৮৮ জন সফরসঙ্গী নিয়ে সিডনি আসছেন শেখ হাসিনা কাউসার খান
অস্ট্রেলিয়ায় “গ্লোবাল সামিট অব উইমেন ২০১৮” শীর্ষক এক সম্মেলনে যোগ দিতে আগামীকাল বৃহস্পতিবার, ২৬ এপ্রিল সিডনির উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ছাড়বেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সিঙ্গাপুর পর্যন্ত বাংলাদেশ বিমানে এবং পরবর্তী আরেকটি বিমানযোগে শুক্রবার সিডনি পৌঁছাবেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানাতে উপস্থিত থাকবেন অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনার মোহাম্মদ সুফিউর রহমান ও অন্যান্য হাইকমিশন কর্মকর্তারা। এছাড়া হাইকমিশনারের সম্মতিক্রমে আর কোন দলীয় বা অন্য কেউ অভ্যর্থনায় অংশ নিবেন কিনা তা এখনও জানা যায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে পরিচালনা কমিটি থেকে কেউ কেউ অভ্যর্থনায় অংশ নিতে পারেন।
প্রধানমন্ত্রীর সাথে ৮৮ জনের এক বহরের মধ্যে সফরসঙ্গী হিসেবে থাকবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, মহিলা ও শিশু-বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি এবং সিনিয়র সরকারী কর্মকর্তাগণ। প্রধানমন্ত্রীর সিডনি অবস্থানকালে ২৭ এপ্রিল সিডনির ডার্লিং হারবারের আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র (আইসিসি) তে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে প্রধানমন্ত্রীকে নারী নেতৃত্বে বিশেষ অবদানের জন্য “গ্লোবাল উইমেন্স লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড” প্রদান করার সম্ভাবনা রয়েছে। এরপর ২৮ এপ্রিল তিনি ওয়েস্টার্ন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের আন্তর্জাতিক সমুদ্র-শাসন কেন্দ্রের সামনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আবক্ষ মূর্তিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করবেন। এরপর সিডনির অ্যাশফিল্ড পার্কে নির্মিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা স্মৃতিসৌধে ভাষা শহীদের স্মরণে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।
একইদিন স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় সিডনি প্রবাসী বাংলাদেশিদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে “গণসংবর্ধনা” দেয়া হবে। সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছে সোফিটেল সিডনি ওয়েন্টওয়ার্থ হোটেলে। গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন বঙ্গবন্ধু কাউন্সিল অস্ট্রেলিয়ার সভাপতি শেখ শামীমুল হক এবং সংবর্ধনা অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করবেন সিরাজুল হক। ৭ সদস্য বিশিষ্ট পরিচালনা কমিটির অন্যান্যরা ২ মিনিট করে বক্তব্য রাখার সুযোগ পাবেন বলে জানা গেছে। এছাড়া অন্য আর কেউ বক্তব্য দেয়ার সুযোগ পাবেন কিনা তা এখনও জানা যায়নি। গণসংবর্ধনার অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী এবং সরকারি কর্মকর্তা ছাড়া কোনো সংরক্ষিত আসন রাখা হয়নি। যিনি আগে আসবেন তিনি আগে বসবেন এ ভিত্তিতে আসন ব্যবস্থা করা হয়েছে। পরিচালনা কমিটির ৭ সদস্যকে প্রায় ৯০টি করে আমন্ত্রণ পত্র বা পাস দেওয়া হয়েছে। এছাড়া হাইকমিশনারের নিকটও মজুদ থাকছে আরও কিছু পাস। যাদের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে তারা ছাড়া অন্যান্যরা পরিচালনা কমিটির সাথে যোগাযোগ সাপেক্ষে পাস পেতে পারেন। সকল পাস সম্পূর্ণ বিনামূল্যে দেওয়া হবে। গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানের যাবতীয় আনুষঙ্গিক খরচ আনুমানিক ২১ হাজার অস্ট্রেলিয়ান ডলার ধরা হয়েছে যা পরিচালনা কমিটির সদস্যরা সমানভাবে বহন করবেন বলে জানা গেছে। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর সিডনি সফরকালে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুল এর সঙ্গে একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের সম্ভাবনা থাকলেও তার পরিবর্তে অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্র-বিষয়ক মন্ত্রী জুলি বিশপ এর সঙ্গে এক বৈঠকের কথা বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে। পররাষ্ট্র-বিষয়ক মন্ত্রী জুলি বিশপ তখন ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী সিডনির হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে অবস্থান করবেন। তিনি এবং তাঁর সফর সঙ্গীদের জন্য হোটেলের ৪৬ এবং ৪৭ নম্বর তলা সম্পূর্ণ সংরক্ষিত রাখা হয়েছে। সেই সাথে প্রধানমন্ত্রীর অস্ট্রেলিয়া সফরে নিরাপত্তার দায়িত্ব রয়েছে বাংলাদেশের বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (এসএসএফ) । নিরাপত্তা কর্মকর্তারা ইতিমধ্যেই সিডনি অবস্থান করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করছেন। তাদের এ কাজে পূর্ণ সহায়তা করছেন নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্য পুলিশ। একই নিরাপত্তা বেষ্টনীতে রাখা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর গণসংবর্ধনার অনুষ্ঠান-স্থল। সম্মেলন শেষে আগামী ২৯ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী দেশের উদ্দেশ্য সিডনি ত্যাগ করবেন।
তবে হাইকমিশনার এখনো গণমাধ্যমকে প্রধানমন্ত্রীর অস্ট্রেলিয়া সফর সংক্রান্ত কিছু জানাননি।
কাউসার খান, সিডনি
|