। তিনি বহু বছর লন্ডন ছিলেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি সপরিবারে ঢাকায় এসেছিলেন কয়েকদিনের জন্য। ওই সময় মেজ-মামার বাসায় ছিলেন আমার ছোটমামা এবং বড়ভাইও। ছোটমামা লন্ডন যাবেন এবং বড়ভাই আমেরিকা যাবেন। এ সময় দু’জনের দু’ধরণের প্রস্তুতি চলছে। মামার বাসায় কোনো এক ছুটির দিন সকালবেলা নাস্তা শেষে আমরা মামা-ভাগ্না চারজন বসে আরাম করে চা খাচ্ছি। ছোটমামা গরম চা-এর কাপে চুমুক দিচ্ছেন আর সুড়–ৎ সুড়–ৎ আওয়াজ তুলছেন। মেজ মামা এক সময় রেগে গিয়ে বললেন, ‘দু’দিন পর লন্ডন যাবি, অথচ এখনো চা খাওয়া শিখলি না। চা খেতে আওয়াজ করা ‘bad manner’. ছোটমামা বেশ লজ্জা পেলেন, আর আমি চা খাওয়ার ম্যানারটা শিখতে পারলাম।

এবার শুনুন ‘সোনালি চা’-এর কথা। তখন আমি কানাডার উইনিপেগে। একবার কোনো এক সেমিনার উপলক্ষে শিকাগোর উইলিস টাওয়ারের (আগে এটা সির্য়াস্ টাওয়ার নামে পরিচিত ছিল) স্থপতি ড. ফজলুর রহমান খানের ছোটভাই ড. জিল্লুর রহমান খান এসেছিলেন উইনিপেগে। সেমিনার শেষে রাতে তাঁর ডিনারের দাওয়াত ছিল বায়োকেমিস্ট ড. একরামুদ্দৌলার বাড়িতে। সৌভাগ্যক্রমে, আমিও সেই পার্টিতে উপস্থিত ছিলাম। ডিনার শেষে গৃহকর্ত্রী যখন ড. খানকে বললেন, ‘ভাই, আপনার চা কিভাবে বানাব?’ তিনি উত্তরে বললেন, ‘ভাবী, বাংলাদেশের ওই এক কাপ ‘সোনালি চা।’ ‘চা’ শুধু এক কাপ চা-ই নয়, এটা আমাদের জীবন, সংস্কৃতি ও সামাজিক সম্পর্কের সাথে এমনভাবে মিশে আছে, যা কিনা অবাক হওয়ার মত! ভেবে দেখুন, ইংরেজিতে একটা কথা আছে, He is not my cup of tea, অর্থাৎ, ওর সাথে আমার পড়ে না।

সবশেষে বলছি একটি মজার গল্প। গল্প নয়, আসলে এটাও সত্যি ঘটনা, শুনেছি ঢাকার অনুজ-প্রতিম বন্ধু হাসান শরীফের কাছে। বর্ণনাটি তিনি যেভাবে দিয়েছেন আপনাদের জন্য আমি হুবহু সেভাবেই তুলে দিচ্ছি।

পল্লীকবি জসীম উদ্দীন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামকে চা পান করানোর একটি মজার কাহিনী উল্লেখ করেছেন তার ‘ঠাকুর বাড়ির আঙিনায়’ বইতে। কবি নজরুল ছিলেন চা-খোর। কিছুক্ষণ পর পর চা পান না করলে তার চলতো না। ফরিদপুরে বঙ্গীয় রাষ্ট্রীয় সমিতির অধিবেশন উপলক্ষে কবি নজরুল সেখানে গিয়েছিলেন, তবে রাতে কবির সম্মানে জসীম উদ্দীনের উদ্যোগে গানের জলসা বসানো হলো। সেখানেই সেই চা-কাহিনীর সৃষ্টি। তার ভাষাতেই কাহিনীটি শোনা যাক :

‘রাত্রিবেলা এক মুস্কিলে পড়া গেল। চা না পাইয়া কবি অস্থির হইয়া উঠিলেন। এই পাড়াগাঁয়ে চা কোথায় পাইব? নদীর ওপারে গিয়া যে চা লইয়া আসিব, তাহারও উপায় নাই। রাত্রিবেলা কে সাহস করিয়া এত বড় পদ্মা-নদী পাড়ি দিবে? তখন তিন-চার গ্রামে লোক পাঠান হইল চায়ের অনুসন্ধানে। অনেক খোঁজাখুঁজির পর আলিম মাতব্বরের বাড়ি হইতে কয়েকটা চায়ের পাতা বাহির হইল। তিনি একবার কলিকাতা গিয়া চা খাওয়া শিখিয়া আসিয়াছিলেন। গ্রামের লোকদের চা খাওয়াইয়া তাজ্জব বানাইয়া দিবার জন্য কলিকাতা হইতে তিনি কিছু চা-পাতা লইয়া আসিয়াছিলেন। গ্রামের লোকদের খাওয়াইয়া চা-পাতা যখন কম হইয়া আসিত, তখন তাহার সহিত কিছু শুকনা ঘাসপাতা মিশাইয়া চায়ের ভাণ্ডার তিনি অফুরন্ত রাখিতেন। তিনি অতি গর্বের সহিত তাঁহার কলিকাতা-ভ্রমণের আশ্চর্য কাহিনী বলিতে বলিতে সেই চা-পাতা আনিয়া কবিকে উপঢৌকন দিলেন। চা-পাতা দেখিয়া কবির তখন কী আনন্দ!

এই মহামূল্য চা এখন কে জ্বাল দিবে? এ-বাড়ির বড়বউ, ও বাড়ির ছোটবউ-সকলে মিলিয়া পরামর্শ করিয়া যাহার যত রন্ধন-বিদ্যা জানা ছিল সমস্ত উজাড় করিয়া সেই অপূর্ব চা-রন্ধন-পর্ব সমাধা করিল। অবশেষে চা বদনায় ভর্তি হইয়া বৈঠকখানায় আগমন করিল। কবির সঙ্গে আমরাও তাহার কিঞ্চিত প্রসাদ পাইলাম। কবি তো মহাপুরুষ। চা পান করিতে করিতে চা-রাঁধুনিদের অজস্র প্রশংসা করিতেছিলেন। আমরাও কবির সঙ্গে ধূয়া ধরিলাম। গ্রাম্য-চাষির বাড়িতে যত রকমের তরকারী রান্না হইয়া থাকে, সেই চায়ের মধ্যে তাহার সবগুলিরই প্রসাদ মিশ্রিত ছিল। কমিউনিস্ট কর্মী আবদুল হালিম বড় সমালোচনা-প্রবণ। তাঁহার সমালোচনা মতে সেই চা-রামায়ণের রচয়িত্রীরা নাকি লঙ্কাকাণ্ডের উপর বেশী জোর দিয়াছিলেন। আমাদের মতে চা-পর্বে সকল ভোজনরসের সবগুলিকেই সম মর্যাদা দেওয়া হইয়াছিল। পরবর্তীকাল বহু গুণীজনের কাছে এই চা খাওয়ার বর্ণনা করিয়া কবি আনন্দ পরিবেশন করিতেন।’



লেখক: অর্থনীতির অধ্যাপক - টেনেসি স্টেট ইউনিভার্সিটি;
এডিটর - জার্নাল অফ ডেভোলাপিং এরিয়াজ;
Email: wahid2569@gmail.com





Share on Facebook               Home Page             Published on: 28-Sep-2016

Coming Events:





A day full of activities, games and fun.







Lakemba Blacktown Mascot
Minto Money raised so far





Lakemba Blacktown Mascot
Minto Money raised so far



Blacktown Lakemba Mascot
Minto Money raised so far







Blacktown Lakemba Mascot
Minto Money raised so far