পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়িদের গ্রামে অগ্নিসংযোগে জুম্মা এসোসিয়েশন অস্ট্রেলিয়ার প্রতিবাদ
অভিলাষ ত্রিপুরাঃ রাঙ্গামাটি জেলার লংগদুতে তিনটি গ্রামের ২৪০টি পাহাড়িদের ঘরে অগ্নিসংযোগ ও সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনার প্রতিবাদে আজ Australian Parliament House এর সম্মুখে এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
Chittagong Hill Tracts Indigenous Jumma Association Australia এর উদ্যোগে আয়োজিত এই সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন Australian সিনেটর, মানবাধিকার কর্মী, সংস্কৃতি কর্মী, লেখক, সাংবাদিক সহ প্রায় ৭০ জন বিভিন্ন পেশাজীবী প্রবাসী বাংলাদেশী।
প্রবাসীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কবিতা চাকমা, অভিলাষ ত্রিপুরা, কাজল বড়ুয়া, গসিরাম রেমা, কুলুত্তম চাকমা, তনু মুরং, বিনোতা ধামাই, বিশ্বজিত, সানু মারমা, সুফিয়া হিল, অজয় চাকমা, পুলক রেমা প্রমুখ। বক্তারা লংগদু ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেন ও মুক্তিযুদ্ধের মূল নীতি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার জন্য দেশের পাহাড়ি আদিবাসীসহ সকল মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের কাছে দাবি জানান। তারা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ও প্রশাসনসহ যারাই এ ঘটনার পিছনে জড়িত তাদের শাস্তি দাবি, ক্ষতিগ্রস্তদের পূর্ণাঙ্গ ক্ষতিপূরণ ও পার্বত্য শান্তি চুক্তির বাস্তবায়ন দাবি করেন।
Bangladesh Australia Architect Association, Australian Garo Society, Asia Indigenous Peoples Pact, Bangladesh Environment Network থেকে একাত্মতা প্রকাশ করে বক্তব্য দেয়া হয়। ক্যানবেরার বৃহত্তর বাংলা ভাষাভাষীদের মধ্যে সংহতি জানিয়ে উপস্থিত ছিলেন কবি শাহাদাত মানিক, অজয় কর, নিউটন মৌহরী, ওয়ালিজা ফারহানা, সৌরভ আচার্য প্রমুখ।
আদিবাসীদের উপর জাতিগত নিপীড়ন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিবাদে সংহতি জানাতে উপস্থিত হন বিখ্যাত পরিবেশ ও সামাজিক ন্যায়বিচার বিষয়ক কর্মী ও Australian Greens এর Senator Lee Rhiannon, পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন ও পানি সম্পদ বিষয়ক ছায়া প্রতিমন্ত্রী ও Australian Labour Party Senator Lisa Singh. সিনেটর রিয়ানন ও সিনেটর সিং পার্বত্য চট্টগ্রামে এই চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং বাংলাদেশ সরকারকে এর পূর্ণ তদন্ত করার অনুরোধ জানান। পাশাপাশি ২০ বছরের পুরনো পার্বত্য শান্তি চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের জন্য আহবান ও আদিবাসীদের উপর চলমান সকল বৈষম্য দূর করতে বাংলাদেশ সরকারকে আহবান জানান। সিনেটর রিয়ানন বাংলাদেশের আদিবাসীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অস্ট্রেলিয়া সহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এগিয়ে আসার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন ও এ নিয়ে Australian Parliament এ আলোচনা আনবেন বলে ঘোষণা করেন।
পরিশেষে বাংলাদেশের প্রধান মন্ত্রীর কাছে লিখিত এবং ১০৭ জন বাংলাদেশ ও Australian নাগরিকের সাক্ষরিত একটি স্মারকলিপি বাংলাদেশ হাই কমিশনের মাধ্যমে হস্তান্তর করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ২ জুন ২০১৭, মোটর সাইকেল চালক নুরুল ইসলামের হত্যার বিষয়ে লংগদুর তিনটি গ্রামে পাহাড়ি আদিবাসীদের বসতিতে সেটলাররা আগুন লাগিয়ে দুই শতাধিক বাড়ি ভস্মীভূত করে দেয়। হাজার খানেক আদিবাসী জীবন বাঁচাতে জংগলে পালালেও গুনেবালা চাকমা নামে একজন ৭০ বছরের বৃদ্ধা অগ্নিসংযোগের সময় মারা যান। নিরাপত্তা-হীনতা ও গৃহ-হীনতার কারণে তারা এখনও খোলা আকাশের নিচেই বাস করছেন বলে বক্তারা অভিযোগ করেন।
অভিলাষ ত্রিপুরা, ক্যানবেরা
Share on Facebook               Home Page             Published on: 15-Jun-2017