অস্ট্রেলিয়ার এসফিল্ড কাউন্সিল লাইব্রেরীতে ‘একুশে কর্নার’এর উদ্বোধন
অস্ট্রেলিয়ার সিডনীতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন এবং পৃথিবীর প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মৃতিসৌধ এর দশম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে স্থানীয় মেয়র লুসিল মেকেনা ও এমপি জো হেলেন এসফিল্ড কাউন্সিল লাইব্রেরীতে একুশে কর্নার’এর শুভ উদ্বোধন করে পৃথিবীর সকল মাতৃভাষা সংরক্ষণে নতুন অধ্যায়ের ঐতিহাসিক শুভ সূচনা করেছেন। বিশ্বের প্রতিটি লাইব্রেরীতে অঞ্চল ভিত্তিক ব্যবহৃত প্রতিটি ভাষার বর্ণমালা সংগ্রহ করার প্রক্রিয়া এবং পরবর্তীতে তা লাইব্রেরির সেবা কর্মসূচীতে অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে মাতৃভাষার চর্চা ও সংরক্ষণের গুরুত্বকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়াই একুশে কর্নারের দার্শনিক ভিত্তি। এই উদ্বোধনের মাধ্যমে পৃথিবীর প্রতিটি লাইব্রেরীতে একুশে কর্নার প্রতিষ্ঠার পথ সহজতর হবে এবং একুশের বৈশ্বিক প্রাতিষ্ঠানিকতা অর্জনের মাধ্যমে সকল মাতৃভাষা সংরক্ষণে ইউনেস্কোর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপনের লক্ষ অর্জনে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। স্থানীয় বিভিন্ন ভাষাভাষীর গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, লাইব্রেরী কর্মকর্তাসহ বাংলাদেশ সরকারের সদ্য অবসরপ্রাপ্ত সচিব জনাব এন আই খান, এবং আরটিভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব আশিকুর রহমান বিশেষ অতিথি হিসেবে এই ঐতিহাসিক মুহূর্ত প্রত্যক্ষ করেন। এর মাধ্যমে মাদার ল্যাঙ্গুয়েজেস কন্সারভেশন মুভমেন্ট ইন্টারন্যাশনাল ইনক এর প্রবর্তিত এই বৈশ্বিক দার্শনিক কৌশল বাস্তবে পা রাখল। উল্লেখ্য একুশে কর্নার দর্শনের প্রবর্তক জনাব নির্মল পালের একটি প্রবন্ধ, “অস্ট্রেলিয়ান লাইব্রেরী ও ইনফরমেশন এসোসিয়েশনে’র নিয়মিত ম্যাগাজিন ইনসাইটের মে ২০১৫ সংখ্যায় “ওয়ান স্মল শেল্ফ, ওয়ান জায়ান্ট স্টেপ ফরোয়ার্ড” নামে ছাপিয়ে মাতৃভাষা সংরক্ষণে সকল লাইব্রেরীতে একুশে কর্নার প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব বিশেষভাবে প্রচার করে।
দুইদিনব্যাপী আয়োজিত অনুষ্ঠানের প্রথম দিনে পৃথিবীর প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মৃতিসৌধ এর দশম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে এডেলেইড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গিলাড জুকারম্যান, সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাইকেল ওয়ালস, সিডনী ভাষা উৎসবের ডঃ রেনার কারজ গবেষণা ভিত্তিক বক্তব্য রাখেন। মিস তিথন পাল ও মি নির্মল পালের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্মৃতিসৌধের বিভিন্ন মৌলিক বিষয় এবং মাদার ল্যাঙ্গুয়েজেস কন্সারভেশন মুভমেন্ট ইন্টারন্যাশনাল ইনক বৈশ্বিক কৌশলের উপর উপস্থাপনার পর বিভিন্ন ভাষাভাষীর বিশিষ্ট গুণীজন মাতৃভাষা সংরক্ষণের বৈশ্বিক কৌশলগুলিকে বাস্তবভিত্তিক বলে প্রশংসা করেন এবং বাস্তবায়নে সকলের একসাথে কাজ করার প্রতি গুরুত্ব দেন।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন এসফিল্ড কাউন্সিলের মেয়র লুসিল মেকেনা এবং প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হাই কমিশনার মান্যবর কাজী ইমতিয়াজ হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মান্যবর এন্থনি আলবেনিজি এমপি এবং বাংলাদেশ সরকারের সদ্য অবসর প্রাপ্ত সচিব জনাব এন আই খান, এবং আরটিভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব আশিকুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
দ্বিতীয় দিনে এসফিল্ড কাউন্সিল লাইব্রেরীতে একুশে কর্নার’এর শুভ উদ্বোধন ছাড়াও বিশেষ আকর্ষণ ছিল বিভিন্ন মাতৃভাষার বর্ণমালার প্রদর্শনী। দর্শকদের অনেকের মতে, মাতৃভাষার বর্ণমালার প্রদর্শনী তাঁদের জানামতে এটিই প্রথম। একশত দুইটি ভাষার বর্ণমালার প্রদর্শনীর পাশাপাশি ১০-৩০মি থেকে ৫টা পর্যন্ত সর্বমোট ১৩টি ভাষার ১৭টি সাংস্কৃতিক পরিবেশনা এসফিল্ড শহরে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপনের নতুন এক উদ্দীপনার সঞ্চার করে। এই সফলতায় সন্তুষ্টি টেনে এসফিল্ড কাউন্সিলের মেয়র লুসিল মেকেনা তাঁর সমাপনী বক্তব্যে আগামীতেও সকল ভাষাভাষীদের সমন্বয়ে আয়োজিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপনের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে আয়োজকদের আশ্বস্ত করেন।
Press Release, MLC Movement Internation Inc.
|