সিডনীতে একুশের বইমেলা কাজী সুলতানা শিমি
মহান একুশে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে সিডনীর অ্যাশফিল্ড পার্কে অনুষ্ঠিত হল একুশের বইমেলা। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও একুশে ফেব্রুয়ারি পালনের উদ্দেশ্যে প্রতি বছর একুশে একাডেমী সারাদিন ব্যাপী এই বইমেলার আয়োজন করে থাকে। মাতৃভাষা চর্চা ও তার ইতিহাস আগামী প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে অস্ট্রেলিয়ায় জন্ম নেয়া এবং বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মকে প্রাধান্য দিয়ে নানা আয়োজনে সাজানো হয়েছিল একুশে একাডেমী অস্ট্রেলিয়ার এবারের বইমেলা। সকাল থেকেই শুরু হয় এই মেলার প্রস্তুতি পর্ব। সারাদিন ব্যাপী চলে এর নানা ধরণের আয়োজন।
সকাল সাড়ে নয়টা থেকে জন সমাগম শুরু হয় অ্যাশফিল্ড পার্কের খোলা চত্বরে। সিডনীর অ্যাশফিল্ড হেরিটেজ পার্কে প্রতিষ্ঠিত পৃথিবীর প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মৃতিসৌধের পাদদেশে একুশে বই মেলার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা শুরু করা হয় প্রভাতফেরি, পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যে দিয়ে। সকাল থেকে একে একে বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সাংবাদিক ও রাজনৈতিক দল সহ সিডনী প্রবাসী বাঙ্গালীরা ভাষা শহীদদের প্রতি তাদের শ্রদ্ধা নিবেদন করে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে।
একুশে বইমেলা উপলক্ষে মাতৃভাষা নামে একটি সংকলন প্রকাশিত হয়। বই মেলা চত্বরে মূল মঞ্চে সারাদিন ব্যাপী অনুষ্ঠান মালার মধ্যে ছিল একুশের গান, কবিতা আবৃতি, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, একক ও দলীয় নৃত্য ও আলোচনা সভা। সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় ছিল ছোট ছোট বাচ্চাদের সাদা কালো পোশাক পরে বিভিন্ন পরিবেশনা ও মেলা চত্বরে শিশুতোষ বই কেনা। এবারের বইমেলায় বুক স্টল ও বই বিক্রি ছিল উল্লেখ করার মতো। আবু সাইদ নামে একজন প্রবাসী লেখকের নতুন প্রকাশিত তিনটি বইয়ের পুরো অর্থ ক্যান্সার রোগীদের জন্য দান করার উদ্দেশ্যে একটি বইয়ের স্টল ছিলো বইমেলায়। তার তিনটি বইয়ের মূল্য ছিল মাত্র ১৫ ডলার।
সকালে আকাশ কিছুটা মেঘলা থাকা সত্ত্বেও মেলায় দর্শক উপস্থিতি ছিল উল্লেখ করার মতো। মেলা প্রাঙ্গণে হরেকরকম দেশীয় খাবার নিয়ে মাঠের সবুজ চত্বরে দর্শকদের আনন্দ আয়োজনে ছিল দেশীয় আমেজের ছোঁয়া। বিদেশের মাটিতে এমন একটি বইমেলার সার্বিক সফলতার জন্য উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জানান একুশে একাডেমী অস্ট্রেলিয়ার সভাপতি ডঃ আব্দুল ওহাব ও সাধারণ সম্পাদক লরেন্স ব্যারেল। তারা জানান, একুশে একাডেমীর অন্যান্য সকল সদস্যদের অক্লান্ত চেষ্টায় অ্যাশফিল্ড পার্কে অনুষ্ঠিত একুশের বইমেলা’র জনপ্রিয়তা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কাজী সুলতানা শিমি, সিডনী
|