অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ রাজ্য সভায় উচ্চ-কক্ষের পদ-প্রার্থী প্রথম বাংলাদেশী-অস্ট্রেলিয়ান নারী
অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ রাজ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৩শে মার্চ, ২০১৯। অস্ট্রেলিয়ান লেবার পার্টির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে সাব্রিন ফারুকি উস্রি এই নির্বাচনে রাজ্য-সভার উচ্চ কক্ষের সদস্য পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। আমাদের জানা মতে এই প্রথম কোন বাংলাদেশি-অস্ট্রেলিয়ান নারী এই মনোনয়ন পেলেন। কেন্দ্রীয় সরকারের মত নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্য সরকারেরও রয়েছে দুই কক্ষ বিশিষ্ট সংসদ। উচ্চ কক্ষ (Legislative Council) এবং নিম্ন কক্ষ (Legislative Assembly).
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া শেষ করে ২০০৪ সালে উচ্চ শিক্ষার জন্য অস্ট্রেলিয়া আসেন সাব্রিন। ইউনিভার্সিটি অব নিউ সাউথ ওয়েলস মাস্টার্স শেষ করে সিডনি ইউনিভার্সিটির ফ্যাকাল্টি অব এডুকেশন থেকে পিএইচডি ডিগ্রী লাভ করেন তিনি। এ সময় “শ্রেষ্ঠ গবেষক শিক্ষার্থী পুরস্কার” পেয়েছিলেন তিনি। গবেষণার অংশ হিসেবে তিনি বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার নানা সমস্যা এবং সমাধান তার পিএইচডি থিসিস, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক জার্নাল এবং কনফারেন্সে তুলে ধরেন। সরকারি চাকুরীতে যোগ দেবার আগে সাব্রিন কিছুদিন সিডনি ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতার কাজ করেন। এ ছাড়াও অস্ট্রেলিয়ান বুরো অব স্টাটিসটিক্স এবং ফেয়ার ওয়ার্ক কমিশনেও কাজ করেছেন তিনি।
সাব্রিন নিউ সাউথ ওয়েলস লেবার পার্টির “অস্ট্রেলিয়া এন্ড দা ওয়ার্ল্ড পলিসি কমিটি” এর একজন সদস্য। “লেবার ফর এইড” এবং “লেবার ফর রিফিউজি” এর সদস্য হিসেবে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থী এবং রিফিউজিদের জন্য সুষ্ঠ নীতি প্রণয়নের পক্ষে সাব্রিন একজন একনিষ্ঠ কর্মী। রিফিউজি পুনর্বাসন একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক বিষয় বলে মনে করেন সাব্রিন। মানবিক দায়িত্ব এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য অস্ট্রেলিয়ার আন্তর্জাতিক ত্রাণ-সহযোগিতা বৃদ্ধির স্বপক্ষে তিনি একজন প্রবক্তা। “কমিউনিটি এবং পাবলিক সেক্টর ইউনিয়ন” এর ডেলিগেট হিসেবে ভাড়াটে শ্রমিক, খণ্ডকালিন চাকুরী এবং আউটসোর্সিং এর বিপক্ষে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন তিনি।
স্বামী খুরশিদ রহমান (বেসরকারি পেশায় নিয়োজিত), একটি ৮ বছর বয়েসী ছেলে এবং নিজের পেশা নিয়ে ব্যস্ত জীবনের পাশাপাশি সাব্রিন “শক্তি অস্ট্রেলিয়া”, “সেটেলমেন্ট সার্ভিসেস ইন্টারন্যাশনাল” এবং “সিতারা’স স্টোরি” এর মত সংগঠনের মাধ্যমে সমাজের সুবিধা বঞ্চিত মানুষের জন্য স্বেচ্ছা-সেবা মূলক কাজের সাথে জড়িত। এ ছাড়াও নারী উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন, পারিবারিক সহিংসতা এবং এর প্রতিরোধ ও এ বিষয়ে গণ-সচেতনতা বৃদ্ধির জন্যও স্বেচ্ছা-সেবা মূলক কাজ করে থাকেন সাব্রিন।
বহু-জাতী ও বহু-সংস্কৃতির দেশ অস্ট্রেলিয়ায় প্রতিটি অভিবাসী যেন সমতার ভিত্তিতে সামাজিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে তার অবদানের স্বীকৃতি পায় সেটাই সাব্রিনের রাজনৈতিক দর্শনের মূল ভিত্তি। সাব্রিন বাংলাদেশী-অস্ট্রেলিয়ান শিল্পীদের সৃজনশীল কর্মকাণ্ডে উৎসাহিত করার জন্য গঠিত বাংলা হাব নামে একটি সংগঠনের সাথে ঘনিষ্ঠ ভাবে জড়িত।
ব্যাংসটাউন এলাকায় সামাজিক অবদান রাখার জন্য আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০১৮ তে সাব্রিন ফারুকীকে “লোকাল ওম্যান অফ দা ইয়ার” পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।
|