নির্বাচনের আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেট প্রকাশ শক্তিশালী অর্থনীতিতে জোর দেবে অস্ট্রেলিয়া কাউসার খান
অস্ট্রেলিয়ার চলতি অর্থবছরের বাজেট প্রকাশ করা হয়েছে। গত ৮ মে সন্ধ্যায় অর্থমন্ত্রী স্কট মরিসন দেশটির সংসদে বাজেট পেশ করেন। এটি আগামী ফেডারেল নির্বাচনের আগে সরকারের শেষ বাজেট। এ সময় দেশটির প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুল থেকে বিরোধীদলীয় নেতা বিল শর্টেন সহ সকল গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধি সংসদে উপস্থিত ছিলেন। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে দেশটির অর্থনীতিকে আরও সমৃদ্ধ করতে পরিকল্পনা করা হয়েছে। দেশটির মধ্যম আয়ের নাগরিকদের এবং ছোট ও মাঝারি ব্যবসার কর লাঘব করে দেওয়া এবং আরও কর্মসংস্থান করাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে এবারের বাজেটে। পাশাপাশি প্রবীণ নাগরিকদের আরও বর্ধিত সহায়তা প্রদানও গুরুত্ব পায় বাজেটের মূল অংশে। রয়েছে অবকাঠামোগত উন্নয়নের বেশ বড় কয়েকটি প্রকল্পও।
জীবন যাপনের ব্যয় হ্রাস ও প্রবীণ নাগরিকদের সহায়তা বৃদ্ধি বাজেট প্রকাশকালে মরিসন দেশটির বার্ষিক আয়ের একটি সার-সংক্ষেপ পেশ করেন। তিনি জানান, গত অর্থবছরের চেয়ে এ বছর দেশটির বার্ষিক আয় ৬.৫৫ শতাংশ বাড়বে। গত অর্থবছরে দেশটির রাজস্ব আয় ছিল প্রায় ৪৫৬.২ বিলিয়ন অস্ট্রেলীয় ডলার। এ বছর সরকারের প্রায় ৪৮৬.১ বিলিয়ন ডলারের রাজস্ব আয় করার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী অর্থবছরে এ আয় বেড়ে ৫০০ বিলিয়ন পেরুবার সম্ভাবনার কথাও জানান অর্থমন্ত্রী স্কট মরিসন। তবে রাজস্ব বৃদ্ধির সাথে সাথে সরকার ব্যয় সংকোচনের চেষ্টা করবে এবং বাজেট ঘাটতি ১৪.৫ বিলিয়ন ডলারে নামিয়ে আনার আশা ব্যক্ত করেন তিনি। গত অর্থবছরের বাজেট ঘাটতির পরিমাণ ছিল ১৮.২ বিলিয়ন ডলার। পাশাপাশি প্রবীণ নাগরিকদের বর্ধিত সহায়তা প্রদান করা হবে এবং মেডিকেয়ার লেভি বাড়ানো হবে না।
মধ্য ও নিম্নবিত্ত নাগরিকদের আয়কর হ্রাস ও কালো টাকা ঠেকাতে কঠোর ব্যবস্থা অস্ট্রেলিয়ার ব্যক্তিগত আয়কর কমাতে ৭ বছরের নতুন আয়কর পরিকল্পনা করেছে সরকার। মধ্য ও নিম্নবিত্ত নাগরিকদের জন্য এ পরিকল্পনা কার্যকর করা হবে। যাদের নিম্ন ও মধ্যম আয় তাদের আয়কর ৫৩০ ডলার পর্যন্ত ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব রাখা হয় বাজেটে। এদিকে দেশটির কালো টাকা পাকড়াও করতে আয়কর ব্যবস্থা আরও কঠোর করার প্রস্তাব রাখা হয় বাজেটে। এতেসংক্রান্ত একটা টাস্কফোর্স গঠন করা হবে।
ছোট ও মাঝারি ব্যবসার কর হ্রাস ছোট ও মাঝারি ব্যবসাকে দেশের অর্থনীতির একটি বড় অংশ হিসেবে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার এবারের বাজেটে। তাই এ ধরনের ব্যবসাগুলোকে উৎসাহিত করতে ছোট ও মাঝারি ব্যবসার কর হ্রাস করার প্রস্তাব রাখা হয় বাজেটে। যেসব ব্যবসার বার্ষিক আয়ব্যয় ৫০ মিলিয়ন ডলার তাদের কর প্রদানের হার ৩০ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে। বড় ব্যবসাকে গবেষণা ও উন্নয়ন খাতে বিনিয়োগ করতে উৎসাহিত করতে এ খাতের করও কমিয়ে দেওয়া হবে।
প্রি-স্কুল উন্নয়ন ও সিডনির পশ্চিমাঞ্চলে বিমানবন্দর নির্মাণে বরাদ্দ অস্ট্রেলিয়ার শিক্ষার মান আরও বৃদ্ধি করার বিষয়টি প্রাধান্য পায় বাজেটে। আগামী চার বছরের জন্য প্রায় ২.২ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ রাখা হয়েছে স্কুলগুলোকে উন্নত করতে। প্রি-স্কুল ও কিন্ডারগার্ডেন এর জন্য আরও ৪.৪ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ রাখা হয়। এছাড়া অস্ট্রেলিয়ার অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৭৫ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে মেলবোর্ন বিমানবন্দর রেলওয়ে সংযোগ নির্মাণ, ব্রুস হাইওয়ে, পার্থ মেট্রো, এবং সিডনির পশ্চিমাঞ্চলে একটি নতুন বিমানবন্দর নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।
সূত্র : অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুলের প্রেরিত ইমেইল
কাউসার খান, সিডনি, অস্ট্রেলিয়া
|