bangla-sydney













ঢাকার পঞ্জিকা - ২
কাজী সুলতানা শিমি


লং সার্ভিস লিভ নিয়ে কাজ করার অভিপ্রায়ে ঢাকায় আসা। সিডনিতেই অনলাইনে ইন্টারভিউ নিয়েছিলেন প্রো-ভিসি এবং ফ্যাকাল্টি ডীন। ইন্টারভিউ নেবার সময় জিজ্ঞেস করেছিলেন বেতন কেমন হলে চলবে। যেহেতু লং সার্ভিস লিভ-এ বর্তমান বেতন চলমান থাকবে সিডনীতে, তাই ঢাকার পারিশ্রমিক নিয়ে ভাবিনি। বরং প্রায় পঁচিশ বছর আগের রেখে যাওয়া দেশ এখন কেমন আছে স্বচক্ষে দেখা হবে এটাই ছিলো আগ্রহের বিষয়। এছাড়া এথিকস নিয়ে কাজ করবার সুযোগ আছে কিনা কিংবা তৈরি করা যায় কিনা সেটাও একটা কারণ। প্রতিদিন ধানমণ্ডি বাসা থেকে সকাল ছয়টায় বের হয়ে ক্যাম্পাসে যাই আর ফিরি সন্ধ্যা ছয়টায়।

জুনের শুরু থেকেই কোরবানি ঈদের আমেজ এবার। এই আমেজ ক্যাম্পাসেও বিরাজমান। এ বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে কোরবানি ঈদ ১৭ই জুন সোমবার। অধিকাংশ অফিস ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১২ই জুন পর্যন্ত ক্লাস হয়ে ঈদের বন্ধ হবে। স্টাফ ও অফিসের লোকজন ১৩ই জুন পর্যন্ত অফিস করতে হবে। তারমানে দুই সপ্তাহ ক্লাস হয়ে ঈদের ছুটি শুরু। ৩রা জুন সোমবার সকাল সাড়ে নয়টায় আমার প্রথম ক্লাস হবে ‘লজিক ও ফিলসফি’ বিষয়ে। সোমবার ভোর ছয়টা’তেই আমি উবার বুকিং দিলাম ধানমণ্ডি থেকে এআইইউবি ক্যাম্পাস এক নাম্বার গেট। ভোরবেলা উবার খুব তাড়াতাড়ি পাওয়া যায় এবং ভাড়াও কম আসে। তাছাড়া এক্সপ্রেস এলিভেটরের বাড়তি আশি টাকা টোল দিতে হয়না রাস্তা নিরিবিলি থাকে তাই। জ্যাম থাকলে উবার আগেই জিজ্ঞেস করে এলিভেটর দিয়ে যাবো কিনা। এলিভেটর না হলে কল ক্যন্সেল করে দেয়। বিকেল বেলায় উবার পাওয়া খুব মুশকিল।

ভোরে রাস্তা নিরিবিলি হওয়ায় বিশ মিনিটেই ক্যাম্পাসে পৌঁছে গেলাম। তখনো কেউ আসেনি। শুধু সিকিউরিটি আর পরিছন্নতা কর্মী ছাড়া। সাত’টার আগে সিস্টেমে ফেইস রিকগনিশন শুরু হয়না। অগত্যা কৃষ্ণচূড়া গাছের নীচে বসে বসে ক্যাম্পাসের নিসর্গ উপভোগ করার পাশাপাশি লেকচারগুলোতে চোখ বুলিয়ে নিচ্ছিলাম। ১৯৯৪ সালে বনানীতে এই ইউনিভার্সিটির প্রথম যাত্রা হলেও কুড়িল-কুড়াতলীতে বারো একর জমির উপর এখন এর নিজস্ব কেনা স্থায়ী ক্যাম্পাস। আধুনিক ডিজাইনের বিল্ডিং ও মনোরম ল্যন্ডস্কেপিং করা পরিচ্ছন্ন ও পরিপাটি ক্যাম্পাসে দশ হাজার শিক্ষার্থীর কলকাকলিতে মুখরিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে চারটি ফ্যাকাল্টি। গ্র্যাজুয়েট এবং আন্ডার গ্র্যাজুয়েট ছাড়াও রয়েছে রিসার্চের সুযোগ ও সুবিধা।

সকাল সাড়ে নয়টায় ডি-বিল্ডিং ৮০৮ নাম্বার রুমে ক্লাস। ফিঙ্গার স্ক্যান করে ক্লাসের দরজা খোলার পর কর্তব্যরত কর্মচারী এসি, লাইট, প্রজেক্টর এবং আনুষঙ্গিক সবকিছু ঠিক করে দিয়ে গেলো। বহুদিন পর ক্লাস নিতে গিয়ে প্রথম শিক্ষকতার দিনগুলো মনে পড়লো। এমনকি সেসময়ের ছাত্রছাত্রীদের মুখগুলোও চোখে ভেসে উঠলো। ছাত্রছাত্রীদের সাথে পরিচয় পর্বের পর জানলাম এরা সবাই আর্কিটেকচার ডিপার্টমেন্টের। ‘লজিক ও ফিলসফি’ তারা ঐচ্ছিক বিষয় হিসেবে নিয়েছে। তিরিশ’জন ছাত্রছাত্রী এই সেকশনে। দুই যুগ আগের বর্তমান আমি ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে এতোটা অমায়িক ও বিনয়ী ব্যাবহার আশা করিনি। প্রতি সেকশনে তিরিশ ও চল্লিশ করে ছাত্রছাত্রী ভাগ করা। প্রত্যেকেই বিনয়ী ও মনোযোগী।

প্রথম ক্লাসে আমাদের নিত্যদিনের জীবনের সাথে ফিলসফি কিভাবে জড়িত বাস্তব উদাহরণ দিয়ে কথা বলে থিওরিগুলো কথোপকথন করলাম। জানিনা কতোটুকু আত্মস্থ করলো তবে ক্লাস শেষে স্বতঃস্ফূর্ত হয়েই সারাংশ আলোচনায় অংশগ্রহণ ও আগ্রহ দেখিয়েছে। মজার ব্যাপার হলো দুতিনটা ক্লাসের পর ওরা নিজে থেকেই প্রথম কুইজ পরীক্ষা দিতে ইচ্ছে প্রকাশ করেছে। তখনো অন্য ক্লাস বা গ্রুপের কেউ দিতে চায়নি। ফ্যাকাল্টি ডীনকে এটা জানাতেই উনি মজা করে বললেন, বলেছিনা আপনিই ভালো পড়াবেন!

শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে পারস্পরিক আন্তরিকতাপূর্ণ ও সম্মানের সম্পর্ক তৈরি হোক এ ইচ্ছায় আমিও ছাত্রছাত্রীদের সাথে বেশ সহজভাবে আলোচনা করি কঠিন বিষয়গুলো। কয়েকটা ক্লাসের পর শিক্ষার্থীদের আগ্রহেই আমি অন্য সবার আগেই একটা কুইজ পরীক্ষা নিলাম। এজন্য প্রশ্নপত্র তৈরি ও কুইজ প্রস্তুতি শুরু করে ১২ই জুন প্রথম কুইজ পরীক্ষা নেয়া হয়ে গেলো। ক্রমশঃ দায়িত্ববোধের পাশাপাশি ভালোলাগা ও তৈরি হচ্ছে। বিকাল দুটো থেকে আরো একটা ক্লাস থাকায় পরীক্ষার খাতাগুলো অফিস রুমে লক করে ফ্যাকাল্টি ডীনকে জানাতে গেলাম। ক্যাম্পাসে আমার রুটিন ও উপস্থিতির তালিকা ও রূপরেখা উনাকে অবহিত করাতে উনি বললেন, আপনার যেভাবে ইচ্ছে সেভাবেই করেন তবে একটা কথা মনে রাখবেন, বেশী ভালো হওয়া ভালোনা, মাঝে মাঝে বাঁকা কথা বলাও শিখতে হবে। আমি হেসে বললাম, চেষ্টা করবো এখন থেকে।


ইতিমধ্যে ফ্যাকাল্টি ডীন ডিপার্টমেন্টের সব টিচারদের বলে রেখেছেন আমার জন্য বসুন্ধরাতে একটা বাসা কিংবা ফুল ফার্নিসড এপার্টমেন্ট ঠিক করে দিতে। কেননা ধানমণ্ডি থেকে আমার আসা যাওয়া ঝামেলা এবং সময় সাপেক্ষ। উবারে প্রতিদিন একহাজার টাকার উপর লাগে তাছাড়া সমস্যা হলো ক্যাম্পাসে উবার আসেনা এবং কুড়িল গেটে পাঁচটার পর উবার খোঁজা বা পাওয়া ভীষণ বিরক্তিকর। এজন্য অনেকেই আমাকে বাসার খোঁজ দিয়েছেন। এরমধ্যে নাসরিন নামে একজন টিচারের সাথে আমি এক বিকেলে ক্লাস শেষে বাসা দেখতে গেলাম। যে বিল্ডিং এ নাসরিন থাকেন সেটার তিনতলায় তিন বেডরুমের একটা ফ্ল্যাট খালি হবে জুলাই থেকে। বাসা দেখে আমার পছন্দ হলো পাশাপাশি একসাথে ক্যাম্পাসে আসা যাওয়া করা যাবে তাই আমি রাজী হয়ে গেলাম। বাড়ীর দায়িত্বে যিনি রয়েছেন তার নাম তরুণ। তরুণ ও শাকিলা দম্পতি আমাকে ও নাসরিন’কে নিজ হাতে চকলেট কেক ও চা বানিয়ে আপ্যায়ন করলেন। আমি বললাম, আসছে শুক্রবার আমি ও আমার গৃহকর্তা দুজনে এসে আপনাদের বাড়ি ভাড়া ও এডভান্স করে যাবো। উনারা বললেন, এতো কম সময়ের জন্য আমরা সাধারণতঃ ভাড়া দিইনা। তবে আপনার যেহেতু ধানমণ্ডি থেকে ক্যাম্পাসে আসতে অসুবিধা তাছাড়া একই ক্যাম্পাসের টিচার তাই রাজী হয়েছি। পাশাপাশি একটু অবাক ও কৌতূহল হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার সুযোগ সুবিধা ছেড়ে আপনার ঢাকায় শিক্ষকতা করার ইচ্ছে হবার কি কারণ! যেখানে বেশিরভাগই এখন দেশ ছাড়ার জন্য উদগ্রীব! আমি হেসে বললাম, দুই যুগ আগের দেশ কেমন আছে সেটা দেখা এবং কিছুটা ঋণ শোধও বলতে পারেন, তাইনা?

৭ই জুন সকালে আমি ও আমার বর এসে এডভান্স দিয়ে বাসা কনফার্ম করলাম। সাথে আমাদের নিজেদের বাড়ির কেয়ার-টেকারকে নিয়ে এসেছি বাসাটা চিনে রাখার জন্য। পরবর্তীতে কেয়ারটেকারকে দিয়েই ঝামেলাপূর্ণ কাজগুলো করাতে হবে তাই। তাছাড়া বাড়ীর মালিকেরও চেনা থাকলো। সিডনি ফেরার আগে আগেই ভারী ভারী আসবাবপত্রগুলো কিনে, যেমন নতুন একটা ফ্রিজ, চুলা, ফ্যান, ও অন্যান্য দরকারি তৈজসপত্র বসুন্ধরার নতুন বাসায় রেখে এলো মুস্তাফিজ। কেননা ১৪ই জুন আমরা ঈদ করতে চট্টগ্রাম চলে যাবো। ১৭ই জুন ঈদের পর ১৮ই জুন রাতের ফ্লাইটে মুস্তাফিজ সিডনী ফিরবে। তারপর থেকে বাকি কাজ আমাকে একা একাই করতে হবে। এদিকে ঈদের ছুটির আগে ক্লাস ও ক্যাম্পাসে বাকি কাজগুলো সেরে ফেলতে হবে ভেবে ১৩ই জুন বৃহস্পতিবার সকালেই ক্যাম্পাসে চলে আসলাম।

সকালে আসলাম মেট্রো রেলে চড়ে, যদিও মেট্রো রেলের লাইন ক্যাম্পাস-মুখী নয়। ধানমণ্ডি সাতাশ নাম্বার থেকে রিক্সা করে ফার্মগেট স্টেশনে গিয়ে ওয়ানওয়ে টিকেট কেটে প্রথমে পল্লবী নামলাম। ফার্মগেট থেকে পল্লবী পঞ্চাশ টাকা ভাড়া। সামনের বগী শুধু মহিলাদের জন্য বরাদ্দ রাখা। যাত্রীদের কেউ একজন বলল সামনে মহিলা বগি খালি আছে আপনি ওখানে যেতে পারেন। আমি বললাম আমার কাছে মহিলা-পুরুষ সবাই সমান তাই আমি এই সুবিধা নিতে চাইনা। মাত্র দশ মিনিটেই পল্লবী চলে এলাম। পল্লবী থেকে আবার উবার নিতে হলো। প্রায় পঁচিশ বছর আগের এইসব জায়গা আমার পরিচিত হলেও মানুষ আর দালানকোঠা বেড়েছে তাই চিনতে বেশ সমস্যা হচ্ছে। সেজন্য মুস্তাফিজকে সাথে আসতে বলেছিলাম। কিন্তু সে আসেনি বললো একা একাই যেতে অভ্যাস করো। আগামী সপ্তাহ থেকে তো আমি আর ঢাকায় থাকছিনা। তখন তো একাই করতে হবে। পল্লবী থেকে কুড়িলে উবার কল করাতে একই ভাড়া দেখালো। উবার ড্রাইভার বললো, ম্যাডাম আপনার ধানমণ্ডি থেকে উবার নিলেই ভালো, ভাড়া একই মাঝখানে অযথা সময় নষ্ট। বললাম, আমি আসলে ঢাকার মেট্রো রেলের অবস্থা এবং ব্যবস্থা দেখতে এই পথে এসেছি।

ক্যাম্পাসে এসে দেখলাম তেমন কেউ আসেনি। ক্লাস নেই তাই শিক্ষার্থীরা আসেনি শুধু কিছু স্টাফ ও টিচাররা যার যার রুমে নিজেদের কাজ নিয়ে ব্যস্ত। ব্যস্ততার কারণে প্রো-ভিসির সাথে এখনো দেখা করা হয়ে উঠেনি। ভাবছি আজ চেষ্টা করবো সময় করতে, কেননা উনিও আমার ইন্টারভিউ নিয়েছিলেন অনলাইনে। ঈদের ছুটিতে কাজ নিয়ে বসা যাবেনা তাই আজই অনেকটা গুছিয়ে ফেলবো এই প্রস্তুতি নিয়ে রুমের লক খুলে ল্যাপটপ অন করতেই সায়রা মতিন আসলেন। সায়রা মতিন বললেন, মধ্যম চলেন আজ একসাথে লাঞ্চ করি। আমারো বেশ কিছু কাজ আছে যদি অনেকক্ষণ থাকেন তাহলে আমি আপনাকে বনানী পর্যন্ত আমার গাড়ীতে নামিয়ে দিতে পারি। বনানী থেকে উবারে আপনি ধানমণ্ডি চলে যেতে পারেন। অনেকখানি পথ এগিয়ে যাবে। আমি বললাম তাহলে কাজ শেষ করে একসাথেই যাবো। বিকেল চারটার দিকে সায়রা মতিন বললেন, বাসা থেকে গাড়ী পাঠাতে দেরী করছে আপনার সমস্যা নেই তো? ভাবলাম এতক্ষণ যেহেতু থাকলাম একসাথেই যাই।

হঠাৎ শুরু হলো ঝুম বৃষ্টি। একটু বৃষ্টি হলেই ক্যাম্পাসে হাঁটু পানি জমে যায়। সেজন্য দারোয়ান ও কর্মচারীরা তাড়া দিতে থাকলো ক্যাম্পাস থেকে বের হতে। কেননা হাঁটু পানি জমে গেলে গাড়ী গলিতে আটকে যেতে পারে।

তাই এখনি বের হয়ে যাওয়া ভালো। কিন্তু এমন বৃষ্টি নামলো যে রুম থেকেই বেরুবার উপায় নেই। অবশেষে পাঁচটার দিকে গাড়ি রুমের সামনে এনে আমরা গাড়ীতে উঠলাম। কাল শুক্রবার তাই বৃহস্পতিবার বিকাল থেকেই ঈদের ভিড় শুরু হয়ে গেছে। রাস্তায় অসম্ভব জ্যাম। বনানী পৌছতেই প্রায় ঘণ্টা খানিক লেগে গেলো। এদিকে বৃষ্টি থামছেইনা। সায়রা মতিন বললেন, আপনার উবার না আসা পর্যন্ত আমি আপনার সাথে অপেক্ষা করবো। তখন অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে। আমি বললাম অন্ধকারে রাস্তায় অপেক্ষা না করে আমরা বরং একটা কফি শপে বসি। আমরা উনার বাসার কাছেই ‘সিএফসি’ কফি শপে বসে কোল্ড ড্রিকংস ও একটা ফ্রাইজ অর্ডার করলাম। পাশাপাশি উবার কল করতে গিয়ে দেখি বনানী থেকে বারো’শ টাকা ভাড়া দেখাচ্ছে। বৃ্ষ্টির সন্ধ্যা ও জ্যামের কারণে উবারের ভাড়া এখন তিনগুণ! ভুল দেখছি কিনা এটা যাচাই করতে সায়রা মতিন তার ছেলেকে ফোন করে বললেন, তার ফোনে কতো আসে সেটা জানাতে। সেও একই ভাড়ার এমাউন্ট জানালো। সুতরাং বারো’শ টাকা ভাড়াতেই কনফার্ম করতে হলো। সমস্যা হলো উবার সাত মিনিটেই আসতে পারবে বলে জানিয়ে প্রায় ঘণ্টা খানেক জ্যামে আটকে রইলো। সাতটার দিকে আমাকে উবারে উঠিয়ে সায়রা মতিন বাসায় গেলেন। বলে গেলেন বাসায় পৌঁছেই যেনো উনাকে ফোন করে জানাই।

সিএফসি থেকে বেরিয়ে মেইন রোডে উঠতে গিয়ে উবার এক পাবলিক বাসের সাথে এক্সিডেন্ট করে বসলো। পেছনের সীটে আমি একা বসা। জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখি বাস ড্রাইভার, পুলিশ, উবার ড্রাইভার, ও রাস্তার জনগণ মিলে তুমুল তর্কাতর্কি চলছে। সময় ক্ষেপণের এক পর্বে পুলিশ উবার ড্রাইভারকে কি বুঝালো জানিনা, দেখলাম সে সামনের দিকটা কিছু একটা দিয়ে বেধে উবার চালাতে শুরু করলো। কিছুক্ষণ পর গ্যাস নেয়ার জন্য আবার লম্বা লাইনে দাঁড়ালো। এদিকে বাজে রাত আটটা। বাসা থেকে সমানে ফোন আসছে এতো রাত পর্যন্ত কোথায় আটকে আছি। ড্রাইভারের কার্যকলাপে বিরক্ত হয়ে উবার ড্রাইভারকে বললাম আপনি এতো সময় নিয়ে এসব কি শুরু করেছেন? আমার দেরী হয়ে যাচ্ছে অন্য উবার নিয়ে আমি চলে যেতে চাচ্ছি। সে কিছুতেই নামতে দিচ্ছেনা।

বেশ অনেকক্ষণ পর গ্যাস নিয়ে এলিভেটর এক্সপ্রেস হয়ে রাত নয়টায় আমাকে ধানমণ্ডি বাসায় নামিয়ে দিলো। ভাড়া নিলো বারো’শো’র পরিবর্তে পনেরো’শো। বিকাল পাঁচটায় এআইউবি ক্যাম্পাস থেকে রাত নয়টায় ধানমণ্ডি পৌঁছলাম। বৃষ্টি ও ঈদের জ্যামের কারণে চার ঘণ্টা লাগলো বিশ/পঁচিশ মিনিটের পথ। পরদিন শুক্রবার ১৪ই জুন সকালে ‘এয়ারএস্ট্রা’ ডোমেস্টিক ফ্লাইটে চট্টগ্রাম চলে এলাম কোরবানি ঈদ করতে। ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম বিমানে সময় লাগলো মাত্র পঁয়তাল্লিশ মিনিট।




কাজী সুলতানা শিমি, সিডনি (ঢাকা থেকে)



Share on Facebook               Home Page             Published on: 8-Jul-2024

Coming Events: