bangla-sydney
bangla-sydney.com
News and views of Bangladeshi community in Australia













এবারের ঢাকা সফর ২০২৫
মাসুদ পারভেজ


মাত্র দুই দিনের প্রস্তুতিতে পারিবারিক জরুরি প্রয়োজনে আমার সহধর্মিণী আর আমার সিডনি থেকে এবারের ঢাকা সফর ২০২৫। ঢাকায় এর আগে গিয়েছি ফেব্রুয়ারি ২০২৪। নির্ধারিত সময়ের প্রায় ৪০মিনিট আগে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আমাদের বিমান অবতরণ করতে দেখে সকল যাত্রীদের সাথে আমরাও বেশ অভিভূত হলাম। কিছুটা চিন্তিত হলাম এই ভেবে - বিমানবন্দর থেকে আমাদেরকে নিতে আসবে যে আত্মীয় তিনি হয়তো জানেন না নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই আমাদের বিমান অবতরণের সংবাদ, তাই হয়ত তিনি এখনও বাসা থেকে রওয়না হয়নি বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে। বিমান থেকে নেমে আমাদের ঢাকা পৌঁছানোর সংবাদ WhatsApp-এ আত্মীয়কে জানিয়ে ইমিগ্রেশন কাউন্টারের দিকে এগিয়ে যাই সহযাত্রীদের সাথে। ইমিগ্রেশন কাউন্টারের কাছে এসে দেখি - এক বিশাল জনসমুদ্র। এর আগে এই বিমানবন্দরে অনেকবার এসেছি কিন্তু এরকম অস্বাভাবিক ভিড় কখনই দেখিনি। কিছুক্ষণ পরে দায়িত্বশীল একজনকে জিজ্ঞেস করে জানলাম - অনেকগুলো ফ্লাইট প্রায় একই সময়ে বিমানবন্দরে অবতরণের কারণে এত ভিড়। আমরা লাইনে দাঁড়িয়ে আছি প্রবাসী / বিদেশী পাসপোর্ট-ধারীদের জন্য নির্ধারিত ইমিগ্রেশন কাউন্টারে। পবিত্র ওমরাহ পালন শেষে ফিরে আসা অনেক যাত্রী দেখলাম। সিডনি থেকে ঢাকার এই দীর্ঘ যাত্রায় ক্লান্তির মধ্যে খুব ধীর গতিতে এগিয়ে যাওয়া আমাদের নির্ধারিত লাইনে অপেক্ষার মাঝে - দেশ, জাতি, আবহাওয়া, সরকার, রাজনীতি ইত্যাদির আলোচনা কানে এসেছে। অবশেষে ইমিগ্রেশনের পর্ব শেষে, চেক-ইন ব্যাগেজ সংগ্রহ করতে গিয়ে একটিও ট্রলি খুঁজে পেলাম না। দায়িত্বরত একজন বয়স্ক নিরাপত্তা-কর্মী দেখিয়ে দিলেন ট্রলি-বে - যেখানে গিয়ে লাইন দিতে হবে ট্রলি নেয়ার জন্য। একই সাথে তিনি বলেন – ‘স্যার, আজ মনে হয় বিদেশ থেকে সবাই বাংলাদেশে ফিরে এসেছে, তাই আমরা সামাল দিতে পারছি না’। ভাবছিলাম - আজ অনেকগুলো ফ্লাইট প্রায় একই সময়ে বিমানবন্দরে অবতরণের ফলে অনেক যাত্রী একসাথে এসে যাওয়ার ইমপ্যাক্ট পড়েছে সময়মত ট্রলি প্রাপ্যতার ওপরে। এরকম অভিজ্ঞতা এই প্রথম। তবে একটু অপেক্ষা করার পরে এক ঝাঁক ট্রলি নিয়ে হাজির হতে দেখলাম বিমানবন্দরের কর্মীদের। কাস্টমস কর্মকর্তাদের আন্তরিকতা আর সাহায্যের জন্যে এগিয়ে আসা বেবিচক (বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ)-এর ভেস্ট পরা অনেক লোকের বিনয়ী ব্যবহারে বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা সেরে গ্রিন চ্যানেল দিয়ে দ্রুত বের হয়ে, গ্রামীণ ফোনের কাউন্টারে গিয়ে ফ্লেক্সি লোড করে বিমানবন্দরের বাইরে এলাম। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, সুপ্রশস্ত, গোছানো-পরিপাটি, মশা-বিহীন আমাদের বিমানবন্দর দেখে অভিভূত হলাম। বিমানবন্দরে ইতিপূর্বে অহেতুক সাহায্যের নামে ট্রলি নিয়ে এগিয়ে আসা অচেনা লোকদের অনুপস্থিতিতে কিছুটা স্বস্তি পেলাম। হঠাৎ মনে হয়েছে - গেটের ওপারে আব্বা আজ আমাদেরকে নেয়ার জন্যে অপেক্ষায় নেই। মনটা খুব খারাপ হয়ে যায় বাস্তবতাকে মেনে নিতে। রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা কম থাকায় আর ফ্লাই-ওভারে ৮০টাকা টোল দিয়ে অল্প সময়ে আত্মীয়ের গাড়িতে করে পৌঁছে গেলাম দুই কোটি মানুষের বসবাসকারী রাজধানী ঢাকা শহরে আমাদের থাকার জায়গায়।

ঢাকায় পৌঁছিয়ে রাতে শুনতে পেলাম আমাদের স্কুলের অংকের শিক্ষক - শ্রদ্ধেয় মফিজ স্যার গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আমার সহধর্মিণীকে বললাম - আগামীকাল সকালে মফিজ স্যারকে হাসপাতালে দেখে আসবো। ভোরে খবর পেলাম মফিজ স্যার (৮৭) ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাহে রাজেউন), বাদ জোহর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। মাথা ঝিম-ঝিম করে ওঠে, চোখ ঝাপসা হয়ে আসে। আমার সহধর্মিণী বলে – ‘নিয়তির কি সুন্দর সেট-আপ - তোমার প্রিয় মফিজ স্যারের শেষ বিদায়ের দিনে আজ তুমি সুদূর সিডনি থেকে ঢাকায় - তুমি অত্যন্ত ভাগ্যবান’। সব কাজের শিডিউল পরিবর্তন করে জানাজায় অংশ নিলাম। ঢাকায় বসবাসরত কয়েকজন স্কুলের সহপাঠীর সাথে অপ্রত্যাশিত দেখা হয়েছে জানাজায়। প্রাণহীন মফিজ স্যারের দেহ যখন গাড়িতে করে দাফনের উদ্দেশে এগিয়ে যাচ্ছে - আমি তখন ভাবছি - বিদেশ থেকে যতবার ঢাকায় এসেছি প্রায় প্রতিবার মানুষ গড়ার কারিগর পিতৃতুল্য আমার প্রিয় মফিজ স্যারের সাথে দেখা করেছি। গতবারে মফিজ স্যারের বাসায় গিয়ে দেখা করে, আমরা দুজনে পাশাপাশি বসে একটা ছবি তুলে স্যারকে সেই ছবি দেখিয়ে বলেছিলাম – ‘দেখেন স্যার, আমরা দুইজনই বুড়ো হয়ে গিয়েছি’। আমার কথা শুনে স্যারের মুখ ভরা হাসি আর ধরে না। মনে মনে দোয়া করি – ‘আল্লাহ আমাদের মফিজ স্যারের বিদেহী আত্মার শান্তি দিও এবং ওনাকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করো’।

ঢাকা শহরে আমার প্রিয় বাহন রিকশা। আমরা ছোটবেলায় পেট্রোল চালিত যে বাহনকে ‘বেবি ট্যাক্সি’ বলতাম সেটি অনেকদিন আগে গ্যাস চালিত হয়ে সবুজ রঙের বডি-র CNG- যা ‘খাঁচার ভিতর অচিন পাখির’ বাহন মনে হয় আমার। আর তাই রিক্সায় যেতে না পারার পথে উবার কিংবা রেন্ট-এ-কারের সাহায্য নেই সবসময়। যদিও বেশ কয়েক বছর ধরে ঢাকা শহরের বিভিন্ন রাস্তায় সঙ্গত কারণে রিক্সা চলাচল নিষিদ্ধ, তবুও প্রতিবারেই ঢাকায় এলে আমার গন্তব্যে রিক্সায় যতদূর যাওয়া যায় তত দূর আমি রিক্সার যাত্রী হয়েছি। প্রয়োজনে রাস্তার জ্যামে আটকানো অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্যে রিকশাওয়ালাকে ভাড়া দিয়ে, সাবধানে হেঁটে রাস্তার জ্যাম পার হয়ে, নতুন আরেক রিক্সা ভাড়া করে গন্তব্যে পৌঁছিয়েছি। এবারে ১৮মাস পরে ঢাকায় এসে রিক্সার এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন লক্ষ্য করলাম। ঢাকায় আগে শুধু প্যাডেল চালিত রিক্সা চলাচল করতে দেখা যেত। আর এখন - ব্যাটারি চালিত রিক্সার সংখ্যা বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়ে নগরীর ট্রাফিক ব্যবস্থায় এক জটিল আকার ধারণ করেছে। ঢাকার অনেক মূল সড়কও এখন তাদের দখলে। শুনলাম রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই বর্তমানে ব্যাটারি চালিত রিক্সায় অধিকাংশের ব্রেক সঠিক ভাবে কাজ করে না।


ঢাকায় এখন ব্যাটারি চালিত রিক্সার সংখ্যা কত, তার পরিসংখ্যান নেই সরকারি কিংবা বেসরকারি কোনো সংস্থার কাছে। সাধারণ মানুষ অল্প দূরত্বের রাস্তায় চলাচলে সবচেয়ে বেশি এই রিক্সা ব্যবহার করেন। অল্প সময় ও টাকায় বেশি পথ চলার জন্য রাজধানী-বাসী প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনাপ্রবণ এবং অনিরাপদ এই বাহনের ওপর নির্ভরশীল হয়ে উঠছে। সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি সড়কে ব্যাটারি চালিত রিক্সার বেপরোয়া চলাচলের কারণে প্রতিনিয়ত সড়কে বাড়ছে নানা ধরনের দুর্ঘটনা ও ভোগান্তি।

সকাল দশটার দিকে কাওরান বাজার বাণিজ্যিক এলাকাতে সরকারি এক অফিসে ব্যক্তিগত কাজে যাওয়ার প্রয়োজনে গিয়ে শুনলাম এই অফিস মোহাম্মদপুরে স্থানান্তরিত হয়েছে প্রায় দুই বছর আগে। কি আর করা - ঢাকার এই ব্যস্ত ও প্রাণবন্ত এলাকা, যা মূলত: ফল, সবজি, মাছ, মাংসসহ বিভিন্ন পণ্য বেচাকেনার পাইকারি এবং খুচরা বাজার হিসেবে পরিচিত একটু ঘুরে দেখার সুযোগ পেলাম। এবারে ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় দেখলাম - আগস্ট মাসেও দেশে উৎপাদিত বিভিন্ন জাতের (বারি-৪, কটি-মন, ফজলি ইত্যাদি)প্রচুর পাকা আম পাওয়া যাচ্ছে, দামও বেশ সহনীয়। কাওরান বাজারে আম বিক্রেতারা হাঁকডাক না দিয়ে মাইকে রেকর্ডেড বিজ্ঞাপন (দুইশও টাকার আম একশো বিশ টাকা) বাজিয়ে ক্রেতাদের মনোযোগ আকর্ষণ করছে।


সচরাচর যাওয়া হয়না - কাওরান বাজার অল্প সময়ে ঘুরে দেখতে ভালই লেগেছে সকালের হালকা রোদের আবহাওয়ায়। এবার বিপত্তি বেঁধেছে কাওরান বাজার থেকে কিভাবে অত্যন্ত ব্যস্ত এয়ারপোর্ট রোড পার হয়ে মোহাম্মদপুরে যাওয়ার রিক্সা পাওয়া যায়? লক্ষ্য করে দেখলাম - আশেপাশে মানুষের তেমন হাঁটাচলা নেই এই জায়গাতে। এমন সময়ে এক CNG আমার সামনে এসে উপস্থিত। এই ব্যস্ত এয়ারপোর্ট রোড পার হয়ে গন্তব্যে যাওয়ার জন্যে আমার পছন্দের বাহন না হলেও CNG-র এই অপশন এই সময়ের জন্য খুব একটা খারাপ মনে হয়নি। চালককে মোহাম্মদপুরে স্থানান্তরিত হওয়া সরকারি অফিসের নাম বলাতে তিনি সেই অফিস চেনেন এবং যেতে রাজি আছেন। এমন সময় হঠাৎ একজন আমার খুব কাছে এসে বলেন – ‘আমি আপনাকে হেল্প করতে পারি’! ভাবছিলাম - CNG-র আগমন এবং আগন্তুকের হেল্প অফারের মাঝে কোনো যোগসূত্র আছে কি না? এই যাত্রায় আজ আমার কপালে না জানি কি আছে? আগন্তুককে উত্তর দেয়ার আগেই তিনি বলেন – ‘অদূরে ঐ যে ফুটওভার ব্রীজ রয়েছে তা দিয়ে এই ব্যস্ত এয়ারপোর্ট রোড পার হয়ে ওপারে গিয়ে একটা রিক্সা নিয়ে মোহাম্মদপুরে যেতে পারেন’। আর আপনি যে অফিসে যাবেন, আমি কয়েকদিন আগে সেখানে গিয়েছি এবং এখান থেকে CNG-তে না গিয়ে রিক্সায় যাওয়াই উত্তম’ - এই বলে তিনি নিজ গন্তব্যে দ্রুত হেঁটে চলে গেলেন। আগন্তুক মানুষটিকে নিতান্তই পরোপকারী ভদ্রলোক মনে হলেও - আমি যে ওনাকে একটা প্রপার ধন্যবাদ দেব তার সুযোগ পেলাম না। এদিকে তাকিয়ে দেখি - আমার জন্য অপেক্ষা না করে CNG-ও তার গন্তব্যে ছুটে যাচ্ছে যাত্রীর সন্ধানে।

ঢাকায় পৌঁছিয়ে প্রথম শুক্রবারে ভোর সাতটায় আজিমপুর কবরস্থানে গিয়েছি। অনেক অল্প বয়সে আমার আম্মা এবং আব্বা এখানে অসংখ্য সতীর্থদের সাথে চির নিদ্রায় শায়িত। আম্মার ইন্তেকালের পরে ১৭বছর একাকী নিঃসঙ্গ জীবনের অবসানে প্রায় ১৪বছর আগে আব্বা চির নিদ্রায় শায়িত হয়েছেন আম্মার কবর থেকে মাত্র কয়েকটি কবর ব্যবধানে। শিশির ভেজা, নরম তুলতুলে, ঘন সবুজ ঘাসের ওপর হাত রাখতেই মনে হয়েছে ছায়া-ঘেরা, হালকা-নির্মল বাতাস থেকে - আম্মা এবং আব্বা বলছেন - এতদিন পরে এলে? তুমি ভাল আছো? বাসার সবাই ভাল আছে? কবর জিয়ারতের মাঝে আজিমপুর কবরস্থানে চির নিদ্রায় শায়িত সবার আত্মার মাগফেরাত কামনা করে নীরবে বলি – ‘রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বা ইয়ানী সাগীরা’। এর আগে যতবার বিদেশ থেকে ঢাকায় এসেছি সে সময়ে বহুবার আম্মার এবং আব্বার কবর জিয়ারত করেছি। একইসাথে আম্মার এবং আব্বার কবর জিয়ারতের সুযোগ হওয়ায় অনেক দুঃখের মাঝেও আমার এবারের ঢাকা সফরের মনের শূন্যতা অনেকটা পূরণ হয়েছে।

আজিমপুর থেকে ফেরার পথে নিউমার্কেটে মাছের বাজারে আসা জ্যান্ত এবং তাজা কই, মাগুর, শোল, রুই, কাতলা, চিংড়ি, আইড়, পাঙ্গাশ, তেলাপিয়া, পাবদা, চিতল, ইলিশ ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের মাছের বিশাল সম্ভার দেখে মনে হয়েছে - FAO’র প্রতিবেদনের কথা – ‘স্টেট অফ ওয়ার্ল্ড ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকুয়া-কালচার - ২০২৪ অনুযায়ী - বাংলাদেশ মিঠাপানির মাছ আহরণে বিশ্বে তৃতীয় থেকে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে। নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের মৎস্য খাতের একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন। ‘মাছে-ভাতে বাঙালী’ প্রবাদ এখন বাস্তব!

প্রতিবারের ঢাকা সফরে নীলক্ষেতে এবং নিউমার্কেটে বইয়ের দোকানে গিয়ে নতুন বই দেখা এবং কিছু বই কেনার অভ্যাস আমার। এবারেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। নীলক্ষেতের বইয়ের দোকানে ৯৮৪ পাতার ‘আজকের বিশ্ব - জুলাই ২০২৫ সংস্করণ’ বই দেখে মনে হয়েছে এই বইটি সবার বাসায় সংগ্রহে রাখা প্রয়োজন। আর তাই - ৩কপি কিনে ২কপি ঢাকার দুই আত্মীয়কে প্রেজেন্ট করে, ১কপি সাথে করে সিডনিতে নিয়ে এসেছি। নিউমার্কেটে এক পোষা-প্রাণীর দোকানের (Pet Shop) জুতসই নাম – ‘শখের তোলা ৮০ টাকা’ দেখে মনে হয়েছে – দোকান-মালিক নিশ্চয়ই একজন সৌখিন-সৃজনশীল মানুষ, তবে দোকানের সাইনবোর্ড বাংলায় লেখা থাকলে আমার মত পথিকের কাছে আরও হৃদয়স্পর্শী হতো!

আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী এবং বন্ধুদের সাথে দেখা করা প্রতিবারে আমার ঢাকা সফরে এজেন্ডাভুক্ত থাকে। বিশেষভাবে বয়স্ক এবং প্রয়াত আম্মা-আব্বার সাথে ঘনিষ্ঠ ছিলেন এমন আত্মীয়-স্বজনদের সাথে শত ব্যস্ততার মাঝে অল্প সময়ের জন্য হলেও দেখা করা আমার দায়িত্বের অংশ হিসেবে মনে করি সবসময়ে। তিন দশকের ও বেশি সময়ের এই দীর্ঘ প্রবাস জীবনে আমি আমার আত্মীয়-স্বজন,প্রতিবেশী এবং বন্ধুদের

খোঁজ খবর রাখি - আর তাই আমার ঢাকা সফরে সবার সাথে দেখা করার জন্য অপেক্ষা করি। প্রতিবারের মতোই আত্মীয়-স্বজন এবং বন্ধুদের সাথে দেখা করা কিংবা ব্যক্তিগত প্রয়োজনে এবারে গিয়েছি নতুন ঢাকার - বনানী, গুলশান, বারিধারা, বসুন্ধরা, হাতিরঝিল, বাড্ডা, মহাখালী, মিরপুর, মোহাম্মদপুর, লালমাটিয়া, ধানমন্ডি; নতুন ও পুরাতন ঢাকার সন্ধিক্ষণে - মগবাজার, মালিবাগ, সেগুনবাগিচা, পরিবাগ, পল্টন, মতিঝিল; পুরাতন ঢাকার - সদরঘাট, বংশাল, আলুবাজার, কলতাবাজার, ধোলাইখাল, ওয়ারী, আরমানিটোলা, ইত্যাদি। সব জায়গায় মোটামুটি একই চিত্র - গায়ে গায়ে লাগানো গগনচুম্বী এপার্টমেন্টের সারি, নতুন-নতুন স্কুল/কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয়/কোচিং সেন্টার, হাসপাতাল/মেডিকেল সেন্টার, ডিপার্টমেন্ট স্টোর, মুদি দোকান যেখানে সহজেই বিকাশ কিংবা ফ্লেক্সি লোড করা যায়, দোরগোড়ায় ভ্যান গাড়িতে করে সবজি/মাছ/মুরগি বিক্রেতাদের অবাধ বিচরণ, যত্রতত্র ময়লার স্তূপ, টেলিফোন/ল্যাম্প পোস্টে ল্যান্ডফোন/ডিশ লাইন সংযোগের কুণ্ডলী/জট পাকানো কালো রঙের তারের ছড়াছড়ি, ইত্যাদি। ঢাকার ঐতিহ্যবাহী জয়কালী মন্দিরের চূড়ার একাংশ এখন দেখা যায় রাস্তা থেকে – বাকি সবকিছু ঢেকে গিয়েছে চারিদিকের দোকান-পাটে আর ফ্লাইওভার নির্মাণে। সম্ভ্রান্ত এলাকার গুলশান লেকে ময়লা, পচা গন্ধে, সবুজ রঙের পানিতে কাঠের তৈরি নৌকাতে যাত্রী পারাপার হতে দেখে মনে হয়েছে - প্রায় ত্রিশ বছর আগে আমার দেখা পুরাতন ঢাকার গেণ্ডারিয়ার কাঠের পুলের নীচের পানির কথা। ঢাকার ফুটপাথ অবৈধ দোকানিদের দখলে কিংবা ময়লা আবর্জনায় ভর্তি, ফুট ওভারব্রিজগুলি ভিক্ষুক আর হকারদের নিয়ন্ত্রণে, মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অবাধে হেঁটে রাস্তা পার হচ্ছে - এই চিত্র নতুন কিছু নয়। একইসাথে মনে হয়েছে - দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের কবিতার লাইন –‘…এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি…’।

ঢাকা শহরে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক ছাড়াও ব্যাঙের ছাতার অনুরূপে গজানো দেশী-বিদেশী ব্যাঙ্কের সংখ্যা নিশ্চয়ই বাংলাদেশ ব্যাঙ্ক কিংবা অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে আছে। নতুন-নুতন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আর জনসংখ্যার বৃদ্ধির কারণে এইসব ব্যাঙ্কের শাখা/উপশাখা/ATM আজ সর্বত্র ছড়িয়ে মানুষের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি শিক্ষিত সমাজের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। পত্রিকায় পড়লাম – কিছু ব্যাংকের নীতিহীন কার্যক্রম, অব্যবস্থাপনা, মূলধন ও তারল্য সংকট এবং অনিয়মের কারণে বাংলাদেশে ব্যাংকিং খাতে একটি বড় অংশই দূর্বল অবস্থানে আছে। বাংলাদেশ ব্যাংক চিহ্নিত ব্যাংকগুলোকে সহায়তা দিচ্ছে এবং কয়েকটি ব্যাংককে একীভূত করে শক্তিশালী করা কিংবা নতুন বিনিয়োগকারীর কাছে হস্তান্তরের পরিকল্পনাও করছে।
প্রথম দিনে মশা-বিহীন বিমানবন্দর দেখে খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু এর পরে ঢাকা শহরে যেখানেই গিয়েছি সর্বত্র মশার বিড়ম্বনা। মাঝে মধ্যে এলাকা ভিত্তিক ফগার মেশিন দিয়ে মশা মারা কিংবা তাড়ানোর জন্য ধোঁয়া কিংবা ইনসেক্টিসাইড দিতে দেখেছি। পত্রিকায় পড়লাম - ঢাকায় মশা নিয়ন্ত্রণে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে দুই সিটি করপোরেশনকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ঢাকায় যতদিন ছিলাম প্রায় প্রতিদিনই দেখেছি - দিনের বেলায় কিংবা রাতে অল্প-অল্প বৃষ্টি হচ্ছে। এর ফলে ভ্যাপসা গরমে জীবন অতিষ্ঠ ওঠে। গরম-আর্দ্র আবহাওয়ায় এডিস মশা বংশবৃদ্ধি করে এবং বাংলাদেশে এই সময়ে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া রোগের প্রকোপ বাড়িয়ে দেয়। আর তাই বেশ ভীতিকর অবস্থার মাঝে মশার কামড় থেকে পরিত্রান পাওয়ার জন্য সার্বক্ষণিক সাবধানতা অবলম্বনের চেষ্টা করেছি। প্রয়োজনের তাগিদে কয়েকদিন বেশ সকাল বেলা বাসা থেকে বের হয়েছি। এমন এক ভ্যাপসা গরমের সকালে - ফুট ওভারব্রিজে মশারি টাঙিয়ে কিংবা মশারির অভাবে ভাসমান মানুষদের রাত্রি-যাপনের দৃশ্য দেখে বেশ কষ্ট পেয়েছি।


ফুট ওভারব্রিজ থেকে নেমে নগরীর অভিজাত এলাকার মূল সড়ক দিয়ে রিক্সায় যাওয়ার সময় বিলাসবহুল TOYOTA PRADO গাড়ির চালককে সম্পূর্ণ খালি গায়ে গাড়ি চালিয়ে যেতে দেখে বিস্মিত হয়েছি! আগামী আরও অনেকদিন ভ্যাপসা গরম-আর্দ্র আবহাওয়ার পূর্বাভাস এসেছে, আর তাই হয়ত খালি গায়ে গাড়ি চালানোর দৃশ্য অনেকের চোখে পড়তেও পারে!


জনবহুল ঢাকা মহানগরীর ক্রমবর্ধমান যানবাহন সমস্যা ও পথের দুঃসহ যানজট কমিয়ে আনার লক্ষ্যে ২০০৫সালে বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় ঢাকায় স্ট্র্যাটেজিক ট্রান্সপোর্ট প্ল্যান তৈরি করে মেট্রোরেল নির্মাণের প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু হলেও পরবর্তীতে ২০১৩সালে ঢাকায় মেট্রোরেল স্থাপনের চূড়ান্ত কাজ শুরু হয়। আন্তর্জাতিক মানের সব ধরনের সুযোগ সুবিধা থাকা মেট্রোরেল জনসাধারণের যাতায়াতের জন্য উন্মুক্ত হয় ডিসেম্বর ২০২২।

আগস্ট ২০২৩ আমাদের ঢাকা সফরে মেট্রোরেলে চড়ার সৌভাগ্য হয়েছে। প্রায় ২বছর পরে এবারের ঢাকা সফরেও মেট্রোরেলে চড়ার সুযোগ পেয়েছি। প্রতিবারই সকল যাত্রীদের সু-শৃঙ্খল হয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকেট কেটে প্ল্যাটফর্ম থেকে ধীরে ধীরে ট্রেনে উঠতে দেখেছি। ট্রেনে ওঠার জন্য নেই হুড়োহুড়ি কিংবা অন্যকে ধাক্কা দিয়ে আগে যাওয়ার প্রতিযোগিতা। যানজট আমাদের জীবনের ও অর্থনীতির গতি অনেকটাই আটকে রেখেছে। রাস্তা যত সচল হবে, জীবন ও অর্থনীতি তত গতিশীল হবে। আশাকরি আগামীতে মেট্রোরেলের নেটওয়ার্ক আরও সম্প্রসারিত হয়ে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার প্রতিদিনের যাতায়াতের সময় উল্লেখযোগ্য ভাবে হ্রাস পাওয়ার পাশাপাশি একসঙ্গে অনেক যাত্রী পরিবহন করে বর্তমানে রাস্তায় চলমান অন্য পরিবহন মাধ্যমগুলোর ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে পরিবেশ দূষণরোধে সাহায্য করবে।

এবারের ঢাকা সফরের শেষ দিকে এসে - বাংলাদেশে থাকাকালীন জীবনে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশুনার সময়ে বিভিন্ন স্তরের সহপাঠী-বন্ধুদের এক আড্ডার আসরে যোগ দেয়ার সুযোগ হয়েছে। বিভিন্ন আলোচনার সময়ে - সংগৃহীত ও কিছু পরিবর্তিত ভার্সনে লেখা - 'আমরাই শেষ জেনারেশন' শেয়ার করে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছি –

আমরাই শেষ জেনারেশন,
যারা গরুর গাড়ি থেকে সুপারসনিক কনকর্ড জেট দেখেছি,
পোস্টকার্ড, খাম, ইনল্যান্ড লেটার, এয়ার মেইল লেটার থেকে শুরু করে ফ্যাক্স, জিমেইল, ফেসবুক, হোয়াটস্যাপ, ইন্সট্রাগ্রাম দেখেছি।

আমরাই শেষ জেনারেশন,
যারা টেলিগ্রাম এসেছে শুনলেই পরিবারের সদস্য সহ অনেক প্রতিবেশীদের মুখ শুকিয়ে যেতে দেখেছি।

আমরাই শেষ জেনারেশন,
যারা হাফ প্যান্ট পরে ছোটবেলায় বন্ধুদের সাথে -
ইচ্ছে করে বৃষ্টিতে ভিজে স্কুল থেকে বাড়ি ফিরেছি,
কাদা মাখা শরীরে পুকুরে ঝাঁপিয়ে পড়েছি,
কানামাছি, ডাঙ্গুলি, দাড়িয়াবাঁধা, গোল্লাছুট, মার্বেল খেলেছি,
বনের ভেতরে ঢুকে মৌমাছির চাক ভেঙে মৌমাছির কামড় খেয়েছি,
পাখির বাসা থেকে বাচ্চা ধরেছি,
ভাতের আঠা দিয়ে কাগজের ঘুড়ি বানিয়ে আকাশে উড়িয়েছি,
খড়-বিচালি ও জাম্বুরা দিয়ে ফুটবল বানিয়ে খেলেছি,
ঝিনুক দিয়ে ছুরি বানিয়ে গরমের দিনে কাঁচা আম কেটে খেয়েছি,
ম্যাচের বাক্স দিয়ে টেলিফোন বানিয়ে কথা বলেছি,
সাইকেলের টায়ার, বেয়ারিং এবং সুপারির খোলা দিয়ে গাড়ি বানিয়ে চালিয়েছি,
গুলতি নিয়ে নিরিখ প্র্যাকটিস করে বেড়িয়েছি।

আমরাই শেষ জেনারেশন,
যারা হারিকেন আর কুপি বাতির আলোতে পড়াশুনা করেছি,
বেত থেকে শুরু করে হাত পাখার হাতলের মার খেয়েছি,
খাটের নিচে বা কাঁথার মধ্যে লুকিয়ে দস্যু বনহুর, কুয়াশা, মাসুদ রানা সিরিজ পড়েছি,
ফ্যান, এসি, হিটার, ফ্রিজ, গ্যাস, মাইক্রোওয়েভ ওভেনের অস্থাবর সুখ ছাড়াই ছোটবেলা কাটিয়েছি।

আমরাই শেষ জেনারেশন,
যারা নতুন বই-খাতার হাতে পেয়ে পাতা উল্টানোর আগে গন্ধ শুঁকেছি,
ঈগল, ইকোনো, রেডলিফ বলপেন থেকে শুরু করে বমি করা বিদেশী কালি - অস্ট্রিচ আর দেশীয় কালি - আইডিয়াল, সুলেখা দিয়ে ‘মোঘল সম্রাট বাবরের যুদ্ধবৃত্তান্ত’ লিখেছি,
বড়দের পকেটে গোল্ডেন নিবের উইংসাং, শেপার্ড, পাইলট পেন দেখে ঈর্স্বানিত হয়েছি।

আমরাই শেষ জেনারেশন,
যারা জ্যোৎস্না রাতে ছাদে ট্রানজিস্টারে বিবিসি আর ভয়েস অফ আমেরিকা’র খবর শোনার, অনুরোধের আসর গানের ডালির শেষ সাক্ষী।

আমরাই শেষ জেনারেশন,
যারা টেলিভিশনে আলিফ লায়লা, ম্যাকগাইভার, টিপু সুলতান, মিস্টার বিন, টম এন্ড জেরি, রবিনহুড, সিন্দবাদ দেখার জন্য ছাদে উঠে অ্যান্টেনা ৩৬০° ঘুরিয়ে সিগন্যাল ধরার চেষ্টা করেছি। আমাদের সময়ে বাঁশের আগায় অ্যান্টেনা, আর টেলিভিশনের স্ক্রিনে পার্মানেন্ট ঝিরঝিরে সাদা-কালো ছবি। গণ্ডগোল যা হয়েছে তা অনিয়ম করে লোডশেডিং। তাতেও সমস্যা হয়নি কিংবা অভিযোগ করিনি - কারণ টেলিভিশন দেখতে পাওয়াটাই আমাদের জীবনে অনেক বড় প্রাপ্তি।

আমরাই শেষ জেনারেশন,
যারা বিনা টিফিনে স্কুলে গিয়েছি,
স্কুলে টিচারের হাতে বেতের বাড়ি খেয়ে, বাসায় এসে নালিশ করাতে সেকেন্ড রাউন্ড ফ্রি-স্টাইলে উত্তম-মধ্যম সহ্য করেছি,
রাস্তাঘাটে স্কুলের স্যারকে দেখামাত্র সেখানেই সাইকেল থেকে নেমে নির্দ্বিধায় সালাম করেছি।

আমরাই শেষ জেনারেশন,
যারা প্রতিদিন সূর্য ডোবার আগেই বাড়িতে ফিরে এসেছি,
পাটি বিছিয়ে কিংবা পিঁড়িতে বসে পরিবারের সবার সাথে ভাত খেয়েছি,
ঈদের সময় নুতন জুতা-জামার জন্য বাবার মুখের দিকে চেয়ে থেকেছি,
বড়দেরকে সবসময় সন্মান করেছি এবং এখনও সন্মান করে যাচ্ছি।

আমরাই শেষ জেনারেশন,
যাদের হাতে মোবাইল ফোন আর ইন্টারনেট এসেছে অনেক দেরিতে,
যারা এখনও ভার্চুয়াল নয় - প্রকৃত বন্ধু খূঁজি, কারণ জীবনের চলার স্রোতে আমরা হারিয়ে ফেলেছি জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়।

দেখতে দেখতে সিডনিতে ফেরার সময় হয়েছে। ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ‘প্রবাসী লাউঞ্জ’ নভেম্বর ২০২৪ উদ্বোধন হওয়ার সংবাদ পত্রিকায় পড়েছি। ফ্লাইটে ওঠার আগে হাতে কিছু সময় থাকায় সুপ্রশস্ত, গোছানো-পরিপাটি, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন প্রবাসী লাউঞ্জে বসে সহধর্মিণীর সাথে আলাপচারিতার মাঝে ভাবছিলাম –
- সিডনি-ঢাকা সরাসরি ফ্লাইট না থাকতে সিডনি থেকে প্রায় ৮ঘন্টার ফ্লাইটে ট্রানজিট নেয়ার গন্তব্যে পৌঁছাতে ৪ঘন্টা সময় লাগে শুধু অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের ভূখণ্ড অতিক্রম করতে।
- ২০২৫ সালে পৃথিবীর সুখী দেশের তালিকায় ১৪৭দেশের মধ্যে অস্ট্রেলিয়া ১১তম আর বাংলাদেশ ১৩৪তম। আমাদের মত ফার্স্ট জেনারেশন মাইগ্র্যান্টদের বর্তমানে অবস্থান শারীরিকভাবে অস্ট্রেলিয়াতে হলেও মানসিকভাবে অনেকাংশে বাংলাদেশে। তাই সুখী দেশের তালিকায় আমরা মানুষ হিসেবে কোথায় আছি – অস্ট্রেলিয়াতে না বাংলাদেশে?
- মাত্র দুই দিনের প্রস্তুতিতে পারিবারিক জরুরি প্রয়োজনে এই যে আমাদের ঢাকায় আসা (আগস্ট - সেপ্টেম্বর ২০২৫) - তারই বা কতটুকু অগ্রগতি হয়েছে?
- ফার্স্ট জেনারেশন মাইগ্র্যান্টদের সবার পারিবারিক জরুরি প্রয়োজন কিংবা সমস্যা কি একই ধরণের?


ফ্লাইটে ওঠার সময় হওয়াতে বোর্ডিং গেটের দিকে এগিয়ে যাই…


২৫/০৯/২০২৫




মাসুদ পারভেজ, সিডনি / mmparvez@yahoo.com







Share on Facebook               Home Page             Published on: 12-Oct-2025

Coming Events:
Bangladesh Australia Disaster Relief Committee AGM 2025
26 Oct 2025, 65 Spurway St, Ermington