দি সিম্পসন এর প্রফেটিক উইজডম ও ডোনাল্ড ট্র্যাম্প দিলরুবা শাহানা
বাচ্চাদের কার্টুন দি সিম্পসন বেশ মজার। পুরনোও বেশ। শুরু বোধহয় ১৯৮৯ সালে। সিম্পসন কার্টুনটি বাচ্চাদের সাথে আমিও দেখতাম। এখনও দেখি যখনই সুযোগ পাই। সত্যি বলতে কি বাচ্চাদের চোখে বিশ্ব দেখতে মজাই লাগে। ওরা সহজেই সত্যটা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। মনে আছে সেই ছোট্ট শিশুটির কথা? রাজপথে তথাকথিত জমকালো নতুন পোশাক পরে সপারিষদ গর্বিত পদক্ষেপে রাজা যাচ্ছিলেন সে শিশু বলে উঠলো ‘রাজা ন্যাংটাইয়া’। কি মজা করেই সে শিশু উলঙ্গ রাজাকে শুধু নিজেই দেখলো না বাকী সবাইকেও বাধ্য করলো সে সত্য মেনে নিতে।
সিম্পসনের চার আংলা (ওদের সবার চারটা করে আঙ্গুল মাত্র) পরিবার নিয়ে বাচ্চাদের ভার্সন কাটুনটা অনেক জনপ্রিয়। সে কার্টুনের এক এপিসোডে সম্ভবত: ২০০৪সালে দেখানো হয় আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হয়েছে ডোনাল্ড ট্র্যাম্প। ঘটনাটা ব্যঙ্গ করা তুলে ধরা হয়েছিল ওই এপিসোডে। সিম্পসন পরিবারের বুদ্ধিমতী মেয়ে লিসা অক্সফোর্ডে পড়তে যায়। অনেক বাচ্চাদের মতো আমারও favourite four fingered family সিম্পসনরা আমেরিকান। পরিবারে বাবা হোমার, মা মার্জ আর সন্তান দু'জন লিসা ও বার্ট। ওদের বাস স্প্রিংফিল্ড নামে এক জায়গায়। আমেরিকার সেই ছোট্ট লোকালয় স্প্রিংফিল্ড থেকে চার আংলা বুদ্ধিমতী বালিকা লিসা অক্সফোর্ডে গিয়ে শুনে ওর দেশে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্র্যাম্প। কি বিব্রতকর অবস্থা! আজ থেকে ১২ বছর আগে লিসার জন্য যা ছিল অস্বস্তিকর আজ সমগ্র আমেরিকার জন্যই অপ্রীতিকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আমেরিকার নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় ইয়েল থেকে আইন অধ্যয়ন করে নামকরা আইনজীবী হিলারি ক্লিণ্টন যার রাষ্ট্রীয় নানান দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতাও রয়েছে, সেই হিলারি প্রেসিডেন্ট পদের জন্য লড়বেন রিয়েল স্টেট ব্যবসায়ী ডোনাল্ড ট্র্যাম্পের সাথে। পৃথিবীর ডেমোক্রেসির প্রবক্তা, রক্ষাকর্তা ও ডেমোক্রেসির সশস্ত্র যোদ্ধা আমেরিকার মতো দেশে আজ দু'আড়াইশ বছরে প্রথম একজন মহিলা সুযোগ পেয়েছেন প্রেসিডেন্ট পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার। হিলারির প্রতিদ্বন্দ্বী লোকটি এমনি গণতন্ত্রে বিশ্বাসী যে সে মানুষই সহ্য করতে পারেনা। সে দেখতে পারেনা মেক্সিকোর হিস্পানিকদের, যে কোন মুসলমানকে সহ্য করা তার পক্ষে কষ্টকর! সেই ট্র্যাম্পই যদি দি সিম্পসনের এপিসোডকে সত্য প্রমাণ করে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েই যায় তবে গোটা বিশ্ব মার্কিন ভোটারদের প্রাজ্ঞতা নিয়ে ভ্রুকুটি করবে না কি?
দিলরুবা শাহানা, মেলবোর্ন
|