কেম্বেলটাউন সিটি কাউন্সিল নির্বাচন ২০২৪ স্থানীয় লেবার পার্টির নির্বাচনী প্রচারণা ও তহবিল সংগ্রহ অনুষ্ঠান
কায়সার আহমেদ: গত শনিবার ১৩ই জুলাই ২০২৪ তারিখে স্থানীয় লেবার পার্টির আয়োজনে মহাসমারোহে অনুষ্ঠিত হলো নির্বাচনী প্রচারণা ও নির্বাচনী তহবিল সংগ্রহের জাঁকজমক পূর্ণ অনুষ্ঠান। অস্ট্রেলিয়ার অঙ্গ রাজ্য নিউ সাউথ ওয়েলস এর ‘স্থানীয় সরকার নির্বাচন ২০২৪’ একযোগে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী ১৪ই সেপ্টেম্বর। সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য “কেম্বেলটাউন সিটি কাউন্সিল নির্বাচন ২০২৪”কে সামনে রেখে এ আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে স্থানীয় লেবার পার্টির দলনেতা জনাব ডার্সি লাউন্ড আসন্ন কেম্বেলটাউন সিটি কাউন্সিল নির্বাচন ২০২৪ এ দলীয় প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেন। তারা হলেন ১। কাউন্সিলর ডার্সি লাউন্ড ২। কাউন্সিলর মেগ ওটস ৩। কাউন্সিলর মাসুদ চৌধুরী ৪। কাউন্সিলর ক্যারেন্ট হান্ট ৫। ইসাবেলা উইসনিস্কা ৬। আশিকুর রহমান এ্যাশ ৭। ডেভিড ওয়েবলিন ৮। পারভেজ খান ৯। মিনা স্কান্দারি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির আসন অলংকৃত করেন রাজ্য সরকারের স্থানীয় সরকার মন্ত্রী এবং লিডার অব দ্যা লেজিসলেটিভ এ্যাসেম্বলি জনাব রন হোনিগ এমপি। তিনি আগামীতে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে লেবার পার্টির বিজয় নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নির্বাচন সময়কালীন সকলকে দলবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন। তিনি ক্ষমতাসীন লেবার রাজ্য সরকারের জনস্বার্থে করা উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডও তুলে ধরেন।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে লেবার পার্টির রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ যারা উপস্থিত ছিলেন তার মধ্যে ফেডারেল মেম্বার ফর ম্যাকারথার ড. মাইক ফ্রিল্যান্ডার, ফেডারেল মেম্বার ফর ওয়েরিয়া এ্যান স্ট্যানলি, শিল্প মন্ত্রণালয় এর দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী আনুলাক চন্টিভং এমপি, কারিশমা কালিয়ান্দা এমপি, নেইথান ম্যাথিউ হ্যাগাটি এমপি, ক্যামডেন সিটি কাউন্সিলের মেয়র এ্যাশলি ক্যাগনি। অনুষ্ঠানটি সামগ্রিক ভাবে এমসি হিসেবে পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন গ্রেগ ওয়ারেন এমপি।
কেম্বেলটাউন সিটি কাউন্সিল অত্র রাজ্যের রাজধানী সিডনির অন্তর্ভুক্ত। কাউন্সিলর পদ ১৫টি। কাউন্সিলর নির্বাচনের পর নির্বাচিত কাউন্সিলরগন তাদের মধ্যে থেকে একজন মেয়র ও ডেপুটি মেয়র নির্বাচিত করে থাকেন। সেক্ষেত্রে লেবারকে চেম্বারে মেজরিটি বা ক্ষমতা পেতে ৮টি কাউন্সিল পদের সমর্থন প্রয়োজন হবে। অস্ট্রেলিয়াতে সরকারের সকল পর্যায়ে পার্লামেন্টারিয়ান ফর্মকে অনুসরণ করা হয়ে থাকে।
অস্ট্রেলিয়ায় লেবার পার্টি অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল। গণতন্ত্রের সৌন্দর্যকে সম্মান করে, ১৫টি কাউন্সিলর পদ থাকলেও অন্যান্য স্বতন্ত্র ও ছোট দলগুলোকে সুযোগ করে দেবার লক্ষে ঐতিহ্যগত প্রথাকে অনুসরণ করে লেবার পার্টি সবগুলো পদের জন্যে দলীয় প্রার্থী দেয় না। অত্র এলাকায় অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মধ্যে লেবার ও লিবারেল পার্টি অন্যতম বড় দল। বিগত নির্বাচনী ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় অত্র কাউন্সিলে বেশ সংখ্যক স্বতন্ত্র ও অন্যান্য দল থেকে প্রার্থীরা কাউন্সিলর পদে জয়ী হয়ে থাকে।
কাউন্সিল এলাকায় বর্তমানে প্রচুর বাংলাদেশী বাঙালি সহ অন্যান্য মাইগ্রেন্ট প্রবাসীদের বসবাস। এর মধ্যে বাংলাদেশী, ভারতীয়, নেপালজি ও পাকিস্তানী, আফগানিস্তান প্রবাসীরা অন্যতম। এবার লেবার পার্টি মনোনীত প্রার্থীদের মধ্যে ২জন বাংলাদেশী, ১জন পাকিস্তানী ও ১ জন আফগান বংশোদ্ভূত। উল্লেখযোগ্য যে বাংলাদেশীদের মধ্যে জনপ্রিয় কাউন্সিলর মাসুদ চৌধুরী এবার তৃতীয় বারের মত কাউন্সিলর পদের জন্যে লড়বেন। তিনি বর্তমানে স্থানী লেবার পার্টির কাউন্সিলর ও ডেপুটি লিডারের দায়িত্ব পালন করছেন। এবারের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বাংলাদেশী নতুন মুখ আশিকুর রহমান এ্যাশ তার দলীয় দক্ষতা, কর্মকাণ্ড ও জনপ্রিয়তার ভিত্তিতে যোগ্য প্রার্থী হিসেবে লেবার পার্টির মনোনীত দলীয় প্রার্থীদের মধ্যে নিজের স্থান করে নিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে লেবার পার্টির সমর্থনে প্রচুর প্রবাসী বাংলাদেশীদের উপস্থিত ছিলো লক্ষণীয়। কমিউনিটির নেতৃবৃন্দের মধ্যে যারা উপস্থিত ছিলেন তাদের মধ্যে জনাব গামা কাদির, জনাব মনিরুল হক জর্জ, ব্যারিস্টার সিরাজুল হক, খালেদা কায়সার, মাকসুদুর রহমান সুমন, মোবারক হোসেন, লিয়াকত আলী লিটন, আব্দুস সোবহান, মোস্তাফিজুর রহমান, মাহফুজুর রহমান খসরু, অপু সারোয়ার, ড. রফিকুল ইসলাম ও আব্দুল জলিল অন্যতম।
অনুষ্ঠান শেষে দলনেতা ডার্সি লাউন্ড এর সাথে আলাপকালে জানা যায় যে তিনি নিশ্চিত যে দল মনোনীত প্রার্থীগন সর্বদা জনস্বার্থে জনতার পাশে থেকে কাজ করে আসছেন এবং আগামী নির্বাচনে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ পদে জয়ী হবেন।
|