|
বিশ্ববীণা’র বিজয়া বৈঠক
মমতাজ রহমান চম্পাঃ গত ৮ই অক্টোবর মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হোল “বিশ্ববীণা হারমনি উইথ টেগর” এর বিজয়া বৈঠক, শারদ লক্ষ্মী বিরাজে। নাম থেকেই অনুমান করা যায় এই সংগঠনটি কেবল মাত্র রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টি নিয়ে চর্চা করে থাকে। এই আয়োজনটি ছিল খুবই সীমিত পরিসরে বিশ্ববীণার পরিবার ও কিছু শুভানুধ্যায়ীদের নিয়ে। বরাবরের মত চমৎকার এক ঘণ্টার একটি অনুষ্ঠান! মঞ্চে শিল্পীদের সাজসজ্জাও ছিল চোখে পড়ার মত। যদিও দিনটি ছিল মঙ্গলবার, তারপরও বিশ্ববীণার শুভানুধ্যায়ীরা অনেকেই এসেছিলেন অনুষ্ঠানে।
সময় মত অনুষ্ঠানটি শুরু করতে না পারার জন্য বিশ্ববীণার কর্ণধার নীলাঞ্জনার আক্ষেপের সীমা ছিল না। নানা ভাবে তিনি উপস্থিত সকলের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন সে জন্য। অনুষ্ঠানটি সাজানো হয়েছিল রবি ঠাকুরের শরৎকালীন গান দিয়ে। সমবেত কণ্ঠে এদিন আজি কোন ঘরে গো গানটি দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। এর পর কখনো একক এবং কখনো সমবেত কণ্ঠে একে একে তারা গেয়ে শোনান - বেঁধেছি কাশের গুচ্ছ, আমার আনন্দ ঐ গো, বিপুল তরঙ্গ রে, শরৎ-আলোর কমলবনে, আকাশ জুড়ে শুনিনু, মোরে ডাকি লয়ে যাও মুক্ত দ্বারে, বিশ্ব সাথে যোগে যেথায় বিহারো, জননীর দ্বারে আজি ঐ, আমার রাত পোহালো। প্রতিটি গানের মধ্যাই ছিল শরতের আমেজ।
নীলাদ্রির কণ্ঠে বিপুল তরঙ্গ রে গানটি খুব চমৎকার লাগছিল শুনতে; সেই সাথে হিমাদ্রির তবলাও ছিল অসাধারণ। মোরে ডাকি লয়ে যাও মুক্ত দ্বারে - গানটি গেয়ে শোনালেন ভারতের অবাঙ্গালী শিল্পী শচীন। এটি ছিল তার মঞ্চে গাওয়া প্রথম বাংলা গান। চমৎকার গেয়েছেন। গানের মাঝে মাঝে কিছু কবিতা অনুষ্ঠানে যোগ করেছিল ভিন্ন মাত্রা। নীলাঞ্জনা সিনহা’র দৃপ্ত কণ্ঠের সাবলীল ও সুস্পষ্ট উচ্চারণে ধারাবর্ণনা তৈরি করেছিল চমৎকার গতিশীলতা। সব শিল্পীরা আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন অনুষ্ঠানটি সফল করতে এবং তারা সার্থকও হয়েছেন।
গানে অংশগ্রহণ করেছেন - রথীন, মীনাক্ষী, ঝুমুর, অনন্যা, নীলাঞ্জনা এবং শচীন আবৃত্তিতে - এঞ্জেলিনা এবং মালা তবলায় - সাকিনা এবং হিমাদ্রি কি বোর্ড - নীলাদ্রি অক্টোপ্যাড - নির্মাল্য বিশ্ববীণার পরিবেশনার শেষে নীলাঞ্জনা সিনহা তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন - গুটি গুটি পায়ে বিশ্ববীণা ৫ বৎসর পূর্ণ করলো। তিনি আমন্ত্রিত অতিথিদের বিশ্ববীণার সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি ইচ্ছা প্রকাশ করেন যে ভবিষ্যতে বিশ্ববীণা কোন বিশেষ দিন, যেমন ১লা বৈশাখ বা কবি গুরুর জন্মদিন সপ্তাহান্তের জন্য অপেক্ষে না করে সেই দিনই সেটা পালন করার চেষ্টা করবে। বিশ্ববীণার পরিবেশনার পর ছিল আমন্ত্রিত অতিথিদের পর্ব। এই পর্যায় নৃত্য পরিবেশন করেন শ্রেষ্ঠা বোস, অতিথিদের অনেকেই বিশ্ববীণাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন। তাদের মধ্যে সুরঞ্জনা জেনিফার রহমান, তপন জ্যোতি মিত্র, ঊর্মি সেন গুপ্ত, অনামিকা সরকার, বাসব রায় এবং নির্মাল্য তালুকদার উল্লেখযোগ্য।
অনুষ্ঠানের শেষে আমন্ত্রিত সবাই কে মুখরোচক খাবার দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়। ধন্যবাদ বিশ্ববীণাকে প্রবাসের শত ব্যস্ততার মাঝেও সময় বের করে এমন চমৎকার একটি অনুষ্ঠান আমাদের উপহার দেবার জন্য।
|
মমতাজ রহমান চম্পা, সিডনি, অস্ট্রেলিয়া
Share on Facebook               Home Page             Published on: 12-Oct-2019
| | |