bangla-sydney
bangla-sydney.com
News and views of Bangladeshi community in Australia













দুঃস্বপ্নের খণ্ডচিত্র - (৩)
অধ্যাপক মোহাম্মদ আবদুর রাযযাক



দিল্লীতে মার্ক টালি
নুতন ভাড়া করা বাসায় উঠতে তখনো প্রায় মাসখানেক বাকি। এর মধ্যেই বাড়িটাকে বসবাস করার উপযোগী করে তুলতে কিছু অত্যাবশ্যকীয় কেনাকাটা করা প্রয়োজন। আমেরিকায় ছাত্র থাকাকালীন সময়ে কষ্ট করে হলেও পয়সা বাঁচিয়ে একটা গাড়ি, ফ্রিজ, টেলিভিশন, এবং রেডিওগ্রাম সহ বেশ কিছু সখের কেনা কাটা করেছিলাম। দেশে বিরাজমান এই অস্থির পরিস্থিতির মধ্যেও কেমন করে যেন ফ্রিজ এবং টেলিভিশনটি আমার হাতে অক্ষত অবস্থায় এসে পৌঁছেছে। কিন্তু আমার রেডিওগ্রামটি আর আমার কাছে পৌঁছেনি। রেডিওগ্রাম বহনকারী চট্টগ্রাম-গামী জাহাজটিকে করাচীতে সব মালামাল খালাস করতে বাধ্য করা হয় এবং আমার রেডিওগ্রামটি লাপাত্তা হয়ে যায়। আমার গাড়িটিকে মালয়েশিয়ার পেনাং বন্দরে offload করা হয়েছে বলে আমাকে জানানো হয় এবং কিভাবে সেটাকে দেশে আনা যাবে সে বিষয়ে পেনাং বন্দর কর্তৃপক্ষ আমাকে অবহিত করেন। তবে এটা বুঝতে পারি যে আগস্ট মাসের আগে গাড়ি পাওয়ার আশা না করাই ভাল। যাইহোক, বাসায় উঠতে হলে তো খাট, চেয়ার টেবিল, হাড়ি-পাতিল, বাসন, শিল-নোড়া ইত্যাদি অনেক কিছুই দরকার। রোজ সকালে চা-নাস্তা সেরে এসব জিনিস কেনার জন্য বাজারে যাই, আর দুপুর গড়িয়ে যাবার আগেই বাসায় ফিরে আসি। তারপর অখণ্ড অবসর। বাড়ীর পাশেই মসজিদ। কখনও বা বাড়ির অন্যান্য পুরুষ মানুষদের সাথে সে মসজিদে নামাজ পড়তে যাই।

এপ্রিল মাসের একেবারের শেষের দিকে, সম্ভবতঃ ২৯ বা ৩০ তারিখে, আসরের নামাজ শেষে বাসায় ফিরে দেখি আমার এক চাচী-শ্বাশুরীর ভাইকে নিয়ে বাসার সবাই খুব ব্যস্ত। ভদ্রলোক তাদের বাসা মগবাজার থেকে কোন কাজে আজিমপুর বোনের বাসায় আসছিলেন। তার বাস নিউমার্কেটের কাছে আসতেই হঠাৎ হৈ চৈ ওঠে যে মিরপুর এবং মোহাম্মদপুরের বিহারীরা নাকি বাঙ্গালীদের বাস থেকে নামিয়ে নামিয়ে খুন করছে! এ’কথা শুনে যে যেভাবে পারে বাস থেকে নেমে এদিক-সেদিক পালিয়ে যায়। ঘণ্টা দু’য়েক আগে আমি যখন নিউ-মার্কেট এবং নীলক্ষেত এলাকায় তোষক কিনতে গিয়েছিলাম, তখন অবশ্য এ ধরণের কোন ঘটনার কথা শুনিনি। কিন্তু ঘটনাটা যদি সত্যি হয় তবে তা অবশ্যই ঘাবড়ানোর মত। যাইহোক, রাতের বেলায় আসল খবরটা জানা গেল। বিহারীদের বাঙালী নিধনের ঘটনাটা সত্যি, তবে ঘটনার স্থানটি নিউমার্কেট নয়, মিরপুর ব্রিজ। এই ব্রিজের কাছে বড় রাস্তায় বিহারীরা ঢাকা থেকে পাবনা-গামী একটি মিনিবাসকে থামিয়ে ভিতরের গলিতে নিয়ে যায়। সে বাসের মাত্র দু’জন সবে মক্কা-ফেরত হাজী সাহেবকে বাদ দিয়ে বাকী সব যাত্রীকে তারা নামায় এবং তাদেরকে রাম দা, চাপাতি, ছুরি, কুড়াল ইত্যাদি দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে। কিছু লাশ তারা ওখানেই ফেলে রাখে এবং কিছু লাশ ব্রিজের উপর থেকে নদীতে ফেলে দিয়ে তারা মিনিবাসটা নিয়ে সেখান থেকে চলে যায়। কেমন করে যেন বাসের চালকটি বাসের তলায় লুকিয়ে পড়তে সমর্থ হয় এবং পুরো ঘটনাটা দেখতে পায়। খুনি বিহারীরা সেখান থেকে চলে যাওয়ার পর সে কোনমতে কমলাপুর বাস ডিপোতে গিয়ে সবাইকে এই খবর দেয় এবং খবরটি সারা শহরে রটে যায়।

দিনের বেলাটা কোনমতে কেটে গেলেও রাতটা আর কাটে না। রাতের খাবার দাবার শেষ করে বিভিন্ন দেশের রেডিও শোনার চেষ্টা করি। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কিছু একটা সমস্যা হয়েছে বলে মনে হয় – কদাচিৎ কখনো কিছুক্ষণের জন্য শোনা গেলেও অধিকাংশ দিনই সম্প্রচার শুনতে পাওয়া যায়না। খবরের জন্য আকাশবাণী, আর BBC ই ভরসা, মাঝে মাঝে অবশ্য ভয়েস অফ আমেরিকা (VOA) শোনা যায়। আকাশবাণীর সংবাদ পাঠক দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত BBC র দক্ষিণ এশিয়া-বিষয়ক সংবাদদাতা মার্ক টালি ও ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের উত্তাল দিনগুলোতে অবরুদ্ধ বাংলাদেশের মানুষদের জন্য এক আশার আলোকবর্তিকা। বাংলাদেশের পক্ষে বিশ্ব জনমত গঠনে তার ভূমিকা ছিল অনন্য। BBC রেডিওতে কান পেতে সকাল-সন্ধ্যা মার্ক টালির কণ্ঠ শোনার অপেক্ষায় থাকত সারা বাংলাদেশের মুক্তিকামী মানুষ। এই সব রেডিওতে প্রচারিত অনুষ্ঠান সমূহ এবং সেই সঙ্গে পাকিস্তানি রেডিওর গোয়েবলসীয় সম্প্রচার বিচার বিবেচনা করে আমাদের এই মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে দেশের এবং বাইরের পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সরকার এবং জনগণ কি ভাবছে সে সম্বন্ধে কিছুটা অনুমান করা যেত। এই বিবেচনা থেকেই এপ্রিল এবং মে মাসে বেশ কিছু মন খারাপ-করা ঘটনা জানা যায়। পাকিস্তান সরকারের বেশ কিছু বাঙ্গালী দালাল স্বরূপে আত্মপ্রকাশ করে। বাংলার স্বনামধন্য, জনপ্রিয় নেতা, পাকিস্তানের এক সময়ের প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মেয়ে বেগম আখতার সোলায়মান করাচীতে পাকিস্তানী সামরিক জান্তার পক্ষে এক বিবৃতিতে বলেন, পূর্ব পাকিস্তানে সামরিক অভিযান চালানো ছাড়া পাকিস্তান সরকারের আর কোনো বিকল্প ছিল না। তারই কথার প্রতিধ্বনি শোনা যায় পূর্ব পাকিস্তানের এক প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী মফিজ উদ্দিন আহমদ, মুসলিম লীগ নেতা খান এ সবুর এবং আরো বেশ কিছু রাজনৈতিক নেতার কণ্ঠে। তারা আলাদা আলাদা বিবৃতির মাধ্যমে পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করতে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের প্রতি আহ্বান জানান। আরো অবাক করা ব্যাপার ছিল মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকায় বেশ কিছু অধ্যাপক, শিক্ষক, লেখক, শিল্পী ও সাংবাদিক দেয়া একটি যুক্ত বিবৃতি। এই বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী বুদ্ধিজীবীদের বক্তব্য ছিল নির্বাচনে জনগণের কাছ থেকে প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন আদায়ের ম্যান্ডেট পেয়ে দেশের চরমপন্থিরা মার্চ মাসে দেশের প্রতিষ্ঠিত বৈধ সরকারকে অমান্য করে একতরফা স্বাধীনতা ঘোষণার যে দাবি করেছিল তা ছিল অযৌক্তিক। এই ব্যাপারটা, তখনো গায়ে-গতরে ছাত্রত্বের গন্ধ লেগে থাকা হবু-বুদ্ধিজীবী, আমার কাছে খুব লজ্জার ব্যাপার বলে মনে হয়েছিল। অবশ্য একই সাথে এটাও মনে হয়েছিল যে নিশ্চয়ই তাদের পিঠে বন্দুক ঠেকিয়ে তাদেরকে এ বিবৃতি দিতে বাধ্য করা হয়েছিল। কারণ মাঝে মাঝেই টেলিভিশনে দেশের বরেণ্য মানুষদেরকে বিচিত্র সব বিষয় নিয়ে কথা বলতে শোনা গেছে।

তবে সে সময়ে আমার কাছে যে ঘটনাটা সবচেয়ে খারাপ লেগেছিল তা হোল আলজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট হুয়েরি বুমেদিনের পাকিস্তান সরকারের গণহত্যা সমর্থন। এপ্রিলের শেষের দিকে এক সন্ধ্যায় রেডিও পাকিস্তানের এক সংবাদ বুলেটিনে জানা গেল যে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের কাছে পাঠানো এক বার্তায় বুমেদিন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কার্যক্রমের প্রতি তাঁর সমর্থনের কথা জানিয়েছেন। আলজেরিয়ায় জাতীয় মুক্তি-ফ্রন্টের নেতৃত্বে ১৯৫৪ সালে আলজেরিয়ায় স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়। সে যুদ্ধে দেশটির লাখ লাখ নাগরিক নিহত হয় এবং প্রায় ২০ লাখেরও বেশি মানুষ ভিটেমাটি হারিয়ে বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়ে। ১৯৬২ সালে অনেক ত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে ১৩২ বছরের ফরাসি উপনিবেশ (১৮৩০-১৯৬২) আলজেরিয়া স্বাধীনতা অর্জন করে। হুয়ারি বুমেদিন ছিলেন আলজেরিয়ার মুক্তি-ফ্রন্টের অন্যতম প্রধান নেতা এবং দেশটির প্রথম প্রেসিডেন্ট আহমেদ বেনবেল্লা্র সহযোদ্ধা এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রী। বেনবেল্লা আলজেরিয়াকে সমাজতান্ত্রিক শাসনের দিকে এগিয়ে নিয়েছিলেন। পরে এক অভ্যুত্থানে হুয়ারি বুমেদিন বেনবেল্লাকে ক্ষমতাচ্যুত করলেও বেনবেল্লার রাষ্ট্রনীতি অব্যাহত রাখেন। বুমেদিনের এহেন ব্যবহার বিশ্বাস করা খুব সহজ ছিল না। এর আগে মার্চের, শেষ এবং এপ্রিলের শুরুতেই মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, তুরস্ক, লিবিয়া, ইয়েমেন এবং এপ্রিলের শেষ দিকে সউদি আরব পাকিস্তানের কর্মকাণ্ডে সমর্থন জানায়। এর কিছুদিন পরেই বিশ্ব মুসলিম কংগ্রেস পাকিস্তানের স্বাধীনতা ও ঐক্যের বিরুদ্ধে ভারতের উসকানিমূলক তৎপরতার প্রতিবাদ করে। তবে এ সব প্রতিবাদে অবাক হওয়ার মত তেমন একটা কিছু ছিলনা। কোন মুসলিম রাষ্ট্রই চায় নাই তদানীন্তন বিশ্বের বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্র পাকিস্তান ভেঙ্গে যাক। ইরান বা জর্ডানের স্বৈরতান্ত্রিক রাজা-বাদশাহরা তা চাইতেই পারে, কিন্তু আলজেরিয়া, প্যালেস্টাইন বা ইন্দোনেশিয়ার সরকারের কণ্ঠেও সেই একই সুর শোনাটা সেই দুঃস্বপ্নের দিনগুলোতে খুব কষ্টকর ছিল। মিসর এবং ইরাক ব্যতীত বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকে সমর্থন করেছে এমন কোন মুসলিম এবং আরব রাষ্ট্রগুলোর কথা আমি মনে করতে পারছি না।

আর মুসলিম দেশগুলোর ব্যবহারে মন খারাপ করে কি লাভ। গণতন্ত্র আর মানবাধিকারের ধ্বজাধারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র কিংবা চেয়ারম্যান মাও সে তুং এর গণপ্রজাতন্ত্রী চীনদেশের সরকার ও তো গণহত্যাকারী নৃশংস পাকিস্তানী সামরিক জান্তা সরকারকেই সমর্থন করে গেছে বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পরেও বেশ দীর্ঘ সময় পর্যন্ত। তবে চীনের সরকারি ভূমিকা যাই হোক না কেন, চীনের সাধারণ জনগণ কিন্তু ইয়াহিয়াকে মনে করেছে আরেক চেঙ্গিস খান। আর ঠিক তেমনি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নিক্সন এবং তার সরকার যাই বলুক না কেন সে দেশের প্রধানতম পত্রিকাগুলো কিন্তু পরিষ্কার ভাবে লিখেছে যে যুক্তরাষ্ট্র সরকার ও পাকিস্তানি গণহত্যা এবং বাঙালী নিধনের জন্য বহুলাংশে দায়ী, কেননা আমেরিকার দেয়া অস্ত্রেই পূর্ব পাকিস্তানিদের খুন করা হচ্ছে।

আমার যতদূর মনে পরে ভারতবর্ষ আর সোভিয়েত রাশিয়া ছাড়া অন্যান্য যেসব দেশ বাংলাদেশের সমর্থনে প্রথম দিকেই এগিয়ে আসে তারা হচ্ছে নেপাল্ এবং ভুটান। যুক্তরাজ্য মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের বন্ধুর ভূমিকা পালন করে; ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্যরাও বাঙ্গালীর স্বাধীনতার এই সংগ্রামকে বেশ জোরালো ভাবে সমর্থন জানান। পৃথিবীর আরো বিভিন্ন দেশ এবং সরকার প্রধান যারা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে সমর্থন করছিলেন তাদের মধ্যে রয়েছে তৎকালীন সমাজতান্ত্রিক দেশ কিউবা, যুগোস্লাভিয়া, পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি, বুলগেরিয়া, চেকোস্লোভাকিয়া, এবং পূর্ব জার্মানি। পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে অস্ট্রেলিয়া, পশ্চিম জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, জাপান ও কানাডার প্রচার মাধ্যমগুলো পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে বিশ্ব জনমত সৃষ্টিতে সাহায্য করে। এপ্রিল মাসের শেষ দিকে অস্ট্রেলিয়ার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী উইলিয়াম ম্যাকম্যান বাংলাদেশের নিরীহ জনগণের প্রাণহানির বন্ধ করার জন্য এবং সেই সাথে পাকিস্তানের সংসদে নির্বাচনে জয়ী আওয়ামী লীগের নেতাদের পূর্ণ ক্ষমতা দেওয়া প্রতি আবেদন জানান।

সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে এই যে পাকিস্তানি বাহিনীর রক্তচক্ষুর ভেতর দিয়েও মুক্তিযুদ্ধ আর গণহত্যার সমস্ত খবর বিশ্বময় পৌঁছে যায় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিদেশি পর্যবেক্ষক, সাহসী সাংবাদিক এবং তাদের পত্রিকা এবং টেলিভিশনের মাধ্যমে। তাদের নিরপেক্ষ ও নির্মোহ ভাবে লেখা প্রতিবেদন থেকে বিশ্ববাসীর কাছে পরিষ্কার হয়ে যায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নৃশংসতা এবং নির্মমতার কথা। সারা পৃথিবীর জনমত চলে আসে বাঙালিদের পক্ষে।

মে মাসের প্রথম সপ্তাহে, সম্ভবতঃ ৭ বা ৮ ই মে ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে ভোর সাড়ে ৪টা থেকে দুই দিনের জন্য ঢাকা শহরের সান্ধ্য আইন তুলে নেওয়া হয়। অত্যন্ত আড়ম্বর এবং জাঁকজমকের সাথে সারারাত ধরে হামদ, নাত, ওয়াজ, নসিহত এবং দোয়া-দরুদ পাঠ করে দিনটি পালন করা হয়। কিন্তু মসজিদে মানুষের কোন ভিড়ই ছিলনা বলা যায়। তবে সান্ধ্য আইন না থাকায় এই দিনটিতে মানুষের মনে কিছুটা স্বস্তি ছিল। কিন্তু পরদিন থেকেই আবার সেই ভীতিপ্রদ দিন আর ঘুমহীন, ভয়-জাগানো রাত। তবে মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে দেশে এক নতুন পরিস্থিতির সূচনা হোল। রাজধানী ঢাকা এবং পাশের শহর নারায়ণগঞ্জে দুই জায়গায় হ্যান্ড-গ্রেনেড ছোড়ার মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধারা দেশের কেন্দ্রস্থলে, পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর নাকের ডগায় তাদের উপস্থিতির জানান দিল। এর প্রতিক্রিয়া হিসেবে সামরিক কর্তৃপক্ষ বেশ কিছু লোককে গ্রেপ্তার করে, কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ যে কেবল ভারতীয় মিথ্যাচার নয়, এই ঘটনা থেকে দেশের মানুষ তা খুব ভালভাবে বুঝতে পারল। (চলবে)




মোহাম্মদ আবদুর রাযযাক, সিডনি





Share on Facebook               Home Page             Published on: 5-Dec-2021

Coming Events: