bangla-sydney













ঢাকা ইউনিভার্সিটি এলামনাই এসোসিয়েশন অস্ট্রেলিয়ার
বিজয় দিবস ২০২৩ উদযাপন


প্রেস বিজ্ঞপ্তিঃ গত ১৬ই ডিসেম্বর, “এসো মিলি বিজয়ের উল্লাসে, প্রাণের উচ্ছ্বাসে” এই শ্লোগানকে বুকে ধারণ করে ঢাকা ইউনিভার্সিটি এলামনাই এ্সোসিয়েশন অস্ট্রেলিয়া (DUAAA) উদযাপন করে বিজয় উৎসব ও বার্ষিক বনভোজন ২০২৩। সারাদিনব্যাপি এই অনুষ্ঠানটি উদযাপিত হয় Twin Shade Sails, Bicentennial Pk. Pathway, Sydney Olympic Park-এ।

এই শনিবারটি হয়ত অন্যদের জন্যে ছিল আর দশটি শনিবারের মতই সাধারণ। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থীদের জন্য ছিল এক অনন্য সাধারণ দিন। এই দিনটিতে তারা ফিরে যায় বিজয়ের আলোয় উদ্ভাসিত বাংলাদেশে বিজয় দিবসের উল্লাস নিয়ে এবং মেতে উঠে বনভোজনের আনন্দে। বন্ধুদের কাছে পেয়ে হারিয়ে যায় ফেলে আসা তারুণ্যে উচ্ছল ঝলমলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই দিনগুলোতে। তাই তো সেদিন শত ব্যস্ততার মাঝেও সিডনী, ক্যানবেরা, মেলবোর্ন থেকে প্রাণের টানে প্রায় আড়াই শতাধিক সাবেক শিক্ষার্থীরা পরিবার পরিজন নিয়ে যোগদান করে এই আনন্দ উৎসবে। বরাবরের মত এবারও অভূতপূর্ব সাড়া পড়ে যায় সাবেক শিক্ষার্থীদের মাঝে। অনুষ্ঠানের আগের দিন পর্যন্ত অনুরোধ আসতে থাকে নাম নিবন্ধনের কিন্তু সীমাবদ্ধতার কারণে অনেককেই নিবন্ধিত করা সম্ভব হয়নি। এই যে এতো সাড়া এসেছে সদস্যদের কাছ থেকে তা “ঢাকা ইউনিভার্সিটি এলামনাই এসোসিয়েশন অস্ট্রেলিয়া”-র বর্তমান কার্যকরী পরিষদের প্রতি তাদের আস্থা, বিশ্বাস ভালোবাসারই পরিচায়ক।

সকাল সাড়ে নয়টায় প্রাতরাশ ও চা পরিবেশনা, শুভেচ্ছা বিনিময় এবং আড্ডার মধ্য দিয়ে শুরু হয় দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠান এবং শেষ হয় বিকেল ছয়টায়। কয়েকটি পর্বে সাজানো ছিল এই আয়োজন। জাহিদ মাহমুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের প্রথমেই ছিল সমবেত কণ্ঠে বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় সঙ্গীত ও দেশাত্মবোধক গান - এতে অংশ নেয় শুভ্রা, হিমেল, তামিমা, আজিজুন ও আরও অনেকে, তবলায় ছিল সাকিনা। অ্যাকনলেজমেন্ট অব কান্ট্রি পাঠ করে ফারহান শফিক। দেশের গানের সাথে নাচ পরিবেশন করে নাবিলা। এরপর ছিল সভাপতির স্বাগত ভাষণ। ছোট ছেলেমেয়েরা আকাশে বাংলাদেশের প্রতীক লাল সবুজ বেলুন উড়িয়ে প্রকাশ করে বিজয়ের দিবসের আনন্দ।


কামরুল মান্নান আকাশ
সংগঠনের সভাপতির কামরুল মান্নান আকাশ আগত এলামনাই ও অতিথিদের শুভেচ্ছা ও বিজয় দিবসের রক্তিম অভিবাদন জানিয়ে তার বক্তব্যের শুরু করেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালনের আহবান জানান এবং তাঁদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন এই বিজয় ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পালন করেছে অগ্রণী ভূমিকা। তাই বাংলাদেশের ইতিহাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে চিরকাল। কার্যকরী পরিষদের সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন আমাদের আছে এক অসাধারণ ও উদ্যমী টিম, যা নিয়ে আমরা গর্বিত! তারা যা করে দায়িত্ববোধ, অঙ্গীকার ও সংগঠনের প্রতি ভালোবাসা থেকেই করে।

পরের পর্বে ছিল বিভিন্ন রকমের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। একে একে অনুষ্ঠিত হয় বিভিন্ন বয়সের ছেলে ও মেয়েদের চকলেট দৌড়, বস্তা দৌড়, মেয়েদের চামচে ডিম নিয়ে ভারসাম্য দৌড়, ও ছেলেদের দড়ি লাফানো প্রতিযোগিতা। মহিলারা অংশগ্রহণ করেন পিলো পাসিং প্রতিযোগিতায়। পুরুষদের জন্য ছিল দড়ি টানাটানি ও কপালে টিপ পরানো প্রতিযোগিতা। পুরুষদের এবং মহিলাদের এই প্রতিযোগিতাগুলি ছিল হৈ চৈ এবং আনন্দ-উল্লাসে ভরপুর। খেলাধুলার এই পর্বটির পরিকল্পনা ও পরিচালনায় ছিলেন লিঙ্কন শফিকুল্লাহ, জাহিদ মাহমুদ ও বিশ্ব চক্রবর্তী।






দুপুরে ছিল পরিপূর্ণ মধ্যাহ্ন ভোজ, সাথে ছিল চমচম ও তরমুজ। এর সাথে চলতে থাকে খাইরুল চৌধুরীর সঞ্চালনায় স্মৃতিচারণ, শখের গান, কবিতা, জোকস যা ছিল সবার জন্য উন্মুক্ত। ছাত্রজীবনের কথা বলতে যেয়ে তারা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। তারা বলেন জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় কাটিয়েছেন তারা এই বিশ্ববিদ্যালয়ে। শ্রেণীকক্ষের শিক্ষার বাইরেও অনেক কিছুই শিখিয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়।

এরপর পর শুরু হয় সবার কাঙ্ক্ষিত গানের আসর “সোনালী দিন” যাতে একক সঙ্গীত পরিবেশন করে শুভ্রা মুস্তারিন, হিমেল, তামিমা শাহরিন ও আজিজুন। সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিল মুনির বিশ্বাস, নার্গিস, কান্তা ও সাকিনা। জনপ্রিয় সব গানে মুখরিত হয়ে উঠে প্রাঙ্গণ। অনেক পুরানো জনপ্রিয় গানের সাথে কণ্ঠ মিলান আবেগপ্রবণ হয়ে যাওয়া শ্রোতারা।


র‍্যাফেল ড্র'র টিকেট বিক্রির মধ্য দিয়ে অসচ্ছল মেধাবী ছাত্রদের জন্য তহবিল সংগ্রহের উদ্যোগ নেয়া হয় এবং ছিল আকর্ষণীয় পুরস্কারও। কান্তা, তানিয়া, হাদী, লিঙ্কন, জাহিদ, খাইরুল, হায়াত টিকেট বিক্রিতে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। এ ছাড়াও নুসরাত জাহান স্মৃতি ও আবু সাঈদ তার কবিতার বই বিক্রির অর্থ তহবিলে দান করেন।

বিকেলে পরিবেশিত হয় মালই চা, সাথে ঝালমুড়ি ও কেক। নিকেশ নাগের বানানো ঝালমুড়ি, মিনি চৌধুরীর বানানো কাঁচা আমের ভর্তা ছিল লোভনীয়। মিলি ইসলাম করেছেন বাচ্চাদের জন্য ফেইস পেইন্টিং।

ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সেক্রেটারি রফিক উদ্দিন। তিনি সবাইকে সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানান এবং ভবিষ্যতে আরও ভালো অনুষ্ঠান উপহার দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। সিনিয়র সহসভাপতি গোলাম মাওলা যারা স্পন্সর করেছেন বিভিন্ন ভাবে তাদেরকে ধন্যবাদ জানান।

শেষ পর্বে ছিল পুরস্কার বিতরণ। ঢাকা ইউনিভার্সিটি এলামনাই এ্সোসিয়েশন অস্ট্রেলিয়ার লোগো সম্বলিত ক্রেস্ট ও আকর্ষণীয় পুরস্কার প্রদান করা হয় বিজয়ীদের মধ্যে।

সমবেত কণ্ঠে “পুরানো সেই দিনের কথা ভুলবি কি রে হায়” গানের মধ্য দিয়ে শেষ হয় এই মিলন মেলা। প্রচণ্ড তাপ-দাহ উপেক্ষা করে দিনভর থেকেও যেনো কারও ফিরে যেতে মন চাইছিলনা। ফিরে যাওয়ার সময় সবাই পরবর্তী অনুষ্ঠানে প্রতীক্ষায় থাকবেন বলে জানান।

অনুষ্ঠানটির সার্বিক পরিচালনায় ছিলেন সহযোগী সাধারণ সম্পাদক লিঙ্কন শফিকুল্লাহ, ও ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সেক্রেটারি রফিক উদ্দিন।

পুরো অনুষ্ঠানটি সফল করে তুলতে সহসভাপতি গোলাম মাওলা, কোষাধ্যক্ষ হালিমুসসান, সদস্য নার্গিস বানু, নুসরাত হুদা কান্তা, তানিয়া ফারজানা, সাকিনা আক্তার, আহসানুল হক হাদী, নুসরাত জাহান সৃতি, হায়াত ও সেলিম মমতাজ অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। এছাড়াও সাহায্য করেছে রুমকি, সাইফুল, হালিম, নাজমুল, ও আতিক।




Facebook photos...





Share on Facebook               Home Page             Published on: 18-Dec-2023

Coming Events: