ঈদি ইয়াবা কাজী লাবণ্য
দেশে সরকারি ব্যাংকের পাশাপাশি এখন অনেক বেসরকারি ব্যাংক মানুষকে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। তাদের সেবার মান যথেষ্ট রকম ভাল বলে গ্রাহক সংখ্যাও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই ব্যাংকগুলি মানুষের সাংসারিক জীবনেও স্বস্তি এনে দিয়েছে। বিভিন্ন ধরনের বিল এখন বেশ সহজেই অল্প সময়ে স্বল্প পরিশ্রমে পরিশোধ করা যায়। গ্রাহক সেবার বিষয়টি এসব কর্পোরেটরা ভালভাবে রপ্ত করে সফলতার সাথে নিজস্ব কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।
কাছাকাছি একটি ব্যাংকে এসেছি টাকা তুলতে। আজকাল বুথ থেকে অনায়াসেই টাকা তোলা যায়। কিন্তু একটা বিশেষ কাজে আমার দরকার একদম নতুন ঝকঝকে নোট। দেখলে যেন মনে হয় এইমাত্র টাঁকশাল থেকে এসেছে। ম্যানেজারের রুমে বসলেই তিনি এরকম নোট এনে দেবার ব্যবস্থা করেন। আমার অনেক ছেলেমানুষি আবদার এই মানুষটি হাসি মুখে মিটিয়ে ফেলেন। দেশের রাজনীতি রেখে সাম্প্রতিক ‘টক অফ দা কান্ট্রি’ বা টক অফ দা ওয়ার্ল্ড’ গত ১ জুলাই গুলশান ৭৯ নম্বর সড়কে হলি আর্টিজান বেকারির দোতলায় অবস্থিত ‘ও’ কিচেন রেস্টুরেন্টের বর্বরতম জঙ্গি হামলায় ১জন ভারতীয়, ৩ জন বাংলাদেশী, ৭জন জাপানি, ও ৯জন ইতালীয় সহ ২০জন নিরপরাধ মানুষ নিহত হয়। সে ইস্যু নিয়ে সামান্য কিছু কথা টথা বলে, লাল চায়ের কাপ রেখে রাবার ব্যান্ডে শক্ত করে বাঁধা টাকার বান্ডিল নিয়ে ব্যাগে ভরতে যাব হঠাত ওপাশ থেকে একটা শোরগোল উঠল- আরে আরে! একি! ধর ধর...
ম্যানেজারের বসার প্লেসটি গ্লাস পার্টিশন কাজেই এপার ওপার ঝকঝকে। তাকিয়ে দেখি একজন মহিলা ধীরে ধীরে মাটিতে পড়ে যাচ্ছেন। অবশ্য পড়ার আগেই পাশের কয়েকজন তাকে ধরে ফেলেছেন এবং মাটিতে শুইয়ে দিয়েছেন। এটি বিল জমা দেবার লাইন। আজ কোন কারণে বেশ লম্বা লাইন ছিল। সামনে ঈদ আসছে সেজন্যও হতে পারে। তাই বলে এমন কিছু অজগর সাপের মত লম্বা নয়। তাছাড়া এসি চলছে, এমন হবার তো কারণ নেই। তাহলে কি ভদ্রমহিলা অসুস্থ ছিলেন! আমি তাড়াতাড়ি ব্যাগের চেইন বন্ধ করে তড়িৎ এগিয়ে গেলাম। ততক্ষণে কজন মিলে ধরাধরি করে বসার লম্বা সোফাটায় উনাকে শুইয়ে দিয়েছে। উপস্থিত লোকজন উনাকে ঘিরে নানা মন্তব্য, নানা ধরনের উপদেশ দেয়া আরম্ভ করল। কাউন্টারের লোকটি বলল- আমি উনাকে চিনি উনি প্রতিমাসে বিল দিতে আসেন। গেটম্যান এগিয়ে এসে ঘাড়ের বন্দুক সামলাতে সামলাতে বলছে- আমি তো এই আফারে চিনি, উনি খুবি ভালো মানুষ আহারে! ভাল মানুষ বেশিদিন বাঁচেনা। সে একেবারে বাঁচা না বাঁচায় চলে গেল। ভিড়ের মাঝ থেকে কেউ একজন বললেন- “এখানে কি কেউ ডাঃ আছেন নাকি”! কেউ বলল- “একটু পানি দিন পানি”! “আরে উনাকে তো হসপিটালে নেয়া দরকার”! “প্রেশার আছে মনে হয়”! “মনে হয় মাথা ঘুরে পড়ে গেছে”! “ডায়াবেটিস থেকেও এমন হয় হাইপো হতে পারে, কারো কাছে কি চকোলেট আছে” এমন মন্তব্য চলতেই থাকল। এর মধ্যে ম্যানেজার সাহেব বেড়িয়ে এসে হাঁক দিলেন- আপনারা সবাই সরুন দেখি! সরুন! সরুন!
ম্যানেজার সাহেব আমার আমার দিকে তাকিয়ে বললেন- ম্যাম আপনার গাড়িতে একটু...
-হ্যাঁ, হ্যাঁ, শিউর...
আবার অনেকেই হাত লাগালেন। অজ্ঞান মহিলাকে বহু কসরত করে গাড়িতে তুলে এনে নিকটস্থ হসপিটালে নেয়া হল। প্রাইভেট হসপিটাল, চারিদিকে ঝাঁ চকচকে। আজকাল ফাইভ স্টার হোটেলের মতো কিছু হসপিটাল হয়েছে যেখানে সঠিক সুষ্ঠ চিকিৎসা ব্যবস্থা ছাড়া অত্যাধুনিক সকল ব্যবস্থাই আছে। এমন হসপিটালে আসার কথা নয় কিন্তু এটিই সবচেয়ে কাছে, উপায় কি! কিন্তু এরা আমাদের পেসেন্ট নেবে কেন! যার সঙ্গে উঁচুতলার বা উচ্চপদস্থ দুরের কথা কোন নির্দিষ্ট গার্জেনই নেই। তাপরও তারা ভর্তি করালেন কারণ আমাদের দেশের মানুষ। এই সাধারণ মানুষগুলি উঠতে বসতে মার খায়, বিভিন্নভাবে মারা যায় তারপরও তাদের মানবতা মরে না। এদের মানবতা মরতে মরতেও বেঁচে থাকে সবলভাবেই বেঁচে থাকে। সঙ্গে আসা এই মানুষগুলিই যারপরনাই দৌড়াদৌড়ি করে ভর্তি করানো, ডাঃ দেখানো সব ব্যবস্থাই করলেন। তাকে একটা কেবিনের বেডে শুইয়ে দেয়া হল। আমার হাতে কিছু অবসর এবং পেসেন্ট মহিলা হওয়াতে আমিও সবার সঙ্গে রয়ে গেলাম। আমার হাতে কিছু সময় আছে বলেই আমি রয়ে গেলাম কথটা সর্বাংশে সত্যি নয়। এই মুহূর্তে ইনি একজন বিপন্ন মহিলা এটি একটি কারণ এবং আরেকটি গোপন কারণ হলো এনার গায়ের রঙ অদ্ভুত ফর্সা। আমি যেখানেই যাই আমার আশপাশের ঈর্ষনীয় ফর্সা নারীদেরকে আমি আড়চোখে দেখি। জানিনা সে আড়দৃষ্টির সাথে কোন গহন বেদনা মিশে থাকে কিনা। ফর্সা নারীদেরকে নিয়ে আমার অজান্তেই আমার ভেতরে একটা কৌতূহল কাজ করে। তাদের যাপিত জীবন আমার জানতে ইচ্ছে করে। নারীদের এই চমৎকার গায়ের রঙ্গে অসম্ভব দ্যোতণামাখা একটা আভা, কেমন যেন সুখ ছোঁয়া আনন্দ মাখা একটা ছটা আছে যা আমি দেখি আর অসম্ভব গোপনে দীর্ঘশ্বাস ফেলি। কাউকে জানতে বুঝতে দেইনা বা প্রকাশ করিনা। আর প্রকাশ করিনা বলেই হয়ত এই একটা ব্যাপার নিয়ে আমার ভেতরে ভারিক্কি বাড়ে, ঘনত্ব বাড়ে। আমি ব্যাগ ট্যাগ গুছিয়ে রেখে মহিলার পাশে ঠায় বসে রইলাম। আমি তার নির্লিপ্ত ক্লিষ্ট মুখের দিকে তাকিয়ে ভাবতে লাগলাম কে এই মানুষটি। নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের গৃহিণী মনে হয়। পরনে একটি সুতি শাড়ি। শাড়িটি সুন্দর এবং পড়ার ধরনটিও বেশ পরিপাটি। রুচিশীল। সারামুখে ভীষণ ক্লান্তি। চোখের চারপাশে কালি। কিন্তু মহিলার গায়ের রঙ চোখে পড়ার মত। যেন স্বর্ণচাঁপা বা হলুদ গাঁদার বন। তবে এই মুহূর্তে মুখটি না লেখা কাগজের মতই শাদা। কিন্তু উনি এত ক্লান্ত কেন! উনি কি রাতে ঘুমান না! নাকি ঘুম হয়না! ফর্সা হাত দুখানা একদম কেজো হাত। শিরা উপশিরা সব স্পষ্ট। আঙ্গুলের নখের মাঝখানটা নতুন চাঁদ বা কাস্তের মতো ক্ষয় যাওয়া। তারমানে তিনি হাঁড়ি পাতিল বাসন কোসন মাজেন। বাসার সব কাজ কি উনি একা হাতে করেন! সংসারের কাজ আবার বিলটিল দেয়া সবই উনাকেই করতে হয়! আচ্ছা সংসারে উনার কে কে আছেন! বাসা কোথায়! কিসে করে উনি ব্যাংকে এসেছেন! রিকশায়! সিএনজিতে! নাকি হেঁটে! হেঁটেই মনে হয়, তা না হলে এত ক্লান্তি কেন! কিসের বিল দিতে এসেছিলেন উনি! কত টাকার বিল! আচ্ছা বিল দেবার কি আর কেউ ছিলনা বাড়িতে! উনার হাজবেন্ড! তিনি কি মারা গেছেন! তিনি কি পঙ্গু! নাকি সকালবেলাতেই চারটা মুখে দিয়েই অফিসে ছুটেছেন বেচারা। মহিলার ছেলেমেয়ে কি! নিঃসন্তান নাকি! এনার মেয়েগুলি দেখতে পরীরমত! এমন পরিবারের ছেলেমেয়েরা আদব কায়দায় বড় পরিপুষ্ট হয় আবার মেধাবীও হয়। তারা জীবন বাজি রেখে লড়াই করে একটা জায়গায় পৌঁছানোর জন্য। এরা বোঝে বাবা মায়ের হাড়ভাঙা পরিশ্রম, ঐকান্তিক চেষ্টা। বাবা মা নিরন্তর চেষ্টা করে যায় ছেলেমেয়েগুলো যেন বড় হয়, বড় হয়ে যেন দুধভাত খায়। আচ্ছা এনার ছেলেমেয়ে গুলো কী মেধাবী! স্কুল কলেজে বিনাবেতনে লেখা পড়া করে! আজকাল কি বিনাবেতন নিয়মটি চালু আছে! মেধাবী কিন্তু গরীব ছাত্র- ছাত্রীদের জন্য প্রায় স্কুল কলেজে আগে এমন নিয়ম চালু ছিল।
লম্বা ঝুলের ব্লাউজটি বেশ পুরনো এবং ঘামে ভেজা। ব্লাউজের হাতাও বেশ লম্বা। ব্লাউজটি শাড়ির সাথে ম্যাচিং কিন্তু শাড়িটি নতুনই মনে হচ্ছে অথচ ব্লাউজ পুরনো। তারমানে একই ব্লাউজ তিনি আরো শাড়ির সাথে পড়েন। পায়ে পাতলা চটি। সেটাও জীর্ণ। পায়ের গোড়ালি ফাটা ফাটা। হয়ত দিনের পর দিন নিজের যত্ন নিতে পারেননা। নিজেকে দেবার মত কোন সময় থাকেনা। সবটুকু সময়, শ্রম, মেধা তিনি সংসারের পেছনে ব্যয় করেন। ছেলে মেয়েদেরকে মানুষ করার চেষ্টা করেন। ভাবেন ওরা মানুষ হলেই তার সব হবে। ছেলেমেয়েরাও নিশ্চয়ই মাকে অসম্ভব ভালোবাসে। আর তার স্বামী! স্বামীও নিশ্চয়ই। জীবন-যুদ্ধে তিনিই তো তার প্রধান সহযোদ্ধা। যৌথ জীবন তো তার সাথেই শুরু হয়। সে জীবন যতই আটপৌরে হোক ওরই মাঝে প্রেম- প্রণয়, রাগ, মান- অভিমান সবই থাকে। আর থাকে পরম আস্থা ও আশ্রয়। প্রথম দেখায় ফুল লতাপাতা ছাপা বিছানায় বসে উভয়েই মনে মনে ভাবে-“পাইলাম, আমি ইহারে পাইলাম”। আর এমন স্বর্ণচাঁপা রূপবতীদেরকে তো সব পুরুষই প্রথম প্রথম মাথার মণি করে রাখেন।
আমি অপলক মহিলার মুখের দিকে তাকিয়ে আছি। আচ্ছা উনি কি আর চোখ খুলবেননা! উনার জ্ঞান কি আর ফিরবে না! উনি বাড়ি ফিরবেননা! সংসার তো উনার পথ চেয়ে আছে। বাড়িতে ছেলেমেয়েরা তো পাগল হয়ে যাবে। উনার স্বামী কি করে বাঁচবেন! আমি মনে মনে আকুল প্রার্থনা করতে থাকি- হে আল্লাহ! উনাকে সুস্থ করে দাও। ছেলেমেয়েরা মাকে ফিরে পাক। ওদের এতিম করোনা প্রভু। কারো নাহয় সংসার নেই, তার ফিরলে কি আর না ফিরলেই কি! কিন্তু এনার তো সব আছে। আমি আবার ডাঃ এর কাছে যাই, তিনি আবার একই কথা বলেন-
-“মনে হয় তেমন ভয়ের কিছু নেই, তবে ব্লাড প্রেশারটা খুব হাই। হার্টের কন্ডিশনও ভাল মনে হচ্ছেনা, আচ্ছা টেস্ট গুলো হোক নাহলে কিছু বলা যাচ্ছেনা”।
আজকাল ডাঃ রা টেস্ট না করে কিছু বলেননা। আবার অভয়ও দেন।
বাইরে তুমুল বৃষ্টি হচ্ছে। এবারে শ্রাবণ এসেছে ভরা রূপ নিয়ে। কবি লেখক বা শৌখিন মানুষের জন্য বর্ষা ঋতু চমৎকার। কিন্তু পথচারীদের জন্য, খেটে খাওয়া মানুষের জন্য বড্ড বিড়ম্বনার।
কাউন্টারের দাঁড়ি, টুপি পরা লোকটি আবার এলেন। আর ব্যাংকে কাজের জন্য আসা দুএক জন লোক মহিলার সাথে আছেন সেই তখন থেকে। কেবল আমিই মহিলার মাথার কাছে বসে আছি আর বাকিরা কেউ ভেতরে কেউ কেবিনের বাইরে জটলা করে দাঁড়িয়ে ফিসফিস করছেন। এমন সময় কাউন্টারের ওই লোক এসে বললেন যে অনেক চেষ্টা শেষে উনার বাড়িতে সংবাদ দিতে পারা গেছে ... উনার ছেলে আসছে। শুনে আমি হাঁফ ছাড়লাম। আবার আতংকেও রইলাম। আহারে ছেলেটা এসে মায়ের এইরূপ সহ্য করতে পারবে! আমি প্রস্তুত হয়ে রইলাম, ছেলেটি এসে কান্নাকাটি করবে তাকে সামলাতে হবে। আমি নিজে কাঁদিনা এবং মানুষের কান্না সইতে পারিনা।
আগ্রহ এবং কৌতূহল নিয়ে দরোজার দিকে তাকিয়ে রইলাম। আবার মহিলার মুখের দিকেও তাকাচ্ছি, মনে মনে ভাবছি প্রভু উনার জ্ঞান ফিরিয়ে দাও, জ্ঞান ফিরিয়ে দাও! ছেলে এসে মাকে সজাগ দেখুক, সুস্থ দেখুক! কায়মনোবাক্যে আমি আমার প্রার্থনা করতেই থাকলাম। কারণ আমি মনে করিনা ঈশ্বরকে কেবল তসবি জায়নামাজ বা ধূপ ফুল দিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবেই ডাকতে হয়। আমি তাঁকে অনেকটা আটপৌরে ভাবেই ডাকি। আমার বিশ্বাস ঈশ্বর যতটা আনুষ্ঠানিক তারচেয়েও অনেক বেশি নিত্য নৈমিত্তিক। আমি বিশ্বাস করি ‘জীবে প্রেম করে যেই জন, সেই জন সেবিছে ঈশ্বর’। কাজেই ঈশ্বর আলাদা কিছু নয় বা এক রকম কিছু নয়। ঈশ্বর এক ব্যাপ্তি যা বিস্ময়াবহ। ঈশ্বর যতটা অলৌকিকে, তার চেয়ে অনেক বেশি দৈনন্দিন লৌকিকে। যতটা আধ্যাত্মে তার থেকে বেশি তিনি ব্যবহারিকে। অপেক্ষমাণ লোকেরা ছেলে এসেছে ছেলে এসেছে করে গুঞ্জন তুললে তাকিয়ে দেখি- টিশার্ট জিনস পড়া বেশি রকম হ্যাংলা পাতলা একটি ছেলে ঢুকল। সদ্য ঘুম ভাঙ্গা চেহারা। মায়ের মতই হলুদ গায়ের রঙ এবং মায়ের মুখটিই এর মুখে বসানো। কেউ একজন হাত ধরে নিয়ে এলো। ছেলেটি এসে কি করবে ঠিক বুঝতে পারেনা। আমি বললাম “বস বাবা”। বলে নিজের জায়গাটা ছেড়ে দিলাম। ভাবলাম মায়ের মাথার কাছে বসুক। মায়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিক। সন্তানের স্পর্শে হয়ত মায়ের জ্ঞান ফিরে আসতেও পারে। সে বসল মাথা নিচু করে, বসেই রইল। কোন কথা না বা কোনরকম মায়ের জন্য অস্থিরতা, বা অন্যরকম কিছু, কিচ্ছুনা ...
পরের অংশ
কাজী লাবণ্য, সিডনি
|