জোছনার স্রোতে / দীলতাজ রহমান
আগের অংশ
আমাকে প্রবোধ দিতেই কি ছোটমা বললো-‘ঠকা-জেতার কথা এখানে থাকতে নেই। তুমি ওকে ভালোবেসেছিলে। ভালোবাসতে পেরেছিলে। সেটুকুও তো সঞ্চয়। জীবনে ওটুকু তোমার কাজে আসবে।’
ছোটমার প্রতি আমার জড়তা কাটতে দেখে ফেরদৌসও সহজ হয়ে গেছে। এতেই জগতে যেন আর কোনো দুঃখ নেই। চাওয়ারও নেই। জনম জনম এমনি একটি সংসারের স্বপ্ন দেখেই বুঝি সে সার্থক হয়েছে। ভাবখানা তার সারাক্ষণ এরকম।
অধিক রাতে এসে চারটে খেয়ে শুয়ে পড়া। দুপুরে খেয়ে ছুট। ছুটিছাটা বলেও কেন শব্দ আমার বাবার অভিধানে নেই। আর এতেই যেন ছোটমার স্বস্তি। ছোটমার গ্রাম থেকে বাবা, মা ভাই, বোন-আত্মীয়-স্বজন যে-ই আসছে, ছোটমা তাদের চোখে ধাঁধাঁ লাগিয়ে দেয়। ওর শেকড় যেন বহু আগে থেকে এ সংসারে গ্রোথিত। ওরা যেন তার কেউ নয়। শুধু কদিন একসঙ্গে ছিলো এই যা। যারা বোঝার তারা ঠিকই বুঝে যায়, পুরনো সব বন্ধনকে কী নির্মম কৌতুকে ছেঁড়া জালের মতো ঝুলিয়ে দিয়েছে এই মেয়ে। ক্রমশ এতে কৌতূহল বাড়তেই থাকে সবার। আর তাদের সঙ্গে যোগসূত্রটা সেখানেই ঠেকে থাকে।
ছোটমার সঙ্গে এখন আমার খুব ভাব হয়ে গেছে। হঠাৎ প্রচ- ঝড়ের কবলে পড়ে কোনো পাখির যেমন পল্লবিত কোনো শাখার সঙ্গে হয়। একা ঘরে যখন আমার চোখ বেয়ে শুধু পানি পড়ে, ছোটমা কাছে এসে দাঁড়ালে তা উথলে ওঠে। ছোটমাকে সব কথা বলি এখন। মা মারা যাওয়ার সময় মা’র কষ্ট দেখে আমারও যে কষ্ট হয়েছিলো। এবং শোভনের সঙ্গে আমার কেমন করে কোথায় পরিচয় হয়েছিলো। কিছু দুর্লভ স্মৃতির কথাও তাকে অকপটে বলা হয়ে যায়। সব শুনে ছোটমা কেমন বিচলিত হয়ে ওঠে। মা থাকলে যেমন হতো।
আমার রুমটি ড্রয়িং রুমের পাশে। তারপর ফেরদৌসের। কেউ এলে কাজের লোকেরা কাছে না থাকলে আমাকেই গিয়ে দরজা খুলে দিতে হয়। তাছাড়া সারাদিন শুয়ে-বসেই তো কাটাই। লেখাপড়া কি বন্ধ হয়ে গেলো আমার। বাবা কোনদিনই তো খেয়াল করেননি। মা-ই আমাদের সবদিক সামলেছেন। শোভনের সঙ্গে জড়িয়ে কটা বছর ঘোরের মধ্যে কেটে গেছে। একবার অনার্স ফেল করলাম আর একবার পরীক্ষা দিলাম না। ছোটমা অবশ্য সারাক্ষণ বকছে ভালো করে লেখাপড়া শুরু করতে। বলছে এবার পরীক্ষা দিতেই হবে। আমাকে সঙ্গে নিয়ে নিজেই কলেজের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। বাবা শুধু তার মাপের উপদেশ পরামর্শ আর থোকা থোকা টাকার বান্ডিল হাতে ধরিয়ে দিয়ে ক্ষান্ত। অথচ ফেরদৌসের লেখাপড়া তদারকিটা তিনি করেন ঢের বেশি গুরুত্ব দিয়ে।
শহরের একঘেয়ে কোলাহল আর কঠিন প্রাচীর আবদ্ধ হয়ে থাকা মানুষগুলোর ঋতুজ্ঞান থাকে না বললেই চলে। শুধু গরম আর শীতের পরশটুকুর সঙ্গে তারা পরিচিত হয়ে থাকে আজীবন। হয়তো হৃদয়ে কখনো কোনো সুর গুঞ্জরিত হতে চাইলে বসন্ত শব্দটিও মনে পড়ে। কিন্তু পাঁজর ভেঙে উথাল-পাতাল ঢেউ যখন ভাসিয়ে দেয় তাদের কারো সবকূল, তাও মৃদুু, পেলবতায় নয়, নির্মম ঝাপটায় পাহাড় সমান হয়ে। তখন বাইরের তীব্র আলো কী নিকষ অন্ধকার, চাঁদ কিংবা সূর্যে গ্রহণ লাগলো কিনা, সেটি বড় কথা নয়। আমারও ঠিক তেমনি একটি সময়ে একটানা কলিংবেল বেজেই চলেছে। কেউ দরজা খুলছে না দেখে ফেরদৌস খুলে ছোটমাকে ডেকে নিয়ে আমার দিকে ছুটে এলো গজগজ করতে। কদিন পরই ওর এসএসসি পরীক্ষা। অথচ আমি বসে থেকে দরজা খুলছি না। ও আমার দিকে তাকিয়ে থেকে কিছু না বলেই চলে গেলো। কিছুক্ষণ পর ফিরে এসে বলে গেলো ‘তোর মন খারাপ থাকলে আমার মরে যেতে ইচ্ছে করে আপা।’ ওর কথা শুনে চমকে উঠি আমি। ছোটমার সব রহস্যময়তার জট যেন আমার কাছে খুলে যায় তাতে। একজন মানুষ কখনো শুধু তার নিজের নয়, একজনের দুর্ভোগ আরেকজন পোড়ে। আর তাই বুঝি ছোটমা তাদের সবাইকে দায়মুক্ত করতে আপাংক্তেয় হয়ে থাকতে হবে জেনেও আমাদের ঘরে এসে সবাইকে বাঁচিয়েছে। জীবনে যারা ঘাত-প্রতিঘাত সয়ে অভাব এবং নানান অভিযোগের মধ্যে মানুষ হয়, তারা বাধ্য হয়েই অনেক কিছু আগেই শেখে। সময় এবং জীবনের ব্যবহার তারা করতে চায়। ছোটমাকে দেখে ইদানিং আমার তাই মনে হয়। কিন্তু একই বৃন্তে দুটি ফুলের মতো আমার ভালো-মন্দে যে অন্য আরেকজন ভুগছে, এটুকু বোধ জাগতেই আমার এতটা সময় লাগলো।
আমার রুম আর ড্রয়িং রুমের মাঝখানের দরজাটি খোলা ছিলো। তবে জমকালো, ভারি পর্দা তাতে ঝুলছে। সে পর্দা ছাপিয়েই দু’জন মানুষের সব কথা আমার কানে চলে আসতে থাকে। ক্রমে তা কৌতূহল বাড়ায়। আমি অধীর হয়ে আরো উৎকর্ণ হই।
-কেমন আছো? অপরিচিত, থমথমে কণ্ঠস্বর।
-ভালো। তুমি? ছোটমার কণ্ঠ কাঁপা কাঁপা শোনায়।
-ভালো থাকতে দিয়েছো তুমি?
-কারো মন্দ থাকার মতো আমি কখনো কিছু করিনি।
-আমি বিসিএস পাস করেছিলাম।
-হাঁ, কে যেন বলেছিলো, ঠিক মনে পড়ছে না।
-আমার চাকরি হয়েছে। কালই জয়েনিং ডেট। কিন্তু তার আগে আমি তোমার কাছে না এসে পারলাম না। আর পারছি না আমি।
-কেন? আমি তোমার কোনো কাজে আসতে পারি?
-কেন? বোঝ না? তুমি কি সব ভুলে গেছো? তাছাড়া আমার যন্ত্রণার কথাগুলো কেউ-ই কি তোমাকে পৌঁছে দেয়নি? উহ্ মানুষের বিশ্বাস এত ঠুনকো হয়? ভাবাই যায় না। কেন তুমি এ বিয়ে থেকে পালিয়ে বাঁচলে না।
-তুহিন ভাই, একটি দুর্বল মুহূর্তে সেদিন সেই শপথের জোরে তুমি আমাকে খুঁজতে আসোনি। জসিম মোল্লার পুরনো ভাঙা টিনের ঘরে আজ তার আইবুড়ো মেয়েটির কাছে তুমি যেতে না। শপথ নামের শ্রুতিমধুর সেই দু-চারটে বুলি আজ তোমার মনেই থাকত না! কেননা তোমার আজকের আত্মবিশ্বাস আর গ্ল্যামারের পক্ষে এ দৃশ্যটি সেখানে হতো একেবারেই বেমানান।
-আর কী করলে বিশ্বাস করবে, আমি কথা রাখতেই এসেছি। আমি আজ তোমাকে নিয়ে যেতে এসেছি শাহানাজ।
-আজ তুমি আমাকে নিয়ে যেতে আসোনি। পুরনো কেন স্মৃতির টানেও নয়। প্রেমিকা এখন কোনো ধনী-সম্মানী লোকের স্ত্রী বলে এসেছো। নিজেকে দেখিয়ে তার চোখ বঁধিয়ে দিতে এসেছো! এ-ও এক ধরনের নিষ্ঠুর আনন্দ। কিন্তু তোমার এ মনোবাঞ্ছনা পূর্ণ হওয়ার নয়। কোনো কিছুতেই আমি আর আসক্তি অনুভব করছি না।
‘কী ঠা-া’ অথচ কী ভীষণ কঠিন শোনায় ছোটমার সংলাপগুলো। জীবনের এমন একটি মাহেন্দ্রক্ষণে দাঁড়িয়ে থাকা আগুনের ফুলকির মতো ছোটমার মুখখানা তখন দেখার অদম্য কৌতূহল নিবৃত্ত করতে পারলাম না। পর্দাটি সরাতেই দেখলাম স্বপ্নালোক থেকে নেমে আসা লোকটি ছোটমার একখানা হাত ধরে ফেলেছে। ছোটমা তার হাত ছাড়িয়ে সরে দাঁড়ালো। সব পরিস্থিতিতে সে নিজেকে সামালে নিতে জানে বটে। এবারও নিলো।
না হলে এমন উত্তেজনাপূর্ণ ঘটনার পরম মুহূর্তে কেমন করে বলতে পারলো-‘দেখো তুহিন ভাই, আমার মেয়ে। কী সুন্দর দেখেছো? ইডেনে অনার্স পড়ছে। ছেলেটি এবার এসএসসি পরীক্ষা দেবে। এরা শহরের ছেলেমেয়ে তো। লেখাপড়ায় তরতর করে এগিয়ে গেছে। ওদের মতো বয়সে আমরা আরো নিচের ক্লাসে পড়েছি। আমার প্রতি তুহিনের ঈর্ষান্বিত, তাচ্ছিল্যপূর্ণদৃষ্টি ছোটমাকে অপ্রস্তুত করে দিচ্ছে। আর আমি আশ্চর্য ও বিব্রত হলাম আমার বয়স লুকোতে ওর বানিয়ে বানিয়ে কথা বলার প্রতিভা দেখে। কিন্তু অপ্রস্তুত বা বিব্রত হলে তো চলবে না। আমাকে ওদের পাশে অনুমতি ছাড়া বসে পড়তে দেখে সব কাজের কথা ভুলে ছোটমাও গেড়ে বসলো সেখানে। তবে হয়তো ইচ্ছে করেই অনেকক্ষণ কথা বললো না। হয়তো পরিবেশটাকে থমথমে গম্ভীর করে নিতে চাইছিলো কিছুটা নীরবতা গেঁথে।
এভাবে তিনজন মানুষের আপ্রাণ চেষ্টায় কতটুকু তা সফল হয়েছিলো তা কেবল ছোটমা-ই জানে। না হলে একটু পরেই সরে এসে দীর্ঘদিন পরে দেখা এমন সম্পর্কের একটি মানুষের হাত ধরে, কেমন করে বলতে পারলো, ‘তুহিন ভাই আমার মেয়েটিকে তোমার সঙ্গে বিয়ে দিতে চাই, অমত করো না। বড় লক্ষ্মী ও মেয়ে আমার। ওর বাবা বেখেয়ালি মানুষ। অনেকদিন থেকে আমি ভালো একটি ছেলের সন্ধান করছিলাম।’
-এতবড় মেয়ের মা হওয়ার বয়স তোমার হয়নি। নিজের সঙ্গে প্রবঞ্চনা করবে করো। আমাকে জড়িও না। তুমি শত্রুর মধ্যে বসবাস করছো। এত বছরে নিজের সন্তানের মা হতে পারলে না। সময় এলে ঠিকই বুঝবে কী প্রহসনের মধ্যে আছো।
-তাহলে আমার শত্রুকে উদ্ধার করে এই বাড়িটিই আমার নিরাপদ করে দাও। বিদ্রুপাত্মক কথা বলে ছোটমা হাল্কা করে দিতে চাইলো তুহিনের ক্ষোভ। এবং এরই মধ্যে দ্রুত ঘটিয়ে ফেললো সেই অভাবনীয় কাজটি। আমার হাতখানা টেনে নিয়ে তুহিনের হাতে সঁপে দিয়ে একতরফাভাবেই বলে গেলো, আমাকে তুমি কথা দাও, নিরাশ করো না। বাকি জীবনেও তোমাদের কারো কাছেই আমি আর কিছুই চাই না। এমনি করে তোমাদের কেউ নই হয়ে দূরে থেকে যাবো। সে বিশ্বাস তোমরা রেখো।
আমি তুহিনের সম্মতিসূচক কোনো শব্দই শুনিনি। হয়তো ছোটমা তার চোখে অপারগ সম্মতির কোনো আভাস দেখেই আঁচল টেনে ঘোমটা দিলো। মুখখানাও একটু ঘুুরিয়ে ফেললো।
অচেনা একজন পুরুষের হাতের মধ্যে আমার হাত। ক্ষণিকের মধ্যে ঘটা সবগুলো ঘটনার রেশ আমি ভুলে শুধু ছোটমার চোখ দুটির উপর ভয়ঙ্কর তীরের মতো নজর ফেলে তাকিয়ে রইলাম। হীরের চেয়ে দামি দু’ফোঁটা অশ্রু আজ এক্ষুনি, এই প্রথম হয়তো-বা শেষবারের মতো দেখতে পাবো। কোথাও দৃষ্টি সরাই না। যদি এরই ফাঁকে ঝরে যায়।
আমাকে আবারও অবাক করে দিয়ে ছোটমা শুকনো দুটি চোখে আমার মুখে উপর কেমন এক দৃষ্টি প্রসারিত করে রাখলো। কখনো তুহিনের মুখেও। বিদ্যুতের শকও কি এর চেয়ে যন্ত্রণার হয়! অতীতের সব বেদনা আমি ভুলে গেলাম এই মুহূর্তটির তড়িৎ প্রবাহে।
অন্য কোনো অনুভূতি আমার মধ্যে কাজ করছে না। শুধু ভাবছি কত জনম সাধনা করে, কতটা কষ্ট করে ছোটমা এ সিদ্ধি লাভ করলো। অনেক দিনের ভাঙা মন আমার তুহিনের হাত থেকে এক ঝটকায় হাতখানা ছাড়িয়ে নিজের ঘরে এসে উপুড় হয়ে পড়লাম। ভাবছি, আমার পাপ কি এতটাই বেশি ছিলো যে একটি অক্ষম, অভিশপ্ত পরিবারের পুঞ্জীভূত গ্লানির অসহ্য ভার আমাকে চিরদিন এভাবে বইতে হবে! তীব্র আর্তনাদে কাঁপিয়ে দিতে ইচ্ছে হলো এ বাড়ির প্রতিটি দেয়াল। চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে হলো ‘ছোটমা এ তুমি কী করলে? এই মুহূর্তে তুমি কারো হাত ধরে চলে গেলে পৃথিবীর কারো এতটা ক্ষতি হতো না, যতটা ক্ষতি তুমি আমার করলে?
সূর্য কোথায় ডোবে এখানে তা বোঝাই যায় না। প্রাসাদের সব চূড়ায় আগেভাগেই ঢাকা পড়ে যায় তার কমলা রং শরীর। তবে গলে গলে কিছুক্ষণ ঠিকই ঝরে নিষ্প্রভ ছটা। এমনসব সময়ে ছোটমাকে আরো উজ্জ্বল মনে হয়। সোনালি সে আভায় আমার বাবার জ্যোতি বেশ ম্লান দেখায় ওর পাশে। আজ পোড়া চোখ-দুটি তুলে এমনতর ছোটমার দিকে তাকাতেই পারছি না। আমার সমস্যা হচ্ছে বুঝেই বুঝি ছোটমা এগিয়ে এলো সমাধানে। আমাকে কাছে টেনে বললো, ‘তোমার সংসারটি আমি নিজ হাতে সাজিয়ে দেবো। আজই তোমার বাবাকে সব কথা বলবো। তুমি লেখাপড়া ছেড়ো না কিন্তু...। স্বামীর যোগ্য হয়ে উঠতে না পারলে বিয়েটা দাসত্বে পরিণত হয়ে যায়।
ছোটমার চোখের বিদ্যুতে শক খেতে খেতে তবু আমি তাকিয়ে থাকি। ভীষণ কষ্ট হয় তবু চোখ ফেরাই না। দুর্বোধ্য, জটিল সে অভিব্যক্তিতে আমার উপলদ্ধি মাথা ঠুকে ঠুকে রক্তাক্ত হয়।
ভেবেছিলাম, একদিন ছোটমাকে বলে দেবো-‘ছোটমা তুমি যাকে ছাদে জমানো পানি ভাবছে, ওটা আসলে ভীষণ দীর্ঘ একটি পুকুরের একটি চিলতে মাত্র, রাজারবাগ পুলিশ লাইনস-এর ভেতরকার। শান-বাঁধানো ঘাট এবং সারি গাছও আছে ওর পাড়ে। হাঁস সাঁতার কাটে। শৌখিন শিকারীরা ছিপ ফেলে ওখানে মাছ ধরে, তোমাদের গ্রামের পুকুরগুলোর চেয়ে এটা আরো ভালো হয়তো। আমি আর শোভন কতদিন ওর পাশ দিয়ে হেঁটেছি। কিন্তু ওসবের কিছুই আর বলি না। মনে হয় স্বপ্নেই কেবল পারে মানুষকে বুঁদ করে রাখতে। আতœহননের পথটিকে ভালোবাসলে তাও ক্রমে মসৃণ হয়ে ওঠে। তাছাড়া ওই জলাধারটিরও তো একটি সীমানা আছে! মাত্রাও আছে গভীরতার। কিন্তু স্বপ্নের তা নেই। ছোটমার স্বপ্নহীন দুটি চোখের দেখা শুধু এটুকু ভ্রান্তিও যদি তাকে কোনো একটি খোলা জানালায় প্রতিদিন এভাবে নিয়ে দাঁড় করাতে পারে, থাক তবে সেটুকুই অটুট হয়ে।
আগের অংশ
দীলতাজ রহমান, ব্রিজবেন, অস্ট্রেলিয়া
|