bangla-sydney
bangla-sydney.com
News and views of Bangladeshi community in Australia













মিশন পসিবল
মাসুদ পারভেজ



হজ ইসলাম ধর্মের পাঁচটি স্তম্ভের একটি। শারীরিক ও আর্থিক ভাবে সক্ষম মুসলমানের জীবনে একবার হজ পালন করা ফরজ। ইউরোপ, দক্ষিণ ও উত্তর আমেরিকা এবং অস্ট্রেলিয়া থেকে ২০২৩ সালে হজের প্যাকেজ কেনা, ই-ভিসার আবেদন, সামগ্রিক ব্যবস্থা পরিচালনার জন্য জানুয়ারী ২০২৩ সালে সৌদি আরব সরকার ভিশন-২০৩০
(www.vision2030.gov.sa/en ) ইনিশিয়েটিভসের আওতায় “নুসুক” (hajj.nusuk.sa) কাস্টমার ফোকাস অফিসিয়াল ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের নাম ঘোষণা দেয়। এর ফলে, পূর্ববর্তী বছরগুলিতে যেভাবে মোয়াল্লেম নির্ভর স্থানীয় ট্রাভেল এজেন্ট কিংবা হজ এজেন্সির মাধ্যমে হজে যাওয়া যেত তার সুযোগ আর নেই।

২৭শে জানুয়ারী ২০২৩ সাল - “নুসুক” পোর্টালে আমার এবং আমার সহধর্মীনির ছবি, পাসপোর্টের কপি, ই-মেইল এড্রেস, ইত্যাদি তথ্য দিয়ে একটি একাউন্ট খুলে অপেক্ষা করতে থাকি হজ প্যাকেজ ঘোষণার জন্যে। একটি একাউন্টে একাধিক ব্যক্তির নাম সংযোজন করে সর্বোচ্চ ৯ জনকে হজের সঙ্গী হিসাবে একসাথে আবেদন করার সুযোগ রয়েছে। প্রায় চার মাস পরে, ২৩শে মে সন্ধ্যায় হঠাৎ কোনো রকম পূর্ব বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই “নুসুক” পোর্টালে খোলা আমাদের একাউন্টে অস্ট্রেলিয়ার জন্যে সৌদি রিয়েল-এ প্রদর্শিত বিভিন্ন মূল্যমানের হজ প্যাকেজ এক এক করে আসতে শুরু করে। বিভিন্ন প্যাকেজের মূল্যের তারতম্য মূলতঃ নির্ভরশীল - প্যাকেজের ব্যপ্তিকাল, আবাসন ব্যবস্থা যেমন - প্রতি রুমে দুইজন, তিনজন কিংবা চারজন শেয়ারিং, হোটেলের মান, পবিত্র কাবা শরীফ থেকে সংশ্লিষ্ট হোটেলের দূরত্ব, সৌদি আরবে অভ্যন্তরীন যাতায়াতের মাধ্যম (বাস কিংবা ট্রেন), জামারাত থেকে মিনা ক্যাম্পের দূরত্ব এবং ক্যাম্পের সুযোগ-সুবিধা, ইত্যাদির ওপর। আমার এবং আমার সহধর্মীনির আগে থেকেই এইসব বিষয়ে কিছু মানসিক প্রস্তুতি থাকায় কোনরকম দেরি না করে অত্যন্ত দ্রুততার সাথে আমাদের পছন্দনীয় ১৮দিনের ডাবল অকুপেন্সির হজ প্যাকেজ নির্বাচন করে, পেমেন্ট অপসনে ক্লিক করে ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে প্যাকেজের মূল্য যা’ তাৎক্ষণিকভাবে অস্ট্রেলিয়ান ডলারে রূপান্তরিত হয়ে হজ প্যাকেজ কিনতে সক্ষম হই। সমগ্র প্রক্রিয়াটি অর্থাৎ - “নুসুক” পোর্টালে আমাদের একাউন্টে হজ প্যাকেজ দেখে, প্যাকেজ এবং মোয়াল্লেম নির্বাচন করে, ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে পেমেন্ট সম্পন্ন করে, সিস্টেম জেনারেটেড আইটেমাইজড ইনভয়েস ই-মেইলে পেতে সময় নিয়েছে মাত্র ১৪মিনিট। পরবর্তী ধাপে আমাদের দুইজনের জন্যে ই-ভিসার আবেদন করতে সময় লেগেছে ১০মিনিট। দুইদিন পরে দেখলাম ই-ভিসা অনুমোদিত হয়ে আলাদা আলাদা ভাবে আমার এবং আমার সহধর্মীনির ছবি সম্বলিত দুইটি পিডিএফ ডকুমেন্ট সংযুক্ত হয়ে রয়েছে “নুসুক” পোর্টালে আমাদের একাউন্টে। আরো দুইদিন পরে সিডনি থেকে আমাদের গাইড/মোয়াল্লেম থেকে ই-মেইলে যোগাযোগ পেলাম।


আমাদের পরবর্তী প্রস্তুতির পদক্ষেপ যেমন – জিপি-র কাছ থেকে মেনিনজাইটিস ভ্যাকসিন নেয়া, myGov একাউন্ট থেকে সকল ভ্যাকসিন নেয়ার তথ্য সম্বলিত “আন্তর্জাতিক ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট” ডাউনলোড করা, রাত আটটায় নিয়মিত অনলাইনে হজ ক্লাসে অংশগ্রহণ করে হজের বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান আহরণ, ইন-পারসন হজ সেমিনারে যোগদান, প্রয়োজনীয় শপিং করা (হিজাব, জিলবাব, ইহরাম, ইহরামের বেল্ট, মিসওয়াক; Skechers, Anaconda, Decathlon থেকে আরামদায়ক হাঁটার জুতা ও দুই ফিতার স্যান্ডেল, মরুভূমির দেশে গরম আবহাওয়ার উপযোগী কাপড়-চোপড়, ইত্যাদি), জিপি-কে হজের বিষয়ে বর্ণনা দিয়ে এবং অনুরোধ করে প্রেসক্রিপশন ও সার্টিফিকেট নিয়ে সম্ভাব্য বিভিন্ন ধরণের অসুখের জন্যে “কাজে লাগতেও পারে” এমন প্রয়োজনীয় ঔষধ কেনা, দেশে-বিদেশে আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবকে ফোন করে কিংবা প্রতিবেশীদের এবং স্থানীয় মসজিদে নামাজের পরে পরিচিত মুসুল্লিদের সাথে দেখা করে হজে যাওয়ার সংবাদ দিয়ে দোয়া চাওয়া, সারাদিনে অফিসের কাজ শেষে নিয়মিতভাবে হজের প্রক্রিয়া পড়াশুনা ও প্রয়োজনীয় দোয়া-দরূদ মুখস্ত করা, ভিডিও ক্লিপ দেখে ইহরাম পরার পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ ও অনুশীলন করা, ইত্যাদির মাঝে দ্রুত দুই সপ্তাহ সময় ফুরিয়ে যায়।

৭ই জুন (১৮ই জ্বিলকদ ১৪৪৪) - আমাদের ৫০জনের গ্ৰুপের (পুরুষ ২৮জন + মহিলা ২২জন) জন্যে প্যাকেজের মনোনীত সিডনির গাইড/মোয়াল্লেমের কাছ থেকে হজ যাত্রার ই-টিকেট পেলাম। হজ প্যাকেজ কেনার পরে অকল্পনীয় ব্যস্ততায় অত্যন্ত দ্রুততার সাথে মাত্র তিন সপ্তাহের সামগ্রিক প্রস্তুতিতে ১৭ই জুন (২৮শে জ্বিলকদ) ইতিহাদ এয়ারওয়েস-এর রাতের ফ্লাইটে সিডনি-আবুধাবী-জেদ্দা। অনেক আগে শুনেছিলাম – “হজ পালন করতে যাওয়ার সময় মনে রাখতে হবে, জীবনে আর হয়তো ফিরে আসতে নাও পারি, সেভাবেই প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা করে যেতে হবে”। আর তাই সিডনি এয়ারপোর্টে যখন আমাদের ছেলে-মেয়ে আমাদের দুইজনকে বিদায় দিচ্ছে তখন মনে হয়েছে - আমরা কি সত্যিই প্রয়োজনীয় সব কিছু ব্যবস্থা করে যেতে পেরেছি?

সিডনির শীতের ৮ডিগ্রী তাপমাত্রা থেকে যাত্রা করে, আবুধাবী এয়ারপোর্টে সাড়ে তিন ঘণ্টার যাত্রাবিরতিতে গোসল করে ইহরাম পরে, ওমরাহ-র নিয়ত করে ১৮ই জুন (২৯শে জ্বিলকদ) সকাল ১১টায় জেদ্দায় যখন পৌঁছালাম তখন সেখানকার তাপমাত্রা ৪৬ডিগ্ৰী। জেদ্দা এয়ারপোর্টের ইমিগ্রেশন ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা শেষে অল্পসময়ে এয়ারপোর্ট থেকে বের হয়ে দেখি - সারি সারি বাস আর ট্রাক দাঁড়িয়ে আছে। প্রথমে আমরা সবাই কিছুটা উদ্বিগ্ন হলেও আমাদের লাগেজ ট্রাকের পোর্টারদের কাছে দিয়ে আমাদের জন্যে পূর্বনির্ধারিত অপেক্ষমান বাসে উঠার সময় বাস ড্রাইভারের কাছে রাখা পলিথিন ব্যাগে সবার পাসপোর্ট জমা দিতে হয়েছে।

সমগ্র প্রক্রিয়াটি আমাদের হজ প্যাকেজের সিডনির গাইড, সৌদি মোয়াল্লেম এবং তাঁদের প্রতিনিধিরা অত্যন্ত সূচারুরূপে, ঝামেলাবিহীনভাবে, দ্রুততার সাথে সম্পন্ন করেছে। আমরা আরবি ভাষা না বুঝলেও তাঁদের ব্যবহারে বুঝতে পারছিলাম তাঁরা নিষ্ঠার সাথে অত্যন্ত উষ্ণ-হৃদয়ে আমাদেরকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। বাসে উঠে নিজ নিজ আসনে বসে সবাই একই সাথে জোরে-জোরে শব্দ করে “লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা, ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাক”(“আমি হাজির হয়েছি, হে আল্লাহ্। আমি হাজির হয়েছি, (তোমার ডাকে)। নিশ্চয় তোমার কোনো শরীক নেই, নিশ্চয় তুমি সকল প্রশংসা, নিয়ামত এবং সমগ্র জাহানের মালিক এবং তোমার কোনো শরীক নেই”) তালবিয়া করতে করতে জেদ্দা এয়ারপোর্ট থেকে প্রায় ১০০কিলোমিটার দূরত্বের পবিত্র মক্কা নগরীর পথে যাত্রা শুরু করলাম।

শহর ছেড়ে বিস্তৃত মরুর পথ দিয়ে অতিক্রম করছি আর মনে হচ্ছে ঐ দূরের দৃশ্যমান এলাকার আড়ালেই হয়তো পবিত্র কাবা শরীফ। রাস্তার দুই ধারে পাহাড়, মনে হচ্ছে পাহাড় কেটে রাস্তা বানানো হয়েছে। যতদূর দেখতে পাই শুধুই পাথরের পাহাড়। মরুভূমির সীমাহীন শুষ্কতার মাঝে বিক্ষিপ্তভাবে অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে আছে ধূলা-বালুতে আচ্ছাদিত শীর্ণ তরুলতা আর অল্প সংখ্যক বৃক্ষসমূহ। এখানে প্রকৃতি এক সুকঠিন রূপ নিয়ে বিদ্যমান।

পবিত্র মক্কা নগরীতে প্রবেশের আগে এই দীর্ঘ যাত্রাপথে আছে চারটি চেকপোস্ট। প্রতি চেকপোস্টে দায়িত্বরত রাজকীয় পুলিশ নির্দিষ্ট স্থানে বাস থামানোর নির্দেশ দিয়ে, অল্প সময়ের জন্যে বাসে উঠে সবাইকে “আসসালামুআলাইকুম” বলে বাস ড্রাইভারের সাথে আরবি ভাষায় একটু কথা বলে পলিথিন ব্যাগে জমা রাখা পাসপোর্ট থেকে দুই একটি পাসপোর্ট নিয়ে একটু কিছু দেখে - “অস্তরালিয়া-অস্তরালিয়া, হাজ্জি-হাজ্জি” বলে হাসি মুখে সবাইকে আবার সালাম জানিয়ে বাস থেকে নেমে ড্রাইভারকে চেকপোস্টের গেট অতিক্রম করে বাস চালিয়ে যাওয়ার জন্যে অনুমতি দিয়েছে।

দীর্ঘ যাত্রাপথে শেষ চেকপোস্টের নাম - জমজম চেকপোস্ট। জেদ্দা এয়ারপোর্ট থেকে রওনা হওয়া সব বাসগুলি রাজকীয় পুলিশের অনুমতি নিয়ে জমজম চেকপোস্টের গেট পার হয়ে গন্তব্যের উদ্দেশে চলে গেলেও রাজকীয় পুলিশের নির্দেশে আমাদের বহনকারী বাস কয়েকবার এদিক-ওদিক করে গেট অতিক্রম না করে একটি দোতালা বিল্ডিঙের পাশে এসে দাঁড়ালো। বাসের ভেতরে বসা সবাই বেশ উদ্বিগ্ন ও ভীত-সন্ত্ৰস্ত। একটু পরেই, বাস থেকে সবাইকে নেমে বিল্ডিঙের ভেতরে যাওয়ার নির্দেশনা এলো রাজকীয় পুলিশ থেকে। বিল্ডিঙের ভেতরে ঢুকে দেখি - বিশাল আয়তনের এক কনফারেন্স রুমে লাল রঙের লম্বা গালিচা বিছানো, হিজাব-নিকাব পরিহিত সৌদি মহিলারা সারিবদ্ধভাবে পরপর দাঁড়িয়ে আমাদের সবাইকে একটি তরতাজা লাল গোলাপের স্টিক, ছাতা ও জায়নামাজ উপহার দিয়ে সাদর আমন্ত্রণ ও প্রানঢালা অভিনন্দন জানাচ্ছে। চারিদিক থেকে আমাদের উদ্দেশ্যে “আসসালামুআলাইকুম”, “হাজ্জি” আওয়াজের মধ্যে দেখতে পেলাম প্রচুর ক্যামেরাম্যান বড়-বড় ভিডিও ক্যামেরা নিয়ে আমাদের সবার ছবি ধারণ করছে। ডিজিটাল ক্যামেরার ক্লিক-ক্লিক শব্দে মুখরিত, আরব দেশের খেজুর, চা-কফি, নানা ধরণের কোমল পানীয়, কেক-বিস্কুট, ইত্যাদি দিয়ে আপ্যায়নের এক আনন্দঘন পরিবেশ। আমাদের গ্রুপের হজ-যাত্রীর ফ্লাইটটি ছিল অস্ট্রেলিয়া থেকে সৌদি আরবে পৌঁছানো প্রথম ফ্লাইট। আলাপচারিতায় জানলাম - ভিশন২০৩০ ইনিশিয়েটিভসের আওতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে সৌদি আরবে প্রথম ফ্লাইটের হজ-যাত্রীদের স্বাগত জানানোর জন্যে এই বিশেষ আয়োজন। আমাদের সবার জন্যে নিঃসন্দেহে একটি স্মরণীয় ঘটনা!

একসময় নজরে আসে মক্কা গেট। আমরা মক্কা এলাকায় প্রবেশ করতে যাচ্ছি। আরেকটু পরেই হারাম এরিয়ার মধ্যে প্রবেশ করে ইনশাল্লাহ পৌঁছে যাব বাইতুল্লাহর সান্নিধ্যে। ফেরেশতাদের নির্মিত সেই বেষ্টনী বা বন্ধন এলাকাই হারাম এরিয়া হিসাবে চিহ্নিত। বাইতুল্লাহর হারাম এরিয়া আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত এমন ধারণা দিয়ে গেছেন আমাদের প্রিয় নবী রাসুলুল্লাহ (সাঃ)। অবশেষে সকল উত্তেজনা আর কৌতূহলের অবসানে চোখে পড়ে ২০১২সালে ১৬বিলিয়ন মার্কিন ডলার খরচে নির্মিত ৬০১মিটার উচ্চতার ক্লক টাওয়ার। অপেক্ষা সমাপ্তির মুহূর্ত ক্রমেই নিকটবর্তী হচ্ছে ভাবতেই নিজের মধ্যে ভিন্ন মাত্রার শিহরণ, হৃদয়ে প্রশান্তির পরশ অনুভব করি।

বিকাল চারটায় ক্লক টাওয়ারের ভেতরে পাঁচ তারকা বিশিষ্ট হোটেল “সুইসওটেল মক্কা”-তে পৌঁছনোর পরপরই আল-বাইত গেস্ট ও হোটেল কতৃপক্ষের দেয়া সংক্ষিপ্ত স্বাগত বক্তব্য এবং আপ্যায়নের পরে আমাদের পাসপোর্ট ফেরত দেয়া হয়। জেদ্দা এয়ারপোর্টে ট্রাকে তুলে দেয়া আমাদের লাগেজ ইতিমধ্যে হোটেলের লবিতে পৌঁছিয়েছে। আমার ও আমার সহধর্মীনির জন্যে বরাদ্দকৃত আমাদের ডাবল অকুপেন্সি রুমের চাবি ও লাগেজ নিয়ে রুমে এসে দ্রুত তৈরী হয়ে ইহরামের পোশাকে হোটেল থেকে বের হই ওমরাহ করার উদ্দেশ্যে।


হোটেল থেকে নামলেই হারাম শরীফের চত্বর। আমাদের সিডনির গাইড/মোয়াল্লেম ও গ্ৰুপের অন্যান্য সঙ্গীদের সাথে দ্রুত পদে আমি ও আমার সহধর্মীনি অগ্রসর হই। হারাম শরীফের অভ্যন্তরের ইসলামিক ক্যালিগ্রাফির অনন্য স্থাপত্যশৈলীর অত্যাধুনিক ও নান্দনিক কারুকাজ দেখছি আর হাঁটছি। সুবিশাল এই মসজিদের অভ্যন্তরের ভাব-গাম্ভীর্যপূর্ণ প্রশান্তিময় পরিবেশের পবিত্র আবহের বর্ণনা দেয়ার উপযুক্ত শব্দ চয়ন আমার সীমিত জ্ঞানের ভাণ্ডারে নেই। অতন্ত্র প্রহরীর মতো নিবদ্ধ দৃষ্টি প্রসারিত হচ্ছে সম্মুখে, পৃথিবীর প্রথম ঘর আল্লাহ কর্তৃক সম্মানিত পবিত্র কাবা শরীফ-কে লক্ষ্য করে। কিং আব্দুল আজিজ গেট দিয়ে “লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক...” তালবিয়া পড়তে পড়তে যখন প্রবেশ করছি তখন এক অপ্রকাশ্য শিহরণ জেগে ওঠে যা’ অনুভব করা যায় হৃদয় দিয়ে।

“আল্লাহু আকবার”- ঐ তো স্বর্ণখচিত পবিত্র কুরআনের আয়াত সম্বলিত কালো রঙের গিলাফে মোড়ানো পবিত্র কাবা ঘর যা এতদিন দেখেছি টেলিভিশনের পর্দায়, ছবিতে, কিংবা শয়নে-স্বপনে - আজ তা আমাদের চোখের সামনে। প্রথমবারের মতো পবিত্র কাবা ঘর নজরে এলেই দাঁড়িয়ে যেতে হয়, দোয়া করতে হয়। এই সময়টা দোয়া কবুলের সময়। কান্না ধরে রাখা আর সম্ভব হলো না - দুই হাত তুলে দোয়া করি। বিভোর হয়ে ভাবছিলাম - এই সেই পবিত্র কাবা - যেদিকে তাকিয়ে পৃথিবীর কোটি কোটি মুসলিম পরম শ্রদ্ধায় নামাজ আদায় করে - আজ আমরা তার সন্নিকটে, যার টানে আমরা বহুদূর থেকে এসেছি। এই সেই পবিত্র কাবা - যার কথা স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বর্ণনা করেছেন, যার গায়ে হযরত ইব্রাহীম (আঃ) ও হযরত ইসমাঈল (আঃ)-এর পবিত্র হাতের স্পর্শ রয়েছে, যার দেয়ালে আমাদের প্রিয় নবী রাসুলুল্লাহ (সাঃ) নিজ হাতে স্থাপন করেছেন “হজরে আসওয়াদ”, যার চতুর্দিকে তাওয়াফ করেছেন পৃথিবীর প্রথম মানব-মানবী হযরত আদম (আঃ) ও বিবি হাওয়া (আঃ)। ধীরে-ধীরে, হাঁটতে-হাঁটতে পৌঁছে যাই মসজিদুল হারামের গ্রাউন্ড ফ্লোর মাতাফে। তাপ নিরোধক প্রাকৃতিক শুভ্র মার্বেলে মোড়ানো সুপরিসর মাতাফের ফ্লোর যা’ প্রচন্ড উষ্ণ তাপমাত্রাতেও কখনো গরম হয় না। দোয়া পড়তে পড়তে সহসাই মিশে যাই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত নানা বর্ণের তাওয়াফকারীদের অপ্রতিরোধ্য অবারিত স্রোতে - এক অবর্ণনীয় উপলব্ধির ও অনন্য অনুভূতির মুহূর্ত।

হজের প্রায় এক সপ্তাহ আগে আমরা এসেছি। এই সময়টায় পরবর্তী সময়গুলোর তুলনায় ভীড় কিছুটা কম। তাই পরবর্তী সময়গুলোর তুলনায় বেশ দ্রুততায় আমাদের তওয়াফ শেষ হয়েছে। মাগরিবের নামাজের সময় হওয়ায় মাইকে আযান শুনতে পেলাম। বেতার তরঙ্গের শক্তিতে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ইতিপূর্বে পবিত্র কাবা শরীফ গ্রান্ড মসজিদ/মসজিদুল হারাম থেকে দেয়া সুমধুর কণ্ঠে মুয়াজ্জিনের আযান অনেকবার শুনেছি। আজ তা’ শুনছি সরাসরি - ভিন্ন আমেজের এই আজানের ধ্বনি। মাগরিবের নামাজ শেষে, যার উপর দাঁড়িয়ে হজরত ইব্রাহিম (আঃ) কাবাঘর নির্মাণ করেছিলেন সেই “মাকামে ইব্রাহিম” এবং কাবা ঘরকে সামনে রেখে দুই রাকাত সুন্নত নামাজ আদায় করে নেই।

জমজমের পানি পান করার আগে নিয়ত করে নেওয়া সুন্নত। এই পানি আল্লাহ্র বিশেষ নিয়ামতের পানি ও সেই কারণেই ধরিত্রীর বিশুদ্ধতম পানীয়। প্রিয় নবী রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এই পানিকে পৃথিবীর উৎকৃষ্টতম পানি বলে আখ্যা দিয়ে বলেছেন - “ভূপৃষ্ঠের মধ্যে সর্বোত্তম পানি জমজমের পানি, তাতে ক্ষুধার্ত ব্যক্তির খাদ্য ও অসুস্থ ব্যক্তির আরোগ্য রয়েছে”। যতদিন মক্কায় ছিলাম, এখানে দেখেছি ট্যাপ-ওয়াটার দিন-রাত ২৪ঘণ্টা গরম থাকে অথচ প্রাণ জুড়ানো জমজমের পানি সবসময় তৃপ্তিদায়ক ও ক্লান্তি নিরাময়ে অনন্য। তাওয়াফ শেষে জমজমের পানি পান করার জন্যে লাইনে দাঁড়িয়ে ভাবছিলাম - মরুর দেশের রুক্ষ পরিবেশে, প্রখর রোদে কতই না কষ্ট করে মা হাজেরা (আঃ) তাঁর শিশু সন্তান হজরত ইসমাইল(আঃ)-এর মুখে এক ফোঁটা পানি দিয়ে প্রাণ রক্ষার চেষ্টায় সাফা আর মারওয়া এই দুই পাহাড়ের মাঝে পাগলের মতো ছোটাছুটি করেছেন।

সাফা আর মারওয়া এই দুই পাহাড়ের মাঝে একপাশ থেকে অন্য পাশে সর্বমোট ৭বার আসা-যাওয়া করাকে সা’ঈ বলে। সুউচ্চ ছাদের বেষ্টনীতে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এই দুই পাহাড়ের মাঝে ৩.৫কিমি পথ এখন টাইলস দিয়ে বাঁধানো। পুরো রাস্তা জুড়ে কিছু দূর পরপর জমজমের পানি পানের ব্যবস্থা রয়েছে। সা’ঈ করার মাঝে এশার নামাজের সময় হওয়ায় নামাজ শেষে অবশিষ্ট পথ ভীড়মুক্ত পরিবেশে সহজেই শেষ করতে পেরেছি। সা’ঈ করার সময়ে বিভিন্ন দোয়া করা কিংবা পড়ার পাশাপাশি ভাবছিলাম – সা’ঈ করার হয়তো অনেক রকম তাৎপর্য আছে, কিন্তু আমার কাছে সা’ঈ করাকে মনে হয়েছে এ যেন সন্তানদের প্রতি মায়েদের অসামান্য ত্যাগের এক অতুলনীয় উদাহরণ। ইহরাম ছাড়ার আগে আমি সেলুনে গিয়ে নিয়মানুযায়ী চুল ছোট করে কেটে নিই, আর আমার সহধর্মীনি হোটেলে ফিরে চুলের আগা থেকে অল্প কিছু অংশ ছেঁটে, আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানিয়ে আমরা আমাদের ওমরাহ সম্পন্ন করি।

মক্কায় আমাদের হোটেল থেকে হারাম শরীফের দূরত্ব হেঁটে যেতে মাত্র তিন-চার মিনিটের পথ। আমাদের রুমে বেশ বড় টেলিভিশন-স্ক্রিনে পবিত্র কাবা শরীফে তাওয়াফের দৃশ্য সরাসরি লাইভ দেখা যাওয়া ছাড়াও মসজিদুল হারামের আজান শোনার ব্যবস্থা রয়েছে। রুমের বিশাল জানালা দিয়ে পবিত্র কাবা শরীফে তাওয়াফ করার একাংশ দেখা যায় যা’ নিঃসন্দেহে বিরল। তাহাজ্জতের নামাজ সহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মসজিদুল হারামে গিয়ে পড়ার সুযোগ পেয়েছি। আমার প্রয়াত আম্মা ও আব্বার জন্যে এবং আমার সহধর্মিনীর অসুস্থ আম্মা ও প্রয়াত আব্বার জন্যে ওমরাহ করার মনের আকাংখা আমাদের দুইজনের রয়েছে অনেকদিন আগে থেকেই। তাই আর দেরি না করে ২০ ও ২২শে জুন “রাব্বির হাম হুমা কামা রাব্বা ইয়ানি সাগীরা (হে আল্লাহ্ শিশুকালে আমার মা বাবা যেমন স্নেহ মায়া মমতা ভালোবাসা দিয়ে লালন করেছিলেন, তুমিও তাঁদের সে ভাবেই লালন কর)” - আল্লাহর কাছে এই দোয়া চেয়ে আমরা দুইজন দুইটি করে ওমরাহ করেছি।

২৪শে জুন (৬ই জ্বিলহজ্জ) - আমাদের প্যাকেজের আওতায় বাসে করে আরাফা ময়দান, মুজদালিফাহ, মিনা ক্যাম্প, জামারাত, জাবালে নূর - যেখানে প্রিয় নবী রাসুলুল্লাহ (সাঃ)–এর ওপর প্রথম ওহি নাজিল হয়েছে, ইত্যাদি স্থান পরিদর্শনে গিয়েছি।

২৬শে জুন (৮ই জ্বিলহজ্জ) - মক্কার হোটেল থেকে ইহরাম পরে বাসে করে রওনা হয়েছি মিনা ক্যাম্পের উদ্দেশে। সিডনি থেকে হজে আসার আগে পূর্ববর্তী বছরে হজ করেছেন এমন অনেকের সাথে আলাপচারিতায় মিনা ক্যাম্পের টয়লেট সম্পর্কিত ভয়াবহ শোচনীয় অবস্থার কথা শুনেছি। অনেকটা আতঙ্কিত হলেও মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে মিনা ক্যাম্পে পৌঁছিয়ে দেখি – সিডনি থেকে যা’ শুনে এসেছি তা’ একেবারেই ঠিক নয়। পরে জানলাম, ভিশন২০২৩-র আওতায় এবছরে মিনাতে আমাদের থাকার জন্যে ইউরোপিয়ান ক্যাম্প আপগ্রেড হয়েছে। আর তাই ইতিপূর্বের সব পুরানো টয়লেট পরিবর্তিত হয়ে ওয়েস্টার্ন টয়লেটে রূপ নিয়েছে। ক্লিনাররা অনবরত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় আর ধোয়া-মোছায় ব্যস্ত। আমাদের সবার স্বাস্থ্য, পরিচ্ছন্নতা ও পবিত্রতা রক্ষা করতে কোনো বেগ পেতে হয়নি।

মিনা ক্যাম্পে পুরুষ ও মহিলাদের আলাদাভাবে প্রতি ১০০জনের জন্যে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত একেকটি তাঁবুতে স্বতন্ত্র সোফা-বেডে পাশাপাশি প্রত্যেকের জন্যে জায়গা দেয়া হয়েছে। কয়েকটি তাঁবু পরে রয়েছে তিন বেলা অফুরন্ত খাওয়া পরিবেশনার জন্যে ক্যাফেটেরিয়া স্টাইলের কিচেন। তাঁবুর ভিতরে - ফ্রিজে রয়েছে বিভিন্ন ধরণের কোমল পানীয়, ফ্রুট জুস, স্প্রিং ওয়াটার, তাঁবুর গেটের বাহিরে – চা-কফি স্টেশন, চেস্ট-ফ্রিজে বিভিন্ন ধরণের আইসক্রিমের সমারোহ। ওয়েটাররা কিছুক্ষন পরপর প্রয়োজনের অতিরিক্ত টপ-আপ করছে।

আজ ২৭শে জুন (৯ই জ্বিলহজ্জ) - পবিত্র হজ। আমরা আজ বাসে করে মিনা থেকে আরাফা ময়দানে সারা বিশ্বের ১.৮৪৫মিলিয়ন ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের সাথে মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে নিজের উপস্থিতি জানিয়ে পাপ মুক্তির আকুল বাসনায় সমবেত হয়েছি। পবিত্র আরাফা ময়দান আজ “লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা, ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাক” ধ্বনিতে মুখরিত হচ্ছে। আরাফা ময়দানে ৩৫০জন ধারণক্ষম বিশাল আয়তনের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত তাঁবুতে পুরুষ এবং মহিলাদের আলাদাভাবে অবস্থানের ব্যবস্থা। তাঁবুর ভিতরে কিংবা বাহিরে থেকে যে যার মতো করে দোয়া দরূদ পাঠ, আল্লাহর কাছে নিজের পাপ মোচনের জন্যে ফরিয়াদ, মাতা-পিতা, পরিবার ও সমগ্র মুসলিম উম্মাহ-র জন্যে দোয়া চাওয়া, ইত্যাদির মাধ্যমে সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফা ময়দানে অবস্থান করাই হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা।

তাঁবুর বাহিরে আজকের তাপমাত্রা ৪৮ডিগ্রি, যতদূরে দৃষ্টি যায় আকাশের রং ধূসর। মসজিদ-এ নামিরাহ থেকে হজের খুতবা দেন সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতি। খুতবার পর জোহর ও আসরের নামাজ আদায় করে, সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফা ময়দানে অবস্থানের পর, বাসে করে মুজদালিফায় পৌঁছাই।

অস্ট্রেলিয়া থেকে আগত গ্ৰুপের জন্যে মুজদালিফায় নির্ধারিত স্থানে গিয়ে দেখি - পলিথিন ব্যাগে মোড়ানো বিভিন্ন ডিজাইনের লাল রঙের অনেক নতুন কার্পেট স্তুপ করে রাখা আছে। আমাদের জায়গাটা পাহাড়ের বেশ উপরের দিকে। কার্পেট বিছিয়ে মাগরিব ও এশার নামাজ আদায় করি। নামাজের পরে মুজদালিফার চত্বর থেকে শয়তানের প্রতিকৃতিতে পাথর নিক্ষেপের জন্য প্রয়োজনীয় পাথর সংগ্রহ করে ঘুমিয়ে পড়ার আগে আকাশের দিকে তাকিয়ে একটিও তারার দেখা পাইনি। মুজদালিফায় খোলা আকাশের নিচে কার্পেটের উপর ইহরাম পরিধানে জীবনের সবচেয়ে আরামদায়ক ও স্মরণীয় ঘুম হয়েছে। ফজর নামাজের বেশ কিছু আগে উঠে, ওযু করে যখন নামাজের প্রস্তুতি নিচ্ছি তখন পাহাড়ের উপর থেকে নিচের দিকে তাকিয়ে দেখি - মুজদালিফার বিশাল-বিস্তৃত এলাকা জুড়ে অসংখ্য মানুষ ধীরে-ধীরে মাটি থেকে উঠে দাঁড়িয়ে নড়া-চড়া করছে। হঠাৎ মনে হয়েছে - নিজ চোখে “Resurrection/পুনরুত্থান”-এর মিনিয়েচার ভার্সন দেখছি না তো?

২৮শে জুন (১০ই জ্বিলহজ্জ) - মুজদালিফায় ফজরের নামাজ পড়ে বাসে করে মিনা ক্যাম্পে পৌঁছিয়ে দ্রুত তৈরি হয়ে নিই আমাদের তাঁবু থেকে পায়ে হেঁটে ৩.৪কিমি দূরত্বে জামারাতের উদ্দেশ্যে। বাতাসবিহীন, প্রখর রোদে অসম্ভব ধরণের ভিড় এবং চাপাচাপির মধ্যে তালবিয়া পড়তে পড়তে ধীরে ধীরে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কয়েকটি টানেল পেরিয়ে একসময়ে পৌঁছিয়ে যাই জামারাতে। “আল্লাহু আকবার” ধ্বনিতে - বড় শয়তানের প্রতিকৃতিতে ৭টি পাথর নিক্ষেপ করে আবারও হাঁটা শুরু করি পবিত্র মক্কা নগরী অভিমুখে। ইতিমধ্যে আমাদের পক্ষে ভেড়া কোরবানি দেয়া সম্পন্ন হওয়ার সংবাদ জানতে পারলাম সাথে থাকা আমাদের সিডনির গাইড/মোয়াল্লেমের কাছ থেকে। প্রখর রোদে, ঘর্মাক্ত দেহে কোনোক্রমে যাতে পথ-ভ্রম না হয় সেজন্যে সর্বদা গাইড/মোয়াল্লেমকে অনুসরণ করে পেছনে পেছনে থেকে গরম রাস্তার উপর দিয়ে হেঁটে চলেছি - রাস্তা যেন আর শেষ হয় না। মাঝপথে হঠাৎ দেখি - আমাদের জন্যে একটি বাসের ব্যবস্থা করতে পেরেছে আমাদের গাইড/মোয়াল্লেম - ক্লান্ত দেহে কিছুটা হাফ ছেড়ে বাঁচলাম। দুপুরের দিকে হোটেলে পৌঁছিয়ে, সেলুনে গিয়ে ২০রিয়েল দিয়ে মাথা ন্যাড়া করে, ইহরাম বদলিয়ে গোসল করে স্বাভাবিক পোশাক পরে নিই। জোহরের নামাজ পড়ে এবার হোটেল থেকে রওনা হয়েছি পবিত্র কাবা শরীফ সাতবার তাওয়াফ করার জন্যে। তাওয়াফ শেষে...


পরের অংশ





Share on Facebook               Home Page             Published on: 14-Nov-2023

Coming Events:





Lakemba Blacktown Mascot
Minto Money raised so far





Lakemba Blacktown Mascot
Minto Money raised so far



Blacktown Lakemba Mascot
Minto Money raised so far







Blacktown Lakemba Mascot
Minto Money raised so far