বুমেরাং কাজী লাবণ্য
পরের অংশ
জাতিসংঘের আওতাধীন দুর্দান্ত এক কর্মজীবন শেষ করে অবসর, দুটি সন্তান, স্ত্রী আর বেশ ব্যালেন্সের ব্যাংক এ্যাকাউন্ট নিয়ে দেশে ফিরে পার্মানেন্টলি সেটল করেন আলি আহসান সাহেব। জীবন তাকে ভরিয়ে দিয়েছে। প্রাচুর্য, সুখ, পৃথিবী ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ। তিনিও জীবনকে নিজের মত এঞ্জয় করেছেন। চারজনের সংসারে চমৎকার পারস্পরিক বোঝাবুঝি সংসারে এক তিরতিরে শান্তি এনে দিলেও জীবনের একটা দিক তার ডুবে আছে অন্ধকার গহ্বরে। সেখানে এক অসহায় ক্রন্দন ছাড়া আর কিছু নেই। তার স্ত্রী মিসেস শাহানা একজন উচ্চ শিক্ষিত মহিলা। চমৎকার মনের মানুষ। তিনি স্বামী কন্যা সংসারের বাইরে আর কিছু ভাবতে পারেননা। জীবনে অন্য রকম ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ থাকলেও তিনি সন্তানের মুখের দিকে তাকিয়ে ঘরকন্নায় কাটিয়ে দিলেন জীবন। আহসান দম্পতির দুই কন্যা জয়া ও জয়তি। জয়তি ছোট বেলা থেকেই অত্যন্ত তুখোড় মেধাবী ছাত্রী এবং এক্সট্রা কারিকুলামেও দারুণ পারদর্শী। বিদেশের মাটিতেই সে তার লেখা পড়া শেষ করে। কিন্তু সে সেখানে সেটল না করে পরিবারের সাথে দেশে ফিরে আসে এবং এখানেই বিয়ে শাদি করে, খুব ভালো একটা চাকুরী নিয়ে সে বেশ ভালই আছে। এর মধ্যেই তার গেড়িগুগলি দুটি সন্তানও হয়ে গেছে। বাবার কাছ থেকে পাওয়া ফ্ল্যাটেই সে তা তা থৈ থৈ দিবস রজনী কাটায়। পাশের এপার্টমেন্টেই বাবা মা ও বড়বোন জয়া থাকে। অফিসে যাবার সময় গেড়িগুগলি দুটিকে মায়ের কাছে রেখে ওরা স্বামী স্ত্রী অফিসে চলে যায়। সারাদিন তাদের দেখা শোনা, খাওয়ানো নাওয়ানো সকল হ্যাপা সকলে মিলে সামাল দিলেও মূল কাজটি করে জয়া। বাচ্চা দুটিকে সে বোনের নয় নিজের বাচ্চার মতই আগলে রাখে। মায়ের মতই যত্ন করে।
জয়া, আহসান সাহেবের বড় মেয়ে। ভালোবাসার প্রথম ফসল। জন্মের সময় তার এক ধরনের সমস্যা হয়। সেই জটিলতায় পরে সে শারীরিক ভাবে বড় হয় ঠিকই কিন্তু তার বুদ্ধিবৃত্তি আটকে থাকে একদম একটি শিশুর পর্যায়ে। আর কথা বলাতেও কিছু সমস্যা হয়। উচ্চারণে বেশ খানিকটা জড়তা থাকে বলে মন দিয়ে না শুনলে বোঝা যায়না। পরিবারে নিজেদের মধ্যে বুঝতে কোন সমস্যা হয়না কিন্তু বাইরের মানুষ জয়ার কথা বুঝতে পারে না। ঈশ্বর যার এত ঘাটতি দিলেন তাকে আবার দিলেন অসামান্য রূপ। একবার তাকালে চোখ ফেরানো যায়না এমন তার নিষ্পাপ সৌন্দর্য। ওর বাবা মা ওকে সব সময় শিশুর মত তীক্ষ্ণ চোখে আগলে রাখেন। বুদ্ধিহীন, কথা বলায় অপটু, এই রূপবতী মেয়ে নিয়ে সর্বত্রই ভয় আতংক। এই মেয়ের জন্য বাড়ীতে কাজের লোক রাখা হয় খুব ভেবে চিন্তে। পারতপক্ষে তাদেরকে বাড়ীর ভেতরে ঢুকতে দেয়া হয় না কেবল জয়ার কথা ভেবে।
জয়ার ছোট জয়তি তার বিয়ে হয়ে গেছে, এক এক করে দু সন্তানের মা হয়েছে। আর জয়া! জয়ার কথা ভেবে ওর বাবা মায়ের চোখে ঘুম আসে না। আহসান সাহেব ভাবেন তার বয়স হয়ে যাচ্ছে মেয়েটার কি হবে! এই যে তার অর্থ বাড়ি গাড়ি, সেসব দিয়েই বা কি হবে! জয়ার নামে তিনি ফ্লাট দিয়েছেন, ওর নামে মোটা অংকের ডিপোজিট আছে কিন্তু সেসবের কিছুই ত বোঝেনা ও। যতটা না বয়সের কারণে তার চেয়েও এই মেয়ের দুশ্চিন্তায় আহসান সাহেব দ্রুত অসুস্থ হয়ে পড়েন। এর মধ্যেই তার একবার এটাক হয়ে যায়। বাইপাস সার্জারিও হয়ে যায়। আত্মীয় বন্ধু যারা আছেন অনেকেই সদুপদেশ দেন যে একটি অভাবী কিন্তু শিক্ষিত ভালো পরিবারের ছেলেকে দিয়ে মেয়ের বিয়ে দিলে সমস্যার একটা সমাধান হতে পারে। আহসান সাহেব এই নিয়ে অনেক ভাবনা চিন্তা করেন, স্ত্রীর সাথে বহুবার বহুভাবে এর ফলাফল কি হতে পারে সেসব বিষয়ে আলোচনা করেন। দিনের পর দিন তিনি এ নিয়ে গভীর ভাবে ভাবতে থাকেন।
এক সময়ে সকল আশংকা পিতৃ হৃদয়ের কাছে হার মানে। তিনি সিদ্ধান্ত নেন সেরকম একটি ছেলে খুঁজে আনবেন এবং তার আদরের মেয়েটার বিয়ে দিয়ে নিশ্চিত হবেন। প্রয়োজনের তুলনায় তার অনেক প্রোপার্টি আছে, জামাইকে তিনি পর্যাপ্ত প্রোপার্টি লিখে দেবেন, কেবল একটাই চাওয়া; মেয়েটাকে যেন দেখে রাখে। ওর যেন কোন অযত্ন না হয়।
খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে এরকম বেশ কিছু ছেলের সন্ধান পাওয়া যায়। কিন্তু একটার পর একটা দেখে দেখে যাচাই করে বাতিল করেন তিনি। বেশির ভাগ ছেলেই শুধু সম্পাতির লোভেই রাজি হয়, তিনি বুঝতে পারেন তার এই প্রতিবন্ধী মেয়েকে কেউ দেখবে না। তিনি হতাশ হয়ে পড়েন। আরো অসুস্থ হয়ে পড়েন। যখন সকল আশাই ছেড়ে দিলেন তখন হঠাৎ একটি ছেলের সন্ধান পাওয়া গেল, ছেলেটির বাবা নেই মা স্কুল টিচার ওরা দু ভাই বোন। বোনটি বিবাহ যোগ্যা, ওর বিয়ে হলেই ছেলেও বিয়ে করবে। ছেলেটি মাস্টার্স পর্যন্ত পড়েছে। দেখেই, বেশ ভালো লেগে গেল আহসান সাহেবের। ছেলেটির মধ্যে কেমন এক সরলতা আছে বা হতে পারে সে কিছুটা বোকা। হোক বোকা অসুবিধা নেই। তিনি ছেলেকে স্টাবলিশ করে দেবেন। ছেলের মাও বেশ ভদ্র শান্ত, ছেলেকে খুব ভালবাসেন। ছেলেও মা অন্ত প্রাণ মাকে সে খুব ভালোবাসে। তিনি ভাবলেন, এই যুগে যে ছেলে বিধবা মায়ের কষ্ট বোঝে, মাকে ভালোবাসে সে ছেলে হৃদয়বান না হয়ে যায়না। বিধবা মা দুই সন্তানকে কষ্ট করে বড় করেছেন। ভদ্রমহিলার সাথে কথা বলেও আহসান সাহেবের মনটা ভরে যায়। সংগ্রামী কিন্তু শান্ত, স্নেহময়ী একজন নারী। তার এই শিশুর মতো মেয়েটিকে তিনি হয়ত মায়ের মমতা দিয়ে চালিয়ে নেবেন। তিনি ভাবলেন; এতদিনে খোদা মুখ তুলে তাকিয়েছেন। আহা তার অসহায় মেয়েটা!
পবিত্র কুসুমালোক এক ভোরে পিতার জায়নামাজ আকুল হয়ে ওঠে - "তোমার তরফ থেকে মানুষের জীবনে যে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার তা হলো সন্তান। যা তুমি আমাকে দিয়েছ। সেজন্য তোমার মহান দরবারে শুকরিয়া। কিন্তু বড় মেয়েটা কেন এমন হলো,আমি জানিনা। তুমি জানো তার জন্মের পর থেকেই যে পাষাণভার আমার বুকের উপর চেপে আছে তা আর এ জীবনে নামবে না। আমার জীবন শেষের দিকে। আমার এই অসহায় মেয়েকে আমি কার কাছে রেখে যাব মাবুদ! কে তার ভার নেবে! কি দিয়ে তাকে আমি সুখ দেব! নিরাপত্তা দেব! অর্থ দিয়ে সম্ভব হলে আমার জীবনের সঞ্চিত যা কিছু তার সবটুকু আমার মেয়েকে দিতাম, কিন্তু সেতো এসবের কিছুই বোঝে না।
আমার বুদ্ধিতে যা মনে হয়েছে সেইরকম ব্যবস্থা আমি করেছি, ওর বিবাহের ব্যবস্থা করেছি। এই বিবাহ তুমি কবুল করো। আমার আদরের এই অবোধ মেয়েকে তুমি বাকি জীবনে সুখী করো। তোমার কাছে চাওয়ার আমার আর কিছু নেই। আমার জীবনের বিনিময়ে হলেও তাকে ভালো রেখো"। সেজদায় অবনত মাথা খুব সহজে ওঠেনা...
আদরের কন্যা সন্তানের জন্য পিতাদের চিরন্তন এই আর্তি সব সময় বিধাতার কাছে পৌছায় না। তা কেবল নিষ্ফল হাহাকার হয়ে মেঘ থেকে মেঘে, বাতাসে, পাহাড়ের গায়ে আর সুপ্রিয় জামাতাদের বধির বিবেকের বন্ধ দ্বারে ঘুরে ঘুরে মরে।
**
আহসান সাহেবের মত সুখী মানুষ এখন আর কেউ না। তিনি আজকাল ফুরফুরে মেজাজে দিনকাল কাটান। তার শরীর স্বাস্থ্যও এখন আগের চেয়ে বেশ দিব্য। জীবনের কাছে চাওয়ার বা পাওয়ার আর কিছু নেই। এর মধ্যেই তিনি স্ত্রীকে নিয়ে মহান আল্লাহর ঘর ঘুরে এসেছেন। ছোট মেয়ে জয়িতা, জামাই, দুই নাতি নাতনি, ওরাতো বেশ ভালই আছে বড় মেয়ে জয়াকে নিয়ে যে আশংকা ছিল গত এক বছরে তাও দূর হয়েছে। ছেলেটি ভাল। আহসান সাহেব ভেবেছিলেন সে একটু বোকা, কিন্তু না, সে ভালো মানুষ এবং যথেষ্ট বুদ্ধিমান। এর মধ্যেই আহসান সাহেব জামাতাকে নিজের ব্যবসায় বসিয়ে দিয়েছেন। সেখানেও সে দক্ষতার সাথে কাজ করছে। জয়াকে সে ভাল রেখেছে। ওদের ফ্লাট আহসান সাহেব মনের মতো করে সমস্ত কিছু দিয়ে সাজাতে এতটুকু কার্পণ্য করেননি। সেখানে জয়া, জামাই এবং বেয়াইন মিলে চমৎকার সংসার। এর মধ্যে ঢোলের সাথে তবলার মতো আর এক সুখবর যোগ হয়েছে জয়া কন্সিভ করেছে। আহা! জীবনে এত সুখ! বার বার বিনা কারণে তার চোখ ভিজে আসে। তিনি কেবলই আকাশের দিকে মুখ তুলে কৃতজ্ঞতার এক অরূপ অনুভবে আপ্লুত হতে থাকেন।
ঝাড়া ৬ ফিট লম্বা সুঠাম শরীরের আহসান সাহেব প্রথম জীবনে ছিলেন অকুতোভয় দুরন্ত এক ফুর্তিবাজ মানুষ। সেসময় ধর্ম কর্মের কোন বালাই তার ছিলনা। তার কাছে লাইফ মানে ছিল এভরি মোমেন্ট এঞ্জয় করা। কেবল দুজনে ঘুরবেন ফিরবেন এঞ্জয় করবেন এই ভেবে তিনি বিয়ের বহু বছর পর্যন্ত সন্তান নেননি। তারপর পরিকল্পনা করেই সন্তান নেন। যখন স্ত্রী সন্তান সম্ভবা হন তখন তার আনন্দ আর পরিকল্পনার কোন সীমা ছিলনা। পুত্র সন্তান হলে কি নাম রাখবেন বা কন্যা সন্তান হলে কি নাম রাখবেন আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিলেন। সন্তানের কি কি লাগবে সেসব আগেই কিনে বাসা ভরিয়ে ফেলেছিলেন। কিন্তু সন্তান জন্মের সময় অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু সমস্যা দেখা দেয়। আর সে কারণেই পরবর্তী সময়ে ভয়াবহ এক অভিশপ্ত জীবন তাকে কাটাতে হয়। আর তারপর দিনে দিনে তিনি মহান স্রস্টার কাছে নিবেদিত হতে থাকেন। মাঝেই মাঝেই তিনি ভাবেন মানুষের জীবন কখন কোথায় কোনদিকে মোড় নেবে এক মুহূর্ত আগেও কেউ বলতে পারে না। ছোট্ট এক জীবন তার এত ডাইমেনশন! সব ডাইমেনশন কি সামলানো যায়! মানুষের সাধ্যে কুলায়! আহসান সাহেব ভাবেন, এই পরীক্ষাও তার জন্য বড় জটিল আর অসম্ভব এক পরীক্ষা। এই মেয়েটির জন্য তার বুকে অকল্পনীয় এক বিষাদময় ভালোবাসা। সব সময় মনে হয়েছে, কি করলে, কোথায় নিলে মেয়ে আমার স্বাভাবিক হবে! পৃথিবীর বড় বড় কোন ডাঃ তিনি বাদ রাখেননি। পরে বিভিন্ন পীর, বুজুর্গ যে যা বলেছে সব করেছেন। কিছুতেই কিছু হয়নি। তার আদরের ধন অবোধই থেকে গেছে। কী নিষ্পাপ! কী অমলিন! তার মেয়েটি! যাক অবশেষে মেয়েটির একটি স্বাভাবিক জীবন হয়েছে!
**
অফিস ছুটি হয়ে গেছে। কেউ নেই। অফিসের বস নিচের সিকিউরিটিকে ডেকে বললেন তুমি চলে যাও। সিকিউরিটি অবাক হলেও প্রশ্ন না করে চলে যায়। এর পরে একজন লোক অফিসে এলে বস এবং তার মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ সিরিয়াস পরামর্শ হয়। বস বলে – কথাবার্তা সব তো হয়েই আছে, তোমাকে তো ফোনে সব বলেছি এখন আবার নিশ্চিত করলাম। মনে থাকবে তো? "স্যার আপনি একদম টেনশন ফ্রি থাকেন, হান্ড্রেড পার্সেন্ট ঠিক কাজ পাবেন। বাথরুমের ভেন্টিলেটরে লাল এক টুকরো ফিতা লাগানো থাকবে, আপনি এতবার বলেছেন ভুল হবেনা"। আচ্ছা ঠিক আছে। আর হ্যাঁ বাথরুমের ভেন্টিলেটরের ঐ ব্যাপারটা সেটাও কথামত সেট করা থাকবে। ওকে, কাজ শেষে আমাকে একটা ফোন দেবে। "জি স্যার" ... হাই-রাইজ এপার্টমেন্টের ফ্লাটের ভেতর থেকে কেউ যদি বাথরুমের ভেন্টিলেটর দিয়ে মানুষ ঢোকানোর ব্যবস্থা করতে চায়, সেটা এমন কোন দুঃসাধ্য ব্যাপার নয়।
**
রাতের খাবার আজ সবাই তাড়াতাড়িই সেরে ফেলে। রাতের ট্রেনে শামীম চিটাগাং যাবে। মাঝে মাঝেই যেতে হয়। আজকাল শামীমের মায়ের শরীর প্রায়ই জুতসই থাকেনা। হাই প্রেশার, ডায়াবেটিস, আবার হাঁটু ব্যথায় কাবু থাকেন। তবে মনে তার প্রশান্তি। মেয়েটার একটা ভালো বিয়ে দিয়েছেন। জয়ার বাবার সহযোগিতায় তা সম্ভব হয়েছে। মেয়েটা ভাল আছে। আল্লাহ-পাক ছেলেটাকে একটা ভালো জায়গায়, ভালো পরিবারে ঠাই দিয়েছেন। খুব ছোটবেলায় এরা বাবাকে হারিয়েছে, নিজে দুঃখ কষ্টে এদের বড় করেছেন। এরা ভালো আছে এইই তার পরম পাওয়া। কখনও ভাবেননি এরা এতটা ভাল থাকবে। বৌমা জয়া হোকনা একটু অন্যরকম, সেওতো আল্লাহরই সৃষ্টি এই মেয়েটি তো তার পেটেও জন্ম নিতে পারত। মফঃস্বল এলাকার এক স্কুলে তিনি এধরনের কত যে বিচিত্র অসহায় মেয়েকে দেখেছেন। তাঁর বড় মায়া লাগত ওদের জন্য। জয়াকে নিয়ে তিনি খুশী। কী অপূর্ব মেয়েটি! সারাক্ষণ মুখে হাসি লেগেই থাকে। ঘরের কাজকর্ম নিজ হাতে করার চেষ্টা করে। শামীম বা শাশুড়ির কাজগুলো নিজে দৌড়ে দৌড়ে করতে যায়, হয়ত ওর মা বোন শিখিয়ে দিয়েছে। শামীমের মায়ের খুব মজা লাগে। তিনি মেয়েটির চলন বলন মাতৃস্নেহে উপভোগ করেন আর আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন পুত্র পুত্রবধূ যেন সুখী হয়। তিনি জয়াকে মেয়ের চেয়েও ভালোবাসেন, আদর করেন, ওর জন্যই তো ছেলের আজ এই রমরমা অবস্থা। তিনি ভাবেন কার উসিলায় আল্লাহ কাকে রাজা বানায় কে বলতে পারে! যে মেয়ের কারণে আজ তিনি বা তার ছেলে এই জায়গায়। আদর, ভালবাসা বা বাড়তি গুরুত্ব তো তার প্রাপ্য। জয়ার বাবা মা কত ভালো মানুষ। কী অমায়িক তাদের ব্যবহার আর আল্লাহ দিলে কত তাদের ধন সম্পত্তি। শামীমের মায়ের মনে কোন আক্ষেপ নেই। জয়াকে নিয়ে খুশী হয়েই দিনাতিপাত করেন।
পরের অংশ
|