কেউ কি বলতে পারো? রণেশ মৈত্র
কেউ কি বলতে পারো কখন নামে সন্ধ্যা? রাতের অন্ধকার? যখন সবাই হয়ে উঠি ঘরমুখী? বাইরের ব্যস্ততার শেষে?
বলতো কখন নামে সন্ধ্যা? যখন ভয় ভয় লাগে? গা ছিম ছিম করে? এখনতো সদাই তাহলে সন্ধ্যা কিংবা রাত্রি। ঘুটি ঘুটি অন্ধকার।
খবর এলো মৃত্যুর খবর নিকটজনের বিদায়ের খবর ছুটবো কি শেষ দেখাটা দেখতে? না, যাওয়া গেলোনা ভীতি বাদ সাধলো আতঙ্ক ঘিরে ধরল। একটি ঘৃণ্য কাপুরুষ যেন।
কবরস্থানের খবর কি? অনেক অনেক কবর? তার আগে জানাযা? না, জনমানব শূন্য জানাযা দেখি, শুধুই প্রিয়জনেরাই দাঁড়িয়ে অসহ্য এক দৃশ্য কোন দিন দেখিনি তো।
কাঁধে নয়- অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে গেল দেহ সমাধিস্থ হলো কি? না, তা জানবার অবকাশ নেই তাই শুধাই না কাউকেই; হয়, আবার হয়ও না নিজে দিব্যি থেকেছি নিজ ঘরে। তবে কি আমি স্বার্থপর? হবে হয়তো বা তাই।
কাঁধে শব নিয়ে শ্মশান যাত্রা কীর্তন আর হরিবোল! না, কোনটাই না- সব ফাঁকা শ্মশানবন্ধু? না। এলেন না কেউ খবর পেয়েও এলেন না আবারো সেই এম্বুলেন্স নিয়ে গেল দেহ অতঃপর? না, কিছুই জানা গেল না। শ্রাদ্ধ? না, তাও হবে না। মৎস্যমুখী? তাও না।
আচ্ছা, কবে আসবে সেদিন? যেদিন আমরা কবরস্থানে-শ্মশানে দলে বলে যাব যেদিন সূর্য উঠবে ফুল ফুটবে পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হবে আমাদের ভালোবাসার এই পৃথিবীটা?
আসবে, আসছে সেদিন আলোকোজ্জ্বল চারিদিক দু’চোখ ভরে দেখবো দেখব সবাই মিলে। এসো স্বাগত জানাই অনাগত সেই সুদিনটিকে। বরণ করি অগ্রিম বরণ ডালা দিয়ে।
সেদিন আমরা দল বেঁধে পার্কে যাব সিনেমা দেখব বাজারে গিয়ে সবজিটা মাছটা কিনব সভা-সমাবেশে যাব ছবি দেখব গান গাইব সমবেত কণ্ঠে? বক্তৃতা-ভাষণ? তাও দেব সেটি হবে নতুন বাংলাদেশ যার জন্য লড়েছি একাত্তুরে।
রণেশ মৈত্র, সিডনি, অস্ট্রেলিয়া
|