bangla-sydney
bangla-sydney.com
News and views of Bangladeshi community in Australia













রাজশাহী কলেজের ইংরেজি প্রফেসর
পুরুষোত্তম চক্রবর্তী



প্রফেসর গোপাল চন্দ্র গাঙ্গুলীর সম্পর্কে একটা গল্প আছে যেটা অবিশ্বাস্য। ইংরাজি সাহিত্যের অধ্যাপক প্রফেসর গাঙ্গুলী তখন বাংলাদেশের রাজশাহী কলেজে পড়ান। একদিন করিডোর দিয়ে যেতে যেতে ঐ কলেজের বৃটিশ অধ্যক্ষের মনে হল ক্লাসটি বড়ই চুপচাপ। তিনি জানলার খড়খড়ি তুলে দেখার চেষ্টা করলেন ক্লাসে কি হচ্ছে। গাঙ্গুলী স্যার তখন শেক্সপীয়রের একটি কবিতা পড়াচ্ছিলেন। অধ্যক্ষ শুনলেন, অধ্যাপক গাঙ্গুলী “Strand” কথাটির মানে বোঝাচ্ছিলেন। ভুল মানে বলার জন্য ক্লাসের শেষে তিনি গাঙ্গুলী মশাই কে ডেকে তিরস্কার করেন। অধ্যাপক তখন বলেন, “স্যার, Dictionary তে যে কথা লেখা আছে তা আমার জানা, কিন্তু আমি ছেলেদের সেই অর্থ ই বোঝাচ্ছি, যা ভেবে শেক্সপীয়ার এই কবিতাটি লিখেছিলেন।”

পরের দিন কলেজে ঢোকার সময় অধ্যাপক গাঙ্গুলী দেখলেন নোটিশ বোর্ডে একটা নোটিশ ঝুলছে - “যাদের মাতৃভাষা ইংরাজি নয়, তাঁদের আজ থেকে ইংরাজি ক্লাস নিতে হবে না।”

সঙ্গে সঙ্গে তিনি অধ্যক্ষের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে শান্তিপুরের বাড়ি তে চলে গেলেন পাঁচটি ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে। সেখানে নিজের গ্রামের বাড়িতে চাষবাস নিয়ে ব্যস্ত রইলেন আর সমগ্র ঘটনার বিবরণ দিয়ে Oxford Dictionary Authority কে চিঠি দিলেন।

এর প্রায় বছর খানেক পরে Oxford Dictionary র কর্তৃপক্ষের উত্তর এল, “তোমার পরামর্শ এবং Strand শব্দের ব্যাখ্যা যথার্থ এবং তা গৃহীত হয়েছে। আমাদের dictionary র নতুন সংস্করণে তা প্রকাশিত হবে।”

এই ঘটনার চার বছর পর রাজশাহী কলেজের সেই ব্রিটিশ অধ্যক্ষ অবসরপ্রাপ্ত হয়ে ইংল্যান্ডে ফিরে যান। একদিন সন্ধ্যায় তাঁর হঠাৎ অধ্যাপক গাঙ্গুলীর কথা মনে পড়তেই “Strand” কথাটা মাথায় আসে। সঙ্গে সঙ্গে Oxford Dictionary টেনে নিয়ে মানেটা দেখতে চান। অবাক হয়ে দেখলেন অধ্যাপক গাঙ্গুলীর নাম পাদটীকায় দেওয়া আছে এবং শব্দটির যে ব্যাখ্যা অধ্যাপক গাঙ্গুলী করেছিলেন সেটিও দেওয়া আছে।

একরকম সঙ্গে সঙ্গেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়কে চিঠি লিখলেন সাহেব, “রাজশাহী কলেজের অধ্যাপক গোপাল গাঙ্গুলী কে খুঁজে বার করে এক্ষুনি তাঁকে চাকুরীতে পুনর্বহাল করতে হবে কোন একটি ভালো কলেজে। খোঁজ নিয়ে দেখা হোক এই চার বছর উনি যদি কোন চাকরি না করে থাকেন তাহলে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। টাকা না থাকলে এই টাকার ব্যবস্থা আমি করতে বাধ্য থাকবো।”

স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায় শান্তিপুরে লোক পাঠিয়ে অধ্যাপক গাঙ্গুলীকে ধরে এনে কটকের বিখ্যাত রেভেনসা কলেজের ইংরাজি সাহিত্যের অধ্যাপক পদে বহাল করেন। অধ্যাপক গাঙ্গুলীর পাঁচটি ছেলেই নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর বন্ধু ছিলেন।


(সংগৃহীত)




প্রফেসর পুরুষোত্তম চক্রবর্তী, কলকাতা থেকে






Share on Facebook               Home Page             Published on: 11-Aug-2022

Coming Events: