অপেক্ষা অপরাজিতা
এতটুকু উষ্ণতার জন্য কতশত দিন অপেক্ষা করেছি, তোমার ভালোবাসার ছোঁয়ায় পূর্ণ হতে চেয়েছি মনোযোগী ছাত্রীর মতো। সীমাহীন বালির সমুদ্রে পথিক হয়ে অপেক্ষা করেছি একটু জল পাবার আশায়। তোমার পায়ের শব্দ শুনে দরজা খুলে দেখেছি শূন্য করিডোর। বিশ্ব সংসারের ব্যস্ত সময় আর অন্তঃসার শূন্য এই জীবনের শিকল ভেঙে সময় হয়নি তোমার ফিরে তাকাবার। ক্রমশঃ অবহেলায় ছিটকে পড়েছি জীবনের সুকঠিন কংক্রিটে। আমি আর নিতে পারছি না এই ভালোবাসা হীন জীবন, খুব শব্দহীন ভাবেই হারিয়ে যাবো এই ব্যস্ততা থেকে। বাকিটা পথ হেঁটে যাবো এক নির্জন রাস্তা ধরে।
তুমি টেরই পাবে না কখন ঢং ঢং ঘণ্টা বাজিয়ে সেই রাস্তা ধরে চলে যাবো পৃথিবীর শেষ স্টেশনে। তুমি তখন এপার থেকে চিৎকার করে চোখের জল নিঃশেষ করবে। অনুতপ্ত হৃদয়ে ভালোবাসি বলবার সময়ও পাবে না তুমি। সারা বাড়ী খুঁজে বেড়াবে আমার ছোঁয়া। তোমার অনিয়মিত নিঃশ্বাস প্রশ্বাসের ওজনটা হয়ে যাবে ভারী পাথরের মতো , অপরিচিত আবহাওয়ার ভারে , স্মৃতির তীক্ষ্ণ তাপে ভস্ম হয়ে যাবে তোমার বেঁচে থাকা।
তুমি তখন তন্ন তন্ন করে সারা শহর জুড়ে আমায় খুঁজে বেড়াবে। নিশ্ছিদ্র ঘরের গভীর একাকীত্বে আমার ছায়ার সাথে খেলে বেড়াবে। তোমার কৃশকায় আঙ্গুলগুলো হাতরে বেড়াবে, খুব পরিচিত হাতের এক স্পর্শ। বেহাগের করুণ সুরের মতো প্রতিধ্বনিত হবে তোমার আর্তনাদগুলো।
আমি তখন ওপার থেকে দু-হাত তুলে তোমায় আশীর্বাদ করবো। যন্ত্রণার মাঝেও অনন্ত যাত্রায় শান্তিতে যেন শেষ নিঃশ্বাস নিতে পারো। তোমার জড়ো হাত যেন আমার ক্ষমার দেওয়ালটা ভেঙে দিতে পারে। আমি যেন ভুলে যেতে পারি সেই দীর্ঘ অপেক্ষার দিনগুলির কথা।
|