মেঘের উপরে আমি লাকী রহমান
ঢাকা থেকে কুয়ালালামপুর রাতের অন্ধকারে বুঝিনি উপর থেকে মেঘ দেখতে এত সুন্দর। কুয়ালালামপুর থেকে সিডনী আট ঘণ্টা প্লেনের ছোট জানালা দিয়ে কষ্ট করেই দেখেছি মেঘ যে কত রূপবতী। কখনো হালকা বরফের টিলার মত, কখনো অনেক বড় গর্তের মত আবার কখনো হলুদ, কমলা, নীল, লাল নানা রঙে রঙিন। এ কোন রঙের খেলা। আমার মেয়ে তো অনুরোধ করেই বসল মা প্লিজ, “আমাকে নামিয়ে দাও আমি খেলব” আমার তখন ওর কথা শুনে হাসারও সময় নাই।
ছোট বেলার সেই হাওয়াই মিঠাইওয়ালা যার কাচের বাক্সে হাওয়াই মিঠাইগুলো বন্দি থাকত আর হাতে বাজত ঘণ্টা সেই হাওয়াই মিঠাইয়ের রঙ আমাকে খুব টানত। আমি একদিন বাড়ির সবাইকে ফাঁকি দিয়ে চলতে চলতে চলে গিয়েছিলাম অনেকদূর সেই হাওয়াই মিঠাই চাচা তার চলার গতি কমিয়ে আমাকে বলেছিল “একটা খাবে?” আমি বলেছিলাম “খাবো না, দেখছি।” এক সময় দেখলাম বিশাল জায়গা জুড়ে সেই হাওয়াই মিঠাই ছড়ানো। আমি তখন আমার মেয়ের মত হাত দিয়ে ছুতে চাইলাম। নিচে মেঘ উপরে সীমাহীন শূণ্যতা গাড় নীল আকাশ কিছুক্ষণ তাকিয়ে অজানা আশংকায় চোখ বন্ধ করেছিলাম। মনে হয়েছিল আকাশে যেন সেই রাজকুমারী যাকে ছুঁতে চাওয়াও অপরাধ আর মেঘ যেন সেই বন্ধু যার বুকের খুব গভীরে আমার বসত বাড়ি। হঠাৎ বিমানবালার সুরেলা কণ্ঠ শুনে নড়ে চড়ে বসলাম। নামতে হবে রড, সিমেন্টের পৃথিবীর এই অংশে।
লাকী রহমান, রাজশাহী থেকে
|