কাউসার খানের প্রতিবেদন সাম্প্রতিক অস্ট্রেলিয়া (২৪) চীন-অস্ট্রেলিয়া সম্পর্ক কোন পথে
অস্ট্রেলিয়ায় করোনাভাইরাস নির্মূল হয়নি পুরোপুরি কিন্তু নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ফলে বিধিনিষেধ পর্যায়ক্রমে ওঠাতে শুরু করেছে দেশটি। করোনাযুদ্ধে এখন পর্যন্ত সফল কয়েকটি দেশের একটি অস্ট্রেলিয়া। জুলাই নাগাদ অনেকটায় স্বাভাবিক হয়ে যাবে এমনটায় আভাস দিয়েছে সরকার। কিন্তু এই সফলতার পরও সংকট কাটলো না অস্ট্রেলিয়ার। সাম্প্রতিক করোনাভাইরাসের মুল উৎপত্তির তদন্ত দাবি করে চীনের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছে অস্ট্রেলিয়া। গত মাসের শেষদিকে যখন অস্ট্রেলিয়া চীনকে বিশ্বব্যাপী মহামারী করোনাভাইরাস সম্পর্কে আন্তর্জাতিক নিরপেক্ষ তদন্তের প্রস্তাব দেয় তখন চীনা কমিউনিস্ট পার্টি অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য বর্জন করার প্রকাশ্য হুমকি দেয়। এতে, করোনাকালের এই বৈশ্বিক রাজনীতির সময়ে চীনের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার বরাবর উচ্চারিত আপ্ত বাক্য ‘ভালো এবং খারাপ উভয় সময়ে আমরা একত্রে থাকবো’ এর একটা কষ্টিপাথরে কঠিন পরীক্ষা হয়ে যায়। যেটা ২০১৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টে দেয়া বক্তব্যে চীনের রাষ্ট্রপতি সি চিন পিং বলেছিলেন এবং এরপর এই কথা মহান বাণী হিসেবে শ্লোগানে পরিণত হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া-চীন দ্বিপাক্ষিক যেকোনো ইস্যুতে। যদিও অস্ট্রেলিয়ার একটি অংশ মনে করেন চীনা কমিউনিস্ট পার্টি বছরের পর বছর ধরে অস্ট্রেলিয়ার সার্বভৌমত্বকে ক্ষুণ্ণ করার জন্য পদ্ধতিগত ভাবে কাজ করে চলেছে। তবে এরকম মতপার্থক্য থাকলেও সরাসরি পরীক্ষা খুব কম-ই হয়েছে এ দুই দেশের মধ্যে। এখন এই কষ্টিপাথরের ফলাফল কীভাবে নিচ্ছে সরকার সেটার পুরোটা জানা দুরূহ। কারণ, দ্বন্দ্বটা প্রথমে গণমাধ্যম বান্ধব হলেও পরে গোপন কূটনৈতিক পর্যায়ে চলে গেছে। ফলে বাইরের দৌড়ঝাঁপ দেখে সে খবরের প্রকৃত গতিবিধি এখনই হয়তো জানা যাবে না। কিন্তু যতোটুকু ঝলক দেখার দেশটির রাজনৈতিক বিশ্লেষক থেকে সচেতন নাগরিক এই মহামারির দুর্যোগ দিনে ঠিক-ই দেখে নিয়েছেন তাঁদের কথিত বন্ধু চীনের ওপিঠে থাকা রমরমা বন্ধুত্বের রূপ। তাই এখন প্রশ্ন উঠছে দেশটির অর্থ আগে না সার্বভৌমত্ব। কোথাও কোথাও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে ভাবার পরামর্শও দিয়েছে দেশটির রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
অস্ট্রেলিয়াসহ পৃথিবীর ১৮৭টি দেশ করোনাভাইরাসের প্রভাবে প্রায় ভেঙে পড়েছে। এই মহামারিতে এখন পর্যন্ত শুধু ৪২ লাখ মানুষ-ই আক্রান্ত হয়েছেন এমনটি নয়, মৃত্যুবরণও করেছেন প্রায় ২ লাখ ৯১ হাজারের উপরে মানুষ। কোনো দেশভিত্তিক নয়, বিশ্ব অর্থনীতির চাকা ভেঙে পড়েছে ভয়ংকর ভাবে। অস্ট্রেলিয়ার সরকার বলছে, প্রতি সপ্তাহে ৪০০ কোটি অস্ট্রেলিয়ান ডলার খরচ হচ্ছে এই করোনাভাইরাসের আক্রমণে। এই রকম একটি পরিস্থিতিতে করোনাভাইরাসের মূল উৎসের স্বচ্ছতা দাবি করেন অস্ট্রেলিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পিটার ডাটন। তিনি অস্ট্রেলিয়া সরকারের একজন গুরুত্বপূর্ণ জ্যৈষ্ঠ মন্ত্রী। ভেতরে যা-ই থাকুক, তাঁর উত্থাপিত দাবি সরকারের, একটি দেশের। তাঁর দাবির সমর্থনে পরবর্তীতে দেশটির পররাষ্ট্র থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রীসহ সবাই একমত। বলা হয়, অস্ট্রেলিয়ার মন্ত্রীসভার জাতীয় সুরক্ষা কমিটির মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী মরিসন নিজেই এই প্রস্তাবটি উত্থাপন করেছিলেন। এরপর মার্কিন দপ্তর এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি দেশ সমর্থন করেছিল অস্ট্রেলিয়ার ওই দাবিকে। এবং যদিও ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে চীনের সম্পর্কে এক মন্তব্য করে বিরোধীদল লেবার পার্টির সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েছিলেন তবুও এবার চীনের সঙ্গে উত্তেজনার সঙ্গে সঙ্গে লেবার পার্টির পররাষ্ট্র বিষয়ক মুখপাত্র এবং সিনেটে বিরোধীদলীয় নেতা পেনি ওয়াং সরকারের এই তদন্তের দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করেন। বলেন, যে কোনও দেশের মতো চীনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অবশ্যই স্বীকৃত ও সার্বভৌম। আমাদের মূল্যবোধ এবং স্বার্থ দ্বারা -ই আমরা পরিচালিত হবো। সম্পর্কের বিষয়ে পুনর্বিবেচনা করা দরকার তবে সিদ্ধান্তহীনতা কোন বিকল্প নয়। কিন্তু তদন্তের এই প্রস্তাবের বিপরীতে চীনা কমিউনিস্ট পার্টি প্রথমে অস্ট্রেলিয়াকে বাণিজ্য বর্জন করার প্রকাশ্যে হুমকি দিল কালক্ষেপণ না করেই। এ ছাড়া, চীন যেভাবে প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছে তা সরাসরি সার্বভৌমত্বে আঘাত না হলেও, আঘাতের থেকে খুব বেশি দূরেও নয় এমনটায় বলছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রভাবশালী সংবাদপত্র সিডনি মর্নিং হেরাল্ডের রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক সম্পাদক পিটার হার্টচার। তিনি এক দীর্ঘ নিবন্ধের শিরোনাম-ই করেছেন 'অর্থ বা আমাদের সার্বভৌমত্ব: চীন আমাদের কোন বিকল্প দেয়নি’। তিনি লেখেন, অস্ট্রেলিয়া এখন সত্যের মুখোমুখি এসে পৌঁছেছে। এটি এখন সার্বভৌমত্ব এবং অর্থের মধ্যে সুস্পষ্ট পছন্দসহ উপস্থাপিত হয়েছে। তারপরের প্যারা’তে এসে-ই তিনি সরাসরি প্রশ্ন রেখেছেন ‘সার্বভৌমত্ব বা অর্থ। অস্ট্রেলিয়ার পছন্দ কোনটি?’
অন্যদিকে, চীনে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম রাষ্ট্রদূত ড. স্টিফেন ফিজজেরাল্ড এক কলামে লেখেন, অস্ট্রেলিয়া যেন কোভিড-১৯ এর এই ‘ব্লেম গেমে’ না জড়ায়। তিনি অনেকটা আক্ষেপ করে অস্ট্রেলিয়া সরকারকে প্রশ্ন করেন, ক্যানবেরার সরকারে এমন কেউ কি আছেন যিনি বেইজিংয়ের সিনিয়র স্তরের কাউকে ফোন করে কথা বলতে পারেন?’ তার মানে দাঁড়ায় যদি কেউ না থাকে তাহলে এই বিবাদে না জড়ানো ভালো।
নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের দীর্ঘকালীন প্রিমিয়ার এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বব কার ‘আমরা আবার চীনের সঙ্গে অপেশাদার কূটনৈতিকতা দেখালাম’ শিরোনামে এক মতামত নিবন্ধ লিখেছেন। তিনি উল্লেখ করেন, আমাদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক একটি সম্পর্ক রয়েছে চীনের সঙ্গে। আমরা বলছি না ইস্যুটি বাদ দেওয়া হোক। তবে একটু সময় নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে এবং প্রাথমিকভাবে সংবাদমাধ্যমের বাইরে।
এতো গেল অস্ট্রেলিয়া পক্ষের বিভিন্ন স্তরের কথা কিন্তু চীনা কর্তৃপক্ষ প্রথমে শুরু করলো ক্যানবেরা থেকে। তাদের দূতাবাসের একজন মুখপাত্র বললেন, “কিছু অস্ট্রেলিয়ান রাজনীতিবিদ আছেন তাঁরা আমেরিকার তোতা পাখি”। তারপর ডাটনকে সরাসরি আখ্যা দেওয়া হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘মাউথপিস' বলে। তারপর আরো একধাপ, অস্ট্রেলিয়া থেকে আমদানি বন্ধ করে দেওয়ার প্রকাশ্য হুমকি। অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত চেং জিংয়ে বলেন, কথা বেশি গড়ালে শিক্ষা, পর্যটন, কৃষিক্ষেত্রের লেনাদেনা চীনা মানুষ হয়তো বর্জন করা শুরু করবে। যে দেশ চীনের প্রতি বন্ধুত্বপূর্ণ নয় সে দেশের ওয়াইন এবং মাংস খেতে চীনারা হয়তো দ্বিতীয়বার চিন্তা করবে। তারপর আরো এক ধাপ এগিয়ে চীন সরকারের চালিত সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসের সম্পাদক হু জিজিন অস্ট্রেলিয়াকে বর্ণনা করেন “চীনের জুতোতে লেগে থাকা চুইংগাম” হিসাবে। কিন্তু কেন এমনটা চটে গেল চীন, এসব নিয়ে বিস্তর বিশ্লেষণ হচ্ছে। চীনের এতো শক্ত ও উগ্র প্রক্রিয়ার বিপরীতে অস্ট্রেলিয়ার রাজনৈতিক বিশ্লেষকসহ সচেতন মানুষ সামাজিক ও গণমাধ্যমে প্রশ্ন তুলছেন, আসলে অস্ট্রেলিয়ার অপরাধটা কি? এই তো, বিশ্বব্যাপী মহামারী সম্পর্কে আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি। আর কি?
অস্ট্রেলিয়া ও চীনের মধ্যকার সামাজিক-বাণিজ্যিক সম্পর্ক বহুমাত্রিক। অস্ট্রেলিয়ার আড়াই কোটি মানুষের দেশে ১২ লাখ চীনা বংশোদ্ভূতের মানুষের বসবাস। যাঁদের বেশির ভাগ ব্যবসায়ী। চীন অস্ট্রেলিয়ার এক নম্বর রপ্তানি বাজার। আবার অস্ট্রেলিয়ার ৯০ শতাংশ আমদানিকৃত পণ্যদ্রব্য আসে চীন থেকে। ২০১৮ সালে চীন ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে বাণিজ্য হয়েছে প্রায় ২১ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের। ২০১৮-১৯ সালে ১৪ লাখ চীনা পর্যটক অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে আসে। আর এই বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন অস্ট্রেলিয়া এবং চীনের অনেক বিলিয়নিয়ার ব্যবসায়ী। যারা অস্ট্রেলিয়ার বাণিজ্য থেকে শুরু করে রাজনীতিতে প্রভাব ফেলে প্রায়শ। রাজনীতিতে তাঁদের দাপট অনেকবার দেখেছে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকেরা। ২০১৮ সালের আগস্টে দেশটির প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুল যখন ক্ষমতা হারান তখন ধনাঢ্য ব্যবসায়ী ও আন্তর্জাতিক মিডিয়া মুঘল রুপার্ট মার্ডক ও কেরি স্টোকসের নাম চলে আসে এর পেছনে কলকাটি নাড়ার অভিযোগে। এরপর ২০১৯ সালের মে মাসে দেশটির সাধারণ নির্বাচনে আবার স্কট মরিসনের ক্ষমতায় আসার পৃষ্ঠপোষকতায় অন্যান্যদের সঙ্গে নাম আসে অস্ট্রেলিয়ার আরেক ধনাঢ্য ব্যবসায়ী আন্ড্রু ফরেস্টের। যিনি টুইগি ফরেস্ট নামে সমধিক পরিচিত। আবার এবারও চীন-অস্ট্রেলিয়া দ্বন্দ্বে যে কয়েকজন ব্যবসায়ীর নাম বেশি উচ্চারিত হচ্ছে, তাঁদের মধ্যে টুইগি ফরেস্ট অন্যতম। তিনি অস্ট্রেলিয়ার পশ্চিমের রাজ্য ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার বাসিন্দা। প্রায় ৭০০ কোটি ডলারের মালিক। চীনের সঙ্গে বড় ব্যবসা। তাঁর ফোর্টসকি মেটাল গ্রুপের লোহার সবচেয়ে বড় ক্রেতা চীন। তার ওপর এবার যখন করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের শুরু হলো তখন স্বাস্থ্য-কর্মীদের সুরক্ষা পোশাক ও ভাইরাস শনাক্তকরণ কিটের অভাবে অন্ধকার দেখছিল অস্ট্রেলিয়া। সরকার প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে কোনোভাবেই এই অতি প্রয়োজনীয় সামগ্রী সংগ্রহ করতে পারছিলো না কোথাও থেকে। তখন এই এক টুইগি ফরেস্ট তাঁর ব্যক্তিগত যোগাযোগে ৩২ কোটি ডলারের স্বাস্থ্য-সুরক্ষার পোশাকসহ ১ কোটি টেস্ট কিট এনে দিয়েছিলেন চীন থেকে। স্বভাবত চীনের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়া লেগে যাওয়ায় চটে যান তিনিও। উড়ে যান মেলবোর্নে দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী গ্রেগ হান্টের প্রেস ব্রিফিং এ। হাজির হন সদ্য অস্ট্রেলিয়াকে কটাক্ষ করা দেশ চীনের ভিক্টোরিয়ার কনসাল জেনারেল লং জাওকে সঙ্গে নিয়ে। সেখানে আবার বক্তব্য দেওয়ার সুযোগও করে দেন তাঁকে। লং জাও-ও কম যান না, স্মরণ করিয়ে দেন চীনের স্বাস্থ্য-সামগ্রী দিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে সহযোগিতার কথা। এ সময় গ্রেগ হান্ট অনেকটা মুখ গোমরা করে-ই দাঁড়িয়েছিলেন পাশে। এ নিয়েও পানি অনেক ঘোলা হয়েছে। কিভাবে ওই কনসাল জেনারেল একটা স্পর্শকাতর সময়ে ওখানে শুধু উপস্থিত নয়, বক্তব্যও দিলেন। জাও এর উপস্থিতি সংক্রান্ত স্পষ্ট বক্তব্য সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়নি তবে জানা গেছে, ওই স্বাস্থ্য-সামগ্রী বিনামূল্যে পাওয়া নয়, অস্ট্রেলিয়া সরকারকেই বহন করতে হচ্ছে এর যাবতীয় মূল্য।
টুইগি ফরেস্টদের লোহা বা আকরিকের ওপর এখনো আঁচড় পড়েনি তবে সোমবার অস্ট্রেলিয়া থেকে আমদানিকৃত বার্লি বা যবের ওপর ৮০ শতাংশ পর্যন্ত কর বসানোর কথা জানিয়েছে চীন। আবার গতকাল মঙ্গলবার স্থগিত করেছে অস্ট্রেলিয়ার মাংস আমদানি। ফলে শুধু সরকার নয়, পুরো অস্ট্রেলিয়ার কপালে-ই দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে একটা। কারণ অস্ট্রেলিয়ার ৮৮ শতাংশ বার্লি রপ্তানি হয় চীনে এবং অস্ট্রেলিয়ার যে প্রধান ৪টি মাংস ব্যবসার আমদানি স্থগিতাদেশ প্রাপ্ত হয়েছে তাদের ৩৫ শতাংশ মাংস রপ্তানি হতো চীনে।
অস্ট্রেলিয়া অভিবাসী দেশ। ফলে, অস্ট্রেলিয়ানদের মাঝে জাতীয়তাবাদ চেতনা কিছুটা কম। সরকারও অনেকটা দায়িত্বশীল চাকরিজীবীর মত। তাই অস্ট্রেলিয়া সরকার চীনের এই তিক্ততাকে নিয়ে কোন পথে হাঁটছে পুরোপুরি বুঝতে সময় নিবে। তবে এখন যে অবনতির দিকে যাচ্ছে সেটা পরিষ্কার। এর থেকে উত্তরণে কিছুটা পরামর্শ দিয়েছেন সিডনির ইউনিভার্সিটি অব নিউ সাউথ ওয়েলসের আইন অনুষদের জ্যৈষ্ঠ প্রভাষক ওয়েইহুয়ান জাও। তিনি চীনা বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ান শিক্ষাবিদ। তিনি বলেন, চীনের সঙ্গে ট্রাম্পের বাণিজ্য-যুদ্ধ দূরে রেখে অস্ট্রেলিয়াকে উত্তেজনা হ্রাস করতে এবং চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করতে এখন-ই পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। কারণ অস্ট্রেলিয়ান গ্রাহকের কাছে চীন এখনো অপূরণীয়। অন্যদিকে, চীনের এই শক্ত আচরণ অস্ট্রেলিয়ার জন্য ঘুম-জাগানিয়া ধাক্কা বলে বর্ণনা করছেন অনেকে। বাকিটা অস্ট্রেলিয়ার উপর নির্ভর করবে তাঁরা কি জেগে উঠবে নাকি ভাসবে বসন্তের হাওয়ায় আরো কিছুকাল। তবে পিটার হার্টচার তাঁর নিবন্ধে বলেছেন, চায়নার কাছে আমাদের বিক্রীত লোহা যেন আমাদের পায়ের শেকল হয়ে ফিরে না আসে সে দিকেও নজর রাখতে হবে!
কাউসার খান: অভিবাসন আইনজীবী, সিডনি, অস্ট্রেলিয়া। ইমেইল: immiconsultants@gmail.com
|