বাংলাদেশ হাইকমিশন ক্যানবেরায় জাতীয় শোক দিবস পালিত
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
ক্যানবেরা, ১৫ আগস্ট ২০১৭, বাংলাদেশ হাইকমিশন ক্যানবেরায় স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪২ তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস যথাযথ মর্যাদা এবং ভাব-গম্ভীর পরিবেশের মাধ্যমে পালন করা হয়।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সন্ধ্যা ৬:৩০ ঘটিকায় হাইকমিশন প্রাঙ্গণে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি”। অনুষ্ঠানের শুরুতে, ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যসহ নিহত সকল শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দু’আ ও মোনাজাত পাঠ করা হয়। এরপর মান্যবর হাইকমিশনার কাজী ইমতিয়াজ হোসেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এবং উপস্থিত সবাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের শহীদ সদস্যদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের উদ্দেশ্যে ১ মিনিট নীরবতা পালন করেন। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কর্তৃক প্রেরিত বাণী পাঠ করা হয় এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনের উপর প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।
আলোচনাপর্বে মান্যবর হাইকমিশনার সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের নিহত সদস্যদের প্রতি শোকাহত চিত্তে গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বলেন, বাঙ্গালী জাতির ইতিহাসে ১৫ ই আগস্ট এক কলঙ্কিত অধ্যায়। জাতির পিতা ছিলেন জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা এবং স্বাধীনতার রূপকার। এই মানুষটির জন্ম না হলে বাংলাদেশের জন্ম হতো না বলে তিনি বিশ্বাস করেন। তিনি আরোও বলেন যে, স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশকে আধুনিক ও উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু বিশাল কর্মকাণ্ড গ্রহণের পাশাপাশি গ্রহণ করেছিলেন “সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সাথে বৈরিতা নয়”- এই পররাষ্ট্র নীতি। উন্নয়নশীল দেশসমূহের মধ্যে অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন প্রতিষ্ঠা ও রাষ্ট্রসমূহের শান্তিপূর্ণ সহবস্থান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনে যোগদান করেন। তিনি জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাতে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করেন এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগদান করে বাংলাদেশকে সবার কাছে তুলে ধরেন। যার ফলশ্রুতিতে যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনে পেয়েছেন আন্তর্জাতিক সহযোগিতা। মান্যবর হাইকমিশনার জাতির জনকের আদর্শকে হৃদয়ে ধারণ এবং নতুন প্রজন্মের কাছে তাঁর আদর্শকে পৌঁছে দেয়ার জন্য সবার প্রতি অনুরোধ জানান। একই সাথে বর্তমানে জাতির জনকের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার উদাত্ত আহবান জানান।
আলোচনা সভায় অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী বাংলাদেশীরা অংশগ্রহণ করেন। তাঁরা জাতির পিতাকে কৃতজ্ঞ চিত্তে স্মরণ করেন এবং আবেগাপ্লুত হয়ে পরেন। তাঁরা বলেন জাতির পিতার দূরদর্শী, সাহসী নেতৃত্বের কারণে বাঙ্গালী জাতি আজ স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়েছে। ঘাতক চক্র বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করলেও তাঁর স্বপ্ন ও আদর্শের মৃত্যু ঘটাতে পারেনি। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন জাতির পিতার নাম এ দেশের লাখো-কোটি বাঙ্গালির অন্তরে চির অমলিন, অক্ষয় হয়ে থাকবে। তাঁরা শোককে শক্তিতে পরিণত করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার জন্য কাজ করে যাবেন মর্মে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
ইতোপূর্বে সকাল ৯:০০ ঘটিকায় জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করণ এবং ১৫ ই আগস্টে নিহত সকল শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দু’আ ও মোনাজাত পাঠ এর মধ্য দিয়ে দিবসটির কর্মসূচী শুরু হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে হাইকমিশনের সকল কর্মকর্তা/কর্মচারী ও প্রবাসী বাংলাদেশীরা উপস্থিত ছিলেন।
পরিশেষে সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।
বাংলাদেশ হাইকমিশন ক্যানবেরা, অস্ট্রেলিয়া
|