অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ বিজনেস এক্সপো উপলক্ষে ঢাকায় সাংবাদিক সম্মেলন
নাইম আবদুল্লাহ:অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ বিজনেস ফোরামের উদ্যোগে সিডনিতে বিজনেস এক্সপো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আর এই বিজনেস এক্সপোতে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে বাংলাদেশি ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো। বিজনেস এক্সপো উপলক্ষে ৩০ এপ্রিল (মঙ্গলবার) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এক সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ বিজনেস ফোরামের সভাপতি আব্দুল খান রতন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার জন্য অস্ট্রেলিয়ার ব্যবসায়ীরা প্রস্তুত আছে। তারা একটি নির্ভরযোগ্য মাধ্যম খুঁজছে, যেন আমাদের মার্কেটে ইনভেস্ট করলে সেটা বিফলে না যায়। আমরা যদি তাদের দেখাতে পারি যে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার সুন্দর পরিবেশ আছে তাহলে তারা বিমুখ হবে না। তাদেরকে সেই পরিবেশটা আমাদেরকে তৈরি করে দিতে হবে। আমরা যদি তাদের কমপ্লাইসন মোকাবিলা করতে না পারি তাহলে কখনো তাদের মার্কেটে পণ্য ঢুকানো যাবে না। আমরা ইতোমধ্যে বাংলাদেশে ইন্ডাস্ট্রি দেওয়ার জন্য সিরাজগঞ্জ ইকোনমিক জোনের সঙ্গেও কাজ করছি।
আব্দুল খান রতন আরও বলেন, অস্ট্রেলিয়ার সহযোগিতায় আগামী ৩ ও ৪ অক্টোবর ২০২৪ অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত হবে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ বিজনেস এক্সপো। এই এক্সপোতে ১৫০টি স্টল বসবে আশা করছি। দুই দিনের এক্সপোতে প্রতিদিন চারটি করে আটটি সেমিনার করা হবে। কারা কারা এই এক্সপোতে অংশগ্রহণ করবেন সেটি আমাদের সংগঠনের মাধ্যমে সব বিস্তারিত জানতে পারবেন।
ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর প্রতিনিধিরা এসময় বিজনেস এক্সপোতে সহযোগিতার আশ্বাস জানিয়ে বলেন, অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ বিজনেস ফোরাম যে উদ্যোগে নিয়েছে সেটি সত্যিই প্রশংসনীয়। এই বিজনেস এক্সপো সহ তাদের আমাদের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে। অস্ট্রেলিয়ার মার্কেটে আমরা পিছিয়ে আছি, আশা করি এখন থেকে আমরা আর পিছিয়ে থাকবো না। বিজনেস এক্সপোর মাধ্যমে বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার সম্পর্ক আরো বৃদ্ধি পাবে।
অতিথিরা অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার লক্ষ্যে অনুষ্ঠিতব্য অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ বিজনেস এক্সপোতে সক্রিয় অংশগ্রহণের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন এবং সাফল্য কামনা করেন।
অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার এম আল্লামা সিদ্দিকী বলেন, মানসিকভাবে বা সংস্কৃতির দিক থেকে অস্ট্রেলিয়া পশ্চিমা বিশ্বের অংশ। তাদের মূল ফোকাস নর্থ আমেরিকা, ইউরোপের দিকে আগেও ছিল, এখনো আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। শুধু ব্যবসার দিক থেকে নয়, সব দিক থেকে কৌশলগতভাবে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক বৃদ্ধি পাচ্ছে। আরএমজি ও হোমটেক্স শেয়ার দিন দিন কমছে। সেটা সমস্যা না, কারণ একটার উপর নির্ভর করলে হবে না। অন্য পণ্যের দিকেও আমাদের ফোকাস দিতে হকে। শুধু অস্ট্রেলিয়া না অন্যান্য দেশে চামরা, প্লাস্টিক, পাট সহ আরো আমাদের অনেক পণ্য আছে রপ্তানি করার মতো। বাংলাদেশের মার্কেট খুবই প্রোটেনশিয়াল, এটি কাজে লাগাতে হবে। অস্ট্রেলিয়াতে ম্যান-পাওয়ারও কাজে লাগানোর সুযোগ আছে আমাদের। তিনি বলেন, আমাদের বিজনেস কমিউনিটিগুলোর মধ্যে আরো বড় সমন্বয় দরকার। এই সমন্বয়টা অনেক দুর্বল আমাদের। আরেকটা কথা মনে রাখতে হবে, টাকা খরচ না করলে টাকা আসে না। এই উপলব্ধিটা আমাদের সরকারি লোকের মধ্যেও থাকা উচিত। আমাদের প্রচুর পরিমাণে বিনিয়োগ করতে হবে। বিজনেস ও বিনিয়োগ নিয়ে আমাদের আরো অনেক গবেষণা করতে হবে।
বাংলাদেশে অস্ট্রেলিয়ার ডেপুটি হাই কমিশনার ক্লিনটন পোবক বলেন, অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ বিজনেস ফোরামকে এই উদ্যোগের জন্য শুভ কামনা জানাচ্ছি। তারা খুব ভালো একটি উদ্যোগ নিয়েছে। এর মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছি।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশে অস্ট্রেলিয়ার ডেপুটি হাই কমিশনার ক্লিনটন পোবক, অতিরিক্ত সচিব বেজার সদস্য প্রশাসন মো. আলী আহসান, দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) পরিচালক ও এসএসআর গ্রুপের চেয়ারম্যান রাকিবুল আলম দিপু, বিজেএমইএ এর পরিচালক মো. শোভন ইসলাম, বিকেএমইএ এর ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. রাশেদ, সিরাজগঞ্জ ইকোনমিক জোনের পরিচালক শেখ মনোয়ার হোসেন। এছাড়াও, ব্যবসায়িক সংগঠনগুলোর অন্যান্য প্রতিনিধি এবং অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ বিজনেস ফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান, পরিচালক এএসএম মুজ্জামেল হোসেন, পরিচালক শফিক শেখ ও উপদেষ্টা নাইম আবদুল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।
|