bangla-sydney













তুরস্কে দশ দিন
ড. মুনির আহমেদ খান



সম্প্রতি আমাদের অনেক দিনের কাঙ্ক্ষিত তুরস্ক ভ্রমণের সুযোগ হয়েছিল। পুরো পরিকল্পনা, আয়োজন, এবং কার্যকরী করেছিল কায়রো অবস্থিত মেমফিস টুরস (Memphis Tours) নামে একটা ট্রাভেল এজেন্ট। ৭ থেকে ১৮ ই এপ্রিল পর্যন্ত চমৎকার একটা প্যাকেজ ট্যুরের আয়োজনে আরও অংশ নিয়েছিল তুরস্কে অবস্থিত লেটিচুড নামে আরেকটি এজেন্ট যারা মেমফিসের এর সঙ্গে পার্টনারশিপে পরিচালিত। এই ১০ দিন আমাদের থাকা, খাওয়া, ঘোরাঘুরির সার্বিক দায়িত্ব এই প্যাকেজ ট্যুরের অন্তর্ভুক্ত ছিল।

তুরস্ক, বা তুর্কি প্রজাতন্ত্র, একটি ইতিহাস সমৃদ্ধ ট্রান্সকন্টিনেন্টাল মুসলিম দেশ (৯২ শতাংশ মুসলমান) যা মূলতঃ এশিয়ার পশ্চিম উপদ্বীপের আনাতো পোর্টে অবস্থিত। দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের বলকান উপদ্বীপে। তুরস্ক ১২৯৯ থেকে ১৯২২ সাল পর্যন্ত ৬০০বছর অটোমেন বা ওসমানিয়া সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৯২৩ সালে মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক ক্ষমতায় আসার পর তুরস্ককে রিপাবলিক ঘোষণা করে এবং বিভিন্ন উন্নয়নমূলক, গণতান্ত্রিক ও অর্থনৈতিক সংস্কার নীতি গ্রহণ করে। ১৯৫২সালে তুরস্ক নেটো (NATO)'র কার্যকরী সদস্য নির্বাচিত হয়। দেশটি একটি বৃহৎ উপদ্বীপ যা ইউরোপ ও এশিয়া মহাদেশের সেতুবন্ধন হিসাবে কাজ করে।

তুরস্ক একটি সুন্দর দেশ, তিন দিক থেকে কৃষ্ণ সাগর, ভূমধ্যসাগর এবং এজিয়ান সাগর দ্বারা বেষ্টিত। দক্ষিণে ভূমধ্যসাগর, এজিয়ান সাগর এবং উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমে কৃষ্ণ সাগর। দেশটি দারদানেলেস প্রণালী এবং বসফরাস-মারমারা সাগরের অন্তর্ভুক্ত। আঙ্কারা তুরস্কের রাজধানী এবং দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর (জনসংখ্যা ৫.৫ মিলিয়ন); ইস্তাম্বুল হলো এর বৃহত্তম শহর (জনসংখ্যা ১৫ মিলিয়ন) এবং প্রধান আর্থিক কেন্দ্র। এই শহরটিকে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ মিলন স্থান বলা হয়। তুরস্কের এই বৃহত্তম ইস্তাম্বুল শহরটি বসফরাস সমুদ্রপথের জমিতে নির্মিত। শহরটির আংশিক ইউরোপে এবং আংশিক এশিয়ায় অবস্থিত, তবে এশিয়ার ভাগেই পড়েছে বেশিরভাগ অংশ (৯০ শতাংশের উপর)। দেশের মোট জনসংখ্যা ৮৫ মিলিয়নের উপর।

ইস্তাম্বুলের ইউরোপীয় অংশটি, এশিয়ান অংশ থেকে বসফরাস প্রণালী দ্বারা পৃথক হয়েছে, একটি ৩১ কিমি-দীর্ঘ জলপথ যা কৃষ্ণ সাগরকে মারমারা সাগরের সাথে সংযুক্ত করে এবং দুটি মহাদেশের মধ্যে একটি প্রাকৃতিক সীমানা তৈরি করে।

আমাদের সময় অনুযায়ী ৭ এপ্রিল ২০২৩ কাতার এয়ারওয়েজ এ মেলবোর্ন থেকে রাত ৯ টার ফ্লাইটে যাত্রা শুরু হয়। রোজার মাস থাকায় এবং ইফতারের সময় হওয়ায় বাসা থেকে নেয়া খাবার চেকিং করার পর খেতে হল। সাড়ে চোদ্দ ঘণ্টা যাত্রার পর ৮ তারিখ স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে চারটায় দোহা পৌঁছাই। প্রায় তিন ঘণ্টা বিরতির পর একই দিন সকাল ৭:১৫ মিনিটে যাত্রা করে স্থানীয় সময় সকাল ১১: ৪৫ মিনিটে ইস্তাম্বুল এয়ারপোর্টে পৌঁছাই। এই দীর্ঘ সময় বিমানে বসে থাকতে থাকতে ভীষণ কষ্ট হচ্ছিল। আমাদের এজেন্টের গাড়ি নির্ধারিত গেট থেকে আমাদের রেডিসন ব্ল পেরা (Radisson Blu Pera) হোটেলে নিয়ে আমাদের চেক ইন করিয়ে দেয়।

হোটেলে পৌঁছে আমাদের জিনিসপত্র গুছিয়ে রাতের খাবার খেয়ে আমাদের ইস্তাম্বুল এ প্রথম দিন চলে যায়। প্রথম দিনেই মনে হল তুরস্কের লোকজন ইউরোপিয়ানদের মতই - গায়ের রং ও শারীরিক গঠন ইত্যাদির দিক থেকে। মানুষজন প্রায় সবাই মুসলমান কিন্তু গোঁড়া নয়, যথেষ্ট উদার এবং আধুনিক। বেশিরভাগ লোকজন ভালো ইংরেজি জানে না, এমন কী এয়ারপোর্টে যারা কাজ করে তারাও ইংরেজিতে ভালোভাবে যোগাযোগ করতে পারেনা বা চায় না। তুরস্কের সফরের সময় সর্বমোট ৫ টি গ্রুপের সঙ্গে আমাদের পরিচয় হয়েছে: একটা গ্রুপ ছিল লুক্সেম্বারগ থেকে আগত মা এবং দুই ছেলে (৩ জন); আমেরিকা থেকে আসা পরিবার দুই মেয়ে ও তাদের বাবা মা (৪ জন); অস্ট্রেলিয়ার সিডনি থেকে ৪ জন (দুই বন্ধু এবং তাদের পরিবার, এবং মেলবোর্ন থেকে আমরা দুজন। অল্প সময়ের জন্য পরিচয় হলো আর্জেন্টিনা থেকে আসা, স্বামী স্ত্রী দু’জন।


আমাদের ভ্রমণের বৃত্তান্ত:

১ম দিন শনিবার ৮ এপ্রিল ২০২৩: তুরস্কের সবচেয়ে বড় শহর ইস্তাম্বুলে পৌঁছা ও চমৎকার রেডিসন হোটেলে অবস্থান।

২য় দিন রোববার ৯ এপ্রিল ২০২৩: আমাদের সফর শুরুঃ

দিনটি ছিল সারাদিনের বসফরাস ট্যুর। হোটেলে প্রাতরাশ করার পর আমাদের বসফরাসে পুরো দিন কাটানোর কার্যক্রম শুরু হয়। আমাদের দলের সদস্য মোট ৯ জন - গাইড ছিলেন মিস জেল অকসোজ। সকালে আমরা ১৯ শতকে সুলতান আবদুল আজিজের সাদা মার্বেলে নির্মিত বেইলারবেই রাজপ্রাসাদ পরিদর্শন করি। এক কথায় অপূর্ব এবং বিলাস বহুল রাজ প্রাসাদ। এটি পরবর্তী সুলতানদের জন্য গ্রীষ্মকালীন বাসস্থান এবং বিদেশী বিশিষ্ট ব্যক্তিদের জন্য একটি গেস্ট হাউস হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। পরে আমরা ১৭ শতকে নির্মিত মিশরীয় বাজার বা মশলা বাজারের সফর করি। বিভিন্ন দেশ থেকে আগত মানুষে পুরো বাজার গিজ গিজ করছিল। আমাদের গাইড এবং পরিচিত বন্ধুদের অনেকেই পকেট এবং ব্যাগ সাবধানে রাখতে বলেছিল। তাই আমরা সাবধানের সাথে পুরো স্বাধীনতা নিয়ে বাজারে ঢুকলাম। এই এলাকা ইস্তাম্বুলের এমিনুনের পুরানো পাড়ায় অবস্থিত। তারপর আমরা শহরের উভয় পাশে মারমারা সাগরের ধারে দুই পাশে বসফরাস সফরে নির্ধারিত ছোট জাহাজ নিয়ে তুরস্কের এশিয়ান এবং ইউরোপীয় অংশ দেখতে দেখতে যাই। কী যে সুন্দর সব স্থাপনা! এশিয়ান সাইডের অংশের মধ্যে প্যালেস, পার্ক , মসজিদ এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা দেখেছি। মারমারা সমুদ্র বা বসফরাস প্রণালীর দুপাশে চমৎকার ঐতিহাসিক সুন্দর সুন্দর প্যালেস, আবাসিক এলাকা, স্কুল, মসজিদ, গির্জা এবং চমৎকার সব সুন্দর সুন্দর বিল্ডিং আমাদের বিমোহিত করে। এই সফরের সময় আমরা অনেক ঐতিহাসিক স্মৃতিস্তম্ভগুলি দেখতে সক্ষম হলাম যেমন: Dolmabahce Palaces, วiragan, Rumeli Hisarı Fortress, এবং অন্যান্য। বসফরাস প্রণালীর ইউরোপীয় উপকূলে তুরস্কের ইস্তাম্বুলের বেসিকতাস জেলায় অবস্থিত ডলমাবাহে প্রাসাদটি ১৮৫৬ থেকে ১৮৮৭ এবং ১৯০৯ থেকে ১৯২২ সাল পর্যন্ত অটোমান সাম্রাজ্যের প্রধান প্রশাসনিক কেন্দ্র হিসাবে কাজ করেছিল তা দেখি। দুপুরে মধ্যাহ্নভোজনের পর আমরা কামলিকা পাহাড়ে আরোহণ করি, যা প্রেমীদের পাহাড় নামে পরিচিত। এটি বসফরাস এবং ইস্তাম্বুলের একটি মহিমান্বিত প্যানোরামিক দৃশ্য দেখার জন্য চমৎকার স্থান। দিনশেষে আমাদের হোটেলে পৌঁছে দেয়া হয়।

৩য় দিন সোমবার ১০ এপ্রিল ২০২৩: ইস্তাম্বুলের পুরো দিনের সফর।

হোটেলে সকালের নাস্তা খাওয়ার পর শহরের পুরো দিনের সফরের জন্য প্রস্তুত হয়ে হোটেলের লবিতে অপেক্ষা করি। সকাল থেকেই গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছিল। সকাল ৮:৩০ মিনিটে বৃষ্টির মধ্যেই আমরা আমাদের নির্ধারিত ট্যুর বাসে উঠে গেলাম। সকালে আমরা হাজিয়া সোফিয়া (Hagia Sophia) পরিদর্শন করতে যাই। হাজিয়া সোফিয়া প্রথম নির্মিত করেন ৬ শতকে একটি গির্জা হিসাবে বাইজেন্টাইনের সম্রাট জাস্টিন। এটি বাইজেন্টাইন বিশ্বের জন্য ধর্মীয়, রাজনৈতিক এবং শৈল্পিক জীবনের একটি কেন্দ্র হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে এবং সে সময়কাল সম্পর্কে অনেক পণ্ডিত এতে তাদের অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করেছিলেন। ১৪৫৩ সালে এনাটলিয়ায় কনস্ট্যান্টিনোপল শহর পতনের পর হাজিয়া সোফিয়া, আনুষ্ঠানিকভাবে হাজিয়া সোফিয়া গ্র্যান্ড মসজিদ প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি তুরস্কের ইস্তাম্বুলে একটি মসজিদ এবং প্রধান সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক স্থান হিসাবে গড়ে উঠে। বিল্ডিংটি পূর্ব রোমান সাম্রাজ্য দ্বারা ৩ বার নির্মিত হয়েছিল। সুলতান দ্বিতীয় মেহমেদ ১৪৫৩ সালে কনস্টান্টিনোপল জয়ের পরে এবং কাঠামোটিকে একটি মসজিদ মনোনীত করার পরে এটি মুসলিম উপাসনার একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পরিণত হয়। বর্তমানে এটি মসজিদ, পাঠাগার, এবং মিউজিয়াম হিসাবে ব্যবহৃত হয়।

হাজিয়া সোফিয়া পরিদর্শনের পথে আমরা ঐতিহাসিক অনেক পরিচিত নীল মসজিদ (Blue Mosque) দেখি। সে সময় মেরামতের কাজ হওয়ায় আমাদের ভিতরে যাওয়ার অনুমতি ছিল না। ইস্তাম্বুলের নীল মসজিদ (১৬০৯ থেকে ১৬১৬ সালের মধ্যে নির্মিত) যা সুলতান আহমেদ মসজিদ নামেও পরিচিত। এটি তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অবস্থিত উসমানীয় যুগের ঐতিহাসিক ইম্পেরিয়াল মসজিদ। একটি কার্যকরী মসজিদ, প্রচুর সংখ্যক পর্যটক দর্শনার্থীদেরও আকর্ষণ করে।

আমরা বৃষ্টিতে ভিজছি, হাঁটছি আর দেখছি। টপকাপি (Topkapi) ইস্তাম্বুলের সবচেয়ে চিহ্নিত স্থানগুলির মধ্যে অন্যতম। আমাদের ট্রাভেল গাইড তার বিস্তারিত বর্ণনা এবং ইতিহাস বলছিল। এটি একটি সুন্দর স্থাপত্যের বিস্ময় যা বিশ্বের বৃহত্তম এবং সবচেয়ে প্রভাবশালী চার্চগুলির মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচিত হয়। এরপরে, আমরা টপকাপি প্রাসাদ পরিদর্শন করি, যেখানে সুলতানরা ১৪৭৮ থেকে ১৮৫৬ সালের মধ্যে বাস করতেন। টপকাপি একটি একক কাঠামো নয়, বরং গোল্ডেন হর্নের প্রবেশপথে আশেপাশের বা ঐতিহাসিক কেন্দ্রে অবস্থিত বিভিন্ন কিয়স্ক, বাগান এবং বিতরণকৃত এলাকাগুলির সমন্বয়ে গঠিত একটি জৈব স্মৃতিসৌধ কমপ্লেক্স। ১৭৫৫ সালে নির্মিত নুরু ওসমানিয়া মসজিদটি সবচেয়ে অনন্য ধর্মীয় ভবনগুলির মধ্যে একটি। এটি ইস্তাম্বুলের প্রথম মসজিদ যা বারোক বৈশিষ্ট্যসহ নির্মিত হয়েছিল।

মধ্যাহ্ন ভোজনের পর বিকেলে আমরা রোমান হিপ্পোড্রোম পরিদর্শন করি। এটি এমন একটি স্থান যেখানে রথ রেস এবং সার্কাস হয়েছিল, যা এক হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে কনস্টান্টিনোপলের বাসিন্দাদের জন্য বিনোদন হিসাবে কাজ করেছিল। ব্রিজের নিচে একটা চমৎকার রেস্টুরেন্টে আমরা দুপুরের খাওয়ার জন্য যাই। আসার পথে প্রধান ব্রিজের নিচে হাটার পথে হাঁটতে হাঁটতে দেখি প্রচুর লোকজন বড়শি দিয়ে নানা সাইজের নানা রকম মাছ ধরছে। খেতে বসে দেখলাম রেস্টুরেন্টের লোকেরা বিভিন্ন রকমের মাছ একটা কন্টেইনারে নিয়ে টেবিলে টেবিলে যাচ্ছে। কাস্টমারের চাহিদা অনুযায়ী যে মাছ তাঁরা খেতে চায় সেটাই রান্না করে খাওয়ার সঙ্গে সরবরাহ করবে বলে। খাওয়ার পরে আমরা কভার মার্কেট, এল গ্রেনড বাজারে দিনটি শেষ করি যেখানে আমরা আমাদের ফ্রি সময় উপভোগ করি। দিন শেষে আমাদের ইস্তাম্বুলে রেডিসন হোটেলে পৌঁছে দিয়ে যায়।

৪র্থ দিন মঙ্গলবার ১১ এপ্রিল ২০২৩: ক্যাপাডোসিয়া / ক্যাপাডোসিয়া পুরো দিনের গ্রিন ট্যুর।

খুব সকালে সাড়ে চারটায় ফ্লাইট ধরার জন্য হোটেল থেকে সরবরাহ করা নাস্তার বাক্স নিয়ে আমরা তৈরি হয়ে আমাদের গাড়ীর অপেক্ষায়। এয়ারপোর্টে পোঁছাতে এক ঘণ্টার ওপর, আভ্যন্তরীণ ফ্লাইটেও আরও এক ঘণ্টার ওপর লাগবে কায়সেরি এয়ারপোর্টে পোঁছতে। একটি প্রাথমিক চেক-আউটের পরে আমরা যাত্রা শুরু করি। আমাদের হোটেল উর্গুপে হলেও আমাদের এয়ারপোর্ট থেকে সরাসরি নিয়ে যাওয়া হয় ক্যাপাডোসিয়ায়। ক্যাপাডোসিয়ার মানে হল চমৎকার ঘোড়ার ভূমি। এবারে আমাদের সদস্য ৯ জন, এবং গাইড হলো বারফিন কেসকিন, খুবই অল্প বয়স, মাত্র ২৬ বছর। ট্যুরিজম এর ওপর ডিগ্রি সম্পন্ন করার পর এখন পি এইচ ডি করছে আরকিওলজিতে। চমৎকার ইংরেজি বলে।

প্রায় তিন মিলিয়ন বছর আগে ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতে সৃষ্ট এক অবিশ্বাস্য ভূমিরূপ দেখতে পাই। আমরা সবাই অবাক হয়ে যাই। হাজার লক্ষ বছর ধরে বাতাস এবং বৃষ্টিতে ক্ষয় প্রাপ্ত হতে হতে এমন অনেক অকল্পনীয় বিভিন্ন আকৃতির মূর্তি তৈরি হয়েছে যা না দেখলে বিশ্বাস হতো না। অনেক কিছুই মনে হতে পারে একেকটি পাহাড় বা একগুচ্ছ পাহাড়কে। যেমন কোন জন্তু, জানোয়ার, পশু, পাখি, মাছ, উট, ঘোড়া, নর-নারীর স্ট্যাচু ইত্যাদি। এ রকম একটি পাহাড় রয়েছে যার নাম কল্পনা ভ্যালি। নিজ চোখে দেখে অনেক কিছুই ভাবা যায়। আমরা দুজন অনেক কিছুই আবিষ্কার করলাম। এ যেন এক মজার খেলা! “ক্যাপাডোসিয়া হট এয়ার বেলুন” এর জন্য বিশ্ব বিখ্যাত। অনেক পর্যটক সেখানে যায় হট এয়ার বেলুনে আরোহণ করার জন্য।

এই দিনে আমরা দেখতে সক্ষম হই কিজিলকুকুর - উর্গুপের পিছনে একটি বিচ্ছিন্ন উপত্যকা – কবুতরের উপত্যকা, প্রাকৃতিক ভাবে নির্মিত বহুতল বিশিষ্ট আবাসিক দালান কোঠা, গুহা, সেতু, বাড়ি ঘর ইত্যাদি। এখানে কিছু লুকানো শিলা-খোদাই গির্জা সহ সুন্দর শিলা গঠন রয়েছে আমরা তা দুর্দান্ত উৎসাহ নিয়ে উপভোগ করি। এই এলাকার সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশ হল মাকড়সার জালের মতো দ্রাক্ষাক্ষেত্র এবং বাগানের মাধ্যমে ছোট গ্রাম এবং শহরগুলির সাথে সংযোগকারী অসংখ্য ট্র্যাক বা পায়ে হাঁটার রাস্তা। গ্রামবাসীদের এলাকায় কাজ করতে এবং পর্যটকদের আঙ্গুর, আপেল বা এপ্রিকট দিতে দেখা যায় সর্বদা। আমরা অবশ্য সেসব কিছু দেখার সুযোগ পাইনি।

আরও দেখি কেভুসিন (CAVUSIN) এলাকার প্রাচীনতম বসতিগুলির মধ্যে একটি, Cavusin G๖reme-Avanos রোডে গোরেমে থেকে ২ কিমি দূরে অবস্থিত। আন্ডারগ্রাউন্ড সিটি ক্যাপাডোসিয়ার ৪০ টির মধ্যে সবচেয়ে বড় এবং গভীরতম। তাদের উভয়েরই আট তলা রয়েছে, যদিও সব জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত নয়। আমরা কবুতরের ঘর এবং শিলা গঠন ইত্যাদি সবই পরিদর্শন করি। বারফিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ আমাদের ইভান্থিয়া গুহা হোটেলে পোঁছে দেয়ার পর চেক ইন করিয়ে দেয়।

৫ম দিন বুধবার ১২ এপ্রিল ২০২৩: ক্যাপাডোসিয়া ফুল ডে রেড ট্যুরঃ

সকালে প্রাতরাশের পরে, আমাদের হোটেল থেকে তুলে নেওয়া হয়। তারপরে, আমাদের গোরেমে ওপেন এয়ার মিউজিয়াম এবং উচিসারের প্রাকৃতিক দুর্গ পরিদর্শন সহ ক্যাপাডোসিয়াতে পুরো দিনের ভ্রমণের জন্য ক্যাপাডোসিয়াতে অনেক দর্শনীয় ও ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শন করি। এখানে, আমরা হস্তনির্মিত কার্পেট, তুর্কি টাইলস, গোমেদ এবং মৃৎপাত্রের মতো স্থানীয় হস্তশিল্পের পিছনে সমৃদ্ধ ইতিহাস বোঝার বা সরজমিনে দেখার সুযোগ পাই। শেষ সাইটগুলি দেখি পাসাবাগ ভ্যালি এবং অ্যাভানোস। অ্যাভানোস এ হাতে কারুকাজ করা – সিরামিক কারখানা দেখতে যাই।

সুলতানেট (অর্থ তরুণী রাজকুমারী) পাথরের তৈরি জুয়েলারি দেখতে এসে পিঙ্কলোটাস জুয়েলারির দোকানে যাই। এই বিরল পাথরটি শুধুমাত্র তুরস্কের ওই অঞ্চলেই পাওয়া যায়। সুলতানেট পাথরটি আলোর সঙ্গে তার রঙ বদলায়। ক্যাপাডোসিয়াতে রাতের খাবার এবং রাত্রিযাপনের পর আরও একটি দিন চলে গেলো।

৬ষ্ঠ দিন বৃহস্পতিবার ১৩ এপ্রিল ২০২৩: ক্যাপাডোসিয়া / ইজমির / কুসাদাসি সফরঃ

সকালে নাস্তার পরে ইজমির/কুসাডেসিতে যাওয়ার অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের জন্য কায়সেরি বিমানবন্দরে স্থানান্তর করা হয়। কায়সেরি এয়ারপোর্ট থেকে ইস্তাম্বুল হয়ে ইজমির যাওয়ার পথে আমাদের প্লেন দেরী হওয়ায় বেশ ভোগান্তি হয়েছিল। ইস্তানবুল পৌঁছে দেখি আমাদের কানেক্টিং ফ্লাইট চলে গিয়েছে। প্রায় দুই ঘণ্টা পর আমাদের আরেকটা ফ্লাইটে ইজমির যেতে হয়েছিল। ইজমির এয়ারপোর্ট থেকে সড়ক পথে কুসাদাসিতে অবস্থিত রামাদা হোটেলে পৌঁছাতে আমাদের রাত এগারোটা হয়ে যায়। অর্থাৎ ১৩ এপ্রিল ষষ্ঠ দিন আমাদের কেটে যায় ভ্রমণেই। কুসাদাসি রামাদা হোটেলে আমরা রাতের খাবার এবং রাত্রিযাপন করি।

৭ম দিন শুক্রবার ১৪ এপ্রিল ২০২৩: পামক্কালে / হিয়ারপোলিস / কুসাদাসি ট্যুরঃ

সকালের নাস্তা এবং প্রাতরাশের পর, সকাল ৮:৩০ মিনিটে আমাদের পামুক্কালে এবং হিয়ারপোলিসের পুরো দিনের সফরের জন্য হোটেল থেকে তুলে নেওয়া হয়। পামুক্কালে আমরা সেখানকার কটন ক্লিফস দেখতে পাই, যা চুনযুক্ত লবণের আমানত দ্বারা গঠিত বিশ্বের প্রাকৃতিক বিস্ময়গুলির মধ্যে একটি। এছাড়াও এর ব্যাসিলিকা, থিয়েটার এবং রোমান বাথ সহ হিরাপলিস শহরের প্রাচীন ধ্বংসাবশেষ দেখি। এবারে আমাদের গাইড হলেন মিসেস ফুনডা এটাসয়।

পামুক্কালে প্রাকৃতিক গঠনগুলি প্রাচীন শহরের একটি অংশ। দেখতে মনে হয় পুরো এলাকা চুনের প্রলেপ দেয়া হয়েছে। দেখতে দারুণ লাগে। এর বেশিরভাগই মার্বেল এবং পাথর। পামুক্কালে, তুর্কি ভাষায় যার অর্থ “তুলার দুর্গ”, দক্ষিণ-পশ্চিম তুরস্কের ডেনিজলি প্রদেশের একটি প্রাকৃতিক স্থান। এখানে প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানের প্রাকৃতিক গঠন ক্যালকেরিয়াস রকের সমন্বয়ে হয়েছে। এলাকাটি উষ্ণ ঝর্নার পানি দ্বারা জমা ট্র্যাভারটাইন চুনাপাথরের জন্য বিখ্যাত। এলাকাটি একটি কার্বনেট খনিজ পদার্থের জন্য বিখ্যাত যা উষ্ণ বা তাপীয় স্প্রিং ওয়াটার প্রবাহিত হয়। এটি তুরস্কের অভ্যন্তরীণ এজিয়ান অঞ্চলে, মেন্ডারেস উপত্যকায় অবস্থিত, যেখানে বছরের বেশিরভাগ সময় একটি নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ু থাকে। গাড়ীতে যাওয়ার পথে দেখলাম অনেক বড় বড় স্ট্রবেরির বাগান। ট্রাকে করে বাজারে নিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া এই অঞ্চলে প্রচুর হেজেলনাট সহ বিভিন্ন রকম বাদাম উৎপন্ন হয়।

ক্যালকেরিয়াস- একটি বিশেষণ যার অর্থ “বেশিরভাগ বা আংশিকভাবে ক্যালসিয়াম কার্বনেট দ্বারা গঠিত”। চুনযুক্ত - ক্যালসিয়াম কার্বনেট ধারণকারী; খার বা “চুনযুক্ত মাটি”। প্রাকৃতিক ভাবে পাওয়া চুনযুক্ত এই মাটি বা ঝর্ণার পানি গায়ে মাখালে তা অনেক কঠিন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় বলে অনেকেই বিশ্বাস করে। অনেক অজানা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানা এবং দেখার পর, প্রায় সন্ধ্যা ৭ টা নাগাদ আমাদের হোটেলে পোঁছে দেওয়া হলো। কুসাদাসিতে রাত্রি যাপন করি।

৮ম দিন ১৫ এপ্রিল শনিবার ২০২৩: কুসাদাসি / ইফেসাস / ইস্তাম্বুল থেকে সম্পূর্ণ দিনঃ

সকালে আমাদের ট্যুর গাড়ির ড্রাইভার আমাদের মর্নিং ড্রাইভ করে সাগরের তীরে অবস্থিত কুসাদাসি শহর দেখালেন। আগের দিন খেয়াল করিনি। রামাদা হোটেলটি ও একটি ৫ তাঁরা হোটেল। আমাদের রুমের সঙ্গে একটি বেলকনি রয়েছে। সেখান থেকে সমুদ্রের দৃশ্য উপভোগ করা যায়। একটু সকালে উঠে কফি বানিয়ে বেলকনিতে বসে পান করতে করতে বেশ কিছুক্ষণ আমরা দারুণ উপভোগ করলাম। তারপর গাইড আমাদের এফেসাসের দিকে নিয়ে গেল। এখন আমাদের দলের সদস্য ৫ জন।



আমরা প্রাচীন শহর ইফেসাস এ যাই। ইফেসাস হল তুরস্কের সেন্ট্রাল এজিয়ান অঞ্চলের একটি প্রাচীন শহর, আধুনিক দিনের সেলচুকের কাছে। এর খননকৃত অবশেষগুলি ধ্রুপদী গ্রীস থেকে রোমান সাম্রাজ্য পর্যন্ত - যখন এটি ভূমধ্যসাগরের প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র ছিল তা পর্যবেক্ষণ করি। ইতিহাস শুনে শুনে দেখতে খুব খারাপ লাগছিল। এই অঞ্চল খ্রিস্টধর্মের বিস্তারের শতাব্দীর ইতিহাসকে প্রতিফলিত করে৷ পাকা রাস্তাগুলি আধুনিক শহরের গ্রিড আকৃতির, স্নানের স্থান এবং স্মৃতিস্তম্ভের ধ্বংসাবশেষের অতীত দেখতে পাই। হ্যাড্রিয়ানের মন্দিরটি ১৩৮ খ্রিস্টাব্দের আগে সম্রাট হ্যাড্রিয়ানের সফরের জন্য নির্মিত হয়েছিল। ইফেসাসের অবস্থান ইজমির প্রদেশের সেলচুক এলাকায়। সময়কাল ছিল গ্রীক অন্ধকার যুগ থেকে মধ্যযুগ পর্যন্ত।

আমরা সেখানে এক অবিস্মরণীয় প্রাচীন লাইব্রেরি, থিয়েটার এবং মন্দির পরিদর্শন করি। তারপর, আমরা ভার্জিন মেরির হাউস দেখতে যাই। অনেকেই বিশ্বাস করেন এই বাড়িতেই মেরির জন্ম এবং মৃত্যু হয়েছে। এর পর আমরা শেষ রোমান সাম্রাজ্য এবং সেন্ট জন এর ব্যাসিলিকার ধ্বংসাবশেষের অতীত খননকৃত অবশেষগুলি দেখি। বিকেলে, তুরস্কে উৎপাদিত অনন্য চামড়া-জাত পণ্য প্রদর্শন করে একটি উচ্ছ্বসিত ফ্যাশন শোতে অংশগ্রহণ করি এবং খুব উপভোগ করি। ইস্তাম্বুলে আমাদের অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের জন্য ইজমির বিমানবন্দরে স্থানান্তর করা হয়। রাতে ইস্তাম্বুল রেডিসন হোটেলে ফিরে আসি। এদিনই ছিল আমাদের গাইডেড ট্যুরের শেষ দিন।

৯ম দিন ১৬ এপ্রিল ২০২৩ রবিবার:

আমাদের নিজেদের মত করে ঘুরে বেড়ানোর দিন ছিল। বর্তমানে তুরস্কের বৃহত্তম মসজিদ, গ্র্যান্ড চামলিকা মসজিদ। ৭০ টি গম্বুজ, ৬ টি মিনার ও একসঙ্গে ৬৩,০০০ মানুষের নামাজ পড়ার উপযোগী ধারণ ক্ষমতা নিয়ে ১৫০০০ বর্গ মিটার এলাকায় চামলিকা মসজিদ টি বানানো হয়। এটি ইসলামিক উপাসনার জন্য একটি কমপ্লেক্স যা ৭মার্চ ২০১৯ তারিখে সম্পন্ন এবং জনসাধারণের জন্য খোলা হয়েছে।


১০ম দিন – ১৭ এপ্রিল সোমবার: আমাদের ইস্তানবুলের শেষ দিন।

১২ টার মধ্যে হোটেল ছেড়ে দিতে হবে। হোটেলে সকালের নাস্তা সেরে আমাদের ব্যাগ গুছিয়ে বেশ অনেকটা সময় পাওয়া যাবে। বিকেল ৪ টায় গাড়ি আসবে আমাদের সাবিহা এয়ারপোর্টে নেয়ার জন্য। আমাদের ফ্লাইট রাত সাড়ে নয়টায় টায়। হোটেল রিসেপ্সনে আমাদের বাক্স প্যাটরা রেখে পায়ে হেটে কাছাকাছি যা দেখা যায় তার উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পড়লাম। একটু যেতেই একটা স্যুভেনির দোকান পেলাম এবং ঢুকে পড়লাম। বেশ কয়েকটা জিনিস বেশ পছন্দ হলো। ফেরার সময় নিয়ে যাব বলে আবার বেরিয়ে গেলাম। একটু পরেই একটা সুন্দর ফোয়ারা দেখতে পেলাম। গিয়ে দেখি অনেকেই বসে তা উপভোগ করছে। আমরাও বসে গেলাম। ফোয়ারার পানি তালে তালে উঠানামা করছে আমরা চানাচুর খেতে খেতে তা উপভোগ করলাম বেশ কিছুক্ষণ। তারপর একটা পরিচিত দোকানের খোঁজে হাঁটতে শুরু করলাম। সামনে সুন্দর একটা টাওয়ার দেখতে পেলাম। নাম Galata Tower। বিখ্যাত গালাটা টাওয়ারটি ১৩৪৮ সালে জেনোইজ দ্বারা দুর্গের উত্তরতম এবং সর্বোচ্চ স্থানে নির্মিত হয়েছিল। গালাটা এখন ইস্তাম্বুলের বেয়োগলু জেলার মধ্যে এক চতুর্থাংশ। আমরা টিকিট কেটে লিফটে তার সর্বোচ্চ ডেকে ওঠে ইস্তাম্বুলের সিটি লাইনের প্যানারমিক দৃশ্য উপভোগ করলাম অনেকক্ষণ ধরে। বসফরাস প্রনালিতে ব্রিজ, সাগরে বিভিন্ন রকমের জলযান, দুইপাড়ে চোখ ধাঁধানো অট্টালিকা, বাড়িঘর, স্কুল, পার্ক ইত্যাদি। দুপাশে চমৎকার ঐতিহাসিক সুন্দর সুন্দর প্যালেস, আবাসিক এলাকা, স্কুল, মসজিদ, গির্জা এবং চমৎকার সব সুন্দর সুন্দর বিল্ডিং।



আমাদের ১০টি দিনের সফর বেশ মজাতেই কেটে গেল! অনেক কিছুই জানলাম, দেখলাম এবং শিখলাম। ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান, এবং প্রাচীন রোমান সাম্রাজ্যের ধ্বংসাবশেষ, ওসমানিয়া সাম্রাজ্যের উত্থান এবং তাদের কীর্তি মার্বেল পাথরে তৈরি রাজপ্রাসাদ, চমৎকার সব মসজিদ, দুর্গ, আধুনিক সব স্থাপনা দেখে খুবই মুগ্ধ হয়েছি। এখানকার টুরিস্ট গাইডরা খুবই অভিজ্ঞ এবং জ্ঞান সম্পন্ন। সবকিছু এত সুন্দর করে আমাদের বর্ণনা এবং ব্যাখ্যা করলো শুনে আমরা সবাই খুব খুশি। অনেক না দেখা জিনিস ঐতিহাসিক স্থান এবং দর্শনীয়, মসজিদ, গির্জা এবং ক্যাপাডেসিয়ার ভূমি গঠন এবং ভূমি রূপ গঠনের প্রক্রিয়া শুনে আমরা খুবই মুগ্ধ।

যাবার সময় হয়ে গেল, চলে যেতেই হবে! তবে এখানেই শেষ নয়। তুরস্কের আমাদের ১০ দিনের চমৎকার সফর, এখানকার মানুষ ও মাটির কথা এবং ভূমিরূপের দৃশ্য আজীবন মনে থাকবে। শেষ করার আগে একটি কথাই বলতে চাই। যেসব জায়গায় আমরা গিয়েছি, হেঁটেছি, মাটির সংস্পর্শে এসেছি, সেসব জায়গায় রেখে গেলাম আমাদের পদচিহ্ন, আর সঙ্গে নিয়ে গেলাম আমাদের সুখের স্মৃতিতে – তুরস্কের ইস্তাম্বুল সহ বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান ও শহরের বিচিত্র সব অভিজ্ঞতা এবং স্থানীয় জনগণের আন্তরিক ব্যবহার ও ভালোবাসা।


Dr Munir Ahmed Khan,
Retired Academic, Monash University and Dhaka University
Email: Munir.khan1954@gmail.com






Share on Facebook               Home Page             Published on: 14-Jun-2023

Coming Events: