bangla-sydney.com News and views of Bangladeshi community in Australia
সিডনিতে মাতৃভাষা স্মৃতিসৌধের অবমাননা!
কাউসার খানঃ অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে নবনির্মিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা স্মৃতিসৌধকে অবমাননা করার ঘটনা ঘটেছে। ভাষার মাসের প্রথম দিন গতকাল ১ ফেব্রুয়ারি কে বা কারা গোটা স্মৃতিসৌধে সাদা রং লাগিয়ে এর নকশা বিনষ্ট করার চেষ্টা চালায়। গত বছর ২১শে ফেব্রুয়ারি সিডনির বাঙালি পাড়া খ্যাত লাকেম্বার পার্শ্ববর্তী বেলমোর এর পিল পার্কে এ মাতৃভাষা স্মৃতিসৌধটি উন্মোচন করা হয়েছিল। সিডনি-প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্যোগে এবং সিডনির ক্যান্টারব্যারি-ব্যাংকসটাউন সিটি কাউন্সিলের তত্ত্বাবধানে এই স্মৃতিসৌধটি নির্মাণ করা হয়।
মাতৃভাষা স্মৃতিসৌধের এমন অবমাননাকর ঘটনাকে ‘কাপুরুষোচিত’ কাজ বলে আখ্যায়িত করেছেন সিটি কাউন্সিলের মেয়র খাল আশফোর। এ ঘটনায় তাঁর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে এ কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, ‘এমন একটি প্রতীকী স্মৃতিসৌধে নির্লজ্জ আক্রমণ কাপুরুষোচিত এবং সম্পূর্ণরূপে অযৌক্তিক। কি ধরনের ব্যক্তি এই রকম কিছু করতে পারে এবং কি কারণে, এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘কমিউনিটির কয়েকজনের সাথে আমি কথা বলেছি এবং এই প্রশ্নের উত্তর আমিও খুঁজছি। তবে আমি জানি যারা-ই এ কাজ করেছে তারা ভালো করেনি। তারা কমিউনিটিকে মর্মাহত করেছে। তিনি আরো জানান, কাউন্সিল কার্যালয়ের পক্ষ থেকে আজ সকালেই স্মৃতিসৌধটি আগের জায়গায় ফিরিয়ে নেওয়ার কাজ সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিয়ে করা হয়েছে। এ ঘটনার দ্রুত তদন্তের কাজ করবে কাউন্সিল।’
স্মৃতিসৌধের এমন অবমাননায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সিটি কাউন্সিলের সদ্য নির্বাচিত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নারী কাউন্সিলর সাজেদা আক্তার। তিনি বলেন, ‘খুবই মন ভেঙে দেওয়ার মতো একটা ঘটনা ঘটেছে। বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশ পরিচয়ের বাহক একটি স্মৃতিসৌধের এমন অবমাননা খুবই কষ্টের।’
দেশটিতে বসবাসরত সিডনি-প্রবাসী সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তিরা এখানেও আমাদের পিছু ছাড়ে নি। তবে আমরাও ভাষার জন্য, স্বাধীনতার জন্য প্রাণ দেওয়া জাতি। আমরা হার মানব না। এঁদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক।’ সিডনির ক্যাম্বারল্যান্ড সিটি কাউন্সিলের বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আরেক কাউন্সিলর সুমন সাহা বলেন, ‘বাংলা সংস্কৃতির ধারা এদেশে শুরু হওয়ার আগেই শেষ করে দেওয়া হচ্ছে। এসব ধ্বংসাত্মক কাজ এর মাধ্যমে বহু-সাংস্কৃতিক অস্ট্রেলিয়ার বৃহত্তর জন-সমাজে বাংলাদেশকে ছোট করা হচ্ছে।
গেল বছর প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার অস্ট্রেলীয় ডলার ব্যয়ে এ স্মৃতিসৌধটি নির্মাণ করা হয়। তবে স্মৃতিসৌধটি নির্মাণের পরপরই এর নকশা নিয়ে বাংলাদেশিদের মধ্যে মতভেদ তৈরি হয়েছিল। নতুন সৌধটির নকশা অমর একুশের গুরুত্ব প্রতিফলন করে কিনা এমন মতভেদের ভিত্তিতে স্থানীয় বাংলাদেশিদের মধ্যে এ বিভাজন দেখা দিয়েছিল।
Share on Facebook               Home Page             Published on: 6-Feb-2022