বাংলাদেশের সুকর্ম সুদূরেও স্বীকৃত দিলরুবা শাহানা
মায়ানমারের রাখাইন অঞ্চলের বাসিন্দা রোহিঙ্গা মানুষরা উদ্বাস্তু হয়ে নারকীয় জীবনযাপনে বাধ্য হয়েছেন। এবিষয়ে আমরা সবাই কমবেশি ওয়াকিবহাল বা অবগত আছি। আমরা প্রায় সবাই যে যার জায়গা থেকে যথাসাধ্য সহযোগিতা, সহমর্মিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছি। বিদেশে বসবাসকারীরাও অর্থ ও রিলিফ সামগ্রী সংগ্রহ করে রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু শিবিরে পাঠিয়েছেন। মর্মস্পর্শী গান ছাড়াও কবিতা, গল্প সৃষ্টি হয়েছে রোহিঙ্গা বিষয়ে।
সর্বোপরি বিপুল জনসংখ্যার চাপে বাংলাদেশ নিজেই হিমসিম খাচ্ছে তারপরও সীমান্ত উন্মুক্ত করে বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের আসতে দিয়েছে। এরকম একটি মানবিক পদক্ষেপ নেওয়াও বাংলাদেশের জন্য দারুণ দুঃসাহসের কাজ। বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ এমন পরিস্থিতিতে ত্যক্তবিরক্ত হওয়ার বদলে মানবিক সহমর্মিতার এক গৌরবময় উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন। বাংলাদেশের ভূমিকা বিষয়ে চিকিৎসকদের আন্তর্জাতিক সংগঠন ডক্টরস উইদাউট বোর্ডারস (Doctors Without Borders) তাদের তৈমাসিক পত্রিকা ‘দি পাল্স’(The Pulse) ডিসেম্বর ২০১৭এর সংখ্যা লিখেছে: আমাদের ভিনদেশী বন্ধুরা দেখা হলে বলছে বাংলাদেশের মানুষেরা সত্যিই বড় মনের মানুষ নাহলে নিজেদের অজস্র সমস্যা, অপ্রতুল সম্পদ সত্ত্বেও তারা যা করছে এমন ঘটনা কদাচ ঘটে। আমার বার বার মনে হচ্ছে ‘মানুষ মানুষের জন্য’(ভূপেন হাজারিকা’র গান) কথাটাই খাঁটি।
পশ্চিমবঙ্গের ‘আনন্দ বাজার’ পত্রিকায় একজন পাঠক (কাজল চট্টোপাধ্যায়, সোদপুর, ৩/১/২০১৮) চিঠি লিখেছেন তাতে ওই রোহিঙ্গাদের সাহায্যের উদ্দেশে বাংলাদেশের মানুষেরা পূজা উৎসবের খরচ কাটছাঁট করার সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখিত হয়েছে, প্রশংসিত হয়েছে। সবার অবগতির জন্য চিঠিটি নীচে সংযুক্ত করা হল।
“বাঙালি সম্ভ্রান্ত-বংশীয় মিনি'র বাবা ‘কাবুলি মওেয়াওয়ালা’ রহমত-কে দেশে ফেরার টাকা দান করায় মিনি'র বিয়ের উৎসব-সমারোহরে দুটো-একটা অঙ্গ ছাঁটতে বাধ্য হয়েছিলেন— ‘যেমন মনে করয়িাছিলাম তেমন করিয়া ইলেকট্রিক আলো জ্বালাইতে পারিলাম না, গড়ের বাদ্যও আসলি না, অন্তঃপুরে মেয়েরা অত্যন্ত অসন্তোষ প্রকাশ করিতে লাগিলেন; কিন্তু মঙ্গল-আলোকে আমার শুভ উৎসব উজ্জ্বল হইয়া উঠলি।’
দুর্গাপুজোর বাজেট থেকে উৎসব-সমারোহের কিছু অঙ্গ ছেটে ত্রাণ তহবলি গড়ে অসহায় অত্যাচারতি রোহঙ্গিা উদ্বাস্তুদের পাশে দাঁড়ানোর চষ্টো করে বাংলাদেশের বহু দুর্গাপুজো কমিটি শুধু রবি ঠাকুররে মানবকি সত্তাকইে যর্থাথ শ্রদ্ধা র্অপণ করলনে না; মানবতার মঙ্গল-আলোকে দুর্গাপুজোর শুভ উৎসবকওে প্রকৃতই উজ্জ্বল করে তুললনে।
এই বঙ্গ তথা দেশ জুড়ে দুর্গাপুজো থেকে আরম্ভ করে বিভিন্ন উৎসব মাসাধকি কাল ধরে চলতে থাকবে। বাংলা ও ভারতের ধর্মপ্রাণ মানুষ ও সংগঠকরা বাংলাদেশের পুজো কমিটিগুলোর মতো কঞ্চিৎি ত্যাগস্বীকার করে অসহায় রোহিঙ্গা নিপীড়িতদের পাশে দাঁড়িয়ে শারদোৎসব ও অন্যান্য শুভ উৎসবকে মঙ্গল-আলোক দান করে উজ্জ্বল করে তুলতে পারনে না?”
দিলরুবা শাহানা, মেলবোর্ন
|