চেখে দেখ সয়ে যাবে, না চাখ্লে বয়ে যাবে (৩) ডালিয়া নিলুফার
আগের পর্ব পরের পর্ব
মানুষের রাগের কথা কি বলব। বেসামাল রাগে তাদের যে কি অবস্থা হয়! তখন না থাকে মেজাজের ঠিক, না মুখের। আরও যেটা আশ্চর্যের কথা, রাগের সময় তারা কেন জানি কথার মধ্যে এক অক্ষরের জায়গায় দুই অক্ষর বসায়। দরকার আছে কি নেই কেজানে, তবু দেখি তাদের দুই অক্ষরই লাগে। যেমন, সোজা কথা বললেই পারে- ‘বেটে’। তা না। রাগ উঠলেই বলবে ‘বাইট্টা’। আর কালো হলে তো ‘কাইল্লা’ ছাড়া বলবেই না কিছু। ঐরকমই, কথাটা ছিল ‘পাকা-সেয়ানা’। যেইনা রাগ উঠল অমনি বলে বসল- ‘পাক্কা-সেয়ানা’। যেন ক এর উপর ক বসিয়ে-‘পাক্কা’ না বললে বোঝাই যেতনা কি জাতের সেয়ানা।
সম্পর্ক ভালো হলে তো কথাই নাই। আর যদি সম্পর্ক খারাপ হয় তাহলে ঐ যে, একজন আরেকজনের ‘দুই চোক্ষের বিষ’ ছাড়া কিচ্ছুনা। কি বলব- পুঁতে ফেলা যা, ‘পুইত্তা ফেলা’ও তাই। তারপরেও কিসের কি, রাগের সময় তারা পুইত্তাই ফেলতে চায়। শুধু তাই না। রাগলে তারা যাইত্তা ধরে, গাইত্থা ফেলে। কত কি!! এমন, যেন দুই ত দিয়ে বললে কাজটা খুব মজবুত হবে। শুনে হাসি। অবশ্য এইভাবে না বললে কথাগুলো যেন রাগের কথা বলে মনেই হয়না।
দেখি মেজাজ ঠিক থাকলে কথার মধ্যে বনেদিপনা রেখেই বলে ‘সাহস বটে!’ আর ক্ষেপে গেলেই গলা চড়িয়ে বলতে শোনা যায়- “এত্ত বড় সাহস!” কি বলব, মাঝেমাঝে তাদের রাগ এমন চরমে ওঠে যে, তখন তারা একজন আরেকজনকে সোজা কবরে পাঠিয়ে দিতে চায়। আর দাঁতে দাঁত চেপে বলেও সাংঘাতিক কথা- “কব্বরে দিমু!”। শুনে হা করে মুখের দিকে তাকিয়ে থাকি। বলে কি! তখন সত্যি কথা, মানুষকে শুধু পাথর না ‘পাত্থর’ মনে হয়।
আগের পর্ব পরের পর্ব
ডালিয়া নিলুফার, ঢাকা থেকে
|