ডোনাল্ড ট্রাম্প ও অতঃপর মোস্তফা আব্দুল্লাহ
মামুন সাহেব সেই যে কবে এখানে পি এইচ ডি করতে এসে ইউনিভার্সিটিতেই রয়ে গেলেন - চাকুরী নিয়ে! তার পর দেশে গিয়ে বিয়ে করে বউ নিয়ে ফিরলেন, তাও তো প্রায় তিন যুগের মত হয়ে গেল। প্রথম প্রথম মনিরার দম বন্ধ হয়ে যেত – সারা ক্যাম্পাসে তারা স্বামী স্ত্রী ছাড়া বাংলায় কথা বলার মত আর কেউ ছিল না। পরে অবশ্য দুই একজন করে ছাত্র আসতে শুরু করে, আর তার মধ্যে কয়েকজন জন রয়েও যায়। তার পরও সর্ব সাকুল্যে মাত্র তিনটি বাঙ্গালী পরিবার – মামুন সাহেবদের নিয়েই।
নর্থ ডাকোটা স্টেট ইউনিভারসিটির এই ক্যাম্পাসেই জন্ম তাদের দুই সন্তানের; বড়টির নাম সামিয়া, বয়স আঠারো আর ছোটটির বয়স বারো, নাম রকিব। বাড়িতে দুই একটা বাংলা কথার চল থাকলেও মন মানসিকতা আর চাল চলনে দু'জনেই পুরাদস্তুর মার্কিনী হয়েই বড় হয়ে উঠেছে। লেখা পড়ায় দুজনেই চৌকস। সামিয়া সবে হাই স্কুল শেষ করেছে। হাই স্কুল এর সর্ব শেষ পরীক্ষায় অসাধারণ কৃতিত্বের জন্য নর্থ ডাকোটা স্টেট গভর্নর এওয়ার্ড এর জন্য মনোনীত হওয়ার পাশাপাশি নিউইয়র্ক এর কলাম্বিয়া ইউনিভারসিটিতে ফুল স্কলারশিপ সহকারে ভর্তিরও আহ্বান পেয়েছে। সামিয়া বরাবরই সংবাদিকতার ওপর উচ্চ-শিক্ষার আকাঙ্ক্ষা পোষণ করে আসছিল। আজ সে সেই স্বপ্ন পূরণের দ্বার প্রান্তে এসে উপস্থিত। চোখ মুদলে দেখতে পায় ক্রিশ্চিয়ানা আমানপোর বা বারবারা ওয়ালটারস এর মত মাইক্রোফোন হাতে দাড়িয়ে বলছে "This is Samia Ahmed, live from the Capitol Hill, Washington DC"।
কন্যা গর্বে মামুন সাহেব এর আনন্দ আর বাধ মানতে চায় না। হৈ চৈ বাধিয়ে দিলেন কন্যাকে নিউ ইয়র্কে পৌঁছে দিয়া আসার যোগাড়যন্ত্র নিয়ে। এদিকে মেয়ের ঘর ছেড়ে সেই কোথায় নিউ ইয়র্ক গিয়ে একা একা থাকার কথা শোনার পর থেকেই মনিরার চোখের পানি আর বাধ মানছে না। মনিরা বাপ-মেয়েকে অনেক করে বোঝাতে চেষ্টা করেন, নর্থ ডাকোটা স্টেট ইউনিভারসিটিতে পড়তে দোষ কি – এখানে কি পড়াশোনা হয় না?
দিন ক্ষণ ঠিক হলে সাব্যস্ত হোল মামুন সাহেব সাথে করে গিয়ে কন্যাকে পৌঁছে দিয়ে আসবেন। মনিরা যেতে পারবেনা, ছোট ছেলেটার স্কুল খোলা। ডেল্টা এয়ার লাইন্স এর টিকেট কেনা হোল – মিনিয়াপলিস হয়ে পাঁচ ঘণ্টার ফ্লাইট। রওনা দেয়ার দু'দিন আগে ঘটে গেল এক চরম দুর্ঘটনা – বন্দুকধারী অভিবাসী এক যুবক – ক্যাম্পাসে এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়ে লঙ্কাকাণ্ড বাধিয়ে দিল। ভাগ্যক্রমে জনা কয়েক কেবল মাত্র কিছুটা আহত হয়েছিল। সেদিন ও পরের দিন ক্যাম্পাস পুরোপুরি লক-ডাউনে চলে গেল – না কেউ ঢুকতে পারে, না কাওকে বেরুতে দেয়া হয়। সামিয়ার যাবার দিন একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরী নিরাপত্তা বৈঠক - মামুন সাহেব একাডেমিক কাউন্সিলের প্রধান বিধায় তার পক্ষে সামিয়ার সাথে আর যাওয়া হোল না। মনিরা এই হতচ্ছাড়া কাণ্ডটিকে একটি অশনিসংকেত ভেবে মেয়ের নিউ ইয়র্ক যাওয়ার ব্যাপারে বেঁকে বসল। বহু কষ্টে মনিরাকে যদিও রাজি করানো গেল কিন্তু তার চোখের পানি কোন ভাবেই বন্ধ করা যায় না।
ট্যাক্সি এসে বাড়ির সামনে দাঁড়তেই ট্যাক্সি ড্রাইভার দরজা খুলে বেরিয়ে আসলো। ওকে দেখা মাত্র মনিরার বুকটা ছ্যাঁক করে উঠল; দশাসই এক শরীর, মোছটা ঠোটের দুই পাশ দিয়ে বেকে নেমে এসেছে অনেকটা, আর মাথার দুই পাশটা কামানো – মাঝ খান দিয়ে কিছু চুল কাঁধ পর্যন্ত এসে ঠেকেছে! লোকটা কোন কথা না বলে সোজা এসে সুটকেসটা গাড়িতে উঠিয়েই বলল; I am good to go। সামিয়ারও লোকটাকে খুব একটা সুবিধার মনে হোল না। ট্যাক্সিতে ওঠার সময় সামিয়াকে জড়িয়ে ধরে, ধরা গলায় মনিরা বার বার বলতে থাকল "মা, সব সময় খুব সাবধানে থাকবি, অপরিচিত কারো সাথে কোন কথাবার্তা বলবি না মা, কারো কোন কথার জবাব দিয়ে ঝগড়া বিবাদ বাধাবি না, দিন কালটা বড় খারাপ মা, বুঝে শুনে চলবি – কথা দে আমাকে"। সামিয়া মায়ের বুকে মুখ বুজে মাথা নেড়ে বিদায় নেয়।
ট্যাক্সিটা বাড়ি থেকে বেরিয়ে হেক্টর ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট এ যাওয়ার সোজা রাস্তা ডাকোটা ড্রাইভ দিয়ে না গিয়ে সেন্টিনিয়াল বুলেভারড দিয়ে রওনা দিল। সামিয়া বুঝতে পারছিল না কি করবে – লোকটাকে কেমন একটু ভয় ভয়ও লাগে। জিজ্ঞেস করতে ও জানালো যে ডাকোটা ড্রাইভে কিছুক্ষণ আগে একটা বড় রকম এক্সিডেন্ট হয়েছে – সেটা এড়াতেই এদিক দিয়ে যাওয়া। বলেই রেডিওটা অন করে দিল। রেডিওতে একটা টক শো চলছিল আর মাঝে মাঝে এক্সিডেন্ট এর ঘোষণা। টক শোর বিষয়বস্তু ছিল কদিন আগে নিউ ইয়র্কে কয়েকজন অভিবাসীর ওপর বর্ণবাদী হামলা। কথা গিয়ে ঠেকল হিজাব পরা নিয়ে। কেও বা এটাকে পুরোপুরি নিষিদ্ধ করার কথা বলছে আর কেউবা সেটার বিরোধিতা করছে। এর মাঝে একজন প্রস্তাব করে বসলো মুসলমানদের জন্য হিজাব বাধ্যতা মূলক করার জন্য! তার যুক্তি যে এর ফলে ওরা আর আমাদের মাঝে লুকিয়ে থাকতে পারবে না – সব সময় চোখে চোখে রাখা যাবে। হঠাৎ করে সামনে থেকে ট্যাক্সি ড্রাইভারটা হো হো করে হেসে উঠল – মনে হয় খুব মজা পেল। সামিয়ার খুব বিরক্ত লাগছিল কিন্তু সাহস করে রেডিওটা বন্ধ করতেও বলতে পারল না। এয়ারপোর্ট এর কাছাকাছি এলে ড্রাইভারটা সামনে থেকে জিজ্ঞেস করল; মা বাবাকে ছেড়ে এই প্রথম বুঝি একা বেরুচ্ছ? মেজাজটা আগেই তিরিক্ষি হয়ে ছিল, কোন কথা না বলে "হুম" বলে জবাব দিল সামিয়া। কলেজে যাচ্ছ বুঝি? হুম। এয়ারপোর্টে পৌছতেই তড়িঘড়ি করে ভারাটা দিয়ে সরে পরতে পারলেই বাঁচে। ১৫ ডলারের মত ভারা হয়েছে, টিপ সহকারে ২০ ডলার হাতে দিয়ে রওনা দিতেই; "এই যে মেয়ে, আমিতো তোমার কাছ থেকে টিপ নেব না – এই নাও তোমার ৫ ডলার" "কেন? আমার কাছ থেকে টিপ নেবে না কেন?" "গত সপ্তাহে আমার মেয়েকেও নামিয়ে দিয়ে গেছি, সেও তোমার মত কলেজে গেল। তার কাছ থেকেও টিপ নেই নাই"। কি করবে সামিয়া বুঝতে পারছিল না। লজ্জায় মাথা নত করে টাকাটা নিয়ে সেখান থেকে পালাতে পারলে বাচে। লোকটাকে কি ভুলই না বুঝেছিল। মনের অজান্তেই নিজের বাবার মুখটা হঠাৎ ভেসে আসে। পৃথিবীটাকে যতটা খারাপ ভেবেছিল আসলে সেটা ততটা খারাপ নয় নিশ্চয়ই।
মনটা ততক্ষণে অনেকটা হাল্কা হয়ে গেছে। খুশি মনে গুন গুন করে গান করতে করতে চেক-ইন করে নিরাপত্তা তল্লাশির জন্য লাইন এ দাঁড়াতেই সামনে থেকে একজন হাঁক দিয়ে দিয়ে বলল; এই যে, তুমি এদিকে এসো। তার পর যত রকম তল্লাশি আর প্রশ্নের পর প্রশ্ন; কোথায় যাচ্ছ, কেন যাচ্ছ, এখানে কেন এসেছিলে, কোথা থেকে এসেছ, মা বাবা ভাই বোন কে কোথায় থাকে, কি করে, কাদের সাথে চলা ফেরা, দু'দিন আগের ক্যাম্পাস এর বন্দুকধারী যুবককে চেন কিনা - আরও হাজারো রকম কথা। মহা-বিরক্ত হয়ে কিছু একটা বলতে গিয়ে মায়ের কথাটা মনে পরে গেল "কারো কোন কথার জবাব দিয়ে ঝগড়া বিবাদ বাধাবি না, দিন কালটা বড় খারাপ মা, বুঝে শুনে চলবি – কথা দে আমাকে"।
প্লেনে উঠে জানালার পাশের সিটটায় বসে মাথা নিচু করে এক মনে ম্যাগাজিনের পাতায় চোখ বুলাতে লাগল সামিয়া। পাশে কে একজন এসে বসল – কারো সাথে কথা বলতে ইচ্ছা করছিলো না বলে সামিয়া আর সেদিকে ফিরে তাকাল না। - মিনিয়াপলিস যাচ্ছ বুঝি? - না, নিউ ইয়র্ক। - বেরাতে না কাজে? - কলেজে। - কোন কলেজে? - কলাম্বিয়া। - কি বিষয় নিয়ে পরবে? - সাংবাদিকতা। - কলাম্বিয়া খুব ভালো কলেজ সাংবাদিকতা পড়ার জন্য। তবে নর্থ-ওয়েস্টার্ন এর মত নয়। যদিও ফুটবলে গত বছর নর্থ-ওয়েস্টার্ন কলাম্বিয়ার কাছেই হেরে গিয়েছিল। সামিয়ার বিরক্ত লাগছিল। মুখ ঘুরিয়ে চাইতেই চোখে পরল দুষ্ট চোখে মিটি-মিটি করে ভদ্রলোক তার দিকে তাকিয়ে হাসছে। শ্বেতাঙ্গ ভদ্রলোক, বয়স সম্ভবত ষাটের মত হবে। কপট রাগের ভঙ্গিতে সামিয়ার পাল্টা প্রশ্ন; তুমি কি বোঝাতে চাইছ?
বাদ বাকি পথটা দুজনের হাসি ঠাট্টা আর গল্প গুজবে কেটে গেল। ভদ্রলোক নর্থ-ওয়েস্টার্ন ইউনিভারসিটিতে সাংবাদিকতা শিক্ষা ও শিক্ষকতা দুটোই করেছেন – বর্তামানে মিনিয়াপলিসে এন বি সি’র ব্যুরো প্রধান। ছাত্র জীবনের মজার মজার অনেক গল্প শোনালেন – শোনালেন ডরমিটরিতে থাকার সময় সব দুষ্টুমির কথাগুলি। বললেন; তুমি যদি এগুলি কখনো কাওকে বল তাহলে কিন্তু আমি সব অস্বীকার করব। আমার ফ্রেটারনিটির বন্ধুরা যদি কখনো জানতে পারে যে আমি এসব কলাম্বিয়ার কাওকে বলেছি তাহলে ওরা আমাকে ত্যাজ্য ঘোষণা করবে।
আরো বললেন; জীবনে যেমন সাফল্যের মুখ দেখবে তেমনি দেখবে হতাশাও। একটাকে ছাড়া অন্যটার কোন অস্তিত্ব নাই, পয়সার এ পিঠ আর ও পিঠ। সাফল্য উৎসাহ জোগাবে, আর হতাশা - জয় করার নেশাকে চাংগা করবে। অধ্যবসায় ও পরিশ্রম এর কোন বিকল্প নাই – আর তোমার জন্য এটা একটা অমোঘ সত্য। তোমাকে অন্যদের থেকে আরো দু'কদম এগিয়ে হাটতে হবে। তোমাকে পথ প্রদর্শক হতে হবে তোমার পরে আসা দ্বিতীয় প্রজন্মের অভিবাসী অশ্বেতাঙ্গ নারীদের। ভয় পেয়ে পিছিয়ে গেলে চলবে না। মনে করে দেখ আমাদের পূর্ব পুরুষরা যদি অমন অমানবিক কঠিন জীবন বেছে না নিয়ে পিছ পা হয়ে যেতেন তাহলে আমরা আজ কোথায় থাকতাম। মন্ত্র মুগ্ধের মত কথা শুনতে শুনতে কখন যে মিনিয়াপলিসে প্লেন ল্যান্ড করে গেছে সামিয়া বুঝতেও পারেনি। নামার সময় ভদ্রলোক পকেট থেকে একটা কার্ড বের করে বললেন; রেখে দাও, কখনো মিনিয়াপলিসে শিক্ষা নবিশের কাজ করতে চাইলে আমার সাথে যোগা যোগ কোরো।
"আর একটা কথা, তোমাকে তো বেশ সাহসী বলেই মনে হয়। আমি যখন প্রথম বার বাড়ি ছেড়ে একা একা কলেজে যাচ্ছিলাম, তখন কিন্তু প্লেনের সিটে বসে চুপি চুপি কেঁদেছিলাম"!
মিনিয়াপলিসে এক ঘণ্টার যাত্রা বিরতি। বাড়িতে ফোন করে মা বাবাকে এত সব ঘটনার কথা জানাবার আর তর সইছিল না। মা তো ফোনে সামিয়ার গলা শুনে হাও মাও করে কেঁদে উঠে ফোনটা তাড়াতাড়ি মামুন সাহেবের হাতে দিয়ে দুই রাকাত নফল পড়তে বসে গেল। ফোন শেষে মনিরা আবদার ধরল "ওগো ওই ট্যাক্সি ড্রাইভারটাকে এক দিন একটু খুঁজে বাসায় নিয়ে আস না, এক বেলা একটু ভর পেট খাইয়ে দেই"। মামুন সাহেব আর হাসি চেপে রাখতে পারছিল না, হাসতে হাসতে চোখ দুটা ভিজে আসলো। মনে পরে গেল নিজের মায়ের কথা; জেলা শহরে হোস্টেলে পাঠিয়ে দিয়ে মা নাকি বার দরজায় বসে থাকতেন, কোন ভিখারি যেন অভুক্ত ফিরে না যায়!
Delta Air Flight 1997 bound for New York JFK airport is ready for boarding; ঘোষণার শুরুতেই সামিয়া আগেভাগে গিয়েই নিজের সিটে গোছগাছ করে বসল। চোখ বন্ধ করে ভাবতে ভালো লাগছিল; কেমন হবে তার স্বপ্নের কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাস? বন্ধু বান্ধব? শিক্ষক শিক্ষিকা আরও কত কিছু।
কানের কাছে একটা কর্কশ গলা শুনে চোখ মেলতে দেখতে পায় এক গাট্টা গোট্টা মহিলা হেঁড়ে গলায় এয়ার হস্টেস কে ডাকছে আর সামিয়ার পাসের সিটটা দেখিয়ে বলে যাচ্ছে সে ওখানে কিছুতেই বসবে না। এদের সাথে বসা তার একেবারেই অপছন্দ। এখনো যদি এদের সাথে চলা ফেরা করতে হয় তাহলে আর ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হোয়াইট হাউসে পাঠিয়ে কি লাভ হোল। আমি পুরাপুরি দাম দিয়ে টিকেট কিনে প্লেনে উঠেছি। আমি কোন অবস্থাতেই এরকম একটা অভদ্র ও অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে বসব না। আর বলা তো যায় না – ওর কাছে বোমা টোমাও তো থাকতে পারে? আমি একমাত্র আমার মত একজন খাটি আমেরিকানের পাশেই বসব – অন্য কারো সাথে নয়।
মায়ের কাছে দেয়া কথাটার কথা ভেবে সামিয়া বহু কষ্টে নিজেকে সংবরণ করে মুখ নিচু করে বসে রইল।
এয়ার হোস্টেস অনেক চেষ্টাতেও মহিলাকে নিবৃত করতে না পেরে অন্য কোন খালি সিট খুঁজতে গিয়ে দেখল ইকনমি ক্লাস এর সব সিটই পূর্ণ। মহিলা নিজেকে বিজনেস ক্লাস এর খালি সিটে বসাবার দাবি করে গাঁট হয়ে দাঁড়িয়ে রইল – সেখান থেকে এক পাও নড়বে না সে!
এমত অবস্থায় এক মাত্র ক্যাপ্টেন অনুমতি করলেই কাওকে ইকনমি থেকে বিজনেস ক্লাস এর খালি সিটে বসানো যেতে পারে। সে কথাটাই মহিলাকে জানিয়ে হোস্টেস সামনে গিয়ে ক্যাপ্টেন এর সাথে কথা বলে ফিরে এসে জানালো যে ক্যাপ্টেন অনুমতি দিয়েছেন বিজনেস ক্লাস এর খালি সিটে বসানোর জন্য - আর ডেল্টা এয়ার এর পক্ষ থেকে ক্ষমাও চেয়েছেন এ ধরনের একটা অসভ্য ও অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে কাওকে পড়তে হয়েছে বলে।
তার পর সামিয়াকে লক্ষ করে বলল; "এই মেয়ে, নিচ দিকে মুখ করে আর বসে আছ কেন? উঠে আস, আমার সাথে গিয়ে বিজনেস ক্লাসে বসবে। তোমাকে আর এই অসভ্যতা সহ্য করতে হবে না, ক্যাপ্টেন তেমনটাই বলেছেন"।
মোস্তফা আব্দুল্লাহ, সিডনি
|