bangla-sydney













বসন্ত বিকেলে আমরাঃ এহসান আহমেদের একক সঙ্গীতানুষ্ঠান
মোহাম্মদ আবদুর রাযযাক


গত ২৬ আগস্ট সিডনির ক্যাসুলা পাওয়ার হাউজ অডিটোরিয়াম একটি ভিন্ন স্বাদের সঙ্গীতানুষ্ঠানের সাক্ষী হল। এই মঞ্চে অনুষ্ঠিত হল সিডনির বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী এহসান আহমেদের সম্পূর্ণ নতুন ধারার একক সঙ্গীতানুষ্ঠান 'বসন্ত বিকেলে আমরা'। সিডনির স্থানীয় সঙ্গীত সংগঠন গানপোকা আয়োজিত প্রায় পৌনে চার ঘন্টার এই সঙ্গীতানুষ্ঠানটিতে শিল্পী এহসান আহমেদ অনুষ্ঠান বিভিন্ন প্রজন্মের সকল শ্রেণীর দর্শক শ্রোতাদের এককথায় মন্ত্রমুগ্ধ করে রেখেছিলেন। এই শহরে অনুষ্ঠিত স্থানীয় শিল্পীদের সব গানের অনুষ্ঠান দেখি বা দেখেছি এই দাবী আমি করব না, তবে সিডনিতে আমার প্রায় আড়াই যুগ অবস্থানের ইতিহাসে স্থানীয় কোন শিল্পীর একক পরিবেশনায় এতো বৈচিত্র্যময় এবং মনোমুগ্ধকর অনুষ্ঠান আমি দেখেছি বলে মনে করতে পারছি না।

কানায় কানায় পূর্ণ অডিটোরিয়ামে সন্ধ্যে সাড়ে ছ’টায় অনুষ্ঠান শুরু হবার কথা থাকলেও কারিগরি বিভ্রাট শুরুটা আধঘণ্টা পিছিয়ে দেয়। এহসানের স্কুল এবং কলেজ জীবনের বন্ধু ইমতিয়াজ রিশার সাবলীল এবং প্রাণবন্ত উপস্থাপনায় অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসীদের সম্মান জানানোর মাধ্যমে সন্ধ্যে সাতটায় অনুষ্ঠানটির শুভ সূচনা করা হয়। এরপর অস্ট্রেলিয়া এবং বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত বাজানোর মাধ্যমে মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানের উপস্থাপক রিশা, তার দীর্ঘদিনের বন্ধু এহসানের সঙ্গীতের ভুবনে ভীরু পদার্পণ থেকে কণ্ঠশিল্পী হিসেবে তার ক্রমবিকাশ, এবং বর্তমান পর্যায়ে উত্তরণের দীর্ঘ ইতিহাস, কিছু তথ্য এবং তার নিজস্ব স্মৃতির ঝাঁপি থেকে কিছু কথার মালা গেঁথে এহসানকে মঞ্চে আমন্ত্রণ জানান। তার গানের ম্যাজিক ডালি খুলে শ্রোতাদের গান শোনানোর আগে শিল্পী এই সঙ্গীতানুষ্ঠান আয়োজনের পটভূমি, গান নির্বাচন, গ্রন্থনা এবং পরিবেশনা নিয়ে কিছু কথা বলে। তিনি বলেন ভাষার মত গান ও ভাব প্রকাশের একটি শক্তিশালী মাধ্যম। “একাকী গায়কের নহে তো গান, মিলিতে হইবে দুইজনে; গাহিবে একজনে খুলিয়া গলা, আরেকজন গাবে মনে।“ আর তাই সন্ধ্যে বেলার অনুষ্ঠানের প্রথম গানটি ছিল শিশির ভেজা-নরম-আবেগি-বিষণ্ণ ইমন রাগের। ‘রাগ’ সম্বন্ধে আমার জ্ঞান প্রায় শূন্য হলেও আমি এটুকু জানি যে ইমন সন্ধ্যার রাগ, এবং ভক্তিরসে সিক্ত প্রেমের রাগ। অনুষ্ঠানের প্রথম গান হিসেবে এই ধ্রুপদী গানটির নির্বাচন এহসানের সঙ্গীত জ্ঞান এবং এর পরিবেশনা তার পরিশীলিত শিল্পী মনের পরিচয় বহন করে। শুরুর এই গানটি পুরো অনুষ্ঠানটির জন্য একটি সূচী স্নিগ্ধ, ভালো লাগার আবহ সৃষ্টি করে।



এই অনুষ্ঠানে এহসান আহমেদ তার দর্শক-শ্রোতাদের অনেকগুলো গান বা গানের অংশ বিশেষ গেয়ে শুনিয়েছেন। তিনি যে সব গান গেয়েছেন সে গানগুলো এক গোত্রের নয়; এগুলো বিভিন্ন ধারার (Genre), বিভিন্ন শ্রেণীর এবং বিভিন্ন স্বাদের। তার নির্বাচিত গানের মধ্যে ছিল আধুনিক, লালনগীতি, পল্লীগীতি, মুর্শিদী, দেহতত্ব, ভাওয়াইয়া, চলচ্চিত্রের গান, ব্যান্ডের গান, নিজের কথা ও সুরারোপিত মৌলিক গান এবং দেশাত্মবোধক গান। তিনি ‘খাঁচার ভেতর অচিন পাখি’, 'এতো সুন্দর দুনিয়ায় কিছুই রবে না, ‘আমি বাংলায় গান গাই’, ‘আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম’, ‘শুনো মোমিন মুসলমান’ ‘বেদের মেয়ে জোছনা আমায়’, ‘তুমি কেন বোঝনা তোমাকে ছাড়া আমি অসহায়’, ‘দিন যায় কথা থাকে’, ‘ভেঙ্গেছে পিঞ্জর’, ‘বাঁশি শুনে আর কাজ নাই’, ‘আমায় ডেকোনা ফেরানো যাবেনা’, ‘মন কি যে চায় বলো’, ‘দামা দাম মাস্ত কালান্দার’, ‘আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম’, ‘তীর হারা এই ঢেউয়ের সাগর’, এবং আজম খানের কয়েকটি বিখ্যাত গানসহ অসংখ্য গান উপহার দেন। 'বসন্ত বিকেলে আমরা' অনুষ্ঠানের একটি বিশেষ আয়োজন ছিল ব্যাকগ্রাউন্ড স্ক্রিনে প্রতিটি গানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ভিডিও চিত্র প্রদর্শন।

গানের শ্রোতা সাধারণ গায়কের কন্ঠে যে গানটি শুনে, হাসেন, কাঁদেন, কিংবা আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে ওঠেন, বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই সে গানটি কিন্তু একটি সম্মিলিত প্রচেষ্টা্র ফসল। গীতিকার গান লেখেন, সুরকার সে গানে সুর দেন, যন্ত্রীরা তাদের যন্ত্রের মাধ্যমে সেই সুরকে প্রস্ফুটিত করে তুলেন আর সবশেষে গায়ক তার কণ্ঠে গানটিকে শ্রোতার সামনে রূপায়ণ করেন। সেই অর্থে গানটি যিনি গান তাকে গানটির রূপকার বলা চলে। গানের এই রূপকার যদি তার গানটি পরিবেশন করার আগে গানটি সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য, এবং গানটিকে ঘিরে যদি কোন মজার গল্প বা অভিজ্ঞতা থেকে থাকে তা দর্শক-শ্রোতাদের সাথে শেয়ার করেন তা’হলে সে গানের ব্যঞ্জনা এবং আবেদন বহুগুণে বেড়ে যায়। তার প্রায় প্রতিটি গানের ক্ষেত্রেই এহসান এ কথাটি মনে রেখেছেন। সুর, তাল, লয়ের মিশেলে তৈরি হওয়া বিভিন্ন গান পরিবেশনায় এহসানের স্বরের সাবলীল ওঠা নামা এবং তার কণ্ঠের পিচের ভিন্নতা এক অজানা যাদুতে শিল্পী ও শ্রোতার মননের সংযোগ স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে।

কোথায় যেন পড়েছিলাম যে “প্রাচীন মানুষ যেমন তার নিজের প্রয়োজনে ভাষা সৃষ্টি করেছে, ঠিক একই ভাবে তারা নিজেদের প্রয়োজনের তাগিদেই সঙ্গীতের জন্ম দিয়েছে।“ এই কথার সূত্র ধরে এটাও বোধ হয় বলা অসংগত হবেনা যে বদলে যাওয়া সময়ের সাথে সঙ্গীত পরিবেশনা ও একটা বিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বুল্লে শাহ রচিত অমর সুফি ঘরানার গান 'দামা দাম মাস্ত কালান্দার' গান শুরুর সাথে সাথেই দর্শকরা রীতিমতো উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠে এবং গানটির তালে তালে অনেকেই এহসানের সাথে গানটি গাইতে থাকেন। কিন্তু এহসানের গায়কী রুনা লায়লার গায়কীর থেকে ভিন্ন ধরণের ছিল। ঠিক তেমনি বহুশ্রুত লালন শাহের গান ‘খাঁচার ভিতর অচিন পাখীর’ গায়কীও ছিল ফরিদা পারভিনের গায়কীর চেয়ে ভিন্ন। এলআরবি’র (আইয়ুব বাচ্চুর) বিখ্যাত গান ‘তুমি কেন বোঝনা…” গানটির সময় তিনি দর্শক-সারি থেকে প্রায় ১০/১২ জন দর্শককে মঞ্চে নিয়ে আসেন এবং তাদের সঙ্গে একসাথে ঠোঁট মেলান। তার এই ভিন্নধর্মী পরিবেশনার গুণে এই তিনটি অতি পরিচিত গানই শ্রোতাদের মন ছুঁয়ে গেছে। এহসান তার শ্রোতাদের বিভিন্ন ধারার গানের Medley বা মিশ্রণ উপহার দেন। এই মিশ্রিত মুর্শিদী, পল্লীগীতি, দেহতত্ব, ব্যান্ড সঙ্গীত , চলচ্চিত্রের গান এবং দেশাত্মবোধক গানের পরিবেশনা ছিল অসাধারণ। সুচিন্তিত গান নির্বাচন, গ্রন্থনা, সুরের মূর্ছনা, বাদ্য যন্ত্রের সমন্বয় এবং ব্যবহারে পরিমিতি বোধের ফলে গানগুলির মীড়, গমক এবং মূর্ছনা ছিল এককথায় অনবদ্য!

সত্যি বলতে কি আমাদের সাহিত্য, সঙ্গীত, তথা সংস্কৃতির রূপরেখা বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে বিভিন্ন দেশের সাহিত্য, সঙ্গীত এবং সংস্কৃতির দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে। আমার কৈশোর এবং যৌবনে আমি যে সব গান শুনেছি, এবং যে সব যন্ত্রের সাথে যেভাবে শুনেছি সে আজ দূর অতীতের স্মৃতি। সময়ের সাথে সাথে গানের বাণী, সুর, যন্ত্র অনুষঙ্গ এবং পরিবেশনা সব কিছু বদলে গেছে। ক্লাসিকাল গানের পর এসেছে রবীন্দ্র, নজরুল তথা পঞ্চ কবির গানের যুগ, তারপর এসেছে আধুনিক বাংলা গান। একজন সাধারণ সঙ্গীত প্রেমিক হিসেবে গত সাত দশকে সঙ্গীতের যে বিবর্তন আমি নিজে প্রত্যক্ষ করেছি তা রীতিমত বিস্ময়কর। এখন যে সব গান আমরা শুনি তার মধ্যে একদিকে রয়েছে প্রাচীন বাংলা গানের আদলে রচিত ধ্রুপদ ও খেয়াল-ভঙ্গিম নানা রাগাশ্রিত গান অন্যদিকে পুরনো সুরের সঙ্গে নাগরিক জীবনধারা-সুলভ কিছু কিছু চটুল ও ভিনদেশী সুরের আমেজ মেশানো ব্যান্ড সঙ্গীত, জীবনমুখী গান, র্যা প এবং নিত্য নূতন অভিনব সুরের গান। সময়ের সাথে সাথে, যুগে যুগে এই রূপকারের মঞ্চ, সাজ-পোশাক, পারিপার্শ্বিকতা, পরিবেশনা সব পালটে গেছে। কিন্তু সার্থক রূপকারের স্বকীয়তায় এবং নৈপুণ্যে সেই বদলে দেওয়া বা পরিবর্তিত পরিবেশনা ও যে দর্শক-শ্রোতার মন ছুঁয়ে যায়, ‘বসন্ত বিকেলে আমরা’ অনুষ্ঠানে শিল্পী এহসান তার প্রমাণ রেখেছেন।

এহসান আহমেদের অনুষ্ঠানের একটা ভিন্ন ধরণের, কিন্তু মজার পর্ব, ছিল গান এবং নাচ নিয়ে ধাঁধার আসর। এ আসরে অংশ নেন সিডনির নন্দিত এবং গুণী নৃত্য শিল্পী অর্পিতা সোম চৌধুরী। এ ধাঁধার উদ্দেশ্য হল নাচের মুদ্রা দেখে গানের কথা বলে দেয়া। এ পর্বটা এ রকম - আয়োজকদের করা লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত দশটি গানের মধ্য থেকে তিনটি গানের কথা দেখে অর্পিতা এক মিনিট নাচবে, আর সে নাচের মুদ্রা দেখে দর্শকরা গ্যালারি থেকে হাত তুলে নাচটি কোন গানকে চিত্রিত করছে তা বলতে হবে। অর্পিতার নাচ এতোই নিখুঁত ছিল যে এই পর্বে বেশ ক’জন দর্শক সবগুলো ধাঁধার সঠিক উত্তর দিতে পেরেছিলেন। এই পর্বটির শেষ পরিবেশনা ছিল এহসানের কণ্ঠে গাওয়া মিশ্র গান (Medley) – (‘কারার ঐ লৌহ কপাট…’, ‘এই শিকল পরা ছল মোদের…’) এর তালে তালে অর্পিতা সোম চৌধুরীর অসাধারণ নজর কাড়া নৃত্য।

একজন সত্যিকারের শিল্পী, স্বদেশ বা ভিনদেশ যেখানেই থাকুন না কেন, জন্মভূমি এবং জন্মভূমির প্রতি তার দায়বদ্ধতা কখনো ভুলে যান না। আর সেই ভালোবাসা এবং দায়বদ্ধতার জায়গা থেকেই এহসান আহমেদ গাইছিলেন 'তীর হারা এই ঢেউয়ের সাগর পারি দিবো রে '। এই গানটি যখন গাওয়া হচ্ছিল, তখন মঞ্চের পেছনের ব্যাকগ্রাউন্ড স্ক্রিনে (দেয়ালে) প্রদর্শিত হচ্ছিল ১৯৭১ সালের ৭ ই মার্চের শেখ মুজিবুর রহমানের রেসকোর্স ময়দানের ভাষণ থেকে শুরু করে, ২৫ মার্চ ‘অপারেশন সার্চলাইটের’ ভয়াল কালরাত্রি ,মুক্তিযুদ্ধ,পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর নৃশংস বর্বরতা তথা মহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের ইতিহাস। এহসান যখন তার হৃদয়ের সব আবেগ মিশিয়ে এই মিশ্রিত দেশাত্মবোধক গানটি পরিবেশন করছিলেন, তখন তিনি হয়তো ঘূণাক্ষরেও বুঝতে পারেন নি যে আমার মতো আজকের প্রবীণ মানুষদেরকে, তিনি আজ থেকে পাঁচ দশক আগের সেই ভয়ানক সময়ে নিয়ে গেছেন যখন আমরা টগবগে যুবক, তরুণ বা কিশোর হিসেবে বাংলাদেশের সেই মহান মুক্তিযুদ্ধটি আবার আমাদের মনের আয়নায় প্রতিবিম্বিত হচ্ছিল।

নিঃসন্দেহে বলা যায় 'বসন্ত বিকেলে আমরা'র অনুষ্ঠানে তার পরিবেশনার স্বকীয়তায় গান গেয়ে তিনি সকলের মন জিতে নিয়েছেন। স্টেজের ওপর তিনি শুধু গাইছেন না, তিনি বাজাচ্ছেন, তিনি নাচছেন, আর একই সাথে যে গান গাইছেন তার পটভূমি বর্ণনা করছেন, অথবা সে গানকে নিয়ে তার নিজস্ব কোন গল্প শুনিয়ে শ্রোতাদের মন

ছুঁয়ে গেছেন। আর তাই তার গান হয়ে উঠেছে বাঙময়। দর্শক শ্রোতারা সে গানের সাথে এক অদ্ভুত ধরণের একাত্মতা অনুভব করছে। তেরো বছরের রুমকির মন্তব্য “আমি, ভাইয়া, আব্বু -আম্মু, আর আমাদের এখানে বেড়াতে আসা দাদু-দিদা – আমাদের সব্বার এই অনুষ্ঠান ভালো লেগেছে;” কিংবা বাংলা না-জানা অডিটোরিয়ামের অষ্ট্রেলিয় কর্মচারীর উচ্ছ্বাস “That was mind boggling man, I just got hooked up”; সেই একাত্মতারই বহিঃপ্রকাশ। এ কথা বলা বোধহয় ভুল হবে না যে সিডনীতে বাঙ্গালী শিল্পীদের মধ্যে এহসান সম্ভবতঃ এই নতুন ধারার প্রবর্তক, ধারক ও বাহক। আমি নিশ্চিত, এহসান আহমেদের এই অনুষ্ঠানের সফলতা, তার এবং তার ভবিষ্যৎ অনুগামীদের পক্ষ থেকে আমাদেরকে একটি বার্তা দিচ্ছে; আর সে বার্তাটি হলঃ-

আমরা চলিব পশ্চাতে ফেলি পচা অতীত,
গিরি-গুহা ছাড়ি খোলা প্রান্তরে গাহিব গীত,
সৃজিব জগত বিচিত্রতর, বীর্যবান,
তাজা জীবন্ত সে নব সৃষ্টি শ্রম-মহান,
চলমান বেগে প্রাণ উচ্ছল।

একটা সময় ছিল যখন আমরা চোখমুদে মাথা দুলিয়ে গান শুনতাম এবং গানের বাণীর সাথে মানসিক একাত্মতা অনুভব করতাম, এখনকার সঙ্গীতপ্রেমীরা চোখ খুলে গানের পরিবেশনা দেখে এবং অনেক সময় নিজের আসনে বসে সে গানের দোহারকি করে, এমন কি দাঁড়িয়ে নাচতে শুরু করে। হ্যাঁ, গানের অনেক কিছু বদলেছে কিন্তু গানের প্রতি মানুষের ভালোবাসা বদলায় নি। ভালোবাসার এই বিভিন্ন প্রকাশে অবাক হবার কিছু নেই, ভালো লাগাটাই বড় কথা। সেই যে কবি বলেছেন ‘'সেই সত্য যা রচিবে তুমি, ঘটে যা তা সব সত্য নহে। কবি, তব মনোভূমি, রামের জন্মস্থান অযোধ্যার চেয়ে সত্য জেনো ।''

এহসান আহমেদের এই একক অনুষ্ঠানে যন্ত্রশিল্পী হিসেবে ছিলেন তবলায় অভিজিৎ দাঁ, সেতারে অজিত, লিড গিটারে তপন, বেস গিটারে খালিদ, মন্দিরায় লোকমান, কিবোর্ডে রুশনান, ড্রামে শাওন, গিটারে সুমায়েল। শব্দ নিয়ন্ত্রণে ছিলেন আত্তাবুর রহমান। অনুষ্ঠানের সার্বিক আয়োজনে মুখ্য ভূমিকা ছিলো কানিজ আহমেদের। গানের পর্ব শেষ হয় রাত সাড়ে ১১ টায়। উপস্থিত দর্শক শ্রোতাদের ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি টানা হয়।




মোহাম্মদ আবদুর রাযযাক, সিডনি






Share on Facebook               Home Page             Published on: 31-Aug-2023

Coming Events: