bangla-sydney
bangla-sydney.com
News and views of Bangladeshi community in Australia












সুন্দর ফন্টের জন্য SolaimanLipi ডাউনলোড করে নিন...

বিশ্ব তোলপাড়, ভারত তোলপাড় মোদি আর বিজেপি ক্ষমতায় আসলে কি হবে?
মইনুল আহসান


বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতন্ত্রের দেশ ভারত কি গণতন্ত্রের সহায়তায় এক উগ্র হিন্দু সাম্প্রদায়িক দেশে পরিণত হতে যাচ্ছে? ভারতের হিন্দুরা কি উগ্র সাম্প্রদায়িকতার দিকে ঝুঁকছে?

বাংলাদেশেও এই তোলপাড়ের ঢেউ লেগেছে, লাগতে বাধ্য। বাংলাদেশের সংখ্যাগুরুরা শঙ্কিত ভারতের বাংলাদেশ নিতি আরো বৈরি আর বৈষম্যমুলক হবে ভেবে, আর সংখ্যালঘুরা শঙ্কিত যে বাংলাদেশে ভারত বিদ্বেষ বেড়ে যাবে আর তা প্রতিফলিত হবে ঘরের কাছের সংখ্যালঘু বিদ্বেষে।

ভারতীয় সাধারণ হিন্দুরা, তথা সংখ্যাধিক্য নিচু বর্ণের হিন্দুরা সাধারণত সাম্প্রদায়িক নয়, যেমন নয় বাংলাদেশের নিচু বর্ণের/শ্রেণীর হিন্দুরা এবং মুসলমানেরা; এবং এমনকি ভারতের নিচু শ্রেণীর আতরাফ মুসলমানেরাও সাধারণত সাম্প্রদায়িক নয়।

বিজেপি এবং তার সহযোগী হিন্দুভাতা সংঘটনগুলি মূলত উচ্চবর্ণের হিন্দু ব্রাহ্মন আর ক্ষত্রিয় গোষ্ঠীর সঙ্ঘঠন, তার সাথে যোগ দিয়েছে ভারতের বানিয়া শ্রেণী। তারাই ভারতে তাদের হাজার বছরের কায়েমি স্বার্থ বজায় রাখতে এবং মুসলিম শাসনের পূর্ববর্তী পর্যায়ে ফিরিয়ে নেওয়ার স্বপ্ন থেকেই মুসলিম বিরোধী সাম্প্রদায়িকতা উসকিয়ে দিচ্ছে। হিন্দু পুনরুত্থানের মাদকতায় নিচু জাতের/শ্রেণীর হিন্দুদের উচ্চবর্ণের হাতে তাদের যুগ যুগের দলিত শোষিত অবস্থান ভুলিয়ে উচ্চবর্ণের হিন্দুরা আবারো তাদের ব্যাবহার করছে।

ভারতের নিচু জাতের/শ্রেণীর হিন্দুরা যে বিজেপির উচ্চবর্ণের হিন্দুদের উদ্দেশ্য একেবারেই বুঝতে পারছেন না তা নয়। তারা এখন উচ্চবর্ণের হিন্দুদের হাতে তাদের যুগ যুগের দলিত শোষিত অবস্থান সম্পর্কে অনেক সচেতন; আর এরই প্রতিফলনে ভারতের জনবহুল উত্তরাঞ্চলের হিন্দি বেল্টে উত্থান হয়েছে মায়াবতী আর যাদবের মত নিম্নবর্ণের নেতৃত্বে নিম্নবর্ণের হিন্দু আর আতরাফ মুসলমানের রাজনৈতিক শক্তির। এই শক্তি এখনো অপরিপক্ক। তাই অর্থনীতিক সুবিধা আর দাঙ্গার মাধ্যমে মুসলমানদের জমি সম্পত্তি দখলের লোভে অনেক নিন্মবর্নের হিন্দুরাও বিজেপির দিকে ঝুঁকছেন (যার বিপরীতটা হচ্ছে বাংলাদেশে), আর তাদের অনেক নেতারাও হাওয়া বুঝে ক্ষমতার ভাগ পেতে বিজেপির দিকে ঝুঁকছেন।

এরকম এক হিন্দুভতার পুনরুত্থান হয়েছিল খ্রিষ্টপূর্ব ১৮৫ শতাব্দীতে এক ব্রাহ্মন সেনাপতি পরশুরাম সুঙ্গার বিদ্রোহে শেষ মৌর্য সম্রাট ব্রিহাধার্তার খুন হওয়া ও ভারতের মৌর্য সম্রাজ্যের পতনের পর। মৌর্য সম্রাট চন্দ্রগুপ্ত জৈন ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন আর সম্রাট অশোক কলিঙ্গর যুদ্ধের ভয়াবহতায় অনুতপ্ত হয়ে বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। তার পরপরই সারা ভারতে এবং ভারত ছাড়িয়ে বহু প্রতিবেশী দেশে বৌদ্ধ ধর্ম ছড়িয়ে পড়ে। ব্রাহ্মনেরা জাত পাত ব্রাহ্মন বিহীন ব্রাহ্মন কতৃত্বহিন বৌদ্ধ সমাজকে কোনদিনই মেনে নিতে পারে নি। ব্রাহ্মন সেনাপতি পরশুরাম সুঙ্গার বিদ্রোহে শেষ মৌর্য সম্রাট ব্রিহাধার্তার খুন হওয়া ও ভারতের মৌর্য সম্রাজ্যের পতনের পর শুরু হয় ব্রাহ্মনেবাদের পুনরুত্থান আর বৌদ্ধ ধর্মালম্বি ও বৌদ্ধ ধর্মের বিরুদ্ধে চরম প্রসিকিউশন – ভারতের বেশিরভাগ বৌদ্ধবিহারই একে একে ধ্বংস করা হয় অথবা পরিত্যক্ত হতে বাধ্য হয় - যার পরিণতিতে একসময় বৌদ্ধ ধর্মের জন্মভূমি ভারত থেকে বৌদ্ধ ধর্ম একরকম নির্বাসিত হয়ে যায়। এই বাংলাদেশেও পাল রাজাদের আমল পর্যন্ত (১১৫৯ খৃষ্টাব্দ) বেশিরভাগ জনসাধারণ ছিল বৌদ্ধধর্মাবলম্বি। সেন রাজাদের আমলে এই দেশের বেশিরভাগ বৌদ্ধধর্মালম্বিকে পুনরায় হিন্দু ধর্মে ধর্মান্তরিত হতে বাধ্য করা হয়। তবে এই বাধ্যতামূলক জাত পাতের ব্রাহ্মনের হিন্দু ধর্ম পূর্ববঙ্গে তথা আজকের বাংলাদেশে কখনই গভীর শেকড় গাড়তে পারে নাই – যার পরিণতিতে বাংলার শাসনে মুসলিম শক্তির আগমনের পর থেকেই এর বেশিরভাগ মানুষই পুনরায় ধর্মান্তরিত হয়ে জাত পাত ছেড়ে ধীরে ধীরে মুসলমান হয়ে যায়।

প্রশ্ন হচ্ছে প্রায় ২০০০ বছর পরে বিজেপি আর মোদি কি সাম্প্রদায়িকতা আর মুসলিম প্রসিকিঊশনের মাধ্যমে হিন্দুভাতার দীর্ঘস্থায়ী পুনরুত্থান ঘটাতে পারবে?

আমার মনে হয় মোদি আর বিজেপি কিছুদিনের জন্য ভারতে এবং এই উপমহাদেশে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাস্প ছড়িয়ে সাধারণ মানুষের জন্য অনেক ভোগান্তি বাড়ালেও, তা হবে ক্ষণস্থায়ী। এই বিশ্বায়নের আর যোগাযোগের যুগে নিন্মবর্নের হিন্দুরা অনেক সচেতন এবং ব্রাহ্মনের চাল যে তাদের অবস্থা পরিবর্তনের জন্য নয় তাও তার ধরে ফেলবেন। আর সারা বিশ্ব, ভারতীয় মুসলমান আর মুসলিম বিশ্বের প্রতিক্রিয়াও মোদি আর বিজেপির জন্য সুখকর হবে না।
মইনুল আহসান (মইন আহসান)
২৫/০৪/২০১৪
সিডনি








Share on Facebook               Home Page             Published on: 29-Apr-2014

Coming Events:





A day full of activities, games and fun.







Blacktown Lakemba Mascot