শ্রদ্ধেয় মোস্তাফা ভাইকে ধন্যবাদ প্রবাসী মুসলিম সমাজে একটি বিশেষ করে আলোচিত বিষয় পর্যালোচনা করার জন্য। চাঁদ দেখা বিষয়ক লেখাটিও মুসলিম সমাজে প্রচলিত ব্যবহারিক ধর্মীয় চর্চার প্রতি ওনার নিবিড় আগ্রহ ও অবলোকনের একটি বড় উদাহরণ।
বাংলাদেশে থাকতে হারাম হালালের বিষয়টি আমার মত অনেকেরই মুখোমুখি হতে হয়নি। বিশ্বাস ছিল যে বাজার থেকে যে মাংস এনে খাচ্ছি তা হালাল। হারাম হালাল নিয়ে কোন প্রশ্নই ছিলনা। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া এসে দেখলাম সংগত কারনেই এটা একটা ভাবনা ও চর্চার বিষয়। দেশে আমরা যে সর্বদাই হালাল মাংস খেয়েছি তা নয়। এখানে সন্দেহের অবকাশ আছে বলেই শ্রদ্ধেয় মোস্তাফা ভাই বলেছেন, “মূলত: হালাল”। বাংলাদেশে কসাইরা কতটা ইসলামী মতে জবেহ করে, তা আমাদের জানা সম্ভব নয়। তবে এ ব্যাপারে আমার সন্দেহ আছে। আমার বিশ্বাস অজান্তেই বা অসতর্কতা বশত হোক আমরা স্বদেশে হারাম মাংস খেয়েছি। যাহোক এটা এখন তামাদি হয়ে গেছে।
অস্ট্রেলিয়াতে দেখেছি অনেকে সব হালাল দোকানের মাংস খায়না। এর অর্থ সব হালাল হালাল নয়। হারাম হালাল খাবার নিয়ে অর্থোডক্স মুসলমানদের মধ্যেও মত বিরোধিতা হয়। বিতর্ক হয়না হালাল রুজি নিয়ে। হারাম হালাল নিয়ে যে ঘণ্টার পর ঘনটা বিতর্ক করে বা বিষয়টি যদি অবসেশনের পর্যায়ে চলে যায়, তার পক্ষে অসাম্প্রদায়িক হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম, সাম্প্রদায়িক হলে আশ্চর্যের কিছু হবেনা। তবে অসাম্প্রদায়িক মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে ব্যক্তি বিশেষের হারাম হালাল বিষয়ক ধ্যান ধারনা যুক্ত করা অপ্রাসঙ্গিক। মানুষের ধর্মীয় চেতনা বোধে পরিবর্তন আসতেই পারে। কিন্তু অসাম্প্রদায়িক মুক্তিযুদ্ধের চেতনা-বোধ শাশ্বত ও চিরন্তন। তবে আমরা বা বাংলাদেশের শাসক গোষ্ঠী এই চেতনা-বোধ কতটা উজ্জীবিত রেখেছে তা নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে।
একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস মূলত: অসাম্প্রদায়িক অনুষ্ঠান। এতে ধর্মীয় আনুষঙ্গিকতা রাখাটা প্রশ্ন সাপেক্ষ। তবে অনুষ্ঠানে এ নিয়ে বিতর্ক না হওয়াই বাঞ্ছনীয় ছিল। “ব্যক্তিগত ভাবে অনেকেই হিন্দুদেরকে বন্ধু বলে গ্রহণ করে কিন্তু সমষ্টিগত ভাবে হিন্দুদেরকে ঘৃণা করে”, আমি এই ধারনার সাথে একমত নই।
- ফারুক কাদের
|