একদিন মিলিত হবো আমরা নন্দিনী মুস্তাফী
একদিন একদিন করে মাস চলে যায়; আসে নূতন দিন, তারপর আসে মাস, আবার যাবে চলে আপন নিয়মে। এক মাস, দু'মাস অথবা ছ'মাস! এভাবে বছরের পরে যুগ, আবার যুগ- যুগের পরে শত শতাব্দীর আগমন হবে, আবার যাবেও চলে আমাদের নির্দ্বিধায় পিছনে ফেলে।
শোন ভাইয়া! আমরা আবার মিলিত হবো, তোমার আদরের কালির মা; আর আমাদের প্রিয় মা! বেছে নেবো কোন সুনসান বিস্তীর্ণ সবুজ গালিচা! অথবা নীরবে বয়ে চলা জলধারার পাশে কিম্বা! ধরো যেখানে নেমে আসে নীলাদ্রি অথবা নিস্তব্ধ মৃন্ময়ী রাত্রির গলে যাওয়া জোছনায়; মানেটা হলো শুধু আমরাই যেন মুখোমুখি দাঁড়াতে পারি আমাদের চতুর্ভুজ হতভাগা জীবনের গল্পের খাতাটি খুলে, কোন একদিন অদেখা সেই ঈশ্বরের দ্বারে। আমাদের এলোমেলো খেরো খাতায় কি লিখেছিলেন তিনি নিবিষ্ট মনে!
কি যত্নের সোনালী ললিত ললাট: অথচ কি বেদনার্ত গল্পটাই আমাদের! রূপ গুনে অপরূপা ক্ষুরধার তীক্ষ্ণতা বৈধব্যের শুভ্রতায় আবৃত কিশোরী মা আজন্ম অপেক্ষায় বুকের বা-পাশটাকে খামচে ধরে কেঁদেছিল দিন মান; তুমি আসবে বলে- শুধু কি আমিই কেবল? সাক্ষী সেতো ঈশ্বর নিজেই স্বয়ং। আর কালির মা! হুম্! ও'তো বড্ড বাঁচা বেঁচে গেছে সোনালী অতীত, বর্তমানের বেদনায়, যাতনায় ব্যর্থতা সবটুকু ভুলের সায়রে নিমগ্নতায়!
আমার আর কি! আমি তো বেশ আছি ভাই; মাকে, তোমাকে হারিয়ে, কালীর মায়ের প্রতি মাসে গর্ভধারিণী জন্য তুলে রাখা সাবান স্নো শাড়ীর ভাঁজে!
খাই-দাই, আয়েশ করে টিভি দেখি রিমোট চাপি আপন মনে আধখানা দেহ কাউচের ভেতর ডুবিয়ে দিয়ে, থিয়েটারের নাম না জানা গল্পগুলোয়; খুঁজে ফিরি আমাদের চরিতখানা। কিম্বা সব থেকে হারাবার পথে যেতে মদের পেয়ালায় চুমুক বসাই।
একদিন আসবে সুবর্ণ সুদিন যেদিন ঈশ্বরের পায়ে অর্ঘ্য দান করার দু:সাহসের সুযোগ পাবো, মাতাল হয়ে প্রশ্নের পর প্রশ্নের ঝুলি রেখে দেব যত্ন করে করজোড়ে। এবং আমাদের ঈশ্বর! তাবৎ দুনিয়া ভুলে; খণ্ড বিখণ্ডিত জীবনের টুকরোগুলোয় দৃষ্টি দিয়ে জেনে রেখো! ভাববে আবার নূতন করে।
১০/২২/২০২২
নন্দিনী মুস্তাফী, আলবানী, যুক্তরাষ্ট্র |