|
হেনা, ক্ষমা কর সোনা! দিলরুবা শাহানা
হেনা, শোন্ শুনছিস, তোর মত ছোট্টদের জন্য ‘বিশ্বকে বাসযোগ্য’ করার অঙ্গীকার ভুলে গেছি সবে! এখন অনুপায় হয়ে ঝগড়া স্রষ্টার সাথে কেন সে তোকে পৃথিবীতে পাঠালো? পাঠিয়েই ছিল যদি কেন তোকে গরীব করলো? কেন তোকে এতিম বানালো? ছোট্ট তুই পরের বাড়ী কাজ করে বাঁচতি। ভয়ংকর অপরাধ করলি! ক্ষুধার্ত তুই ওই বাড়ীর বাচ্চাটির খাবার চুরি করে খেয়ে নিতি। খাবার চুরির কারণে যখন তখন মার জুটতো কপালে। মেরে মেরে জখম করে ফেলতো তোকে বাচ্চাটির মা। তাও রাগ তার মিটতো না। একদিন সে তোর গলায় পা দিয়ে দাঁড়ালো। দম বন্ধ হয়ে আসছিলো তোর বাঁচার আকুতিতে হাত জোড় করে মিনতি করেও রেহাই মিললোনা। তবে মৃত্যু এসে তোর সব কষ্ট শেষ করলো। জানিস তুই এতোই তুচ্ছ এতোই নগণ্য যে তোর খবর সব পত্রিকা যত্নে ছাপায়নি, খবরে তুই নেই! নেই নেই নেই এই আমি! হ্যাঁ আমিই আমেরিকার কালো মানুষ ফ্লয়েডের জন্য চেঁচিয়েছি! তার ঘাড়ে হাঁটু রেখে চেপে চেপে প্রাণ বায়ু বের করছিলো আমেরিকার পুলিশ। সপ্তাহ পেরিয়ে গেল পত্রিকার পাতা খুঁজে খুঁজে তোকে নিয়ে প্রতিবাদ চোখে পড়লোনা। তুই গরীব তুই এতিম ক্ষুধা পেলে খাবার চুরি করতিস তোকে নিয়ে কথা বলার কার দায় বল? আমি তোর কাছে করজোড়ে ক্ষমা চাই, ক্ষমা চাই, ক্ষমা চাই... মেলবোর্ন, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩
|
 দিলরুবা শাহানা, মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া
|