কোহিনূর এর বাকি ইতিহাস মোস্তফা আব্দুল্লাহ
নানা, তুমি কি বুবুকে প্রপোজ করার সময় একটা ডায়মন্ডের রিং দিয়েছিলে? আচমকা এ ধরনের একটি প্রশ্ন শুনে একেবারেই ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলাম। একটু দম নিয়ে আন্দাজ করলাম যে এর পেছনে সম্ভবত তার নানীর ইন্ধন আছে। কেননা সকাল থেকে তিনি আমার ওপর কিছুটা তেতে আছেন। বাড়ির সামনে ও পিছনের ঘাসটা ছেঁটে দিতে বলেছিলেন সেটাতে এখনো হাত দেয়া হয়ে উঠে নাই। হায়রে কপাল, এই শেষ বয়সে এসে কিনা (ঘোড়ার) ঘাস কেটে খেতে হচ্ছে। ঘাস কেটে খেতে হচ্ছে বলছি এই জন্য যে, আর এক কাপ চায়ের জন্য অনেক ক্ষণ থেকে মনটা আনচান করছিল, কিন্তু সাহস জুগিয়ে চাইতে পারছি না।
প্রশ্নটাকে পাশ কাটানোর জন্য নাতিকে জিজ্ঞাসা করলাম; তোমার হাতে ওটা কি? রেডিওর মত দেখতে আবার একটা এন্টেনাও আছে দেখছি। বেশ কিছুক্ষণ ধরেই লক্ষ করছিলাম ওটার বোতাম গুলি নিয়ে টিপা টিপি করছে আর ওটা থেকে ঝিঝি পোকার মত এক ঘেয়ে একটা আওয়াজ বের হচ্ছে। এটা কি কোন নতুন ধরনের আইপ্যাড না ট্যাবলেট, কি ছাই পাশ নাম যেন বল, সে সব কিছু কি? Grow up Nana, this is a time machine. I am trying to tune its signal with the brain wave. Once I am able to do that, it would be possible to travel into the future! That will be the day. ভবিষ্যৎ দেখা যাবে? যত সব আজগুবি চিন্তা। ভাবলাম ফাড়াটা কাটিয়ে উঠেছি, আর ঠিক এমনি সময় গিন্নি টিপ্পুনি কাটল কি ব্যাপার ওর প্রশ্নটার উত্তর দিলে না যে? ও আর এমন কি বলছি বৈকি। আচ্ছা ঈছা, তুমি কি কখনো কোহিনূরের নাম শুনেছ? এটি একটি জগৎবিখ্যাত হীরা যা কিনা বর্তমানে ব্রিটিশ সম্রাজ্ঞীর মুকুটে শোভা পাচ্ছে। Why is it so famous, এটা কি খুব একটা দামী ডায়মন্ড? ওটার সঠিক মূল্য বলা মুশকিল। জানা মতে এই মূল্যহীন অমূল্য রত্ন টিকে কেও কোন দিন কারো কাছে বিক্রিও করেনি বা কেও কোন দিন সেটা কারো কাছ থেকে কিনেও নেয় নাই। জোর যার হীরাটা (মুল্লুক) তার, অর্থাৎ সময় সময় পরাক্রমশালীরা অপেক্ষাকৃত দুর্বল প্রতিপক্ষকে পরাজিত করে হীরক খণ্ডটিকে তাদের নিজেদের দখলে নিয়ে নিয়েছে। তার মানে কি এই যে ইংল্যান্ড এর চেয়েও শক্তিশালী অন্য কোন দেশ যদি কখনো মনে করে যে ডায়মন্ডটাকে নিয়ে নিবে সেটা কি তারা নিয়ে নিতে পারবে? ভবিষ্যতের কথা নিশ্চিত করে বলা মুশকিল। তবে ইতিহাসের দিকে তাকালে এটাকে একেবারে অসম্ভব বলে উড়িয়ে দেয়াও যায় না। কিংবদন্তি যে এটি একটি অভিশপ্ত হীরা। ১৩০৬ সালের একটি হিন্দি লিখন অনুসারে; এই হীরাটির অধিকারী যিনি হবেন, তিনি পরম ঐশ্বর্যেরও অধিকারী হবেন তবে চরম দুর্ভাগ্য তাকে পিছু তাড়া করবে। কেবল মাত্র দেব দেবী বা স্ত্রীলোক এটিকে ধারণ করতে পারবেন, কোন রূপ অমঙ্গল ছাড়াই। পক্ষান্তরে ধারণা করা হয় যে স্ত্রীলোক এটিকে ধারণ করলে তা সৌভাগ্য বয়ে আনবে।
এমনকি প্রবল প্রতাপশালী ব্রিটিশ সম্রাজ্ঞীর রানী ভিক্টোরিয়া, যার রাজত্বে কখনো সূর্যাস্ত যেত না - তিনিও এটির অভিশাপের ভয়ে ভীত ছিলেন। তিনিই কেবল এটাকে তার মুকুটে ধারণ করেছিলেন এবং এই মর্মে ডিক্রি জারি করে গিয়েছেন যে কোহিনূর কেবল মাত্র রানীই ধারণ করতে পারবেন। তবে যদি পুরুষ রাষ্ট্র প্রধান (রাজা) হন তাহলে তার স্ত্রী (রানী) সেটা ধারণ করবেন।
কখনো কখনো আমার মনে হয়েছে রবি ঠাকুর বোধ হয় তার শ্যামা নৃত্য নাট্যটি লেখার সময় কোহিনূর হীরকটির কথাও ভেবে ছিলেন। ইন্দ্রমণির হারটি সংগ্রহ করার পর থেকেই নায়ক বজ্রসেন এর কপালে চরম দুর্ভোগ নেমে আসে। রাজার প্রহরীরা তাকে আটক করে ওই মহা মূল্যবান হারটি দাবি করলে বজ্রসেন ওই অলংকার টির মূল্য নিয়ে উক্তি করেছিলেন; আমি অনেক করেছি বেচা কেনা, অনেক হয়েছে লেনা দেনা, না না না। এতো হাটে বিকোবার নয় হার না না না কণ্ঠে আমি দেব তারই যারে বিনা মূল্যে দিতে পারি Thats very interesting. When and how did it all start?
পাঁচ হাজার বছর আগের এক সংস্কৃতি পাণ্ডুলিপিতে নাকি এই হীরক খণ্ডটির উল্লেখ আছে। সেখানে এটির নাম সায়্মান্টকা বলে উল্লেখ করা হয়। অবশ্য তার পর আর ৪০০০ বছর পর্যন্ত এর আর কোন উল্লেখ নাই। তাই এটাই যে কোহিনূর, সেটা একটা ধারণা মাত্র।
হীরকটি ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্যের কুল্লুর খানি থেকে উত্তরণ করা হয়েছিল। ১৩০৬ সাল পর্যন্ত বংশানুক্রমিক ভাবে হীরকটি ভারতের মধ্য প্রদেশ ও রাজস্থান অঞ্চলের মালওয়া রাজাদের দখলে ছিল। ১৩০৬ সালে দক্ষিণ ভারতের কাকাতিয়া রাজবংশীয়রা বল পূর্বক হীরক টিকে নিজেদের করায়ত্ত করে। তুর্কি বংশোদ্ভূত ও আফগানিস্তান থেকে আগত, দিল্লীর সুলতান আলাউদ্দিন খিলজির সেনাপতি মালিক কাফুর ১৩১০ সালে কাকাতিয়াদের আক্রমণ করে হীরকটি ছিনিয়ে নেয় এবং তার কিছু দিন পরই কাকাতিয়া সাম্রাজ্যের অবসান ঘটে।
১৫২৬ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে দিল্লীর সুলতানের সিংহাসন হাত বদল হতে থাকে চরম পারিবারিক বিরোধ ও নির্মম রক্তপাতের মাধ্যমে। সিংহাসন হাত বদল এর সাথে সাথে হাত বদল হতে থাকে হীরকটিরও। ১২৯০-১৩২০ পর্যন্ত রাজত্ব করে খিলজি বংশ, তুগলোকরা ১৩২০ থেকে ১৪১৩, ১৪১৪ থেকে ১৪৫১ সাইয়িদ বংশ ও ১৫২৬ সাল পর্যন্ত লোদিরা। এই সময়ে দিল্লীর সুলতানদের বহিঃশত্রুদের আক্রমণও প্রতিহত করে যেতে হয় ক্রমাগত।
চেঙ্গিস খান ও তৈমুর লঙ্গের উত্তরসূরি বাবর ১৫২৬ সালে পানিপথের প্রথম যুদ্ধে দিল্লীর শেষ সুলতান ইব্রাহিম লোদিকে পরাস্ত করে মুঘল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। মুঘল সাম্রাজ্যের স্থায়িত্ব কাল ছিল ১৭৩৯ সাল পর্যন্ত। এই ২০০ বছরের ঊর্ধ্বের রাজত্ব কালে হীরকটি মুঘল সম্রাটদের মালিকানাতেই ছিল। সম্রাট শাহজাহান হীরকটিকে ময়ূর সিংহাসনে স্থাপন করেন। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে শাহজাহান পুত্রদের দ্বারা সিংহাসন চূত হয়ে আমৃত্যু বন্দী দশায় কাটান। পুত্র আওরঙ্গজেব অন্য ভাইদেরকে সপরিবারে নির্মম ভাবে নির্বংশ করেন। মুঘল শাসনের বাকি সময়টা জুড়েই চলেছে পারিবারিক অন্তর কলহ, প্রসাদ ষড়যন্ত্র ও বিভিন্ন দুর্ভাগ্যজনক অধ্যায়। ১৭৩৯ সালে তুর্কি বংশোদ্ভূত পারস্য সেনাপতি নাদির শাহ ভারত আক্রমণ করে দিল্লী ও আগ্রা হতে মুঘল সাম্রাজ্যকে উৎখাত করে ও সেই সাথে ময়ূর সিংহাসন ও হীরক খণ্ডটিকেও তদানীন্তন পারস্যের সমরখন্দে নিয়ে যায়। এর পরের ৩০০ বছর সেটি সেখানেই থাকে। নাদির শাহই হীরকটির কোহিনূর অর্থাৎ পর্বত প্রমাণ আলো নামকরণ করেন। ১৭৭৪ সালে নাদির শাহ খুন হওয়ার পর হীরকটি তারই এক সেনাপতি আহমদ শাহ দুররানির হস্তগত হয়। এর পর ১৮১৩ সাল অব্ধি ইতিহাস আরো ভয়াবহ; ক্ষমতার অন্তর দ্বন্দ্বে হেরে গিয়ে হীরকটির মালিকানা দাবিদার বেশির ভাগ উত্তরাধিকারীই সিংহাসন চূত হয় ও বিজয়ী প্রতিপক্ষ আনুষ্ঠানিক ভাবে তাদের চোখ অন্ধ করে দেয় যাতে তারা কখনই আর মাথা তুলে না দাড়াতে পারে ও সমাজের অনুগ্রহে বাকি জীবন অতিবাহিত করে যেতে হয়।
সুজা শাহ দুররানি ১৮১৩ সালে ক্ষমতার দ্বন্দ্বে মাহমুদ শাহ দুররানির এর কাছে পরাজিত হয়ে আফগানিস্তান এর সিংহাসন হারান ও কোহিনূরটি সাথে নিয়ে ভরতে পালিয়ে এসে পাঞ্জাবের সমৃদ্ধ শিখ সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা শক্তিশালী রাজা রঞ্জিত সিং এর কাছে আশ্রয় ও সাহায্য প্রার্থনা করেন। রঞ্জিত সিং কোহিনূরের বিনিময়ে তাকে আশ্রয় দান ও আফগানিস্তানের সিংহাসন পুনুরুদ্ধারে সাহায্য এর প্রতিশ্রুতি দেন। প্রস্তাবটি নাকচ করার কোন সুযোগ ছিল না, কেন না ততক্ষণে সুজা শাহ রঞ্জিত সিং এর নিকট জিম্মি হয়ে পড়েছেন। তবে রঞ্জিত সিং কথা রেখে ছিলেন - তিনি সুজা শাহকে আফগানিস্তানের সিংহাসন ফিরে পেতে সহায়তা করেন।
কোহিনূরের ভারত প্রত্যাবর্তন ও শিখ সাম্রাজ্য এর মালিকানা গ্রহণের পর থেকেই রঞ্জিত সিং এর পরিবারের ওপর দুর্ভাগ্য ভর করে। রঞ্জিত সিং এর প্রথম চার পুত্র সিংহাসনে আরোহণের পর নানা ভাবে সগোত্রীয়দের হাতে নিহত হন। ১৮৬১ সালে রঞ্জিত সিং এর ৫ বছর বয়স্ক নাবালক পুত্র দিলীপ সিং কে শিখ সাম্রাজ্য এর রাজা ঘোষণা করা হয়। তত দিনে অন্তর কলহে শিখ সাম্রাজ্য খুবই দুর্বল হয়ে পরে।
১৮৪৯ সালে শিখ সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে ইংরেজদের দ্বিতীয় শিখ-যুদ্ধে জয় লাভের পর এক অসম চুক্তির মাধ্যমে ইংরেজরা শিখ সাম্রাজ্যের সমস্ত সম্পত্তির মালিকানা ছিনিয়ে নেয়। এই চুক্তির বলে কোহিনূর হীরাটিকেও তারা হস্তগত করে ও মহা ধুম ধামের সাথে তারা সেটিকে নিয়ে গিয়ে লন্ডনের হাইড পার্কে এক বিরাট প্রদর্শনীর আয়োজন করে। পরে শোভা বর্ধন এর জন্য হীরকটিকে কেটে পালিশ করে মহারানী ভিক্টোরিয়ার মুকুটে স্থাপন করে। বর্তমানে সেটি ব্রিটিশ রাজকীয় ভাণ্ডারে রয়েছে। তারপর প্রায় দেড়শ বছরের ওপর পার হয়ে গেল। একদিন যে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যে সূর্যাস্ত যেত না, বর্তমানে সেখানে শুধু নিজেদের মাটি টুকুর বাইরে অর্জেনটিনার ফকল্যাণ্ড এর একটি ছোট্ট দ্বীপ ছারা আর কিছু নিয়েই আর তাদের বড়াই করার কিছু নাই। গল্প শুনতে শুনতে লক্ষ করলাম ঈছার চোখ দুটো ঢুলু ঢুলু হয়ে পরেছে। আর ওর হাতের খেলনাটার এক ঘেয়েমি আওয়াজে আমারও কিছুটা তন্দ্রা পাচ্ছে। তাই আলস্য কাটানোর জন্য টেবিল রাখা পত্রিকাটি উঠিয়ে নিলাম। পত্রিকাটি দু দিন আগের। তারিখ সোমবার ২২শে নভেম্বর ২০৪৯ সাল। পাতা ওলটাতেই খবরের শিরোনামটা নজর কাড়লো; The inside story of Kohinoors return to India; গত মাসে মহা ধুম ধামের সাথে ইংল্যান্ড এর ভারতকে কোহিনূর হীরকটি ফিরিয়ে দেওয়ার ওপর একটি বিশ্লেষণ ধর্মী প্রতিবেদন। প্রতিবেদনটির লেখক Herald Tribune এর প্রতিতযষা সাংবাদিক Allan Moore।
Allan Moore লিখেছেন যে যদিও ইংল্যান্ড দাবি করছে যে ভারতের সাথে ঐতিহাসিক বন্ধু-সুলভ সম্পর্ক ও সৌহার্দের নিদর্শন সরূপ তারা কোহিনূরটি কে তার আদি ও প্রকৃত মালিক কে ফিরিয়ে দিয়েছে তবে আসল ঘটনাটা ঠিক তা নয়। ইংল্যান্ডকে বাধ্য হয়েই তা করতে হয়েছে, এবং বাধ্য করেছে ভারতের অর্থনৈতিক শক্তি, তথ্য প্রযুক্তি ও কারিগরি উৎকর্ষতা। চীনের কাছে ব্রিটিশদের ধার দেনা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে অবিলম্বে যদি তারা তাদের কল কারখানা গুলিকে সচল করে উৎপাদন বাড়াতে না পারে, তবে সে সব চীনের হাতে ছেড়ে দেওয়া ছাড়া আর তাদের কোন উপায় নাই। কল কারখানা গুলিকে সচল ও প্রতিযোগিতা মূলক করার জন্য চাই মূলধন ও অত্যাধুনিক কারিগরি উৎকর্ষতার যোগান। ইতিমধ্যে যাদেরকে বন্ধু বলে এতদিন ভেবে এসেছিল তারা সবাই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। তাই কিছু দিন ধরেই ভারতের সাথে গোপনে দেন দরবার চলছিল। ভারত সহযোগিতা করতে সম্মত হয় তবে সাথে একটা শর্ত জুড়ে দেয়; সর্ব প্রথম কোহিনূর হীরকটিকে ভারতের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে। ব্রিটিশরা শোনা মাত্র প্রস্তাব টিকে নাকচ করে দেয় এবং সরা সরি জানিয়ে দেয় যে এটা আলাপের কোন বিষয়ই হতে পারে না। অবশেষে কোন উপায় না করতে পেরে তাতেই তারা রাজি হয়। তবে ভারতের কাছে অনুরোধ রাখে যে চুক্তির এই বিষয়টিকে গোপন রাখতে হবে। বিশ্ব জানবে যে ব্রিটিশ সরকার মহানুভব হয়েই একটি ঐতিহাসিক ভুলকে সংশোধন করার জন্য কোহিনূরটি ভারতের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে! ভারতীয় মন্ত্রীসভা নাকি অনেকটা উপভোগের আমেজেই ব্রিটিশ সরকারের এই আবদারটি মেনে নিয়েছে। তারই ফলশ্রুতিতে ভারতের ১০২ তম স্বাধীনতা দিবস শুক্রবার, ১৩ই আগস্ট, ২০৪৯ সালের এক রৌদ্রজ্জ্বল দিনে ইংল্যান্ডের রাজা উইলিয়াম এর প্রথম পুত্র, ৩৬ বছর বয়স্ক ব্রিটিশ প্রিন্স জর্জ, ডিউক অব কেমব্রিজ দিল্লীতে এক মনোজ্ঞ ও মহা আরম্ভর পূর্ণ অনুষ্ঠানে ভারতের রাষ্ট্রপতির কাছে কোহিনূরটি সমর্পণ করেন। তার পর মাসাধিক কাল ধরে মহা সমারোহে ও কড়া নিরাপত্তার মধ্যে নতুন দিল্লীর সংসদ ভবন চত্বরে চলে কোহিনূরের প্রদর্শনী।
কাঁধে একটু মৃদু ঝাঁকুনি অনুভব করে চোখ খুলতেই শুনি গিন্নি বলছেন; গল্প করতে করতে নানা নাতি ঘুমিয়ে পরেছিলে নাকি ওঠ, খেতে হবে না? ঈছার দিকে চেয়ে দেখি ও চোখ মুছতে মুছতে ওর হাতে ধরা খেলনাটার বোতাম টিপে ওটা বন্ধ করে দিল আর আমার দিকে চেয়ে চোখ টিপ দিয়ে মিট মিট করে হাসছে। কিছু একটা আন্দাজ করতে পেরে ওকে বললাম তোমার টাইম মেশিনটা তো বেশ কাজের মনে হচ্ছে - যত্ন করে রেখো কিন্তু ওটাকে!
মোস্তফা আব্দুল্লাহ, সিডনি
|