ফরিদের ঘুমের দায়িত্বটাও ছিলো তাঁর কাইউম পারভেজ
অনেকদিন, তা প্রায় এক যুগ আগের কথা। বিশ্ব বিদ্যালয়ে আমার স্কুলের বাঙালি পোষ্ট গ্রাজুয়েট ছাত্রসহ ক্যাম্পাসের অন্যান্য পরিচিত বাঙালি ছাত্রদেরকে এক দুপুরে আমার বাসায় দাওয়াত করেছি। এদের মধ্যে ছিলেন নজরুল ইসলাম (বর্তমানে ক্যানবেরাবাসি), সাজ্জাদুল হাসান (বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সচিব) এবং আরো কয়েকজন যাঁদের সবার কথা আজ আর মনে নেই। এ দলের মধ্যে তখন বাংলাদেশ থেকে সদ্য আগত একজন পোষ্ট গ্রাজুয়েট ছাত্রও উপস্থিত ছিলেন। দুপুরে খাওয়া দাওয়ার পর আমার বাগানে বসে আড্ডা। আর বাঙালির আড্ডা মানেই তো কোন এক পর্যায়ে রাজনীতি নিয়ে টানা হ্যাঁচড়া। তো সেদিন আমাদের সে আলোচনায় আমরা দেশের নানান পরিস্থিতি বিশেষ করে রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করছি। এ সময়ে সম্ভবত নজরুল ইসলাম বাংলাদেশ থেকে সদ্য আগত ছাত্রটিকে বললো - আচ্ছা তুমি তো সবে দেশ থেকে এলে একেবারে ফ্রেশ তথ্য তোমার কাছ থেকে পাওয়া যাবে। তোমার কাছে দেশের পরিস্থিতি কী মনে হয়? ছেলেটি নতুন এসেছে বলেই কী না জানিনা বেশ আস্তে আস্তে বিনীতভাবে বললো আমি রাজনীতি করি না বুঝিও না তবে আমার মনে হয় বাংলাদেশের একটাই সমস্যা আর সে সমস্যা হলো একটা প্রশ্নকে ঘিরে। নজরুলের খুব টেনশন - আহা বলো না সে প্রশ্নটা কী? ছেলেটি বললো প্রশ্নটা হলো স্বাধীনতার ঘোষণাটা কী মেজর জিয়াউর রহমান দিয়েছিলেন না মেজর শেখ মুজিবুর রহমান দিয়েছিলেন? যেই না এ কথা শোনা নজরুল তো বসা থেকে লাফ দিয়ে দাঁড়িয়ে গেলো - এ্যাই এ্যাই তুমি কী বললা? আমি ভাবলাম ছেলেটির বোধহয় জিহবাভ্রম ঘটেছে তাই বললাম তুমি আবার বলোতো। ছেলেটি তেমনি সাবলীল ভাবে বললো - স্বাধীনতার ঘোষণাটা কী মেজর জিয়াউর রহমান দিয়েছিলেন না মেজর শেখ মুজিবুর রহমান দিয়েছিলেন? সাজ্জাদ, নজরুল সহ আরো দু'একজন ক্ষেপে গিয়ে ওকে বকাঝকা শুরু করে দিলো। আমি ওদের থামিয়ে বললাম - ছেলেটি দেশে একটি প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি থেকে গ্রাজুয়েশন করে এসেছে। চার দেয়ালের বাইরের খবর ওর কাছে পৌছেনি। যাঁদের সে খবর পৌঁছানোর কথা তাঁরা সব টেন্ডার, টু পাইস নিয়ে ব্যস্ত। তাছাড়া ও হয়তো ভিন্ন এক পরিবেশে বেড়ে উঠেছে যেখানে এগুলো জানার কোন প্রয়োজনীয়তা নেই। এটাকে একটা একসেপশনাল কেস হিসেবে গণ্য করা যেতে পারে।
যাহোক সেদিন সবাই চলে গেলে ভাবছিলাম কেন এমন হলো কেন এমন হচ্ছে। আমরা কী আমাদের প্রজন্মের কাছে আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারছি না? আমি নিজেকেই নিজে প্রশ্ন করেছি আমার ছেলে মেয়ে দুটি কী বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে যথেষ্ট জানে? আমি আওয়ামী লীগ বা বিএনপি বা অন্য যে কোন রাজনৈতিক দলের সমর্থক হই না কেন বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা এ বিষয়গুলো তো সব রাজনীতির ঊর্ধ্বে। নষ্ট রাজনীতিবিদরাই পরে এগুলোকে রাজনীতির মধ্যে ঢুকিয়েছেন এবং এগুলো নিয়ে রাজনীতি করে চলেছেন। মরহুম প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান তাঁর জীবদ্দশায় কোনদিন কোথাও কখনো বলেন নি বা কাওকে বলতে উৎসাহিত করেন নি যে তিনি হলেন স্বাধীনতার ঘোষক। কারণ তিনিও মনে করতেন বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা এ বিষয়গুলো সব রাজনীতির ঊর্ধ্বে। যারা স্বাধীনতা বিশ্বাস করেন না তাঁরা কী করে বাংলাদেশকে মেনে নেবেন? তাঁরা কী করে বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা হিসেবে গ্রহণ করবেন? এখনো অনেকে আছেন তাঁরা একাত্তরকে মুক্তিযুদ্ধের বছর বা স্বাধীনতার বছরকে বলেন “গণ্ডগোলের বছর”। তাঁরা তবে উনসত্তরকে কী বলবেন। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনকে কী বলবেন? ওগুলো-ও কী গণ্ডগোল?
যাক সে কথা, আমার মূল কথায় ফিরে আসি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেজর শেখ মুজিবুর রহমান নন। তিনি ইন্টারমিডিয়েট পাশ করে সেনা বাহিনীতে যোগ দিয়ে একের পর এক ক্যু করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে নেতা প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী হননি। শৈশব থেকেই তিনি দেশে নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষের জন্য কাজ করে গেছেন। শৈশবে মূলতঃ একজন বিপ্লবী গৃহ শিক্ষকের কাছেই নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষের জন্য কাজ করার হাতেখড়ি তাঁর। কিশোর মুজিব যখন পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র তখন মারাত্মক এক চক্ষুরোগে আক্রান্ত হলে তাঁর প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়া স্থগিত থাকে প্রায় তিন বছর। সে সময়ে গৃহ-শিক্ষক হিসাবে হামিদ মাস্টার নামে খ্যাত ব্রিটিশ শাসন-বিরোধী সশস্ত্র আন্দোলনের একজন নিষ্ঠাবান বিপ্লবী কর্মী বঙ্গবন্ধুর লেখা-পড়ার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। হামিদ মাস্টারের কাছে বিপ্লবীদের ব্রিটিশ-বিরোধী সশস্ত্র সংগ্রামের নানা রোমাঞ্চকর কর্মকাণ্ডের কথা কিশোর মুজিব মুগ্ধ হয়ে শুনতেন। তাঁর মাঝে ক্রমশঃ দেশপ্রেম জেগে ওঠে। কিশোর মুজিব তখন থেকেই নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষের সেবার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে থাকেন। হামিদ মাস্টার ছিলেন বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনের প্রথম দীক্ষাগুরু। হামিদ মাস্টারের নেতৃত্বে কিশোর মুজিব গড়ে তুললেন একটি সেবামূলক সংগঠন। সংগঠনটির উদ্যোগে প্রতিদিন সচ্ছল বাড়িগুলো থেকে ধান-চাল সংগ্রহ করে ‘ধর্ম-গোলা’ নামে একটি সঞ্চয়-ভাণ্ডার গড়ে তোলা হতো। সঞ্চিত ধান-চাল-অর্থ দান করা হতো নিঃস্ব মানুষদের। জনসেবার এ মহান ব্রতটি বালক বয়সেই মুজিব শিখেছিলেন গৃহ-শিক্ষক হামিদ মাস্টারের কাছে। পঞ্চাশের মন্বন্তরের সময়ে মুজিব তাঁর পিতার অনুপস্থিতিতে নিজেদের ধানের গোলা খুলে দিয়েছিলেন দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষের জন্য।
১৯৩৮ সালে পূর্ব-বাংলার মুখ্যমন্ত্রী শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক এবং বাণিজ্য ও পল্লী-উন্নয়ন মন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী গোপালগঞ্জ শহরে এসে মিশন স্কুল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। তখন কংগ্রেস কর্মীরা মন্ত্রীদ্বয়ের সফরের বিরোধিতা করলে তরুণ মুজিব তাঁর বন্ধুদের নিয়ে স্কুলে মন্ত্রীদ্বয়কে সংবর্ধনা জানাবার কাজে অংশ নেন এবং কোন এক সুযোগে সাহস করে দাঁড়িয়ে মন্ত্রীদ্বয়ের কাছে স্কুল হোস্টেলের ভাঙা ছাদ মেরামতের দাবি জানান। মন্ত্রীদ্বয় তরুণ মুজিবের এই সাহসিকতায় মুগ্ধ হন এবং স্কুল হোস্টেলের ছাদ মেরামতের তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা করেন। সেসময়ের প্রেক্ষাপটে তরুণ মুজিবের এই সাহসকে দুঃসাহস আখ্যায়িত করা হয়। উপস্থিত সকলে তাঁর এই সাহসে স্তম্ভিত হন - বলেন একে দিয়েই হবে। এই একটি ঘটনা তরুণ মুজিবকে আরো সাহসী এবং নেতৃস্থানীয় করে তোলে। তরুণ মুজিব হলেন শেখ মুজিবুর রহমান। এই ঘটনার মধ্য দিয়েই শেখ মুজিবের রাজনৈতিক জীবনের সূচনা।
১৯৪২ এ কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে ভর্তি হওয়ার পর তিনি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর রাজনৈতিক শিষ্যের মর্যাদা লাভ করেন। কলেজের বেকার (Baker) হোস্টেলে অবস্থানকালে সর্বস্তরের ছাত্রদের সঙ্গে তাঁর সখ্যতা গড়ে ওঠে এবং তিনি হোস্টেলের সাধারণ সম্পাদক নিযুক্ত হন। এরপর থেকেই তাঁর নেতৃত্বের দ্রুত বিকাশ ঘটতে থাকে। তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ইসলামিয়া কলেজের সাধারণ সম্পাদক নিযুক্ত হয়েছিলেন। একই বছর তিনি গোপালগঞ্জ মহকুমা মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
১৯৪৭ সনে অর্থাৎ দেশ বিভাগের বছর মুজিব কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ইসলামিয়া কলেজ থেকে বিএ ডিগ্রী লাভ করেন। ভারত ও পাকিস্তান পৃথক হওয়ার সময়ে কলকাতায় ভয়ানক হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা হয়। এসময় মুজিব মুসলমানদের রক্ষা এবং দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য সোহরাওয়ার্দীর সাথে বিভিন্ন রাজনৈতিক তৎপরতায় জড়িয়ে পড়েন।
ভারত-পাকিস্তান আলাদা হয়ে যাবার পর শেখ মুজিব পূর্ব পাকিস্তানে ফিরে এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠা করেন পূর্বপাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ। এ সময়ে ভাষা আন্দোলনে সর্বদলীয় ভাষা সংগ্রাম পরিষদের আহুত ধর্মঘটে অংশ নেবার কারণে শেখ মুজিব গ্রেফতার হন ও পরে মুক্তি পান। এ বছরই ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের আন্দোলনে সমর্থন দানের কারণে দ্বিতীয়বার জেল গেটে গ্রেফতার হন।
১৯৪৯ সনের ২৩ জুন ঢাকার রোজ গার্ডেনে পূর্বপাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠিত হলো। কারাবন্দী শেখ মুজিব নির্বাচিত হলেন অন্যতম যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে। ১৯৫৩ সনের ৯ জুলাই পূর্বপাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের কাউন্সিলে তিনি নির্বাচিত হলেন দলের সাধারণ সম্পাদক।
এর মাঝে ঘটে গেছে অনেক কিছু। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৭ কাগমারী সম্মেলন যেখানে মওলানা ভাষানী আওয়ামীলীগের সভাপতি থেকে পদত্যাগ করলেন এবং আব্দুর রশীদ তর্কবাগীশ হলেন নতুন অস্থায়ী সভাপতি। ১৯৫৮ তে সামরিক আইন জারি এবং শেখ মুজিব কারাগারে। ১৯৬২ তে মুক্তি লাভের পর আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন। সেখানেও নেতা শেখ মুজিব। ১৯৬৮তে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা। আবারও তাঁর জেল। তাঁর মুক্তি হয় আবার জেল গেট থেকেই পুনরায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
১৯৭০ সালে বঙ্গবন্ধু পুনরায় আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হলেন আর তাজউদ্দীন হলেন দলের সাধারণ সম্পাদক। তারপর নির্বাচন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়। তারপরে তো একাত্তর। যে ইতিহাস সবার জানা। তেমনি সবার জানা ১৯৭৫।
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ অতি সাধারণ ঘরে জন্ম নেয়া অসাধারণ এক মানুষ যিনি শৈশব থেকেই নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষের মুক্তির জন্য লড়তে গিয়ে পঞ্চান্ন বছরের ছোট্ট জীবনটাতে বত্রিশ বছর টানা সংগ্রাম আন্দোলন করেছেন। বাইশবার হয়েছেন কারাবাসী। এবং গোটা পরিবার নিয়ে সবশেষে জীবন উৎসর্গ করেছেন। কী দিয়েছেন তিনি? দিয়েছেন বাঙালি জাতির মুক্তি, বাঙালির জন্য স্বাধীন সার্বভৌম একটি দেশ। সে দেশের মানুষকে তিনি ভীষণ ভালবাসতেন। সেই ভালবাসার অনেক গল্প আছে। তারই একটি দিয়ে এ লেখার ইতি টানবো।
২০০৪ সনের একুশে আগস্ট, পুলিশ সিটিজেন ক্লাবে বঙ্গবন্ধু পরিষদ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবস অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে এসেছিলেন বঙ্গবন্ধুর দেহরক্ষী প্রাক্তন এমপি জনাব মহিউদ্দিন। বক্তৃতায় জনাব মহিউদ্দীন বঙ্গবন্ধুর সাথে তাঁর নানান স্মৃতিকথা বলছিলেন। সেখান থেকেই এ গল্প।
বঙ্গবন্ধু তখন রাষ্ট্রপতি। দুপুরে খাবার পর গণভবনে তিনি একটু তন্দ্রাচ্ছন্ন থাকতে পছন্দ করতেন। পাইপ আর দুপুরের তন্দ্রাটাই তাঁর বিলাসিতা। বঙ্গবন্ধু যখন বিছানায় কাত হতেন মহিউদ্দিন বঙ্গবন্ধুর গা হাত পা টিপে দিতেন। বঙ্গবন্ধু এটা যেমন চাইতেন মহিউদ্দিনও তেমনি আনন্দ পেতেন। একদিন দুপুরে মহিউদ্দিনের বাসায় হঠাৎ মেহমান। তাঁকে যেতেই হবে। তাই তিনি বঙ্গবন্ধুকে বলে কিছুক্ষণের জন্য তাঁর বাসায় গেছেন। যাবার আগে বঙ্গবন্ধুর পিয়ন ফরিদকে বলে গেছেন সে যেন তন্দ্রাচ্ছন্ন বঙ্গবন্ধুর গা হাত পা টিপে দেয়। মহিউদ্দিন তাঁর অতিথি বিদায় করে গণভবনে ফিরে এসে যে দৃশ্যটি দেখেন তাহলো - বঙ্গবন্ধু ঘণ্টা খানেক আগে যেমনি কাত হয়ে শুয়ে ছিলেন ঠিক তেমনই আছেন। আর তাঁর পায়ের উপর পিয়ন ফরিদ মাথা রেখে নাক ডেকে ঘুমোচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর পা ফরিদের মুখের লালায় ভরে আছে। মহিউদ্দীনের ঘরে প্রবেশ বুঝতে পেরে বঙ্গবন্ধু ফিসফিসিয়ে মহিউদ্দিনকে বলছেন - শব্দ কোর না। ফরিদ ঘুমাচ্ছে। ও খুব ক্লান্ত। ওকে ঘুমোতে দাও। বঙ্গবন্ধুকে মহিউদ্দীন যে অবস্থায়, যে কাত হওয়া অবস্থায় দেখে গেছেন তিনি সে অবস্থাতেই চোখ বুঁজে আছেন। একটুও নড়েননি। পাছে ফরিদের ঘুমটা ভেঙ্গে যায়।
এই বঙ্গবন্ধুকে আজ থেকে চল্লিশ বছর আগে আজকের এই দিনটিতে আমরা নৃশংসভাবে হত্যা করেছি। সে উপলক্ষে আমরা আজকে ভুয়া জন্মদিন পালন করে আবার কেক কাটবো।
কাইউম পারভেজ, সিডনি
|