সিডনিতে একুশের প্রভাতফেরী ও বইমেলা অনুষ্ঠিত
নাইম আবদুল্লাহ: গত ১৭ই নভেম্বর ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কোর ৩০তম অধিবেশনে প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারিতে “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস” উদযাপনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। একুশের বৈশ্বিক উত্থানের ক্ষেত্রে এটা ছিল নিঃসন্দেহে এক বড় সাফল্য। ২০০৪ সালে এই চেতনার বৈশ্বিক প্রাতিষ্ঠানিকতা অর্জনকে সামনে রেখে নির্মল পাল সহ আরও কিছু অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী বাংলাদেশীদের একান্ত প্রচেষ্টায় ‘একুশে বইমেলা পরিষদ’এর পরিবর্তিত নাম ‘একুশে একাডেমী অস্ট্রেলিয়া’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায়। সিডনির এশফিল্ডে প্রতিষ্ঠিত হয় পৃথিবীর প্রথম “আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মৃতিসৌধ”। “কনজারভ ইউর মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ” বার্তা নিয়ে স্মৃতিসৌধের বুকে মাতৃভাষা সংরক্ষণের দৃষ্টান্তের প্রথম মাতৃভাষা হিসেবে নজির স্থাপন করেছে ‘বাংলা’।
মাতৃভাষা চর্চা ও তার ইতিহাস আগামী প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে প্রতিবারের মতো এবারও একুশে একাডেমী অস্ট্রেলিয়া ইনক এর উদ্যোগে গত ২২ শে ফেব্রুয়ারি রবিবার সিডনির অ্যাশফিল্ড পার্কের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা সৌধে একুশের প্রভাতফেরী ও বইমেলা অনুষ্ঠিত হয়।
‘এসো বাংলার মাটির ভাষার ছেলেরা আজকে, সেই ফাল্গুন এসেছে আবার ফেব্রুয়ারির সেই রাজপথ ক্ষুব্ধ নীরব-বাতাস বন্য, আজকে মিছিল হৃদয়ে হৃদয়ে তোমার জন্য’ শ্লোগান দিয়ে সকালে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা সৌধে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক দলসহ সর্বস্তরের অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী বাঙালীদের পুষ্পস্তবক অর্পণ, প্রভাত ফেরী ও জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যে দিয়ে দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু হয়।
তারপর সারাদিন ব্যাপী অনুষ্ঠান সূচীতে ছিল বইমেলা, একুশের গান, কবিতা আবৃতি, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, একুশে ফুলকলি ও একুশে কিশলয় পরিবেশিত মনোজ্ঞ নাচ-গান, পুরস্কার বিতরণ, নূতন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন এবং স্বেচ্ছায় রক্তদান প্রতিযোগিতা ইত্যাদি।
বিকেলে একুশে একাডেমী অস্ট্রেলিয়া আয়োজিত সেলিম আল দীনের নাটক মুনতাসীর ফ্যান্টাসি মঞ্চস্থ হয়। নির্দেশনায় ছিলেন সিডনি প্রবাসী বিশিষ্ট অভিনেতা শাহীন শাহনেওয়াজ। বইমেলা উপলক্ষে মাতৃভাষা নামে একটি সংকলনও প্রকাশিত হয়।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় মেয়র, এমপি ও কাউন্সিলর সহ লেবার ও লিবারেল পার্টির কর্মী ও নেতৃবৃন্দ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের বিখ্যাত চিত্রশিল্পী কে জি মুস্তফা।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন একুশে একাডেমী অস্ট্রেলিয়া ইনক এর কার্যকরী কমিটির সকল সদস্য, বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ সহ অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী সর্বস্তরের বাংলাদেশী।
|