মেলবোর্নে সন্ত্রাসবাদের দায়ে আটক বাংলাদেশি ছাত্রীর বিচার শুরু
কাউসার খান: অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে বাড়ির মালিককে ছুরিকাঘাতের মাধ্যমে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে আটক বাংলাদেশী ছাত্রী মোমেন সোমা’র বিচারকার্য শুরু হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মোমেন সীমার জবানবন্দি পেশ করেছে পুলিশ। মধ্যপ্রাচ্য ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) এর পক্ষ হয়ে কাউকে হত্যার অভিপ্রায় নিয়ে মোমেন অস্ট্রেলিয়ায় আসে বলে জানিয়েছে পুলিশ। মোমেনা’র দেয়া জবানবন্দির ওপর ভিত্তি করে পুলিশ তার বিরুদ্ধে হত্যা-চেষ্টা ও সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ আরোপ করেছে।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি উত্তর মেলবোর্নের মিল পার্কের এক বাড়িতে রজার সিনগারাভেলু নামের ৫৬ বছর বয়সী এক অস্ট্রেলীয় নাগরিককে ঘুমন্ত অবস্থায় ছুরি দিয়ে মারাত্মক জখম করে মোমেন। এ ঘটনার দুই দিন আগে রজারের বাসায় ভাড়াটিয়া হিসেবে ওঠেন মোমেন। ২৫ বছর বয়সী মোমেন শিক্ষার্থী ভিসায় মেলবোর্নে লাট্রোব বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসেছিলেন। রজারকে হত্যার চেষ্টা করার ঘটনায় পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে মোমেন তার সাথে আইএস এর যোগসূত্র রয়েছে বলে স্বীকার করে। রজারের সাথে তার ব্যক্তিগত কোনো রেষ নেই জানিয়ে মোমেন বলেন, “সে রজারই হতে হবে এমন না, যে কেউ হতে পারত। রজারকে সহজে হত্যা করা যেত আর তাই তাকে হত্যার চেষ্টা করেছি।”
আটক করার ঘন্টাখানেকের মধ্যেই জিজ্ঞাসাবাদে মোমেন সকল প্রশ্নের শান্তভাবে স্পষ্ট উত্তর দেয় বলে জানায় পুলিশ। মোমেন আরও বলেন, “ঘটনার দিন সকালে আমি আইএস এর গণমাধ্যম শাখা আল হায়াতে প্রচারিত একটি ভিডিও দেখেছিলাম। ওই ভিডিওটির শিরোনাম ছিল ‘যুদ্ধের আগুন’। আমি দায়বদ্ধ অনুভব করছিলাম।” পুলিশ মোমেনা'র জবানবন্দি ব্যাখ্যা করে বলে, ওই ভিডিওটি দেখার পর নিজেকে পরাজিত বলে মনে করে মোমেন। ভিডিওটির মতো ধর্মযুদ্ধে অংশ নিতে না পারার ক্ষোভ জন্মায় তার মধ্যে। তাই আর কিছু না ভেবেই রান্নাঘর থেকে ছুরি নিয়ে রজারের ওপর হামলা চালায় মোমেন। মোমেনা'র আইনজীবী বলেন, হত্যা-চেষ্টা ও সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে মোমেন সম্ভবত দোষী সাব্যস্ত হয়ে যেতে পারেন।
কাউসার খান, অভিবাসন আইনজীবী, ইমেইলঃ kawsark@gmail.com
|