সাইফুর রহমান তারিক এর চারটি কবিতা
অবিনাশী প্রিয়া
পুড়েছি আমি তবু রয়েছি সাথে, পড়ার টেবিল কিংবা অবসরে। কখনও কাজের ফাঁকে অথবা কাজে, কিছু নেই তবু আছি তোমার সাথে।
তোমার কবিতায় কিংবা কবিতার খাতায়, লিখেছো যখন তুমি ডায়েরি-র পাতায়। দুরন্ত কৈশোর বা পড়ন্ত যৌবনে, ছিলাম তোমার সাথে প্রতিটি প্রহরে।
আমি অতি সাধারণ অবিনাশী প্রিয়া, জেগে রই সদাশয় তোমার হিয়ায় I
কবিতা
কবিতা মানে কিশোর বেলার শুধু শুধু-ই হাসি, কবিতা মানে আচমকা বলা নাবলা কথার রাশি।
কবিতা মানে হা ডু ডু আর দারিয়া বান্ধার স্মৃতি, কবিতা মানে শৈশবের সেই মায়া-মমতার প্রীতি।
কবিতা মানে বাবুই পাখির কিচিরমিচির শব্দ কবিতা মানে ঝিলের জলে ফুটে থাকা ঐ পদ্ম।
কবিতা মানে ধরণীর বুকে লাল সবুজের মেলা, কবিতা মানে দীঘির জলে ভাসাই কলার ভেলা।
কবিতা মানে আমার স্বদেশ, আমার মায়ের আঁচল কবিতা মানে পদ্ম পাতায় জমে থাকা শিশির জল।
কবিতা মানে প্রেয়সীর কথা, প্রেমিকের আর্তনাদ , কবিতা মানে দ্বিধা বা দ্বন্দ্ব, জীবনের ইতিহাস।
কবিতা মানে আবেগে গাঁথা হয়তো কোনো কল্প, কবিতা মানে সাহসী ছেলের মুক্তি যুদ্ধের গল্প।
প্রচেষ্টা
হঠাৎ সেদিন ঘুম থেকে জেগে দেখি সাতটা বাজতে নেই বেশী আর বাকি। অবেলায় যে কখন ঘুমিয়ে ছিলাম অনেক কাজ করার তখনও বাকি।
সপ্তাটা আসতেই চলে যায়, রোববার-টা আরো বেসামাল। সোমবার থেকে ছুটব আবার তেড়ে, কাজ জমবে ঘরে নতুন করে।
সপ্তাটা যায় কেমন জানি দ্রুত, ঘরের কাজ হয়না তেমন তত। গ্যারেজখানি বড়ই এলোমেলো, জানালায় ধূলি জমছে বেশ ভালই।
কখন আমি এসব কাজ করি? কাজের কাজ কিছুই নাহি পারি। আমার কি তাই কবিতা লিখা সাজে? চেষ্টা করি তবু মাঝে মাঝে।
রটনা
খেয়া ঘাটের বাঁশের ঝাড়ে ভূত চেপেছে ঐ, এই না শুনে ভয়ে সবাই ছুটছে দেখো কই? কেউবা দেখে এপাশ ওপাশ, এই বুঝি তাকে ধরলো, না দেখেই কেউ জ্ঞান হারালো, ছুটতে গিয়ে পড়ল।
খবর শুনে পত্রিকার লোক শ্মশান ঘাটে যায়, সারাদিন ঘুরে ফিরে সাক্ষী নাহি পায়। কে দেখেছে ভূতের মাথা, কে শুনেছে প্রথম? আদি অন্ত খুঁজে না পায় পত্রিকার সব আদম।
দুদিন আগের এমন খবর সারা দেশ-ই জানে, পত্রিকার সব সাংবাদিকরা উৎস খুঁজে ফেরে। দিনের শেষে খেয়ার মাঝি সাংবাদিকদের কয়, এমন যদি নাইবা হতো, নড়ছে কি - দেখেন ঐ?
সাইফুর রহমান তারিক, সিডনি
|