আমরা জীবিত, কিন্তু বেঁচে আছি কি! রিয়াজ হক
এ প্রশ্ন ছিল সেনেকার। কেবল জীবিত থাকাকে উনি বেঁচে থাকা বলতে চাননি। অজ্ঞতা, মূর্খতা, অসচেতনতা, বিভ্রান্তি সহ দেহ ও মনের নানা অসুস্থতা নিয়ে জীবিত থাকে বহু মানুষ। একে উনি বাঁচা বলতে চাননি। বাঁচা অর্থে তিনি এক অর্থপূর্ণ প্রজ্ঞাময় জীবনের কথা বলতে চেয়েছেন।
“অধিকাংশ মানুষ প্রকৃতি বা সৃষ্টির ব্যাপারে হৃদয়হীনতার অভিযোগ করে। কারণ আমাদের জীবনের আয়ু সীমিত। যে আয়ু আমাদের দেওয়া হয়ে থাকে কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া তা এত দ্রুত শেষ হয়ে যায় যে যখন আমরা ভালোভাবে বাঁচবার বিষয়ে কেবল মনোযোগী হতে শুরু করি তখনই জীবনের অবসান ঘটে। এ কেবল অজ্ঞ অশিক্ষিত আম জনতারই অভিযোগ নয়, এ অভিযোগ শিক্ষিত অভিজাত শ্রেণীরও। পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ চিকিৎসকের ভাষ্য মতে “জীবন সংক্ষিপ্ত, কর্ম বিশাল”। এরিস্টটল দুঃখ করে বলেছিলেন, প্রকৃতি কোন কোন প্রাণীকে মানুষের চেয়ে পাঁচ থেকে দশগুণ বেশি আয়ু দিয়েছে যাদের করার কিছুই নেই। মানুষের করার আছে বহু কিছু কিন্তু তাদের আয়ু কত কম! “ সেনেকা এই যুক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়ান ও জোরের সাথে বলেনঃ
“It's not that we have a short time to live, but that we waste much of it. Life is long enough, and it's been given to us in generous measure for accomplishing the greatest things, if the whole of it is well invested”
উপরের কথাগুলো সেনেকার “On the Shortness of Life” গ্রন্থের সূচনায় বলা আছে। কে এই সেনেকা!
সেনেকা; দার্শনিক, রাজনীতিবিদ ও লেখকঃ
সেনেকা, যার পূর্ণ নাম ছিল লুসিয়াস আনিয়ুস সেনেকা, খ্রিস্টপূর্ব ৪ সালে স্পেনের কর্দোভায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন একজন স্টোইক দার্শনিক, লেখক, নাট্যকার এবং রাজনীতিবিদ। স্টোইক দর্শনের মূল শিক্ষা হলো আত্মসংযম, যুক্তিবোধ ও অন্তরের শান্তি খুঁজে পাওয়া, এবং সেনেকা এই শিক্ষা তাঁর জীবন ও রচনায় গভীরভাবে প্রতিফলিত করেছেন।
সেনেকার বিশ্বাস ছিল, প্রকৃত সুখ বাহ্যিক সম্পদ বা ক্ষমতায় নয়, বরং অন্তরের প্রশান্তি ও নৈতিক জীবনে। তিনি শিখেছিলেন, জীবনের কষ্ট ও চ্যালেঞ্জের মাঝেও ধৈর্য ধরে এগিয়ে যেতে হবে। সময়ের সঠিক ব্যবহার তাঁর দর্শনের একটি প্রধান বিষয়, যা তিনি তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ “On the Shortness of Life”-এ স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। একইভাবে তাঁর “Letters to Lucilius” গ্রন্থে তিনি নৈতিকতা, মৃত্যুভয় এবং আত্মসংযম নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেছেন।
সেনেকার লেখা সহজ, স্পষ্ট এবং গভীর অর্থবহ। তিনি বলতেন, মৃত্যু জীবনের স্বাভাবিক অংশ, এবং যে ব্যক্তি মৃত্যুকে ভয় পায় না, সে-ই প্রকৃত স্বাধীনতা অনুভব করে। তাঁর দর্শনে জ্ঞান ও নৈতিকতার মেলবন্ধন ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তিনি বিশ্বাস করতেন নৈতিকতার বাইরে জ্ঞান অর্থহীন।
রাজনীতির অস্থির সময়ে সেনেকার জীবন নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়েছিল। তিনি সম্রাট নিরোর উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করলেও পরে নিরোর রোষানলে পড়েন এবং ৬৫ খ্রিস্টাব্দে তাঁকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করা হয়। মৃত্যুর মুহূর্তেও তাঁর শান্ত, স্থির ও মর্যাদাপূর্ণ আচরণ তাঁকে এক সত্যিকারের স্টোইক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
সেনেকার চিন্তাধারা আজও সমান প্রাসঙ্গিক। তাঁর লেখা মানুষকে আত্মচিন্তা, আত্মসংযম এবং অন্তরের শান্তির পথে পরিচালিত করে। আধুনিক দার্শনিক, লেখক এবং পাঠকরা এখনও তাঁর শিক্ষা থেকে প্রেরণা পান। ক্ষণস্থায়ী আনন্দের বদলে স্থায়ী প্রশান্তির ওপর তাঁর গুরুত্ব আরোপ জীবনকে নতুনভাবে ভাবতে শেখায়।তাঁর দর্শন যেমন সহজ, তেমনি বাস্তব জীবনে কার্যকর। তাই সেনেকা শুধু প্রাচীন রোমের দার্শনিক নন; তিনি মানবতার এক চিরন্তন শিক্ষক, যার চিন্তাধারা যুগ যুগ ধরে মানুষকে পথ দেখিয়ে চলেছে।
সেনেকার “On the Shortness of Life” গ্রন্থ সময় ও জীবনের এক গভীর দর্শনের মনোমুগ্ধকর আলোচনাঃ
সেনেকা, স্টোইক দর্শনের অন্যতম প্রধান মুখ হিসেবে পরিচিত, তাঁর বিখ্যাত প্রবন্ধ “On the Shortness of Life” (De Brevitate Vitae)-এ জীবনের প্রকৃতি, সময়ের সঠিক ব্যবহার এবং প্রকৃত অর্থে বাঁচার উপায় নিয়ে গভীর বিশ্লেষণ করেছেন। এই প্রবন্ধটি তিনি তাঁর বন্ধু পলিনাসকে উৎসর্গ করেছিলেন, যার জীবনের বেশিরভাগ সময় দাপ্তরিক ব্যস্ততায় কাটছিল। সেনেকা চেয়েছিলেন তাঁকে বোঝাতে যে জীবনের সত্যিকার ক্ষুদ্রতা সময়ের সীমাবদ্ধতার কারণে নয়, বরং মানুষের অদক্ষ ব্যবহার ও অজ্ঞতার কারণে। যেমন তিনি বলছেনঃ “Many who have no consistent goal in life are thrown from one new design to another by a fickleness that is shifting, never settled and ever dissatisfied with itself. Some have no goal at all toward which to steer their course, but death takes them by surprise as they gape and yawn.”
সময়ের অপচয় এবং জীবনের বিভ্রান্তিঃ
সেনেকা মনে করতেন, বেশিরভাগ মানুষ সময়ের প্রকৃত মূল্য বোঝে না। তারা সম্পদ রক্ষা করতে যতটা সতর্ক হয়, সময়ের ক্ষেত্রে ততটা যত্নবান হয় না। অথচ অর্থ হারালে তা পুনরুদ্ধার করা যায়, কিন্তু সময় একবার চলে গেলে তা আর ফিরে আসে না। তাঁর মতে, মানুষের সবচেয়ে বড় বিভ্রম হলো—তারা মনে করে জীবন অবারিত, তাই অমূল্য মুহূর্তগুলো অপচয় করতে দ্বিধা করে না।যেমন তিনি বলছেনঃ “The life we are given isn't short but we make it so; we're not ill provided but we are wasteful oflife. Just as impressive and princely wealth is squandered in an instant when it passes into the hands of a poor manager”
তাঁর চোখে সময় অপচয়ের মূল উৎস হলো—যুক্তিহীন অবিরাম ব্যস্ততা, ভারসাম্যহীন সামাজিক দায়িত্ব, বিলাসিতা, লোভ, ক্ষমতার পেছনে অন্ধ দৌড় এবং ভবিষ্যতের মোহে বর্তমানকে বিসর্জন দেওয়া। মানুষ ভবিষ্যতের জন্য বাঁচতে গিয়ে বর্তমান হারিয়ে ফেলে; অথচ ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত, আর বর্তমানই একমাত্র নিশ্চিত সময়।
অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের দর্শনঃ
সেনেকার বিশ্লেষণ অনুযায়ী, জীবনকে বোঝার জন্য তিনটি সময়কে আলাদা করে দেখা প্রয়োজন—অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ। অতীত (The Past) • সেনেকার মতে, অতীত হারিয়ে যায়নি, বরং এটি আমাদের কাছে সঞ্চিত সম্পদের মতো থাকে। • অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে আমরা শিক্ষা নিতে পারি এবং বাকি জীবনে তা কাজে লাগাতে পারি। • তবে অতীতে আটকে থাকা অর্থহীন—আফসোস বা অনুশোচনায় সময় নষ্ট করলে বর্তমানও হাতছাড়া হয়। • সঠিকভাবে ব্যবহার করলে অতীত মানুষকে প্রজ্ঞা ও স্থিরতা দেয়। বর্তমান (The Present) • বর্তমানই একমাত্র সময় যা আমাদের হাতে রয়েছে। • কিন্তু বেশিরভাগ মানুষ এই বর্তমান মুহূর্তকে হারিয়ে ফেলে—অযথা ব্যস্ততায়, ভবিষ্যতের ভয়ে বা অতীতের স্মৃতিতে। • সেনেকা বলেন, যে ব্যক্তি বর্তমানকে সচেতনভাবে ব্যবহার করে, সে-ই প্রকৃত ভাবে বাঁচতে পারে। • তিনি লেখেন, “বর্তমান এত ছোট যে, যদি তা আঁকড়ে না ধরা হয়, মুহূর্তেই হারিয়ে যায়।” ভবিষ্যৎ (The Future) • ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত এবং কারও নিয়ন্ত্রণে নেই—এটি সেনেকার মূল শিক্ষা। • তিনি মনে করতেন, মানুষ যত বেশি ভবিষ্যতের জন্য পরিকল্পনা করে বা দুশ্চিন্তা করে, তত বেশি বর্তমান নষ্ট হয়। • ভবিষ্যতের প্রতি অতিরিক্ত আসক্তি মানুষকে অস্থির করে তোলে এবং তাকে জীবনের প্রকৃত আনন্দ থেকে বঞ্চিত করে। এই বিশ্লেষণ থেকেই তাঁর উপদেশ ছিল—বর্তমান মুহূর্তে পূর্ণ চেতনা ও লক্ষ্য নিয়ে বাঁচা।
ব্যস্ততা বনাম প্রজ্ঞার জীবনঃ
সেনেকা জীবনের এক বিশাল সমস্যার কথা বলেছেন—“অর্থহীন ব্যস্ততা” বা busy idleness। তিনি দেখিয়েছেন, অনেক মানুষ সারাদিন নানা কাজে ব্যস্ত থাকলেও, সেই কাজগুলো প্রকৃত অর্থে মূল্যহীন। তাঁরা কেবল অন্যের স্বীকৃতি বা সাময়িক লাভের জন্য কাজ করে, কিন্তু আত্মাকে সমৃদ্ধ করে এমন কিছু করে না। তিনি এক জায়গায় তির্যকভাবে বলেন, “তোমরা মনে করো তোমরা বেঁচে আছ, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তোমরা কেবল অস্তিত্ব টেনে নিচ্ছ।” জীবনের প্রকৃত উদ্দেশ্য খুঁজে না পেলে এই ব্যস্ততা মানুষকে ভেতর থেকে শূন্য করে দেয়। তার লেখা থেকে উদ্ধৃতি দেওয়া যায়ঃ “Even the leisure of some men is engrossed; in their villa or on their couch, in the midst of solitude, although they have withdrawn from all others, they are themselves the source of their own worry; we should say that these are living, not in leisure, but in busy idleness.” প্রজ্ঞার জীবন, সেনেকার মতে, ব্যস্ত জীবনের বিপরীতে দাঁড় করানো যায়। প্রজ্ঞা হলো নিজের সময়কে নিজের নিয়ন্ত্রণে আনা, অপ্রয়োজনীয় কাজ বাদ দিয়ে আত্মবিকাশ, জ্ঞানচর্চা ও নৈতিকতায় সময় বিনিয়োগ করা।
জীবনে দার্শনিকতার ভূমিকাঃ
স্টোইক দর্শনের প্রভাবেই সেনেকা মনে করতেন যে দার্শনিকতা জীবনের মান উন্নত করার মূল চাবিকাঠি। তাঁর মতে, দার্শনিকতার চর্চা কেবল কিছু বই পড়া নয়; এটি হলো নিজের জীবনকে বোঝা, সঠিকভাবে বাঁচার কৌশল শেখা এবং নৈতিকতা অর্জন করা।
তিনি লিখেছিলেন, “যে মানুষ জ্ঞানচর্চায় সময় ব্যয় করে, সে প্রকৃত অর্থে বাঁচে।” এই জীবনযাপন মানুষকে বর্তমানকে উপলব্ধি করতে সাহায্য করে, অযথা ভবিষ্যতের ভয় থেকে মুক্ত করে এবং অন্তরের প্রশান্তি আনে।
মৃত্যুকে স্বাভাবিকভাবে গ্রহণঃ
সেনেকার দর্শনের অন্যতম বড় শিক্ষা হলো—মৃত্যুকে জীবনের স্বাভাবিক অংশ হিসেবে দেখা। তাঁর মতে, মৃত্যুকে ভয় করা মানে প্রকৃত স্বাধীনতাকে অস্বীকার করা। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি মৃত্যুকে স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করতে শেখে, সে জীবনের ক্ষণস্থায়ীত্ব নিয়ে আর অস্থির হয় না। বরং সে প্রতিটি মুহূর্তকে অর্থবহ করে তুলতে মনোনিবেশ করে। তার মতেঃ “You are living as if destined to live forever; your own frailty never occurs to you... As if you had an abundance of time, you squander it on nothing.” “Death is not an evil; for it only happens once, and it must happen.”
মানব জীবনের ভুল অগ্রাধিকারঃ
সেনেকা মানুষকে প্রশ্ন করেন—তারা কি সত্যিই জানে কীভাবে বাঁচতে হয়? তিনি মনে করতেন, অধিকাংশ মানুষ বাঁচার শিল্পে অজ্ঞ। তারা ধন, খ্যাতি বা ক্ষমতার পেছনে দৌড়ায়, অথচ নিজের মনের শান্তি ও আত্মিক বিকাশের দিকে মনোযোগ দেয় না। তিনি এক জায়গায় উল্লেখ করেছেন, “মানুষ অন্যদের খারাপ ব্যবহারে ক্ষুব্ধ হয়, অথচ নিজের সময় নষ্ট করে তাতে কোনো কষ্ট পায় না।” এই অদ্ভুত মানসিকতার কারণেই মানুষ জীবনের প্রকৃত মর্ম অনুধাবন করতে ব্যর্থ হয়।
সময়কে অর্থবহ করার উপায়ঃ
সেনেকার মতে, সময়কে অর্থবহ করার জন্য প্রয়োজন— ১. আত্ম-অনুসন্ধান: প্রতিদিন কিছু সময় নিজের সঙ্গে কাটানো, নিজের ইচ্ছা ও লক্ষ্য বোঝা। ২. জ্ঞানচর্চা: বই পড়া, চিন্তাশীল আলোচনায় অংশ নেওয়া এবং নিজের মননকে প্রসারিত করা। ৩. নৈতিক জীবন: অন্যদের সঙ্গে সৎ ও ন্যায়নিষ্ঠ আচরণ করা এবং নিজের অন্তরের সঙ্গে সৎ থাকা। ৪. বর্তমানে বাঁচা: ভবিষ্যতের ভয় বা অতীতের আফসোসে না থেকে বর্তমানকে ন্যায়সঙ্গত ভাবে ব্যবহার করা। ৫. অপ্রয়োজনীয় কাজ বাদ দেওয়া: যেসব কাজ কেবল সময় নষ্ট করে, সেগুলো থেকে দ্রুত সরে আসা।
আধুনিক জীবনে সেনেকার প্রাসঙ্গিকতাঃ
প্রায় দুই হাজার বছর আগে লেখা হলেও সেনেকার এই শিক্ষা আজও সমান প্রাসঙ্গিক। আজকের দ্রুতগতির বিশ্বে আমরা সবাই ব্যস্ত, কিন্তু প্রায়ই উপলব্ধি করি যে এই ব্যস্ততাই আমাদের জীবনের আসল মানে কেড়ে নিচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ-মাধ্যম, অনর্থক প্রতিযোগিতা, ভোগবিলাস—সবই সময়ের অপচয় বাড়াচ্ছে, কিন্তু জীবনে সন্তুষ্টি আনতে পারছে না। সেনেকার পরামর্শ হলো—সময়কে এমন কাজে বিনিয়োগ করা যা আমাদের মনন, নৈতিকতা এবং সম্পর্ককে সমৃদ্ধ করে। আজকের প্রেক্ষাপটে তাঁর শিক্ষা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, জীবনের মান নির্ধারিত হয় সময়ের সঠিক ব্যবহারে, এটা না যে কতটা সময় ধরে আমরা জীবিত আছি। যেমন সেনেকা বলছেনঃ “Life is long if you know how to use it.”
গ্রন্থের মূল শিক্ষাঃ
১. জীবন নিজে সংক্ষিপ্ত নয়; সময়ের অপচয়ই তাকে সংক্ষিপ্ত করে তোলে। ২. ভবিষ্যতের জন্য বর্তমানকে বিসর্জন দেওয়া বোকামি। কারণ বর্তমানের উপরই রচিত হয় ভবিষ্যৎ। ৩. জ্ঞানচর্চা ও নৈতিক জীবনের মধ্য দিয়েই সময়কে অর্থবহ করা সম্ভব। ৪. মৃত্যুকে স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করলে জীবনের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি বদলে যায়। ৫. অর্থহীন ব্যস্ততা বাদ দিয়ে সচেতনভাবে বাঁচাই প্রকৃত মুক্তি।
সেনেকার “On the Shortness of Life” কেবল একটি দার্শনিক প্রবন্ধ নয়; এটি জীবনের প্রতিটি স্তরে প্রযোজ্য এক বাস্তব নির্দেশিকা। তিনি আমাদের মনে করিয়ে দেন যে সময়ই আমাদের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ, এবং সেটিকে সচেতনভাবে ব্যবহার করলেই জীবন দীর্ঘ ও অর্থবহ হয়ে ওঠে।
 রিয়াজ হক, সিডনি, অস্ট্রেলিয়া Jsfn21@gmail.com
|