bangla-sydney
bangla-sydney.com
News and views of Bangladeshi community in Australia












“বিশ্বায়নে শহীদ মিনার” গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব
ডঃ রতন কুণ্ডু

গত ৮ই জুন ২০১৪ সিডনীর অদূরে কোগরা স্কুল অব আর্টস এ অনুষ্ঠিত হল নির্মল পাল এর সদ্য প্রকাশিত “বিশ্বায়নে শহীদ মিনার” গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব ও আলোচনা অনুষ্ঠান। গ্রন্থটির প্রতিপাদ্য বিষয় হিসেবে ‘একুশে’র বৈশ্বিক প্রাতিষ্ঠানিকতা অর্জন’ এর লক্ষ্যটি হলের বিভিন্ন স্থানে লাগানো পোস্টারের লেখা ও ‘একুশে কর্নার এট লাইব্রেরি’ পোষ্টার থেকে সহজেই ফুটে উঠে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত আলোচক ও বিশ্লেষকদের মতে “বিশ্বায়নে শহীদ মিনার” গ্রন্থটি শুধুমাত্র একটি গ্রন্থ নয়, এটি একটি ঐতিহাসিক দলিলও বটে। বাঙালি জাতির যে কয়টি হাতে গোনা বৈশ্বিক অর্জন আছে তার মধ্যে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ অর্থাৎ আমাদের মহান বাংলা ভাষা আন্দোলনের অমর একুশে ফেব্রুয়ারি অন্যতম। কানাডা অভিবাসী বাঙালি বীর মুক্তিযোদ্ধা ভাষা সৈনিক সম্প্রতি প্রয়াত রফিকুল ইসলাম এর নেতৃত্বে, নিরলস প্রচেষ্টায় এবং তৎকালীন বাংলাদেশ সরকার প্রধান মাননীয় শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ১৯৯৯ সনের ১৭ই নভেম্বর UNESCO এর ৩০তম সাধারণ অধিবেশনে মহান একুশে ফেব্রুয়ারি বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালনের অনুমোদন করে। তারই ধারাবাহিকতায় একুশ-প্রেমী বাঙালিরা সিডনীতে একুশে বইমেলার আয়োজন এবং একুশে একাডেমী অস্ট্রেলিয়ার উদ্যোগে তৎকালীন সভাপতি নির্মল পাল এর বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও একান্ত প্রচেষ্টায় এবং কয়েক বছরের সাধনায় বিগত ২০০৬ সনের ১৯শে ফেব্রুয়ারি সিডনীর এশফিল্ড পার্কে মহান শহীদ মিনারের আদলে উন্মোচিত হয় বিশ্বের প্রথম “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মৃতিসৌধ”, সিডনী-বাসী বাঙালির তথা সকল ভাষাভাষীর গর্বের ইতিহাস। এই ঐতিহাসিক অর্জন UNESCO ঘোষিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনে বিশ্বের সকল ভাষাভাষীকে উদ্বুদ্ধ করণের এক দৃষ্টান্তমূলক মাইলফলক।

প্রকাশনা উৎসবটি ৩টি পর্বে বিভক্ত ছিল। প্রথম পর্বে স্লাইড শো’র মাধ্যমে বিশ্বের প্রথম “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মৃতিসৌধ” প্রতিষ্ঠার ইতিহাস এবং তার সাথে সম্পৃক্ত অনেক ঘটনা, কলাকুশলী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের ছবি সম্বলিত ঐতিহাসিক তথ্য উপস্থাপিত হয়। স্লাইড শো’র ব্যকগ্রাউনডে একুশের ও দেশের গানের মিউজিক এক মনোমুগ্ধকর ও আবেগময় পরিবেশের অবতারণা করে।

দ্বিতীয় পর্বে অনুষ্ঠিত হয় গ্রন্থটির উপর গঠনমূলক বিশ্লেষণ ভিত্তিক অনুষ্ঠান, প্যানেল আলোচনা। সময়ের ব্যবস্থাপনায় শুরুতেই অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ হাই কমিশনের অনারারী কন্সাল জেনারেল এন্থনি কৌড়ি এসফিল্ড পার্কে “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মৃতিসৌধ” এর প্রতিষ্ঠাকে শুধু বাঙালির নয় বরং সকল ভাষাভাষী ভিত্তিক অভিবাসীদের সমন্বিত সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন হিসেবে উল্লেখ করে বলেন এই অর্জন সকল ভাষাভাষীর জন্য উৎসাহব্যঞ্জক ও অনুকরণীয়। তিনি এই বিশাল কাজের বলিষ্ঠ নেতৃত্ব প্রদানের ধারাবাহিকতা হিসেবে এই গ্রন্থটি প্রকাশনার জন্য নির্মল পালকে ধন্যবাদ জানান এবং গ্রন্থটির ইংরেজি সংস্করণের উদ্যোগের পরিকল্পনাকে সাধুবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠানের সার্বিক সাফল্য কামনা করে বিদায় নেন। এই পর্বে উপস্থাপিকা মিসেস সোনিয়া খান এর প্রাঞ্জল ও বস্তুনিষ্ঠ উপস্থাপনায় মহান একুশ, ভাষা শহীদদের স্মরণে বিভিন্ন কবি ও লেখকের বই থেকে আবেগ জড়িত আবৃতি ও গ্রন্থটির বিভিন্ন পৃষ্ঠা থেকে উদ্ধৃতি অনুষ্ঠানে এক গাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশের অবতারণা করে। তিনি পূর্বনির্ধারিত বিজ্ঞ প্যানেল ব্যক্তিত্বদের পরিচিতি উপস্থাপনার মাধ্যমে একে একে মঞ্চে আসন গ্রহণ করার অনুরোধ জানান। আলোচনার শুরুতে সপ্তর্ষি তিথন পাল প্রকাশিত গ্রন্থটির ভিত্তি বিশ্বের প্রথম “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মৃতিসৌধ”এর নকশায় বিধৃত একুশের চেতনার সাথে একুশে’র বিশ্বায়নের বিষয়াদির যোগসূত্র, বর্তমান অবস্থান ও কর্মধারা, ভবিষ্যৎ করনীয় এবং নতুন প্রজন্মকে মাতৃভাষা চর্চায় আগ্রহী করার কৌশলাদি বিষয়ে তার অভিজ্ঞতা ও গ্রন্থটিতে উপস্থাপিত বিষয়াদির সূত্রপাত করেন। আলোচনার স্বাগতিক বক্তব্যে গ্রন্থটির লেখক নির্মল পাল গ্রন্থটিকে একটি প্রামাণ্য দলিল হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এই গ্রন্থটিতে উদ্ধৃত বিষয়াদির বস্তুনিষ্ঠতা ও ত্রুটিমুক্ত করে সকলের গ্রহণযোগ্য করা এবং সকল ভাষাভাষীর উপযোগী করে গ্রন্থটির ইংরেজি ভার্শন বাংলাদেশ সরকারের মাধ্যমে UNESCO বরাবরে উপস্থাপন করার পরিকল্পনার ধারাবাহিকতার অংশ হিসেবে এই আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন। তিনি গ্রন্থটি আগ্রহের সাথে পড়া এবং এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ক আলোচনায় আন্তরিকভাবে অংশ গ্রহণের জন্য প্যানেল সদস্যদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আজ আমি আপনাদের সকলের কাছে শুনতে এসেছি, বলতে নয়। তিনি গ্রন্থটিতে উদ্ধৃত বিষয়াদি সম্পর্কে বিজ্ঞ প্যানেল সদস্যদের বস্তুনিষ্ঠ ও গঠনমূলক আলোচনা, পরামর্শ প্রদান এবং উপস্থিত অতিথিদের সুচিন্তিত মতামত ও প্রয়োজনীয় পরামর্শের অনুরোধ জানান।

বিজ্ঞ প্যানেল সদস্যদের প্রারম্ভিক আলোচনার সূচনায় প্যানেল আলোচনা সমন্বয়কারী ডঃ রতন কুণ্ডু গ্রন্থটির বিভিন্ন দিক সংক্ষেপে উপস্থাপন করে প্যানেল সদস্যদের গঠনমূলক ও প্রাণবন্ত আলোচনার ধারায় সম্পৃক্ত করেন। তিনি একে একে গ্রন্থটিতে উদ্ধৃত বিষয়াদির ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট, বিশ্বের প্রথম “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মৃতিসৌধ”এর ঐতিহাসিক অর্জন, সকল মাতৃভাষা সংরক্ষণে বাঙালির অন্তর্ভুক্তির সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা, লাইব্রেরীতে একুশে কর্নার প্রতিষ্ঠা এবং সকল দেশ ও জাতির সমন্বিত প্রচেষ্টার দিক নির্দেশনা সম্পর্কে প্রত্যেক বিজ্ঞ সদস্যদের মনোযোগ আকর্ষণ করে তাঁদেরকে গ্রন্থটিতে উদ্ধৃত বিষয়াদি নিয়ে বস্তুনিষ্ঠ আলোচনায় সুন্দর এক পরিবেশ উপহার দেন। বিজ্ঞ প্যানেল সদস্যদের সকলেই গ্রন্থটির বিভিন্ন পৃষ্ঠার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে গ্রন্থটি একাধিক বার পড়ার অভিজ্ঞতার বর্ণনা ও ‘একুশ এবং বাঙালি’র আত্মিক সম্পর্ক, ও একুশে’র বৈশ্বিক প্রাতিষ্ঠানিকতা অর্জনের কথা পুনরুল্লেখ করা ছিল গ্রন্থটি তথা অনুষ্ঠানের বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ দিক। গ্রন্থের কিছু বানান, পদবী সংক্রান্ত ত্রুটির সংশোধনের সুনির্দিষ্ট পরামর্শ বিজ্ঞ আলোচকদের গবেষণা ও বিশ্লেষণী মন্তব্যের বস্তুনিষ্ঠতা প্রমাণিত হয়। তাঁরা সকলেই সকল মাতৃভাষা সংরক্ষণে UNESCO র পাশাপাশি বাঙালির অগ্রণী ভূমিকা পালনে গ্রন্থে উদ্ধৃত কৌশলীক ও বাস্তবভিত্তিক সুযোগের সৃষ্টি জাতীয়, বৈশ্বিক সভ্যতা ও মানবিক ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখবে বলে অভিমত প্রকাশ করে গ্রন্থটিকে একটি ব্যতিক্রমধর্মী দলিল হিসেবে মতামত ব্যক্ত করেন। গ্রন্থটির ইংরেজি সংস্করণ প্রকাশে তাঁদের সার্বিক সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দিয়ে তাঁরা এই মহতী উদ্যোগের সার্বিক সাফল্য কামনা করেন। তাঁরা “Conserve Your Mother Language” স্লোগানটি সকল ভাষাভাষীর বৈশ্বিক স্লোগান হিসেবে উত্তরণে আমাদের সকলকে একযোগে কাজ করে অন্যান্য ভাষাভাষীকে তাদের নিজ নিজ মাতৃভাষা চর্চায় উদ্বুদ্ধ করার জন্য প্রত্যেককে স্ব স্ব অবস্থান থেকে কাজ করার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেন। উল্লেখ্য ওয়েস্টার্ন সিডনী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিষয়ক শিক্ষাবিদ ডঃ মাসুদুল হক, সিডনী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ডঃ ভিনসেন্ট গোমেজ, বাংলা একাডেমী অস্ট্রেলিয়ার প্রতিষ্ঠাতা আনোয়ার আকাশ, বিশিষ্ট নাট্যকার ও সমাজকর্মী ইন্দ্রনীল ব্যনারজি, ক্যানবেরা শহীদ মিনার প্রতিষ্ঠা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক বাবলু এবং ক্যানবেরা শহীদ মিনার প্রতিষ্ঠা কমিটির সদস্য ও বিশিষ্ট লেখক ও সমাজকর্মী ডঃ অজয় কর এই গুরুত্বপূর্ণ প্যানেল আলোচনার সদস্য হিসেবে অংশগ্রহণ করেন।

দ্বিতীয় পর্বশেষে আপ্যায়নের বিরতির পর শুরু হয় অনুষ্ঠানের তৃতীয় পর্ব। এই পর্বে ছিল উন্মুক্ত-মূল আলোচনা, প্রস্তাবনা ও ভবিষ্যৎ কর্ম পরিকল্পনা ভিত্তিক। তৃতীয় পর্বে সভাপতিত্ব করেন সর্বজন শ্রদ্ধেয় বর্ষীয়ান জনাব নজরুল ইসলাম এবং প্রধান অতিথি হিসেবে মান্যবর হাই কমিশনারের প্রতিনিধি প্রথম সচিব ও চ্যান্সারি প্রধান মিসেস সেহেলি সরবিন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সমাজসেবী বঙ্গবন্ধু কাউন্সিল অস্ট্রেলিয়ার সভাপতি জনাব শেখ শামিমুল হক, বিশিষ্ট সমাজসেবী ও Strathfield কাউন্সিলের কাউন্সিলর মি রাজ দত্ত এবং রোটারিয়ান ও কুমিল্লা ইঞ্জিনিয়ারস Institution এর সভাপতি মি অমল পাল। উপস্থিত অতিথিদের মধ্যে উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ গ্রহণ করে মূল্যবান বক্তব্য রাখেন বাংলা প্রসার কমিটির প্রাক্তন সভাপতি বিশিষ্ট সমাজকর্মী ডঃ মাকসুদুল বারী, বাংলা প্রসার কমিটির সভাপতি ও একুশে একাডেমীর সহ-সভাপতি ডঃ স্বপন পাল এবং বিদেশ বাংলা টেলিভিশনের কর্ণধার ও ডিজাস্টার রিলিফ কমিটির আহ্বায়ক জনাব রহমত উল্লাহ্‌। উন্মুক্ত আলোচনায় বক্তাগন একুশের বৈশ্বিক প্রাতিষ্ঠানিকতা অর্জনে এই সৃজনশীল কাজের গুরুত্ব ও দালিলিক ভিত্তি একটি সময়োপযোগী ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করেন। তাঁরা “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মৃতিসৌধ” এর প্রতিষ্ঠালগ্নের মত সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করণের মাধ্যমে একুশের বৈশ্বিক প্রাতিষ্ঠানিকতা অর্জনও সম্ভব হবে বলে মন্তব্য করেন এবং গ্রন্থটি সংকলন করার জন্য নির্মল পালকে ধন্যবাদ জানান। বিশেষ আতিথি জনাব শেখ সামিমুল হক গ্রন্থটির সৃজনশীল ও বস্তুনিষ্ঠতার কথা উল্লেখ করে বলেন নতুন বহুজাতিক সমাজে অভিবাসী জীবনধারায় আমাদের সামাজিক প্রতিষ্ঠার প্রামাণ্য দলিল হিসেবে এই গ্রন্থটি একটি উদাহরণ। তিনি বলেন, গ্রন্থটি পড়ার সুযোগ আমার হয়েছে। গ্রন্থটিতে একুশের চেতনাকে সারা বিশ্বে সকল মাতৃভাষা সংরক্ষণের প্রক্রিয়ার কৌশলের সুচিন্তিত বর্ণনার গুরুত্ব সকলকে অবহিত করা এবং এ বিষয়ে মান্যবর বিদায়ী হাই কমিশনারের আগ্রহের কথা বিবেচনা করেই আমরা শেষ মুহূর্তে বৈশাখী মেলায় গ্রন্থটির মোড়ক উন্মোচনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। গ্রন্থটি একটি মানব কল্যাণ মুখী অসাধারণ কাজ যা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকেও নতুন ভাবনার সুযোগ এনে দিবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। বিশেষ অতিথি কাউন্সিলর রাজ দত্ত নির্মল পালের সাথে দীর্ঘ এক যুগেরও বেশী সময় থেকে একসাথে বহুজাতিক সমাজের বহু কল্যাণমুখী কাজ করার অভিজ্ঞতার কথা এবং এসফিল্ডে ঐতিহাসিক স্মৃতিসৌধ বিনির্মাণে তাঁর সংশ্লিষ্টতার স্মৃতিচারণ করে বলেন, গ্রন্থটি অত্যন্ত যত্ন সহকারে দ্বিতীয় বার পড়তে হয়েছে। গ্রন্থটিতে উদ্ধৃত তথ্য ও পরিকল্পনা বাঙালিদের জন্য একটি বৈশ্বিক অনুপ্রেরণা। এপার ওপার বাঙালিদের মধ্যে যেমন ভাষা ও সংস্কৃতির কোন বিভেদ নেই তেমনি গ্রন্থে উল্লেখিত একুশের বিশ্বায়নে প্রণীত কৌশলাদি বাস্তবায়ন করতে বিশ্বের সকল বাঙালিদের একসাথে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি এবিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে গ্রন্থটির বিষয়াদির গঠনমূলক বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণাসহ প্রয়োজনীয় কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করেন। বিশেষ অতিথি রোটারিয়ান অমল পাল বলেন, অনুজ নির্মল পালের মহতী এই চেতনার ভিত্তি ও শক্তি যে সিডনিবাসী বাঙালিদেরই অনুপ্রেরণায়ই উজ্জীবিত তা আজকের এই সুন্দর গঠনমূলক আলোচনায় উপস্থিত না থাকলে আমার বুঝা সম্ভব ছিল না। সরকার এবং প্রবাসের সকলের আন্তরিক ও ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসই এই বৈশ্বিক পরিকল্পনার বাস্তবায়ন সম্ভব বলে তিনি তাঁর অভিমত ব্যক্ত করেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মান্যবর হাই কমিশনের প্রতিনিধি সেহেলি সারবিন তাঁর সুন্দর সাবলীল ভাষায় গ্রন্থটির সামগ্রিক বিষয়াদির সাথে হাই কমিশনের সম্পৃক্ততার কথা উল্লেখ করে বলেন, গতবছর মহান একুশে উদযাপন করতে হাই কমিশন কার্যালয় প্রাঙ্গণে শহীদ মিনার নির্মাণ, প্রভাত ফেরি এবং এবছরের ক্যানবেরার একুশের সকল ভাষাভাষীর সম্মিলিত পথযাত্রা একুশে বিশ্বায়নের চিন্তা চেতনার সাথে সম্পৃক্ত। গ্রন্থটিতে উপস্থাপিত বিষয়াদি ও কলা কৌশল একুশের বৈশ্বিক প্রাতিষ্ঠানিকতায় সহায়ক ভূমিকা রাখা সম্ভব হবে বলে হাই কমিশনের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই গ্রন্থটি পৃথিবীর সকল বাংলাদেশ হাই কমিশনের অফিসে সরবরাহের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আনুষ্ঠানিক ভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে বলে সকলকে অবহিত করেন। তিনি মহান একুশের বৈশ্বিক প্রাতিষ্ঠানিকতা অর্জনে আমাদের সকলের নিঃস্বার্থ ভাবে অন্যান্য ভাষাভাষীর সাথে নিয়ে একসাথে কাজ করার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করেন। সভাপতির ভাষণে সকলের শ্রদ্ধাভাজন বর্ষীয়ান নজরুল ইসলাম বলেন গ্রন্থটি পড়ার পূর্বে ঐতিহাসিক পৃথিবীর প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মৃতিসৌধে বিধৃত একুশের চেতনা সম্পর্কে আমার তেমন ধারনা ছিলনা, গ্রন্থটি পড়ার পর আমি সিডনীবাসী হিসেবে নিজেকে সত্যিই গর্বিত মনে করছি। এই ঐতিহাসিক স্মৃতিসৌধে বিধৃত একুশের চেতনার ভিত্তিতে গ্রন্থে উপস্থাপিত পরিকল্পনায় পৃথিবীর সর্বত্র সকল মাতৃভাষা সংরক্ষণে একুশের স্মৃতিসৌধ গড়ে উঠা সম্ভব বলে তিনি তাঁর দৃঢ় মতামত ব্যক্ত করেন, এবং এ বিষয়ক বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় কমিটি গঠন ও কমিটিতে নির্মল পালকে অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ হাই কমিশন বরাবরে পেশ করেন। তিনি গ্রন্থটির যত দ্রুত সম্ভব গ্রন্থটির ইংরেজি সংস্করণ কাজ শেষ করে UNESCO বরাবরে পেশ করার জন্য নির্মল পাল ও হাই কমিশনের প্রতি অনুরোধ জানান। সবশেষে সকলকে উপস্থিতি ও গঠনমূলক প্রস্তাবনার জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে নির্মল পাল অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।



Share on Facebook               Home Page             Published on: 24-Jun-2014

Coming Events:
বৃষ্টির সম্ভাবনার কারণে মেলার তারিখ ১ দিন পিছিয়ে ২১ এপ্রিল ২০২৪ (রবিবার) করা হয়েছে......




A day full of activities, games and fun.







Lakemba Blacktown Mascot
Minto Money raised so far





Lakemba Blacktown Mascot
Minto Money raised so far



Blacktown Lakemba Mascot
Minto Money raised so far







Blacktown Lakemba Mascot
Minto Money raised so far