bangla-sydney
bangla-sydney.com
News and views of Bangladeshi community in Australia













করোনা কালের কাহন (১)
দিলরুবা শাহানা



কোভিড-১৯ বা করোনা নামের ভাইরাসের দর্পিত পদচারণায় বিশ্ব কম্পিত এখন। ধনসম্পদে শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলোও করোনাকে কাবু করতে অপারগ। রাজপুত্র-রাজকন্যা, রাষ্ট্রনায়ক কাউকেই ছাড় দিচ্ছে না করোনা। সমতায় আস্থা তাই ধনী-দরিদ্র সবাইকে সমান মমতায় আলিঙ্গন করছে করোনা ভাইরাস। রাজনন্দিনী (স্পেনের রাজকুমারী মারিয়া তেরেসা করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে মৃত) থেকে মন্ত্রী, স্পিকার তাদেরও কাউকে কাউকে হসপিটালে অথবা পরপারে পাঠিয়ে ছেড়েছে করোনাভাইরাস বা কোভিড- ১৯।

শোনা যাচ্ছে ২০১৯শের শেষে চীনের হুবে প্রদেশের অন্তর্গত উহান শহরের এক বন্য প্রাণীর(বাদুড় বা কোন সরীসৃপ) বাজার থেকে করোনাভাইরাস মানবদেহে সংক্রমিত হয়েছে। আজ মানুষ করোনার কারণে গৃহবন্দী। প্রকৃতির নিষ্ঠুর খেলা এটি।

মানুষ নানান প্রাণীকে বন্দী করে রেখেছে চিরকাল। আজ ওই প্রাণীরই কারণে মানুষ বন্দী আপন ঘরে। গোটা পৃথিবী বিপর্যস্ত আজ। ভবিষ্যতে আরও ভয়ংকর সময়ের আগমনী শোনা যাচ্ছে। দীর্ঘকাল মানুষ প্রকৃতিকে তোয়াক্কা করেনি। তারা নিজের আগ্রাসী সাধ মিটিয়েছে প্রকৃতিকে ব্যবহারের মাধ্যমে। পাহাড় জঙ্গল কেটে উজাড় করেছে, নদী ভরাট করে প্রাসাদ গড়েছে। এখন সুদে-আসলে প্রকৃতির প্রতি অন্যায়ের দেনা শুধবার সময় আসছে। করোনার কারণে পার্টি, মিটিং, খেলাধুলা বন্ধ, দূরদূরান্তে বেড়ানো বন্ধ, আকাশে বিমানের ওড়া-উড়ি ক্ষান্ত, কলকারখানার দরজায় তালা। ফলে বাতাসে কার্বনডাই অক্সাইড কমেছে, শ্বাস নেওয়া যাচ্ছে, আকাশে স্বচ্ছতা ফিরে আসছে, জলের প্রাণী জলকেলিতে মত্ত হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। সবই করোনা ভাইরাসের কল্যাণে।

করোনা কেন্দ্রিক কিছু কিছু চলমান ঘটনা তুলে ধরা হল।

ক) ফোনে একজন মহা উৎসাহে আরেক জনকে বলছেন
-চাইনিজরা যত্তসব আজগুবি জিনিস সাপ, বেঙ, বাদুড় খায় তা থেকেই ওদেরকে এই ভাইরাসে ধরেছে
-আরে না, ভাই শুনলাম চাইনিজদের অর্থনৈতিক উন্নতি দাবানোর জন্য ল্যাবরেটরিতে নাকি এই জীবানুঅস্ত্র করোনা ভাইরাস তৈরি করে চীনে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে
-হলেও হতে পারে
-হতে পারে কি বলছেন, এটাই ঠিক। চীনে যখন প্রতিদিন শত শত মানুষ করোনাতে মারা যাচ্ছে তখন আমেরিকাতে কোভিড-১৯ দেখা দেয়নি, সত্যি কি না?
-মনে হচ্ছে তাই।

খ) কয়দিন পরেই আবার আরেক জনের ফোন
-দেখেছেন আল্লাহর মার দুনিয়ার বাড়। আমেরিকার মত দেশ কামান-গোলা, বন্দুক-বারুদ, পরমাণু বোমা, ড্রোন ফ্রোন কি নাই আমেরিকার আর সেই আমেরিকাই পারছে না চোখে দেখা যায় না এমন এক ক্ষুদ্র জীবাণুর সাথে লড়তে!
-ঠিক বলেছেন জনাব। আমেরিকা কতদূরে বসে ড্রোন না কি যেন পাঠিয়ে ইরানের কাশেম সোলায়মানির মতো দক্ষ রণকুশলী যোদ্ধাকে কতল করে ফেলে কত্তোবড় কৃতিত্ব দাবী করলো আর এখন কোভিড-১৯কে নির্মূল করতে পারছে না!
-প্রকৃতি উঠেছে খেপে, তার রুদ্র-রোষ থেকে মহা পরাক্রমশালীও রেহাই পাবে কি না কে জানে?

গ) করোনার করুণ সময়ে নানা ভাবে মানুষকে বাঁচানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রায় সব দেশেই জনগণকে কয়েকটি শব্দ ‘আইসোলেশন’, ‘ডিসট্যান্স মেনটেইন’, ‘কোয়ারেন্টাইন’ বেঁচে থাকার মূলমন্ত্র হিসাবে শেখানো হচ্ছে। জনগণ এত সবকিছু বোঝে না বা এতসব মানলে বাঁচবেই বা কি ভাবে। মানুষই কেবল আলাদা হয়ে কাজকর্ম বন্ধ করে হাত, পা কোলে নিয়ে বসে থাকবেন তাতো নয়। যে কাজগুলো করে আমজনতা জীবনধারণ করতেন কাজগুলোও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বা গেছেও। প্রতিদিন করোনা আক্রান্ত দেশ গুলোতে শত শত হাজার হাজার মানুষ কাজ হারাচ্ছে। কাজের খোঁজে হন্য হয়ে ছুটছে মানুষ।
তখনকার ঘটনা অস্ট্রেলিয়ায় কোলস ও সেইফ ওয়ে নামের নিত্য-পণ্যের ডিপার্টমেন্টাল চেইন স্টোরে গাড়ী থেকে মাল নামানো ও তাকে তাকে বা সেল্ফে সেল্ফে ক্রেতার জন্য মালামাল গুছিয়ে রাখার জন্য করোনার সময়ে জরুরী ভিত্তিতে লোক নিয়োগ করা দরকার হয়। তাদের দরকার ছিল পাঁচ হাজার ক্যাজুয়াল ওয়ার্কারের। সেই কাজের জন্য সাইত্রিশ হাজার মানুষ আবেদন করেছিল। এই ছিল কর্মহীন মানুষের যে কোন একটা কাজ পাওয়ার জন্য মরিয়া চেষ্টা।

ঘ) ভারতের দিল্লীতে নানান রাজ্য থেকে শ্রমজীবী মানুষেরা এসে খাটনি খেটে পয়সা রোজগার করে পরিবার পালন পোষণ করতেন। করোনার বিস্তার রোধে সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিল্লী শহরকে লোকশূণ্য করা উদ্দেশ্য। গাড়ী, ট্রেন, বাস সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করা হয়। অসহায় মানুষ হাঁটা পথে বাড়ীর পৌঁছাতে উদ্যোগ নেয়। তেমনি একজন দিল্লীর কোন এক হোটেলের সামান্য এক কর্মী। যার বাড়ী দিল্লী থেকে তিন শ কিলোমিটার দূরে। বাড়ীতে তার স্ত্রী সন্তানরা গভীর আগ্রহ ও আতংক নিয়ে অপেক্ষায়। হাঁটতে হাঁটতে লোকটি মোবাইল ফোনে কখনো সখনো স্ত্রী-কন্যার সাথে কথা বলছিলেন। শেষ পর্যন্ত সেই মানুষটির আর বাড়ী পৌঁছানো হয় নি। দু’শো মাইল পথ তিনি পায়ে হেঁটে পাড়ি দিয়েছিলেন ঠিকই তারপর ক্লান্ত শ্রান্ত মানুষটি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
শেষবার কথা বলেন নিজের শ্যালকের সাথে। তাকে বলেন ‘আমি আর পারছি না, পারলে তোমরা আমাকে এসে নিয়ে যাও’। তখনো বাড়ী থেকে তিনি এক শ মাইল দূরে।

ঙ) কোভিড-১৯ খুব দ্রুত মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায়। তাই মানুষকে সচেতনভাবে পরস্পরের মাঝে দূরত্ব বজায় রেখে কোভিড-১৯ ভাইরাস আক্রমণ এড়াতে হবে বলা হচ্ছে। চারদিকে মানুষের মাঝে সোস্যাল ডিস্ট্যান্স বজায় রাখার জন্য পৃথিবীর প্রায় সব করোনা আক্রান্ত দেশের প্রশাসন যন্ত্র আপ্রাণ চেষ্টা করছে। রাস্তা-ঘাট, বাজার-হাট সবখানে মানুষে মানুষে দেড় মিটার বা ছয় ফুট দূরত্ব রাখার নিয়ম বেঁধে দেওয়া হয়েছে। উপাসনালয়েও ভিড় বন্ধ করার জন্য অনেক অনুরোধ উপরোধে কাজ হচ্ছে না দেখে আইনি ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হচ্ছে কর্তৃপক্ষ। মুসলমানদের পবিত্র শহর মক্কা মদিনাতে কার্ফু জারী করে জমাত করে নামাজ পড়া ঠেকানো হয়েছে।
ভিড় থেকে ভাইরাস কোভিড-১৯ যে কি ভয়ংকর ভাবে ছড়িয়ে একেক দেশকে সর্বনাশের দিকে ঠেলে দিয়েছে তার জলজ্যান্ত উদাহরণ ফ্রান্স ও স্পেন।

ফেব্রুয়ারির ১৮তারিখে দু’তিন দিনের জন্য ফ্রান্সের প্যারিসের এক গির্জায় পৃথিবীর নানা দেশ থেকে প্রায় ২৫০০জন জমায়েত হয়েছিলেন। তাদের মাঝে প্রথমেই ১৭জন কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা যান। ওই জমায়েতই ফ্রান্সে কোভিড-১৯ ছড়ানোর বিশাল থাবা ছিল। এখনো ভাইরাস ওই দেশে তুমুল দাপটে মানুষকে ধরছে, ধরে অনেক কে মেরেও ফেলছে।

স্পেন থেকে ত্রিশ চল্লিশ হাজার উৎসাহী মানুষ জানুয়ারি ২০২০এ ইতালিতে ফুটবল খেলা দেখতে গিয়েছিলেন। তখনও করোনা বহুদূরের দেশ চীনে। স্প্যানিশরা ইতালিতে খেলা দেখার আনন্দে আত্মহারা হয়ে ‘হাগিং’, ‘কিসিং’ করেছেন অনেক তারই ফলশ্রুতিতে নিজ দেশ স্পেনে করোনায় মৃত্যুর মিছিল শুরু হয়ে এখনো চলছে।

মালয়েশিয়ায় বিশাল এক তাবলীগ জামাত থেকে করোনা ভাইরাস ছড়াতে শুরু করে। অন্যান্য দেশেও তাবলীগী মুসল্লিরা কোভিড-১৯কে সাথে করে নিয়ে যান। যদিও ইউরোপ-আমেরিকায় কোভিড-১৯এর চালানো দুর্দান্ত তাণ্ডবের খবর যেভাবে জনসমক্ষে আসছে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়ার খবর তেমন আসছে না। কারণটা কি জানা যাচ্ছে না। ওইসব দেশের সরকার কি খবরটা ধামাচাপা দিয়ে রাখছে?

চ) পৃথিবীর করোনা আক্রান্ত অন্যসব দেশের মতই অষ্ট্রেলিয়াও কোভিড-১৯এর ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে মানুষের চলাফেরা সীমিত করেছে, স্কুল-কলেজসহ তাবৎ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছে। ঘরে বসে যে সব কাজ ইন্টারনেটের মাধ্যমে করা যায় লোকজন সে সব কাজ ঘরে বসেই করছে বা করতে বাধ্য করা হচ্ছে।
মানুষের মানসিকতাও বন্দিত্বের পেষণে বদলে যাচ্ছে, নিষ্ঠুরতাও প্রকট হচ্ছে। একদল মানুষ নিরাপত্তার জন্য শপিং সেন্টারে গিয়ে যত বেশী সম্ভব জিনিসপত্র কিনে এনে মজুদ করছে। আমেরিকাতে কেউ কেউ আবার লাভের আশায় বাজার উজাড় করে টয়লেট পেপার কিনে সেই পেপার আবার ইবেতে সত্তর গুণ বেশী দামে বিক্রি করছে। পুলিশের হাতে ধরাও পড়েছে বলে খবরে জানা গেল।

আবার মানুষের মানবিকতাও এখন উদ্ভাসিত হচ্ছে। এক পাড়ায় কোনের বাড়ীতে একটি ছেলে একাই থাকে। ছোটখাটো মানুষটির সাইকেলটাও ছোট। মনে হয় স্পেসিয়ালী ওই সাইকেলটা ওর সুবিধার জন্য বানানো। তার সাইকেলের পেছনে বড়সড়ো একটি ক্যারিয়ারও আছে। পারার কারোর সঙ্গেই ছেলেটির কোন আলাপ টালাপ হয় না কখনো। কারণ কি কে জানে? শো শো করে সাইকেলে যেতে সে আকাশে শিস ছুড়ে দেয়, কারো আঙ্গিনায় হঠাৎ কাউকে দেখলে ছুটে যাওয়ার মুহূর্তে ‘হ্যালো’ বলে চমকে দেয়। তার মা-বাবা বা ভাইবোন কেউ আছে কি না কেউ খবর রাখে না। সেই একাকী ছেলেটি করোনার দুর্যোগের কালে একটি কাজ করলো। পাড়ার নিঃসন্তান বয়স্ক ক্যারোলাইনের দরজায় কয়েকটি টয়লেট রোলের প্যাকেট দিয়ে যায়। ক্যারোলাইন তার প্রতিবেশীকে বলে
-দেখ ওই সাইকেল বয় আমার জন্য কি রেখে গেছে! দরজা খোলার আগেই তর তর করে নেমে চলে গেল।
প্রতিবেশী দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো
-আমরা স্বজনহীন ছেলেটির কোন খবর রাখিনা ও পাড়ার সবার কথা হয়তো জানে, জানে টয়লেট পেপার জোগাড় করে দেবে তোমার তেমন কেউ নেই।

ছ) মানুষ সামাজিক প্রাণী। ঘরে বসে থাকা মানুষের ধাতে সয়না। মানুষকে জীবন রক্ষা করার জন্যই অন্তরীন থাকা যে দরকার গুরুত্বসহ কথাগুলো অনেকেই শুনতে ও মানতে রাজী নয়। তাই পুলিশ ঘুরছে, সেনাবাহিনী নামানো হয়েছে শৃঙ্খলা মানানোর জন্য। রাস্তায় একই পরিবারের দু’জন একসাথে হাঁটতে পারবে এর বেশী হলেই পুলিশ জরিমানা করবে এবং করছেও।

ফাঁকা লোকালয় নির্জনতা । সবাই ঘরে অন্তরীন। এরই মাঝে মেলবোর্নের এক পারা বেরিকে বাসার কাছেই খোলামেলা জায়গায় পাঁচ ছয়জন মিলে আনন্দে ক্রিকেট খেলায় মেতে উঠলেন। হয়তো ঘরে বসে থেকে হাড়গোড়ে জং ধরা বন্ধ করতেই এই খেলাধুলার উদ্যোগ।
পুলিশ এসে হাজির। নিয়ম ভেঙ্গে দু’জনের জায়গায় পাঁচজন। জরিমানা করা হল সঙ্গে সঙ্গে। আট হাজার ডলার জরিমানা গুণতে হল।

কর্তৃপক্ষ এবারের গুড ফ্রাই ডে, ইস্টার উইক এন্ডে লোকজনকে বাইরে বার না হতে, গাড়ী নিয়েও অযথা ঘুরাঘুরি না করতে বলছে। সাউথ ইয়ারা নামের জায়গায় গাড়ীতে এক ব্যক্তি উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘুরছিলেন। পুলিশ গাড়ী থামিয়ে জানতে চাইলো কি চায় বা কি কাজে সে এখানে। সে লোক জানালো পানি কিনতে এসেছে। পুলিশ তখখুনি তার ড্রাইভার্স লাইসেন্স দেখাতে বলে। তা থেকে দেখা গেল লোকটি প্রায় ৩০ কি.মি. দূর থেকে এই এলাকাতে অযথা ঘুরতে এসেছে। তাকে জরিমানা করা হল হাজার ডলার। (নিউজ.কম ও রেডিও)

জ) এবার শোনা যাক একদেশের মন্ত্রীর নিয়ম ভঙ্গের খেসারত। নিউজিল্যান্ডের স্বাস্থ্যমন্ত্রী করোনার দিনে ঘরে থাকার নিয়ম না মেনে সপরিবারে ছুটির আনন্দ-ভোগে গিয়েছিলেন। ধরাও পড়লেন। নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জ্যাসিন্ডা আর্ডেন ওই মন্ত্রীর পদানবতি করলেন। প্রধানমন্ত্রী বললেন স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে পদচ্যুতই করতেন তবে এই দুঃসময়ে করোনা ঠেকানোর কাজে তাকে দরকার। তাই কম শাস্তিই দিলেন মন্ত্রীকে।

ঝ) সপ্তাহ তিন আগে রোদেলা বিকালে রোববারে এক যুগল, ঘর থেকে একটু বাইরে ঘুরতে বের হলেন। আধা ঘণ্টা গাড়ীতেই সমুদ্রের পাশের প্রায় জনমানব শূন্য রাস্তাতে তারা ঘুরলেন। পুরো রাস্তাতে গাড়ী টাড়ীতো কমই এমনকি সমুদ্রের ধারে পায়ে হাঁটার পথেও খুব কম লোক দেখা গেল। ফেরার পথে ঝম ঝম করে নামলো বৃষ্টি। গাড়ী আস্তে আস্তে চলছে। হঠাৎ করে গাড়ী থেকে মহিলা দেখলেন রাস্তার অপর পাশে একজন বয়স্ক মহিলা দু’হাতে দুটি শপিং ব্যাগ নিয়ে দ্রুত হাঁটছেন। বৃষ্টিতে ভিজতে হবে তাকে। ব্যাগে হয়তো রুটি, মাখন, পনির, ডিম যা এরা প্রতিনিয়তই খায়। আরেক ব্যাগে হয়তো দুধের কন্টেইনার, সামান্য ফলমূল। বেশী ভারী কিছু না। তারপরও বয়স ও বৃষ্টির দাপট মহিলাকে ক্লান্ত শ্রান্ত করছে। হঠাৎ প্রয়োজনে কাউকে মহিলা ডাকেন নি বা তেমন কেউ নাই তার। গাড়ীতে বসা দু’জনের খুব ইচ্ছে হচ্ছিল নেমে গিয়ে মহিলাকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে কিন্তু করোনার নিয়ম ভঙ্গের ভয়ে তারা এগোতে সাহস পেলেন না। তারা ব্যথিত মনে সওদাপাতির বোঝা হাতে ঝর ঝর বৃষ্টির মাঝে মহিলাকে পায়ে চলা নির্জন রাস্তায় একা রেখে নীরবে ফিরে আসলেন। এই হচ্ছে করোনা কালের বাস্তবতা।





দিলরুবা শাহানা, মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া




Share on Facebook               Home Page             Published on: 16-Apr-2020

Coming Events:



A day full of activities, games and fun.







Lakemba Blacktown Mascot
Minto Money raised so far





Lakemba Blacktown Mascot
Minto Money raised so far



Blacktown Lakemba Mascot
Minto Money raised so far







Blacktown Lakemba Mascot
Minto Money raised so far