bangla-sydney
bangla-sydney.com
News and views of Bangladeshi community in Australia













আমার প্রথম চাকরিজীবনের বৈচিত্র্যময় অস্থিরতা - ৬
আবু এন. এম. ওয়াহিদ



‘ভিইআরসি’তে চাকরি করেছি মাত্র পাঁচ মাস, কিন্তু এখন যখন পেছন ফিরে তাকাই তখন মনে হয়, ওই সময়ে কম কিছু করিনি। অফিসে কাজকর্ম যতটা না করেছি তার চেয়ে বাইরে ঘোরাঘুরি করেছি ঢের বেশি। বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল যতটুকুই দেখেছি তার বড় অংশটি সম্ভব হয়েছে ওই ‘ভিইআরসি’-র বদৌলতে। আমার পা লম্বা সব কালেই। এখন যেমন করি তখনো একই কাজ করতাম। এক সফর শেষ হতে না হতেই আরেকটার জন্য ইন্তেজার করা। কাজের সূত্রে বাইরে যেতে আমার বিশেষ আগ্রহের দু’টো কারণ। প্রথমত - বিনে খরচে বেড়ানো, দেশ দেখা এবং দ্বিতীয়ত - বাড়তি দু’পয়সা কামাই করা। এর মাধ্যমে যে অনেক কিছু শেখা যায় সেটা তখন জানতাম না, কিন্তু এখন ভালো করেই বুঝি। আর বুঝলেইবা কি, এই বোঝাবুঝির চার দেয়ালের মাঝেইতো আমার অভিজ্ঞতা বাঁধা পড়ে আছে। পক্ষান্তরে, চেয়ে দেখুন, সেকালের শেখ সা’দী, ইব্ন বতুতা, ফা’ হিয়েন, হিউয়েন সাং, মার্কো পলো, ইব্ন খালদুন এবং একালের মোহাম্মদ আসাদ কী করে গেছেন! লেখনীর মাধ্যমে তাঁদের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অকাতরে আমাদেরকে দান করে গেছেন। তাইতো তাঁরা স্মরণীয় বরণীয় হয়ে আছেন, আর আমরা সাধারণ মানুষ সাধারণ হয়েই দিনাতিপাত করছি। তবে আ’ম জনতা যখন একাট্টা হয়ে যায় তখন অসাধারণ শক্তিতে আত্মপ্রকাশ করে, অসাধ্য সাধন করে, সমাজও সভ্যতাকে বদলে দেয়! কিভাবে, সে আলোচনায় আজ আর যাব না।

অফিস যখন সাভারে স্থানান্তরিত হলো তখন আশপাশের অন্যান্য এনজিও-তৎপরতা সরজমিনে দেখার জন্য সবার আগে আমাদের পাঠানো হলো ‘ব্র্যাক’-এর ট্রেইনিং অ্যান্ড রিসোর্স সেন্টারে (‘টার্ক’)। জায়গাটা সম্বন্ধে যাঁদের স্পষ্ট ধারণা নেই তাঁদের জন্য বলছি, টার্কের অবস্থান হলো সাভার বাজার ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়ের মীর মোশাররফ হোসেন হল থেকে প্রায় সমদূরত্বে মহাসড়কের উল্টোদিকে সামরিক খামারের পূর্বপ্রান্তে। পরবর্তী সময়ে, বেশ ক’বছর পরে ওই একই এলাকায় ‘অরুণা-পল্লী’ নামে একটি আবাসিক এলাকা আবাদ হয়েছে। আমি যে সময়ের কথা বলছি তখনও ‘অরুণা-পল্লী’-র অরুণোদয় হয়নি, সেখানে শুধুই ছিল ‘টার্ক’, ছিল মানে প্রতিষ্ঠানটি একেবারে নতুন - সবেমাত্র ধীরে ধীরে গড়ে উঠতে শুরু করেছে। এরকমই এক সময় অফিসের গাড়ি নিয়ে আমরা একদিন সকালে বেলা দশটার দিকে সদলবলে সেই ‘টার্ক’-এ গিয়ে হাজির হলাম। ওদেরকে আগে জানানো হয়েছিল। দলে আমরা ক’জন ছিলাম, বা কারা কারা ছিলাম, তা এখন মনে নেই। যাওয়ার উদ্দেশ্য - তাঁদের ওখানে কী কী কাজ হয়, কীভাবে হয়, ইত্যাদি সরজমিন ঘুরে ঘুরে দেখা এবং তা থেকে সম্ভব হলে কিছু শেখা ও বোঝা। ইটের দেয়াল ঘেরা টিনের ছাউনির নতুন ঘর। যতদূর মনে পড়ে তখন সেখানে ওই একটি স্থাপনাই ছিল। আমরা সেদিন সেখানে সাকুল্যে ঘণ্টা তিনেকের মতন ছিলাম। বাকি সবাই ভেতরে এঘর-ওঘর করেছেন, কী করেছেন, জানি না। তবে আমি প্রায় পুরোটা সময়ই বাইরে কাটিয়েছি। ট্রেনিং সেন্টারের চারদিকে শাকসবজির বাগান লাগানো হয়েছে। সেখানে দেখলাম, ঢ্যাঁড়শ, করলা, পেঁপে, ডাটা, বেগুন, কাগজি লেবু, ইত্যাদি তর তর করে বেড়ে উঠছে। আমি সময় নিয়ে ঘুরে ঘুরে সেগুলো দেখেছি। ঢ্যাঁড়শ গাছে বসা ফড়িং দেখে ছোটবেলার মতন ধরতে গিয়েছিলাম, দু’দুবার চেষ্টা করেও সফল হতে পারিনি। হাত বাড়ানোর আগেই ফড়িং উড়াল মারে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যা-বুদ্ধি বেড়েছিল কি না জানি না, তবে ফড়িং ধরার দক্ষতা যে কমেছিল, সেদিন তা হাতেনাতে টের পেয়েছিলাম।

ছোট্ট কাঁঠাল গাছে কাঠবিড়ালির খেলা দেখলাম। ডালে ডালে দৌড়াদৌড়ি করে আবার মাঝে মাঝে স্থির হয়ে বসে থাকে, আমার দিকে এক পলকে তাকিয়ে থাকে। চল্লিশ বছর পর, আজ লিখতে বসে মনে হয়, ওই কাঠবিড়ালির ছোটো ছোটো তীক্ষ্ণ দু’টি চোখ যেন আমার চোখের সামনে ভাসছে। গাছের ডালে কাঠবিড়ালির চঞ্চল কসরত ও স্থির দৃষ্টি নিয়ে আরেকটু ভাবছি, একটু গভীরভাবে চিন্তা করছি। আসলে কি সত্যি সত্যি সে আমার দিকে দৃষ্টি ফেলছিল, নাকি অন্য কিছু। আমার দিকে এক পলকে তার তাকানোরতো কোনো কারণ দেখি না। আমিতো তার খেলার সঙ্গীসাথী নই, আমি তাকে তাড়াও করিনি, আমার প্রতি তার না ছিল কোনো আগ্রহের কারণ, না ছিল ভয়ের কারণ। সে আমার দিকে অমন করে তাকাবে কেন। এমনও তো হতে পারে, কাঠবিড়ালি আপন মনে আপন খাবারের খোঁজে নিকটের পেয়ারা কিংবা জলপাই গাছে কোনো টসটসে ফলকে নিশানা করেছে। আর তাই যদি হয়, তবে কাঠবিড়ালির বুদ্ধি আছে এবং তার কাছ থেকে আমাদের শেখারও আছে। অর্থাৎ সে শুধু ডালে ডালে লাফায় না, খেলাধুলা করে না, ‘তাইরে নাইরে নাইরে’ করে সময় নষ্ট করে না, ফাঁকে ফাঁকে পেটের ধান্ধায় আয়-উপার্জনও করে।

ভ্যাপসা গরমে ঘেমে যখন ভেতরে এলাম তখন দেখি, টার্কে ধুমধামসে দুপুরবেলার খাবার আয়োজন চলছে। অ্যালুমিনিয়ামের বোলে করে গরম ভাত, ডাল ও লাল টকটকে ইলিশ মাছের ঝোল টেবিলে দেওয়া হলো। কিছুদিন আগেই বিশ^বিদ্যালয়ের হল-জীবনে ইলিশ খেতে খেতে ইলিশের প্রতি আমার রুচি একদমই চলে গিয়েছিল। রান্না করা ইলিশ মাছের ঘ্রাণ নাকে লাগলেই বমি আসত। ওই দিন টার্কে তৃপ্তির সাথে ইলিশ-ভাত খেয়ে বুঝলাম, সাধের হারানো সে রুচি আবার পুরোমাত্রায় ফিরে এসেছে। সেই যে এলো, আজ অবধি অটুট আছে। থাকলেই বা কি, বিদেশ বিভূঁইয়ে ইলিশ খাওয়ার তেমন সুযোগ হয় না। আমাদের শহরে তাজা ইলিশ পাওয়াই যায় না। হীমায়ীত পুরনো বাসি ইলিশ কিনে বার বার ঠকা খেয়ে খেয়ে আজকাল দেশী মাছ খাওয়া বলতে গেলে ছেড়েই দিয়েছি। তবে যারা নিউ ইয়র্ক, এলএ, শিকাগো, আটলান্টা কিংবা হিউস্টনে থাকেন তাঁদের কথা আলাদা।

একথা বলতে বলতে একদিন ভিইআরসি অফিসে ঘটে যাওয়া আরেকটি ঘটনা বা অঘটনের কথা মনে পড়ে গেল। অফিসের পার্সোন্যাল ম্যানেজার ছিলেন জনাব ‘জাফর আহমদ’। তাঁর বাড়ি ছিল চট্টগ্রাম। ফিল্ড ট্রিপে যাওয়ার সময় তাঁর কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নিয়ে যেতে হতো। এসে তাঁর কাছেই হিসেব দিতে হতো। যেহেতু তিনি খাজাঞ্চি, তাই অফিসে তাঁর আলাদা একটা সম্মানের জায়গা ছিল। তাঁর চরিত্র যতটুকু জানি, অন্য অনেকের চেয়ে ভালো ছিল, কিন্তু ‘জাফর’ সাহেবের একটি বড় দোষও ছিল। তাঁর মেজাজ সব সময় খিটখিটে থাকত এবং কথাবার্তা ছিল অমার্জিত, রূঢ় ও কর্কশ। ভালো কথাটিও তিনি সুন্দরভাবে বলতে পারতেন না। মুখের জবান দিয়ে ম্যানেজার সাহেব সবাইকে এমনভাবে খেপিয়ে তুললেন যে, এক সময় দেখা গেল, অফিসের সবাই তাঁর উপর দারুণভাবে ক্ষিপ্ত হয়ে আছেন! একদিন বেচারা পার্সোন্যাল ম্যানেজারের বিরুদ্ধে সহকর্মীদের প্রায় সবাই একাট্টা হয়ে ঠিক করলেন, প্রজেক্ট ম্যানেজার - ‘জ্যাক ফল’-এর কাছে তাঁর বিরুদ্ধে নালিশ করবেন। আমরা যেদিন দলেবলে অফিস-কর্তার কাছে অভিযোগ নিয়ে গেলাম, সেদিন অভিযুক্ত ব্যক্তিটি গরহাজির ছিলেন। ওই দিনের আরেকটি বিশেষত্ব ছিল যে, অফিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা - প্রজেক্ট ডিরেক্টর - শেখ হালিম ভারতে এবং চীফ ট্রেইনার - সেলিম আহমেদ শ্রীলঙ্কায় অফিসের কাজে সফররত ছিলেন।

‘জাফর’ সাহেবের বিরুদ্ধে অভিযোগের জন্য ওই দিনটিকে আমরা কেন বেছে নিয়েছিলাম, তা আমার জানা নেই, হয়তোবা ব্যাপারটি একেবারে কাকতালীয়ই ছিল। যখন আমরা সবাই একযোগে ‘জ্যাক’-এর রুমে ঢুকলাম, তখন ‘জ্যাক’ বুঝতে পেরেছিলেন তাঁর খুদে সাম্রাজ্যে একটা কিছু গোলমাল বেঁধেছে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কে আগে মুখ খুলবেন, এ নিয়ে একজন আরেক জনের মুখ চাওয়া-চাওয়ি চললো কিছুক্ষণ, তারপর যিনি শুরু করলেন, তাঁর নাম ‘আখতার - পুরো নামটি ভুলে গেছি - সম্ভবত, ‘আখতার আহমদ’। আমাদের সহকর্মী ছাড়াও তাঁর আরেকটি পরিচয় ছিল। তিনি ছিলেন নাট্যাঙ্গনের একজন অতি সুপরিচিত মুখ। ‘ঢাকা থিয়েটার’ অথবা ‘নাগরিক’ গোষ্ঠীর সাথে যুক্ত ছিলেন। আখতার ভাই-ই শুরু করলেন, 'Who the hell is he.....?' তারপর ‘জাফর’ সাহেবের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ উত্থাপিত হলো। কার সাথে কোন দিন তিনি কিভাবে কী দুর্ব্যবহার করেছেন তার লম্বা লম্বা ফিরিস্তি। আমি কোনো অভিযোগ করিনি, একটু পেছনে দাঁড়িয়ে ‘জ্যাক’-এর মুখের দিকে কাঠবিড়ালির মতন এক পলকে চেয়ে আছি। দেখতে পাচ্ছি, ‘জ্যাক’ একদিকে অভিযোগ শুনছেন আরেক দিকে রাগে ক্ষোভে তাঁর মুখ, কান সব লাল হয়ে যাচ্ছে! সব বিস্তারিত আমার মনে নেই, শুধু এটুকু মনে আছে, অভিযোগের কোনো উত্তর না দিয়ে, সুবিচারের কোনো আশ্বাস না দিয়ে সবাইকে তিরস্কারের সুরে সবার ‘বস’ সেদিন শুধু একটি বাক্যই উচ্চারণ করলেন, 'Halim is not here, Salim is not here, is this a time for you.....?' বোঝা গেল, ‘জ্যাক’ আমাদের এ উদ্যোগ একদম পছন্দ করেননি, বরং তিনি উপস্থিত সবাইকে উল্টো বকে বিদায় করে দিলেন। সবার মন খারাপ হলো, কিন্তু অফিসের উপদ্রব থেমে গেল! ‘জাফর’ সাহেব যখন জানতে পারলেন যে, তাঁর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে তাঁরই সহকর্মীরা এভাবে নালিশে ফেটে পড়েছেন, তখন তাঁর বোধোদয় হলো এবং তাঁর আচরণে উল্লেখযোগ্য উন্নতি দেখা গেল।

যে সময়ের কথা বলছি, তখন রাষ্ট্রপতি জেনারেল জিয়াউর রহমানের শাসনামল। পূর্ণ মন্ত্রীর মর্যাদায় মাহবুব আলম চাষী জাতীয় ‘স্বনির্ভর’ আন্দোলনের প্রধান। সারা দেশে এই আন্দোলনের তিনজন সমন্বয়কারী ছিলেন - মনোতোষ দাস, এএচএম নোমান এবং শামসুল হক। এর মাঝে প্রথম জন ছিলেন প্রধান সমন্বয়কারী। উনিশ শ’ আটাত্তরের প্রথমার্ধে ‘স্বনির্ভর’-এর সাথে ‘ভিইআরসি’-র একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হলো - আমরা তাঁদের মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের উন্নয়ন বিষয়ে ইনফর্মাল পদ্ধতিতে প্রশিক্ষণ দেব। প্রশিক্ষণ শুরুর আগে আমাদের বলা হলো, ‘স্বনির্ভর’-কর্মীদের সাথে বিভিন্ন অঞ্চলে ফিল্ড ওয়ার্কে ও ফিল্ড সার্ভেতে যেতে। এই সুবাদে আমি টাঙ্গাইল এবং গাইবান্ধায় ‘স্বনির্ভর’ আন্দোলনের কাজকর্ম দেখেছি এবং জনাব চাষীর সাথে বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছি এবং বেশ কাছ থেকে তাঁর সাথে মেলামেশার সুযোগ পেয়েছি। চাষী সাহেব আমাদের দেখলেই বলতেন ‘জ্যাক ফল’-এর দল। টাঙ্গাইলের প্রত্যন্ত অঞ্চলে গ্রামে গ্রামে পথে-প্রান্তরে মাঠে-ঘাটে, হাটে তাঁর ও ‘স্বনির্ভর’ কর্মীদের সাথে ঘুরেছি। দেখেছি, তাঁরা কিভাবে ভূমিহীন কৃষকদের সংগঠিত করার চেষ্টা করছেন। এ-ও দেখেছি, গ্রামের মাতবর-টাউট-বাটপারেরা কিভাবে তাঁদের চলার পথে পদে পদে বাধার সৃষ্টি করছিল। ভূমিহীন চাষীরা সরকারি অফিসারদের কাছে গিয়ে কোনো প্রতিকার পেতেন না। এ-সব দেখে আমি অফিসে এসে যখন রিপোর্ট লিখে জমা দিতাম, তখন আমার লেখায় বামপন্থী বিপ্লবী কথাবার্তা থাকত। চাষী সাহেব একদিন বলছিলেন, ‘আমাদের কাজকর্ম দেখে ‘লাল মিঞারা’ কি বলে?’ ভেঙ্গে না বললেও আমি বুঝে গেছি, ‘লাল মিঞা’ বলতে তিনি বামপন্থী অর্থাৎ কমিউনিস্টদের বোঝাচ্ছেন। তখন ‘স্বনির্ভর’ আন্দোলন ও এনজিওদের যাবতীয় কাজকর্ম ছিল কমিউনিস্টদের বিরুদ্ধে পশ্চিমাদের ‘উন্নয়ন রেসিপি’। তারই ধারাবাহিকতায়, দেশে দেশে আজ কমিউনিস্টরা পিছু হটছে এবং এনজিওরা জোর কদমে সামনে এগোচ্ছে!

এরকমই এক সফরে একবার চাষী সাহেবের দলবলের সাথে আমরাও গিয়ে আস্তানা গাড়লাম টাঙ্গাইল সার্কিট হাউসে। সে-বার ‘ভিইআরসি’ থেকে আর কোন কোন সহকর্মী আমার সঙ্গে ছিলেন তা মনে নেই। ‘স্বনির্ভর’-এর পুরোধা ব্যক্তির সাথে দু’তিন দিন সার্কিট হাউসে আমাদেরও আরামে থাকাখাওয়ার ব্যবস্থা হয়েছিল। প্রথম যেদিন গেলাম, চাষী সাহেবকে বলা হলো, ‘স্যার, খাবার মেন্যু কী হবে’? তিনি জবাব দিলেন, ‘কেন, এটা আবার বলতে হয় নাকি? প্রেসিডেন্টস্ মেন্যু’। তারপর আমি এক স্বনির্ভর সমন্বয়কারীর কাছ থেকে জেনে নিলাম, প্রেসিডেন্টস মেন্যু মানে, ‘সাদা ভাত, করলা ভাজি, ডাল, আর ঝোলের সাথে এক টুকরো মুরগীর গোশত’। এটা ছিল প্রেসিডেন্ট জিয়ার প্রিয় এবং নিয়মিত খাবার। প্রথমদিন রাতে খাওয়াদাওয়ার পর সার্কিট হাউসের বড় কনফারেন্স রুমে মিটিং বসল। জেলার সব বড় বড় অফিসাররা উপস্থিত। ‘স্বনির্ভর’ আন্দোলনের নেতাকর্মী এবং মাঠ পর্যায়ের ভূমিহীন কৃষক ও গরিব দিনমজুররাও হাজির। একে একে ‘স্বনির্ভর’-এর লোকজন অফিসারদের বিরুদ্ধে এলোপাথাড়ি অভিযোগ আনছেন আর অভিযুক্তরা প্রাণপণে সাফাই গাইছেন। অবাক হয়ে দেখলাম, ডিসি-এসপিরা চাষী সাহেবের সামনে কী কথা বলবেন, দাঁড়ালে থর থর করে তাঁদের হাঁটু কাঁপত! (চলবে)




লেখক: আবু এন. এম. ওয়াহিদ; অধ্যাপক - টেনেসি স্টেট ইউনিভার্সিটি
এডিটর - জার্নাল অফ ডেভোলাপিং এরিয়াজ Email: awahid2569@gmail.com








Share on Facebook               Home Page             Published on: 5-Aug-2019

Coming Events:
বৃষ্টির সম্ভাবনার কারণে মেলার তারিখ ১ দিন পিছিয়ে ২১ এপ্রিল ২০২৪ (রবিবার) করা হয়েছে......




A day full of activities, games and fun.







Lakemba Blacktown Mascot
Minto Money raised so far





Lakemba Blacktown Mascot
Minto Money raised so far



Blacktown Lakemba Mascot
Minto Money raised so far







Blacktown Lakemba Mascot
Minto Money raised so far