আহমেদ সাবেরের ‘আমি নদী ও নীরা’ একটা চমৎকার আধা ভৌতিক অতৃপ্ত প্রেমের গল্প হতে পারত। কেন হয়নি তা বলছি।
নীরার প্রতি সুতীব্র আকর্ষণের পটভূমি লেখক নির্মাণ করতে পারেন নি। প্রথম দেখার পরে সম্পর্ক ছাড়া দীর্ঘ বিরতি সুতীব্র প্রেমের জন্ম কি করে দেয় এটা প্রশ্ন-সাপেক্ষ। বুবু জানায়, ‘‘নীরা যেতে বলেছে” তার পরেও লেখকের দিক থেকে উদ্যোগের অভাব, আর যাই হোক প্রেমের লক্ষ্মণ নয়। হুট করে আবার হাওড়ে উপস্থিত হওয়ার মাঝে গল্পকে নাটকীয় পরিণতির দিকে নিয়ে যাওয়ার একটা তাড়াহুড়ো ভাব লক্ষ্য করা যায়। নীরার উন্মাদ হয়ে যাওয়ার কারণ জানা হয়না। এ গল্পের শুরুটা আকর্ষণীয়, শেষ নাটকীয়তায় পূর্ণ, কিন্তু শরীর অস্পষ্ট। নীরার সাথে কিছু একটা যোগাযোগ, নীরার অন্য কারও সাথে বিয়ে হয়ে যাওয়া, পরে বিধবা হয়ে ফিরে আসা – এরকম কিছু ঘটনার মধ্য দিয়ে একটা অতৃপ্ত প্রেমের আবহ নির্মাণ করা যেত। গল্পের শেষটা তাহলে আরও আকর্ষণীয় হতে পারত - আমার মতে।
রূপকল্প তৈরিতে আহমেদ সাবেরের দক্ষতা প্রশংসনীয়। ‘‘জলের গায়ে আঁকিবুঁকি”, ‘‘ভয়ের উল্কি”, ‘‘রসিকতার ছোবলে নাস্তানাবুদ”, ‘‘দিনের আলো শুষে নেয় অদৃশ্য ব্লটিং পেপারে” – হাওড়ের জলজ পরিবেশের জন্য খুবই মানানসই রূপকল্প। তবে ‘‘ক্রিকেটের ষ্ট্যাম্পের মতো ছিন্ন ভিন্ন” শোনার পর আমরা হঠাৎ করে যেন হাওড় ছেড়ে মিরপুর ক্রিকেট স্টেডিয়ামে স্থানান্তরিত হই।
আহমেদ সাবেরের এ গল্পে হাওড়ের পটভূমি আকর্ষণীয়, তবে অতৃপ্তি থেকে যায়।
- ফারুক কাদের
|