bangla-sydney
bangla-sydney.com
News and views of Bangladeshi community in Australia












সুন্দর ফন্টের জন্য SolaimanLipi ডাউনলোড করে নিন...


লং উইকয়েন্ড
মাসুদ পারভেজ


সপ্তাহে পাঁচদিন - সোমবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত কর্মজীবী মানুষের জন্য লং উইকয়েন্ড এক বাড়তি আনন্দের। আর এই আনন্দকে স্মৃতিময় করে রাখার জন্যে অনেকেরই চেষ্টা থাকে পরিবারের সবাইকে নিয়ে দূরে কোথাও বেড়াতে যাওয়ার, আত্মীয়-স্বজন/বন্ধু-বান্ধবদের সাথে দাওয়াতে আড্ডা দেয়া, বনভোজনের আয়োজন করা, ইত্যাদি। ২০১৫ সালের ক্যালেন্ডারে পাঁচটি লং উইকয়েন্ডের একটি ছিল গত ৮ই জুন সোমবার - রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের জন্মদিন উপলক্ষে। এবারের এই লং উইকয়েন্ড আমাদের জন্য একটু ব্যতিক্রমধর্মী ব্যস্ততায় কেটেছে যা’ শুরু হয়েছে শুক্রবার ৫ই জুন সন্ধ্যার পর থেকে।

সিডনি-নিবাসী বেশ অনেক গণ্যমান্য সুধী জনদের সাথে আমন্ত্রিত হয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় উপস্থিত হয়েছি সিডনির দক্ষিণ-পূর্ব এলাকা রকডেলে - বনফুল রেস্টুরেন্ট এন্ড ফাংশন সেন্টারের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে। রকডেল ছাড়াও স্থানীয় কয়েকজন জনপ্রতিনিধি এমপি-র উপস্থিতি এবং তাদের সংক্ষিপ্ত ভাষণ, সিডনি-নিবাসী জাদুকর এম এ জলিলের মোহনীয় জাদুর ঝলক, অতিথি শিল্পী রিংকু ও সিঁথি-র আগমন, সুস্বাদু রাতের খাবার, ইত্যাদির মাঝে পরিচিত কিংবা নতুন পরিচিতদের সাথে আলাপচারিতায় বনফুলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বেশ মনোমুগ্ধকর হয়েছে। রকডেল এলাকায় অস্ট্রেলিয়ান-বাংলাদেশী স্বত্বাধিকারী - হাটবাজার রেস্টুরেন্ট, রেড-রোজ ফাংশন সেন্টার, বনলতা রেস্টুরেন্ট, ইত্যাদির সাথে প্রতিযোগিতায় বনফুল রেস্টুরেন্ট এন্ড ফাংশন সেন্টারের ব্যবসায়িক সফলতা হবে আশা করি।

Vivid Sydney (২২শে মে-৮ই জুন ২০১৫) - সিডনি শহরের আউটডোরে লাইটিং ফেস্টিভালের বাৎসরিক ইভেন্ট। গত সাত বছর ধরে এই আয়োজন আকারে, ব্যাপ্তিতে, কোয়ালিটিতে, ওভারসীজ-ইন্টারস্টেট দর্শনার্থীদের সংখ্যায়, ইত্যাদিতে জনপ্রিয়তা অর্জনে সফল হয়েছে। গত বছরে Vivid Sydney-তে দর্শনার্থীদের সংখ্যা ১.৪৩মিলিয়ন যা’ প্রায় সাউথ অস্ট্রেলিয়ার জনসংখ্যার সমান। ক্যানবেরা থেকে সহপাঠী বন্ধুর পরিবার Vivid Sydney দেখার জন্য এসেছে শনিবার ৬ই জুন। বন্ধু পরিবারের সিডনি পৌঁছাতে অনাকাঙ্ক্ষিত দেরী হওয়ায় সংক্ষিপ্ত সময়ে লাঞ্চের আমন্ত্রণ দিলাম সিডনির এক প্রসিদ্ধ পিজা শপে। লাঞ্চের সময় জানতে পারলাম আরেক সহপাঠী বন্ধু পরিবার নিয়ে সকাল বেলায় ক্যানবেরা থেকে সিডনির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছে Vivid Sydney দেখার জন্যে। তাদেরকেও সরাসরি পিজা শপে এসে আমাদের সাথে লাঞ্চে যোগ দেয়ার আমন্ত্রণ জানাই মোবাইল ফোনে। যেই কথা সেই কাজ - অল্প সময়ে বন্ধুর পরিবারের সবাই এসে হাজির। তিন পরিবার একই সাথে লাঞ্চ সেরে পড়ন্ত বিকেলে সবাই মিলে বাসায় ফিরে চা/কফি খেয়ে একটু বিশ্রাম নিয়ে, বাচ্চারা আনন্দে প্লে-স্টেশন ফোর খেলে তৈরি হয়ে নেই ট্রেনে চড়ে রকস/অপেরা হাউসের উদ্দেশ্যে। ইতিমধ্যে সিডনি-নিবাসী অন্য সহপাঠী বন্ধুদের দুই পরিবারকে আমন্ত্রণ জানাই রকস/অপেরা হাউসে আসার জন্যে - সময় সংক্ষিপ্ত হওয়ায় এই আয়োজনের প্রচেষ্টা। আধা ঘণ্টার মধ্যে পৌঁছে গেলাম অপেরা হাউসের চত্বরে। দেখা হলো আরও কয়েক বন্ধু এবং তাদের পরিবারের সাথে নির্ধারিত স্পটে। উজ্জ্বল মিটিমিটি তারার মেঘমুক্ত আকাশের পরিবেশে অপেরা হাউস, হারবার ব্রিজ এবং রকসের আশেপাশের ল্যান্ডমার্ক বিল্ডিং বিশেষভাবে মিউজিয়াম অফ কনটেম্পোরারি আর্টস এবং কাস্টমস হাউসের দেয়ালে রঙিন আলোক-সজ্জা, আলোর-মূর্তি, বর্ণিল আলোর ঝলকানি/পরিবর্তন, আলোর ট্রান্সফরমেশন, বিভিন্ন থিমের নাটকীয় আলোকিত দৃশ্য, ইত্যাদি দেখে পুরো এলাকাকে নিখুঁত আর্টের ক্যানভাস মনে হয়েছে। বাসা থেকে তৈরি করে নিয়ে যাওয়া বিভিন্ন খাওয়া-দাওয়ার মাঝে মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখতে দেখতে স্বাভাবিকভাবেই ঘনিষ্ঠ সহপাঠী বন্ধু এবং তাদের পরিবারের সাথে আনন্দের সময় দ্রুত ফুরিয়ে যায়। সংক্ষিপ্ত সময়ে অনেকটা ইনস্ট্যান্ট প্ল্যানিং-এ সহপাঠী বন্ধুদের সাথে পুরানো দিনে ফিরে যাওয়ার আনন্দ এক প্রাইসলেস অনুভূতি। ট্রেনে চড়ে আমার পরিবারসহ বন্ধুদের সবাই এবং তাদের পরিবার আমাদের বাড়িতে ফিরে আসি সুস্বাদু ডিনারের উদ্দেশ্যে - মধ্যরাত্রি পর্যন্ত চলে আমাদের সবার আনন্দের আলাপচারিতা…

বন্ধুর ছেলের জন্মদিনের আর তার হাউসওয়ার্মিং-এর দাওয়াত পরের দিন ৭ই জুন রোববার দুপুরে। সিডনি-নিবাসী অনেক পরিচিত/কিছু অপরিচিত বন্ধু/পরিবারের সাথে ভোজনে-আলাপে সংযোজিত হলো জীবনের মূল্যবান স্মৃতিময় সময়। সন্ধ্যায়… সিডনি-নিবাসী সদ্য প্রয়াত মরহুম ডঃ মোর্তুজা কবির লেমন ভাইয়ের জন্যে দোয়া-খায়ের অনুষ্ঠানে অংশ নেই। বাংলাদেশের জাতীয় অধ্যাপক এবং সবুজ বিপ্লবে আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান কিংবদন্তী নেতা-বিজ্ঞানী ডঃ কাজী বদরুদ্দোজা-র সন্তান - সদালাপী, শান্ত স্বভাবের আন্তরিক হৃদয়ের - লেমন ভাই দীর্ঘ আট বছর মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ করে গত ২রা জুন ইন্তেকাল করেন (ইন্না…রাজেউন)। লেমন ভাইয়ের পরিবার, বন্ধু, অসংখ্য শুভাকাঙ্ক্ষীদের অংশগ্রহণে, ধর্মীয় আলোচনায়, স্মৃতিচারণে, দোয়া আর সমবেদনায় মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি সবার সাথে। রাতে আমার বাসায় পূর্বনির্ধারিত পারিবারিক দাওয়াতে আসা নিমন্ত্রিত অতিথিদের সাথে ডিনারের পরে জন্ম-মৃত্যু-ইহকাল-পরকাল-কর্মফল ইত্যাদির আলোচনাই প্রাধান্য পেয়েছে।

ছোটবেলায় জন্মদিনের জন্যে যেমন অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেছি এখন আর তেমন সেই অনুভূতি নেই। তবুও জন্মদিনের অনুষ্ঠানে যোগদান করতে ভালোই লাগে।…হঠাৎ মনে হলো…“যৌবন ফিরে পাওয়ার” গল্প। ইউনিভার্সিটি গ্রাজুয়েট - সবুজ ২৫ বছরের এক যুবক উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে প্রবাসে পাড়ি জমিয়ে বহু বছর নিজের ভাগ্য পরিবর্তনে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছে। অনেক বছর দেশে ফেরার কিংবা বাবা-মা’র সাথে দেখা করার সময় হয়নি। নিজেকে অত্যন্ত অপরাধী মনে করে সবুজ একদিন ভাবছে - বাবা-মা’র ৫০তম বিবাহ-বার্ষিকীতে এবারে একটা সুন্দর প্রেজেন্ট পাঠাবে। শপিং সেন্টারে ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎ এক ফার্মেসী/কেমিস্ট শপের সামনে টাঙানো সুন্দর করে লেখা রঙিন এক বিজ্ঞাপনের দিকে তার দৃষ্টি এলো - “যৌবন ফিরে পাওয়ার মহৌষধ” পাওয়া যায় এখানে। সবুজের মনে হলো - সেই কত বছর আগে বাবা-মা’কে দেশে রেখে এসেছে, এতদিনে নিশ্চয়ই বয়সের ভারে তাদের যৌবনের শক্তি-সৌন্দর্য আর নেই,…তাই এই “মহৌষধ” হবে তাদের জন্যে এপপ্রোপ্রিয়েট প্রেজেন্ট। বাবা-মা’র এবছরের আসন্ন বিবাহ-বার্ষিকী উপলক্ষে এক প্যাকেট ট্যাবলেট কিনে তা’ কুরিয়ার সার্ভিসে সবুজ পাঠালো বাবা-মা’র কাছে। সাথে গোল্ডেন জুবিলি এনিভারসারি কার্ডে অভিনন্দনের পাশাপাশি আগামী বছর দেশে ফিরবে বলে অগ্রিম সংবাদ পাঠালো। প্রবাস জীবনের ব্যস্ততার মাঝে কয়েক দিনের ছুটিতে দেশে ফেরার সময় হলো সবুজের। বসন্তের সোনালী এক দুপুরে দেশে ফিরে সবুজ নিজের বাসার সামনে এসে বাসার ভেতরে উঁকি দিয়ে দেখতে পেল - এক যুবতী কোলে বাচ্চা নিয়ে সুর করে গান গেয়ে বাচ্চাকে ঘুম পাড়াচ্ছে। সবুজ কৌতূহলী দৃষ্টি আর আগ্রহে সবিনয়ে যুবতীকে নিজের পরিচয় দিয়ে জানতে চেষ্টা করে সে ঠিক বাসাতে এসেছে কিনা? যুবতী প্রত্যুত্তরে বলেন - হ্যা সবুজ, তুমি ঠিক বাসাতেই এসেছো…তোমার পাঠানো ট্যাবলেট আমি একটা আর তোমার বাবা দুইটা খাওয়াতেই আজ আমাদের এই অবস্থা।…হতবাক অনুভূতি আর দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে সবুজ।

সঠিক জন্ম তারিখ কিংবা একাধিক জন্মদিন পালন সংক্রান্ত মুখরোচক আলোচনা আমরা অনেকেই এড়িয়ে যাই সঙ্গত কারণে। ইংল্যান্ডের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের জন্মদিন ২১শে এপ্রিল। ইংল্যান্ডসহ অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নিউজিল্যান্ড, পাপুয়া নিউ গিনি, ইত্যাদি দেশে বছরের বিভিন্ন মাসের বিভিন্ন দিনে রানীর জন্ম দিন পালিত হলেও কখনো কাউকে এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে শুনিনি। ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া ছাড়া সমগ্র অস্ট্রেলিয়াতে লং উইকয়েন্ডের সরকারী ছুটির দিন - সোমবার ৮ই জুন ২০১৫ - রানীর জন্যে রইল জন্মদিনের শুভেচ্ছা। রানীর জন্মদিন উপলক্ষে পাওয়া এবারের একটি লং উইকয়েন্ড অনেক স্মৃতিময় অভিজ্ঞতায় কেটেছে…রানী দীর্ঘজীবী হোক।




মাসুদ পারভেজ, সিডনি - mmparvez@yahoo.com






Share on Facebook               Home Page             Published on: 21-Jun-2015

Coming Events:
বৃষ্টির সম্ভাবনার কারণে মেলার তারিখ ১ দিন পিছিয়ে ২১ এপ্রিল ২০২৪ (রবিবার) করা হয়েছে......




A day full of activities, games and fun.







Lakemba Blacktown Mascot
Minto Money raised so far





Lakemba Blacktown Mascot
Minto Money raised so far



Blacktown Lakemba Mascot
Minto Money raised so far







Blacktown Lakemba Mascot
Minto Money raised so far