কবিতা রায়ঃ ৭ই অক্টোবর ২০১৮, বাংলাদেশ পূজা এসোসিয়েশন গত বছরের মত এবারো দুর্গা পূজা উপলক্ষে ডানডাস কমিউনিটি সেন্টারে মহালয়ার অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে অংশ গ্রহণ করেছেন: মন্ত্র পাঠ: জ্যোতি দে। সঙ্গীতে: সুমিতা দে, শর্মিষ্ঠা ফণী, মিথুন গোস্বামী,মালা ঘটক চৌধুরী, রিতা রায় চৌধুরী, পলাশ বসাক, অনুপম গোস্বামী,নীলাদ্রি চক্রবর্তী, সুদীপ্ত গোস্বামী, নিলম সাহা, ঈপ্সিতা দত্ত, নির্মল চক্রবর্তী ও অঙ্গনা গোস্বামী। নৃত্যে: ঐশী গোস্বামী, ও মিশা রায় চৌধুরী। যন্ত্র শিল্পী: তবলা ও মৃদঙ্গ - জন্মেজয় রায়, হারমোনিয়াম - সুমিতা দে ও জ্যোতি বিশ্বাস, বাশিঁ - বিপ্রজ্যোতি দত্ত, ঢাক - সুদর্শন দাস, কাঁসর - সুদীপ্ত সাহা, মন্দিরা - হিমাদ্রি চক্রবর্তী, শাঁখ: আলো দে। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সাংস্কৃতিক সম্পাদক সুনন্দা সাহা এবং সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন সহ সভানেত্রী কবিতা রায়।
আগমনী অস্ট্রেলিয়া
সিডনির দক্ষিণ পশ্চিলাঞ্চলিয় সাবার্ব গ্লেনফিল্ডে ১৫ থেকে ১৯শে অক্টোবর পর্যন্ত টানা ৫ দিন ধয়ে উদযাপিত হলো শারদীয় দুর্গা উৎসব। সোমবার সন্ধ্যায় মহাষষ্ঠীর পূজা দিয়ে শুরু হয় উৎসব। এর পরের ৩ দিন মহাসপ্তমী, মহাষ্টমী ও মহানবমীর পূজা, পুষ্পাঞ্জলি, প্রসাদ, আরতি এবং ভোগ দিয়ে সম্পন্ন হয় দেবীর আরাধনা। উৎসবের শেষ দিন সকাল ১০টা থেকে শুরু হয় পূজা। এরপর সিঁদুর খেলা, ধ্যান, প্রসাদ, শান্তির জল, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং নৈশভোজ দিয়ে শেষ হয় মহাদশমী।
বি.এস.পি.সি. দুর্গা পূজা ২০১৮
উজ্জ্বল রায়ঃ বরাবরের মত বি. এস. পি . সি. এবারও আড়ম্বরের সাথে তাদের দুর্গা পূজা উদযাপন করেছে। গত ২০ শে অক্টোবর ওয়েন্টওয়ার্থভিল রেডগাম সেন্টার-এ এই পূজা উদযাপিত হয়। সকাল ৯ টায় দেবী দুর্গার ঘট স্থাপনার মাধ্যমে পূজা শুরু হয়। একই সময় থেকে ভক্ত এবং অতিথিদের আগমন শুরু হয়। পাশাপাশি বেলা ১০:৩০টায় শুরু হয় বাচ্চাদের অংকন প্রতিযোগিতা। প্রায় ১২:৩০ টায় হোম-যজ্ঞ ও পুষ্পাঞ্জলির মাধ্যমে পূজা পর্ব শেষ হয়।
এরপর প্রসাদ এবং দুপুরের খাবার বিতরণ করা হয় উপস্থিত সবার জন্য। বিকাল ৩ টার দিকে পূজা কুইজ ও পূজা টক শুরু হয়। পূজা টকে অংশ গ্রহণ করেন কাম্বারল্যান্ড কাউন্সিলের মেয়র মি. গ্রেগ কামিংস, কাউন্সিলর মিসস লিসা লেক, কাউন্সিলর মিঃ সুমন সাহা এবং আমন্ত্রিত অতিথি স্ট্রাথফিল্ড কউন্সিলের কাউন্সিলর মি. রাজ দত্ত। তাঁরা দুর্গা পূজার ঐতিহ্য ও মাহত্ত্ব এবং তা অস্ট্রেলিয়ার বহুমাত্রিক সংস্কৃতিতে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা তুলে ধরেন এবং এর বিকাশে কাম্বারল্যান্ড কাউন্সিল এর পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সব রকমের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
কিছুক্ষণ পরেই আরতি নৃত্ত শুরু হয়, যেখানে ছোট-বড় সবাই সানন্দে অংশগ্রহণ করে। ঢাকের তালে ও ধুনুচি নৃত্তে সবাই মেতে উঠে।
সন্ধ্যা ৬ টার পর পরই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয় যার জন্যে শত শত লোক অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন। প্রথমেই বি.এস.পি.সি. বাংলা স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের অংশগ্রহণে দলীয় সঙ্গীত পরিবেশনা করা হয় যেখানে তবলায় সহযোগিতা করেন একই স্কুলের তবলা শিক্ষার্থীরা। এই পর্বে প্রত্যেকটি গানের সাথে শিক্ষার্থী ৪ জন তবলা বাদক ছিল যা দর্শকদের জন্য একটু ব্যতিক্রম এবং এটা অনুষ্ঠানে অন্য মাত্রা যোগ করেছিল। এছাড়াও একক ও দলীয় নৃত্ত, গান ও কৌতুক পরিবেশনা করা হয় যা উপস্থিত দর্শকদের মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখে। এবারে পূজায় সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ছিল – যাত্রা-পালা “কৈলাসে একদিন”। এটি ছিল দুর্গা পূজা ভিত্তিক একটি রম্য রচনা যেটি পরিচালনা করেছেন শ্রী নির্মল চক্রবর্তী। এতে অভিনয় করেছেন বি.এস.পি.সি.-র কিশোর-কিশোরী ও অভিভাবক-অভিভাবিকারা। বহুদিন পর দর্শকেরা সেই ভুলে যাওয়া যাত্রা পালার কনসার্ট ও অভিনয় উপভোগ করেন। এর পর বি.এস.পি.সি.–র সভাপতি মি. উৎপল সাহা এবং সাধারণ সম্পাদক মি. স্বপন সাহা রায় উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন। বি.এস.পি.সি. তাদের মন্দির নির্মাণ প্রকল্পে আগামী ২৭ শে অক্টোবর একটি ফান্ড রাইজিং এর জন্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। সা-রে-গা-মা-পা খ্যাত অদিতি মুন্সি এই অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করবেন। সবাইকে এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার বিনীত অনুরোধ করা হয়। এরপর র্যা ফেল ড্র ও রাতের খাবার পরিবেশনার মাধ্যমে জাঁকজমক অনুষ্ঠানটির পরিসমাপ্তি হয়।
সিডনি উৎসব
আশিষ বাবলুঃ ‘সিডনি উৎসব’ সিডনিতে ১১ বছর ধরে পূজা করছে। স্ট্রাথফিল্ড গার্লস হাই স্কুলে এটি অনুষ্ঠিত হয়। এ পূজার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে প্রতিমাটি তৈরি হয়েছে সিডনিতেই। খড়, মাটি, কাঠ. রং সবই এই অস্ট্রেলিয়ার। সকালে পুরোহিত এসে পূজা করেন। তারপর দুপুরে ফল, নাড়ু, খিচুরি, তরকারি, মিষ্টি দিয়ে মধ্যাহ্ন ভোজ। সন্ধ্যায় আরতির পর শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করে ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় পঞ্চাশ জন শিল্পী। আরতি দিয়ে শুরু হয় সন্ধ্যার অনুষ্ঠান। তারপর নাচ ও গানে মেতে ওঠে সমস্ত পূজা প্রাঙ্গণ। অপরূপা সামন্তের সঞ্চালনায় সিডনির বেশ ক‘জন পরিচিত মুখ এখানে অংশ গ্রহণ করেন। সোনালী মুখার্জি, সৌমিত্র সরকার, ইন্দ্রাণী মুখার্জি সহ আরো অনেকেই এখানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন। নেচেছে অজন্তার নাচের দল সহ আরও অনেকে। উৎসবের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট শম্পা ভট্টাচার্য আমাদের আপ্যায়ন করলেন। মলি আহমেদ ও ইসমতারা লাকিকেও দেখলাম সেখানে কাজে ব্যস্ত। ঝড় বৃষ্টি উপেক্ষা করেও সেখানে উপস্থিত হয়ে ছিল হাজার খানেক লোক। রাতের খাবার হিসেবে সবাইকে বিরিয়ানি পরিবেশন করা হয়। মহিলাদের সিঁদুর খেলা দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।
Share on Facebook               Home Page             Published on: 24-Oct-2018