উড়ো চিঠি সূর্য কিঙ্কর মজুমদার
বাতাসে প্রতিদিন কান পেতে থাকি তোমার পদধ্বনির অপেক্ষায় তুমি তো অধরা নও, তুমি আমার বর্ধিষ্ণু প্রেমের শিহরন, তুমি জ্যোৎস্না রাতের নদীর বুকে পূর্ণিমা চাঁদের ছায়ার মত আমার মনের অন্তর্বাস আলতো করে ছুঁয়ে করে যাবে সমর্পণ।
আমার অদম্য ইচ্ছেগুলো প্রবাহী ফল্গুধারা হয়ে শুনতে পায় ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণের সঙ্কেত, আর মনের গহীনে তখন স্বপ্নের আকাশের সীমানায় মেরুপ্রভার বর্ণিল অভিসারের অভিপ্রেত।
তুমি যৌবনের সৈকতে আমার বিমূর্ত ভালোবাসা তুমি খর-তপ্ত দিনের শেষে বিজ্ঞাপিত গোধূলির অনুরাগ, তুমি আমার স্বরচিত পবিত্র এক পাপ - জীবনের একমাত্র ভুল তুমি আমার অকৃত্রিম ভালোবাসার ফুলের সুগন্ধি পরাগ।
কত দুঃখের দিন, কষ্টের রাত গড়িয়ে গেছে সময়ের কোলে দিগন্তের শূন্যতায় নিঃশেষে বিলীন হয়েছে সমুদ্রের ঢেউ, বিস্মৃতির উপকূলে মৌন জলরেখা রেখে গেছে স্মৃতির বিষণ্ণ বালিয়াড়ি তবুও আজবধি পরিত্যক্ত মনের গহরে তুমি ছাড়া আর নেই কেউ।
তুমি আজ অন্য কোথাও, হয়ত বা আলিঙ্গনে বদ্ধা কারো প্রিয়তমা হয়ত তোমার মাথার সিঁথিপথে উজ্জ্বল সিঁদুর তবুও কৈশোরের অপরাহ্নের সেই দিনগুলি আমার মনের মণিকোঠায় প্রাঞ্জল, যদিও বড়ই নিষ্ঠুর।
মনে পড়ে রিকশার হুড খুলে তুমি আমার পাশে বসে বৃষ্টি খেতে আর দুজনে মিলে জ্যোৎস্না ছুঁতাম তারার মেলায়, তোমার কোলে মাথা রেখে পূর্ণিমার রাতে দুটি মন জুটি বেঁধে ভাসাতাম দূরের একাকী মেঘের ভেলায়।
আজ বহুবছর পড়ে শরতের মেঘের খামে তোমার নামে আমার উড়ো চিঠিটি পাঠিয়ে দিলাম, যদি কোনদিন তোমার ডাকবাক্সে বন্দী হয় - তুমি খুলে পড়ে উত্তর দিও মনে রেখ আমি ডাকপিয়নের অপেক্ষায় রইলাম।
মস্কো, ২৪ জুলাই ২০১৮
|