bangla-sydney
bangla-sydney.com
News and views of Bangladeshi community in Australia













আমার প্রথম চাকরিজীবনের বৈচিত্র্যময় অস্থিরতা - ৩
আবু এন. এম. ওয়াহিদ



আমি একদিন জিজ্ঞেস করলাম, ড. সেনোরত্ন, আপনি সার্ট-প্যান্ট, স্যুট-টাই পরেন না? তিনি সঙ্গে সঙ্গে বসা থেকে উঠে দাঁড়ালেন, আমার উল্টোদিকে মুখ করে পেছনদিকে তার পাঞ্জাবী তুলে ধরে বললেন, “Look and see, why I wear kurta”, তাঁর প্যান্টের পাছা ফেটে চৌচির হয়ে আছে দেখে আমি হাসি ধরে রাখতে পারলাম না। মনে মনে ভাবলাম, ডক্টর সাহেবের অবস্থা আমার চেয়েও করুণ। আমারতো একটা অক্ষত প্যান্ট আছে, তাঁর তো তাও নেই, যা আছে ছেঁড়া। শুধু কুর্তাই নয়, সেনোরত্নের হাতের ঘড়ির দিকেও আমার কৌতূহল কম ছিল না। দেখেই আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে, এটি একটি বিশেষ ধরনের দামী ঘড়ি - ছোট্ট, কিন্তু খুব পুরনো। কাজের ফাঁকে আমি এক দিন আবদার করলাম, আপনার ঘড়িটা সম্বন্ধে একটু কিছু বলবেন? সেদিন তিনি স্বতঃস্ফূর্তভাবে যে বয়ান দিয়েছিলেন তা সংক্ষেপে এরকম। এটি একটি অতি পুরনো সুইস কোম্পানির সৌখিন ঘড়ি। এর নাম “লনজিন”, এই কোম্পানি চালু হয়েছে সুইটজারল্যান্ডের Saint Imier -এ ১৮৩২ সালে। “লনজিন” ঘড়ি এত সঠিক ও নিখুঁত সময় মাপে যে, এটি অলিম্পিকের অফিসিয়াল টাইমকিপার’। ডিজিটাল ঘড়ি বের হওয়ার পর এখন “লনজিন”-এর স্ট্যাটাস কী তা অবশ্য আমি জানি না।

আমার মনে পড়ে ব্র্যাক অফিসে পুরো গবেষণা বিভাগের উদ্দেশ্যে তিনি একটা কি দু’টো ক্লাস নিয়েছিলেন। তাঁর বক্তব্যের বিষয়বস্তু ছিল “দি থিওরি অফ দি হাফ রিভোলিউশন”। একে ম্যাকসিয় তত্ত্বের একটি সম্প্রসারণ বলা যেতে পারে। অর্থাৎ যখন শোষিতের বিপ্লব হয়, এর সুবিধা শুরুতে সবাই মোটামুটি সমানভাবেই পেতে থাকে, কিন্তু সময় যত গড়িয়ে যায় ততই বিপ্লবে নেতৃত্বদানকারী দল ও দলের নেতারা লুটপাট ও দুর্নীতির মাধ্যমে সমাজে নতুন করে ভিন্ন মাত্রার এক শোষণ প্রক্রিয়া চালু করে। এর বিরুদ্ধে নতুন নেতৃত্বে যখন সাধারণ মানুষ আবার সজাগ ও সোচ্চার হয়, তখন এ সুবিধাবাদী চক্রের বিরুদ্ধে আবার বিপ্লব সংঘটিত হয়। এভাবে একটার পর একটা বিপ্লব হতেই থাকে। এটি ছিল তাঁর থিওরি। অর্থাৎ বিপ্লব যতই হোক না কেন, সব সময় অসম্পূর্ণই থেকে যায়। এই থিওরি তাঁর নিজের ছিল নাকি অন্য কারো, সে দিকে তিনি কোনো ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বলে মনে পড়ে না।

আরেক দিন অফিসে একটি মজার ঘটনা ঘটেছিল। তখন জাকারিয়া চৌধুরী, জিয়াউর রহমানের ক্যাবিনেটে-মন্ত্রী। কাজের ফাঁকে টি-ব্রেকের সময় টেবিলে আড্ডা হচ্ছে। আমি বলছি, ভাবী, আবেদ ভাইয়ের কি রাজনীতি করার ইচ্ছা নেই? মন্ত্রী হওয়ার সখ নেই? আপনি কি চান না একজন মন্ত্রীর বউ হতে। তিনি বললেন, “হঠাৎ এমন প্রশ্ন?” আমার উত্তর, জাকারিয়া চৌধুরী যদি মন্ত্রী হতে পারেন, তবে আবেদ ভাইয়ের জন্য তো ডাল ভাত। যেই এ কথা বলেছি, দেখি, ভাবী মুচকি মুচকি হাসছেন এবং অন্য সবাই মুখ চাওয়া-চাওয়ি করছেন, যেন আমি মারাত্মক কিছু একটা করে ফেলেছি, অথচ আমি কিছুই বুঝতে পারছি না! বেশ কিছুক্ষণ পর ভাবী উঠে গেলে আমাকে এক সহকর্মী বললেন, “ওয়াহিদ, আপনি জানেন না, জাকারিয়া চৌধুরী যে ভাবীর ভাই, আপন ভাই!” আমি তো ঘাবড়ে গেলাম, এবার বুঝি আমার চাকরিটা গেল! ভয়ে ভয়ে আমি টেবিল ছেড়ে উঠে গেলাম, বিভিন্ন রুম তালাশ করে অবশেষে তাঁকে খুঁজে পেলাম এবং বললাম, ভাবী, আমার একটা ভুল হয়ে গেছে, মাফ করে দেবেন। তিনি হেসে দিয়ে বললেন, “Please don't worry, we think the same way!”

আরেক দিনের ঘটনায় আমি যতটা না বিব্রত তার চেয়ে বেশি বিরক্ত হয়েছিলাম। দুপুরবেলা লাঞ্চ আওয়ার শেষে আমাদের অফিস কক্ষে ফিরে যাচ্ছি। তখন আমরা বসতাম ২ নং বিল্ডিঙের (আবেদ ভাই যেটাতে বসতেন তার পাশেরটা) দুতালায়। এ যাত্রাপথে প্রতি দিন সিঁড়ি বেয়ে উপরে ওঠার আগে জনাব আসেম আনসারির ডেস্কের সামনে দিয়ে যেতে হতো। তখন ব্র্যাক-এ আনসারি সাহেবের ডেজিগনেশন কী ছিল এবং তিনি কী কাজ করতেন তা আমার বোধগম্য ছিল না। তবে প্রথম থেকেই তাঁর দু’টো বৈশিষ্ট্যের কথা সবাই যেমন জানতো তেমনি আমিও জানতাম এবং তৃতীয় বৈশিষ্ট্যটি সেদিন প্রথমবারের মত আবিষ্কার করেছিলাম। প্রথমত, তিনি ছিলেন দীর্ঘদেহী সুস্বাস্থ্যের অধিকারী একজন সুপুরুষ। দ্বিতীয়ত, তিনি ছিলেন কবি বেগম সুফিয়া কামালের মেয়ের জামাই। তাঁর সম্পর্কে তৃতীয় যে বিষয়টি আমার কাছে ধরা পড়ল, তা সংক্ষেপে এভাবে বর্ণনা করা যায় - জনাব আনসারির সঙ্গে আমার তেমন একটা পরিচয় ছিল না। তথাপি তাঁর এমন মশকারামূলক মৃদু আক্রমণ থেকে আমি রেহাই পাইনি। তাঁর ডেস্কের সামনে যেতে না যেতে তিনি আমাকে থামিয়ে বললেন, “এই যে ওয়াহিদ সা’ব, আপনিতো গবেষক, গবেষণা করেন, বলুন তো, পেঁপে ফল না তরকারি?” আচমকা তাঁর এই প্রশ্ন শুনে আমি ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলাম! কী উত্তর দেব, ভেবে পাচ্ছিলাম না। এমন প্রশ্নে আমি শুধু বিব্রত হইনি বিরক্তও হয়েছিলাম। এখন যখন পেছন ফিরে তাকাই তখন আমার মনে দু’টি প্রশ্ন উঁকি মারে। প্রথমত আনসারি সা’বের সওয়ালটা অপ্রত্যাশিত হলেও খুব একটা কঠিন ছিল না, কেন আমি বলতে পারলাম না, পেঁপে একসাথে ফল এবং তরকারি - দু’টোই। দ্বিতীয় প্রশ্নটি আরেকটু গভীর এবং জটিল। যে সময়ে আমার মাথায় ময়লা মোজা এবং আন্ডারওয়ার অর্ধেক অর্ধেক করে ধুয়ে দেওয়ার বুদ্ধি পয়দা হয় সেই সময়ে একই মাথায় আসেম আনসারি-উত্থাপিত পেঁপে-রহস্যের সহজ সমাধানটি কেন আসলো না।

আমার ব্র্যাক-জীবনে অর্থাৎ ১৯৭৮ এর ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশে একটি সাড়া জাগানো ঘটনা ঘটেছিল। সব যুগের সবচেয়ে বড় অ্যাথলেট - মুষ্টিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী ঢাকা সফরে এলেন। তখন মোহাম্মদ আলীকে দেখার জন্য ও তাঁর কথা শোনার জন্য মানুষের মাঝে একটি হৈচৈ পড়ে গেল। জাতীয় দৈনিকগুলোতে প্রতি দিন তাঁকে নিয়ে নানা জাতের খবর ও ঘটনা ছাপা হচ্ছিল এবং সেগুলোর প্রতি সাধারণ মানুষের আগ্রহ ও কৌতূহলের কোনো শেষ ছিল না! মোহাম্মদ আলীকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেওয়া হলো, তাঁকে কক্সবাজারের দিকে জমি লিখে দেওয়া হলো, ইত্যাদি ইত্যাদি। এত কিছুর মাঝে আমার নজর কেড়েছিল অন্য একটি তুচ্ছ বিষয়। সে কথা আজও আমার স্পষ্ট মনে পড়ে, কোনো এক অনুষ্ঠানে, মোহাম্মদ আলীকে আপ্যায়ন করা হয়েছিল বিভিন্ন জাতের দেশীয় মিষ্টি খাবার দিয়ে। তার মাঝে একটি আইটেম ছিল, ‘প্রাণহরা’। তখনই আমি ‘প্রাণহরা’র নাম প্রথম শুনি, শোনার পর ওই মিষ্টিটি দেখা ও খাওয়ার জন্য আমার প্রাণ আনচান করছিল, কিন্তু খাই কী করে, হাতে তো পয়সা নেই। তবে মাসের বেতন পাওয়ার পর সহজেই আমি এক গোল্লা ‘প্রাণহরা’ কিনে খেতে পারতাম, কিন্তু কেন খেলাম না, সে প্রশ্নের উত্তর আজো আমার কাছে অনুদঘাটিত। অল্পদিনে কি ‘প্রাণহরা’র কথা বেমালুম ভুলে গেলাম, নাকি অন্য কিছু, সে কাহিনী রহস্য হয়ে আমার স্মৃতিতে লুকিয়ে থাকবে সারা জীবন। তারপর ১৯৭৯ সালে দেশ ছেড়ে চলে গেলাম কানাডা, কানাডা থেকে আমেরিকা, অতঃপর আবার কানাডা, কিন্তু ‘প্রাণহরা’ আর খাওয়া হলো না। এর মাঝে দেশেও ঘুরে গেলাম কয়েক বার। অবশেষে আরও চার-পাঁচ বছর পর একবার ঢাকায় প্রথমবারের মতো ‘প্রাণহরা’ খেয়েছিলাম, কোথায়, কার বাসায়, তা এখন মনে করতে পারছি না। খেতে ‘দিল্লিকা লাড্ডু’-ই লাগল। এত শুকনো শুকনো মিষ্টি আমার ভালো লাগেনি। আমার বিবেচনায়, মিষ্টির রাজা - রসগোল্লা-ই। যাই হোক, সেদিন নির্ভয়ে ‘প্রাণহরা’ খেয়ে তো প্রাণ জুড়ালাম, আজকাল যেভাবে ফরমালিন আর ‘ডিটার্জেন্ট-বেস্ড’ কৃত্রিম দুধের কথা শুনি, তাতে কেউ আমার ‘প্রাণ হরণ’ করলেও আমি আর ঢাকার বাজারের ‘প্রাণহরা’ কেন কোনো মিষ্টিই খেতে চাইব না।

সমসাময়িক কালে আমার আরেকটি জিনিস খাওয়ার খুব সখ হয়েছিল, দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে তার ছোঁয়া আজও আমার জিবে লাগেনি। এবার শুনুন সেটি কী এবং এর পটভূমিকাটাই বা কী। এক দিন আমাদের টিম লিডার - ভাবী বললেন, ‘ওয়াহিদ, আমরা অন্য টিমের চেয়ে কাজে অনেক পিছিয়ে পড়ছি, আপনারা যদি রোববার আমাদের বাড়িতে আসেন, তাহলে কাজ কিছুটা এগিয়ে নেওয়া যাবে’। আবেদ ভাই আমাদের ‘বস’, ভাবী তাঁরও ‘বস’, সুতরাং বুঝতেই পারছেন, ভাবীর অনুরোধ মানে হুকুম। কথামতো আমি রোববার সকাল দশটার দিকে গিয়ে আবেদ ভাইদের বাড়িতে হাজির। তখন তাঁরা থাকতেন ‘হলি ফ্যামিলি’ হাসপাতালের পশ্চিম দিকে এক ছোট্ট টিলার ওপর একটি পুরনো সাদা একতলা দালান বাড়িতে। এটি তাঁদের নিজেদের না ভাড়া করা ছিল তা জানতাম না, তবে গিয়ে দেখলাম বাড়িটি বিরাট। আসবাব পত্র খুব যে দামী ছিল তা নয়, তবে সবকিছু খুব ছিমছাম রুচিসম্মত ভাবে সাজানো গোছানো। সেদিন ‘বস’-এর বাড়িতে আমাদের টিমের আর কারা কারা দাওয়াত পেয়েছিলেন তা এই মুহূর্তে বলতে পারছি না। বড়লোকের বাড়িতে বসে কাজের মজাই আলাদা! চা-নাস্তা খেলাম, আবেদ ভাই ও ভাবীর সাথে ঘরোয়া পরিবেশে অনেক আলাপচারিতাও হলো, কিন্তু এর প্রায় সবই ভুলে বসে আছি, না হলে আপনাদেরকে আজ আরো অনেক মজার মজার গল্প শোনাতে পারতাম। আবেদ ভাইদের ছোট্ট ফুটফুটে একটি মেয়ে ছিল - নাম ‘তামারা’। সে মাঝে মাঝে মায়ের সাথে অফিসেও যেত, ঘুর ঘুর করে এ-ঘর ও-ঘর মাড়াত। আসার আগে মা পরিপাটি করে মাথা আঁচড়িয়ে চুলে একেক দিন একেক রঙের ক্লিপ পরিয়ে দিতেন। এতদিনে বড় হয়ে ‘তামারা’ নিশ্চয়ই মা, নানী, দাদী, ইত্যাদি হয়ে গেছে। সেদিন ভাবী অকপটে বলছিলেন, তামারাকে নিয়ে তাঁর কত স্বপ্ন! তাকে এমন স্কুলে পড়াবেন, যেখানে শিক্ষকরা শিশু শিক্ষার্থিনীকে সম্মান করবেন, সে যত ছোটই হোক না কেন, তাকে আদর দেবেন, পড়াবেন, শেখাবেন, বোঝাবেন, কিন্তু কখনও মার দেবেন না, বকা দেবেন না, ধমক দেবেন না, ভয় দেখাবেন না, ইত্যাদি, ইত্যাদি।

সাংসারিক বিষয়ে গল্প করতে গিয়ে ভাবী এক সময় বলছিলেন, তাঁরা খাবার জিনিস বাজার থেকে খুব একটা কিনেন না, কারণ তাঁদের বাঁধা মুরগী-ওয়ালা, বাঁধা মাছ-ওয়ালা, বাঁধা তরকারি-ওয়ালা আছে। ওরাই নিয়মিত বাড়িতে খাদ্যসামগ্রী দিয়ে যায়। আরো বললেন, রুটি, বিস্কুট, কেক, মিষ্টি, কাবাব ইত্যাদি নিয়মিত সরবরাহের নির্দিষ্ট লোক আছে। কাবাবের কথা ওঠায় বলেছিলেন, ‘সুতলি’ কাবাব তাঁদের সবার খুব প্রিয়, কিন্তু সেটাও দোকান থেকে কিনতে হয় না। পুরান ঢাকার এক খান্দানি কাবাব-ওয়ালা তাঁদের বাড়িতে নিয়মিত ওই কাবাব সরবরাহ করে থাকেন। আমি তো গেঁয়ো বাঙাল, কোনো দিন ‘সুতলি’ কাবাব খাইনি, দেখিনি, নামও শুনিনি। জিজ্ঞেস করলাম, ভাবী, ‘সুতলি’ কাবাব জিনিসটি কেমন? তিনি বললেন, ‘গরুর গোশতের সুস্বাদু কাবাব - লম্বা সুতো দিয়ে প্যাঁচিয়ে প্যাঁচিয়ে বানানো হয় বলে একে বলে ‘সুতলি কাবাব’। সেদিন ঘরে থাকলে নিশ্চয়ই আমাকে একটি কাবাব খাওয়াতেন। এই স্বাদের ও সাধের ‘সুতলি’ কাবাব আজও আমার খাওয়া হয়নি। আগামী বার ঢাকায় গেলে অবশ্যই খাব। আমি ‘ব্র্যাক’ ছেড়ে আরো দুই চাকরি করে যখন দেশ ছেড়ে কানাডায় এবং পরে আমেরিকায় যাই তখন কোনো এক সময় শুনলাম, ‘তামারা’র পরে এক ছেলেসন্তানের জন্ম দিতে গিয়ে ভাবী, বাড়ির কাছের ওই হলি ফ্যামিলি হাসপাতালেই মারা গেছেন। মায়ের মৃত্যু হলেও নবজাত শিশুটি বেঁচে যায়। তারপর আবেদ ভাই আরেক বিয়ে করেছেন, সেই বউও নাকি মারা যান, অতঃপর শুনেছি তিনি তৃতীয় বিয়ে করেছেন। (চলবে)





লেখক: আবু এন. এম. ওয়াহিদ; অধ্যাপক - টেনেসি স্টেট ইউনিভার্সিটি
এডিটর - জার্নাল অফ ডেভোলাপিং এরিয়াজ Email: awahid2569@gmail.com








Share on Facebook               Home Page             Published on: 28-May-2019

Coming Events:



A day full of activities, games and fun.







Lakemba Blacktown Mascot
Minto Money raised so far





Lakemba Blacktown Mascot
Minto Money raised so far



Blacktown Lakemba Mascot
Minto Money raised so far







Blacktown Lakemba Mascot
Minto Money raised so far