bangla-sydney
bangla-sydney.com
News and views of Bangladeshi community in Australia














জীবন থেকে জীবনে / নওরোজ খালিদ বর্ণী



আগের অংশ


আমার জীবনের কিছু স্মৃতির কথা লিখলাম। যারা ধৈর্য নিয়ে পড়তে ভালবাসেন, তারা হয়ত পড়বেন।


....এর কিছুদিন পর শুভকে ওর হসপিটাল থেকে ছেড়ে দিল। এরপর আরও ৩ সপ্তাহ সপরিবারে হসপিটালের হোস্টেলে থাকলাম, শুভ ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠলো। প্রথমবারের মত হাসি খুশি অরূপা-অপলাকে সাথে নিয়ে আমরা বাসায় ফিরলাম। তবে এখন এসব কিছু ম্যাজিকের মত শোনালেও সবসময় এর সাথে কঠিন বাস্তবতা তো আছেই, যে কোন ট্রান্সপ্লান্টই শেষ কথা না তার চেয়েও বড় কথা মেনটেইন করে যাওয়া। এখনো অরূপাকে নিয়ে হসপিটালে যাই, কিন্তু ওকে বাঁচানোর আশঙ্কা নিয়ে না, ওকে ভাল রাখার জন্য। শুভ আর অরূপা দুজনেই আল্লাহর রহমতে ভাল আছে। এসব বিষয়ে আগে অনেক ভুল ধারনা ছিলো, এখন কিছুটা পরিষ্কার আইডিয়া হয়েছে।

এখন আমাদের ১০ বছরের অরূপা নিজেই নিজের স্বাস্থ্য সম্পর্কে এত সচেতন যে, কোন খাবারে কি গুন আছে তা আমার চেয়ে ও ভালো জানে। ওর কোন ঔষধ ভুল করলে ফার্মাসিস্টকে পর্যন্ত ভুল ধরিয়ে দিয়ে ওদের লজ্জায় ফেলে দেয়। জীবনের প্রথম ২ বছর কথা না বললেও পাবলিক স্পিকিং এ ক্লাস উইনার হয়, নিজের ইউটিউব চ্যানেলে অনেক বক বক করে, দৌড়ে সবার আগে থাকে, পিয়ানো বাজায়, ভালো সাতার কাটতে পারে, স্কুল থেকে ক্রিকেট খেলতে যায়, নামাজ পড়তে পারে, দাবা খেলায় শুভকে চিন্তায় ফেলে দেয়, কখনো আবার হারিয়েও দেয়! এদেশে বাচ্চারা খুব একটা বাঙলা চর্চার সুযোগ না পেলেও স্কুলের পড়ার পাশাপাশি বাংলাটা লিখতে পড়তে শিখছে। আরো কত কি, ওর বয়সী একটা বাচ্চার যা করা উচিত ও সবই করে আল্লাহর রহমতে। অথচ ওর জীবনের শুরুটা যেন থেমে ছিলো। মনে মনে বলি আল্লাহ যেন সব সময় সহায় থাকেন।

জানি আমার লেখাটা পড়লে অনেকেরই নিজেদের জীবনের অনেক কঠিন সময়ের কথা মনে পরবে। অনেক বাবা-মা আছেন যারা আমাদের চাইতেও অনেক কঠিন পরিস্থিতি পার করেছেন, বা এখনো করে যাচ্ছেন। আল্লাহ যেন সবাইকে শক্তি দেন সব কিছু সামলে নেবার। হসপিটালে থাকার সময় আরও অনেক বাচ্চাকে কিডনির জন্য কষ্ট পেতে দেখেছি তখন মনে হয়েছিল শুভর মত আমার একটা কিডনি দিয়ে তো ঔ বাচ্চাগুলার কাউকে হয়তো সাহায্য করতে পারি। একদিন আমার কাউন্সিলার কে আমার ইচ্ছার কথা বললাম, ও আমাকে মানসিক ভাবে সুস্থ থাকতে সাহায্য করতো, ও আমাকে বকাবকি শুরু করলো বলল- “তোমার জীবনে যা ঘটছে তা কি কম? তোমার এখন এসব ভাবতে হবে না, বাসায় যাও- নিজের যত্ন নাও, সুস্থ থাক, পরিবারকে সুস্থ রাখ এখন এটাই বেশী জরুরী।“ ওর কথা শুনে বাসায় চলে আসলাম ঠিকই কিন্তু মন থেকে শান্তি পেলাম না, মনে হলো বেঁচে থাকতে না হলেও মৃত্যুর পর তো দিতেই পারি। শুভকে আমার ইচ্ছার কথা জানালাম। ও প্রশংসা করল। তারপর শুভর সাথে পরামর্শ করেই পরে কথা বললাম অস্ট্রেলিয়ান অর্গান ডোনার রেজিস্টার অর্গানাইজেশনে সাথে। রেজিস্ট্রেশন করলাম আমার চোখ, হার্ট, হার্ট ভাল্বস্, কিডনি, লিভার, লাংস, পেনক্রিয়াস, স্কিন-টিস্যু, বোন-টিস্যু ডোনেট করার জন্য, যা ট্রান্সপ্লান্ট ছাড়াও রিসার্চের জন্য কাজে লাগানো যাবে। শরীরটা ডোনেট করি নাই, আমার পরিবারের জন্য রেখে দিয়েছি। তারপর থেকে অনেক শান্তি পাই মনে, নিজেকে ভাল রাখার মধ্যে অনেক ভাল লাগা খুঁজে পাই। মজার কথা হলো ঐ সময় আমার অফিসের বস উনসত্তর বছরের যুবক আমার হার্টটা বুকিং দিয়ে রেখেছে, ওর বয়স এখন সাতাশি, এখনো মাঝে মাঝে ও ফোন দিয়ে খোঁজ নেয় যে আমার হার্ট ঠিক ঠাক আছে কি না, আর এই ঠিক ঠাক রাখার গুরু দায়িত্বটা বর্তেছে শুভর উপর। যাই হোক আসলেই কাজটা করার আগে বোঝা যায় না যে কত আনন্দ হয়। মনটা কত হালকা হয়ে যায়।

এ বিষয়ে একদিন কথা হচ্ছিল হঠাৎ অরূপা আমাকে জিজ্ঞেস করলো- “আচ্ছা মা তোমার হার্ট তো একটা তাহলে কেমন করে তুমি ডোনেট করবা? আর চোখ ডোনেট করলে দেখবা কেমন করে? তুমি কি একটা চোখ নিজের জন্য রাখবা আর একটা অন্য কাউকে দিয়ে দিবা? যেমন বাবা আমাকে একটা কিডনি দিয়েছে?” আমি কিছু বলে ওঠার আগেই আবার জিজ্ঞেস করলো - “মা আমার কিডনিটা তো বাবার তাহলে কেমন করে আমি ডোনেট করতে পারবো? আমার কি বাবার পারমিশন নিতে হবে?” আমি অবাক হয়ে ওর দিকে শুধু তাকিয়ে থাকলাম, কারণ আমি এভাবে কোনদিন ভাবিনি। ভেবে পেলাম না যে ওর ছোট্ট মাথায় কিভাবে এমন প্রশ্ন আসলো আর ও কতটুকুইবা ও বোঝে! বুঝলাম যে ও ভাবছে যে ওর বাবা ওকে কিডনি দিয়েছে তাতে তো বাবার কোন সমস্যা হচ্ছে না কিন্তু মা চোখ ডোনেট করলে দেখবে কিভাবে? এই বিষয়টার সাথে যেহেতু মৃত্যু জড়িত তাই এখন ওকে খুব বেশি বুঝিয়ে বলতে পারলাম না, শুধু বললাম কিছু অর্গান বেঁচে থাকতে দেয়া যায়, আর কিছু দেয়া যায় মৃত্যুর পর। তোমার বয়স যখন ১৮ হবে তখন তুমি নিজেই অনেক কিছু জেনে নিতে পারবে আর সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।

ঐ সময় হসপিটালে একটা বাঙালী বাচ্চার বাবা-মা কে দেখেছিলাম। মা ভয়ে ম্যাচিং এর জন্য টেস্টই করেনি আর বাবার সাথে বাচ্চার কিডনি মিললেও ভয়ে দেয়নি। আমার মনে আছে অরূপাকে একবার রক্ত দিতে হয়েছিল। ঐ বাচ্চার মা খুব সমবেদনার সুরে উপদেশ দিয়ে অরূপার রক্তের ব্যাগের দিকে তাকিয়ে বলেছিলো “ইস্‌স্‌ কার না কার যে রক্ত! যাই করেন ভাবী বাচ্চাকে হালাল খাবার খাওয়াইয়েন।“ আমি একদম বুঝতে পারছিলাম না যে রক্ত দেবার সাথে হালাল খাওয়ার প্রসঙ্গ আসছে কেন? এখানে যে খাবারগুলা হালাল বলে পাওয়া যায় সেটাই তো আমরা খাই। পরে অবশ্য বুঝেছি, যে রক্ত অরূপাকে দিতে হয়েছিল উনি তার কথা বলেছিলেন। পরে অবশ্য ঐ ভদ্র মহিলার বাচ্চার কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট হয়েছে, অবশ্যই কোন অজ্ঞাতনামা মানুষের দান, কারণ উনারা যেহেতু বাচ্চাকে দেয়ার কথা ভাবতে পারেন নাই। আমি যতটুকু জানি অস্ট্রেলিয়ায় ডোনারের কোন পরিচয় পাওয়া যায় না। জানি না উনারা দৈবক্রমে জেনে নিয়েছেন কি না, যেই মানুষটার কিডনি দিয়ে তাদের বাচ্চার জীবন বাঁচানো হয়েছে তাঁর ধর্মটা কি ছিলো, হালাল খাবার খেতো কিনা!

ঐ সময় আমার অবস্থা দেখে অনেকেই তাদের মনের মত করে আমাকে অনেক উপদেশ দিয়েছে। কেউ বলেছে- “সারা দিন রাত জায়নামাজে বসে থাকবা”, কেউ বলেছে- “খেয়াল রাখবা কক্ষনো যেন তোমার ওজু না ভাঙ্গে”, কেউ বলেছে- “কাফেরের দেশে থাকো বাচ্চাকে অন্য ধর্মের কু প্রভাব থেকে আগলে রেখো, তাহলেই তোমার দোয়া কবুল হবে। তুমি মা তোমাকেই তো এসব ভাবতে হবে”। কেউ আবার বলেই দিয়েছেন, আমাকে এই বিপদের সময় উপদেশ দিলে তাদের নেকী অর্জন হবে। ঐ সময় উপদেশগুলো আমার ভালোর জন্য হলেও, এরকম উপদেশগুলো আমার বাস্তব জীবনে মেনে চলতে পারিনি। চোখ বন্ধ করে উনারা এমন উপদেশ দিয়েছেন কিনা বুঝতে পারিনি। কারণ আমাকে সারা দিন দৌড়ের উপর থাকতে হয়, সর্বক্ষণ জায়নামাজে বসে থাকলে কেমন করে জীবন চলবে! সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন তো থাকি কিন্তু অরূপার রিফ্লাক্স ছিল, সারাক্ষণ বমি করতো, সারা রাত আমি নাহয় শুভ ওকে সোজা করে কলে নিয়ে বসে থাকতাম। প্রত্যেক বার অরূপার ন্যাপি বদলানোর পর ওজন করে লিখে রাখতে হতো। প্রায় দিনই সময়ের অভাবে সব কাজ শেষে গোসল করতাম অনেক রাতে, এসব কি আর বলে শেষ করা যায়! সাথে অপলা তো ছিলই। কি করে সর্বক্ষণ অজু রাখব! অরূপাকে সুস্থ করে তুলতে ডাক্তার সহ যাদের সাহায্য নিচ্ছি মোটামুটি সবাই অন্য ধর্মের কেমন করে তাদের প্রভাব কে কু প্রভাব মনে করব! খুব অস্থির লাগতো এসব ব্যাপার গুলাতে। আমার একজন চাচা অনেক পরহেজগার, উনার সাথে কথা বললাম, উনি বললেন- “আল্লাহ্‌ কে তুমি যে কোন পরিস্থিতিতে যে কোন ভাবে ডাকতে পার, অন্তর থেকে মনে মনে সব সময় আল্লাহ্‌কে ডাকো, ঠিক আল্লাহ্‌ সাহায্য করবেন, আর তুমিও মনে শান্তি পাবা। বাহ্যিক আয়োজনের চাইতে তোমার অন্তরের বিশুদ্ধতা আর বিশ্বাসই বেশী জরুরী। আল্লাহ্‌ কোন অবস্থায় কার দোয়া কবুল করবেন তা কেউ বলতে পারে না”। চাচার কথাগুলো শুনে মনের অস্থিরতা কমে গেল। চাচা এখন আর নেই কিন্তু উনার কথাগুলা সারা জীবন মেনে চলবো। আর এক জন খালাম্মা আমাকে সাহস দিয়ে বলেছিলেন- “তুমি তোমার সংসার বাচ্চাদের জন্য যেভাবে যা করছ, মনে রেখো এটাই তোমার সব থেকে বড় ইবাদত, আল্লাহ্‌র উপর ভরসা রাখো, মন দিয়ে তাঁকে ডাকো সব ঠিক হয়ে যাবে”। এখনো খালাম্মার কথাগুলা মনে পড়লে মনে অনেক সাহস পাই।

আমি যখন আমার অর্গান ডোনেট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, তখন অনেকে অনেক রকম কথা বলেছে। আমাকে একজন দায়িত্বের সাথে বলেছিলেন যে, “অর্গান ডোনেট করা উচিৎ না কারণ আল্লাহ তো চাইলে দিতেই পারতেন, আমাকে দিতে হবে কেন?” আমার আর তার সাথে কোন কথা বলতে ইচ্ছে করেনি তখন, কিন্তু পরবর্তীতে এই কৌতূহলী মনে একটা প্রশ্ন জেগেছিল যে অসুখ হলে তিনি কি ডাক্তারের কাছে যান? নাকি আল্লাহ অসুখ দিয়েছেন আল্লাহ ই অসুখ সারিয়ে দিবেন বলে বসে থাকেন? নাকি ডাক্তারের ধর্ম বিচার করতে বসেন! আল্লাহ না করুক কখনো যদি তার বা তার পরিবারের কারও কোন অর্গান দরকার হয় যা ছাড়া মৃত্যু অনিবার্য তখন কি করবেন? এসব কথা অন্যকে মুখে বলা যত সহজ নিজের জীবনে বাস্তবায়ন তত সহজ না।

সম্প্রতি আমাদের খুব কাছের, অনেক শ্রদ্ধার, অনেক ভালবাসার বড় ভাই, আমাদের অভিভাবক, সিডনীর বাংলা সংস্কৃতি প্রচার-প্রসারের অন্যতম সফল সংগঠক নাজমুল আহসান খান এর হার্ট ট্রান্সপ্লান্ট হতে দেখলাম। উনার হার্ট মাত্র ১৭% কাজ করছিল আর বাকীটা ছিল উনার মনের জোর। কিন্তু বাস্তব বড় কঠিন। মনকে কি আর বেশীক্ষণ সান্ত্বনা দেওয়া যায়? সারাক্ষণ ওনার স্ত্রী সন্ধ্যা ভাবী আশঙ্কার ভিতরে থাকতেন, রাতের পর রাত না ঘুমিয়ে কাটাতেন। হার্ট ট্রান্সপ্লান্ট এর আগে নাজমুল ভাই কে একটা ব্যাটারি পরিচালিত যন্ত্রের উপর নির্ভর করে চলতে হচ্ছিল। ভাবী তাই মাঝেমাঝেই বলতেন “ব্যাটারির চার্জ দিতে ভোলা চলবে না, চার্জ শেষ হলেই তো জীবন শেষ।“ ভাবতেও অবাক লাগে অবশেষে অচেনা অজানা একজন মানুষ, যে জীবিত থাকতে নিঃস্বার্থ ভাবে তার হার্ট ডোনেট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আর তার মৃত্যুর পর তা নাজমুল ভাইয়ের সাথে মিলেছে বলে আজ আমরা উনার দীর্ঘ জীবন কামনা করতে পারছি। এ যে কত বড় পাওয়া যাদের জীবনে এই কঠিন সময় পার করতে হয় তারাই বোঝেন। ঐ সময় প্রয়োজনীয় অরগান পাওয়া আর প্রিয় মানুষকে বাঁচানো ছাড়া আর কোন চিন্তা মাথায় আসা সম্ভব কি? এরপর জেনেছি নাজমুল ভাইও তাঁর মেজর অর্গান গুলো ডোনেট করেছেন।

আজ থেকে ৮ বছর আগে আমি যখন আমার অর্গান ডোনেট করার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছিলাম, তখন কাজটা করেছিলাম শুধুমাত্র একজন মা হিসাবে, এই বিষয়টা নিয়ে তখন আর তেমন কারো সাথে সেভাবে আলাপ করিনি কারণ তখন মনে হয়েছিল এটা একান্তই আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার। এছাড়া এসব বিষয় নিয়ে আমরা ভাবতে পারি না বা চাই না। আর সত্যি বলতে কি, আমাদের বাঙালি মুসলিম সমাজের মানুষ অনেক সময় না জানার কারণে ভয় পায় বা ভুল বোঝে। অথচ অর্গান ডোনেশনের ব্যাপারটা তো সবাই জানে, সব দেশেই অরগান ডোনেশনের ব্যবস্থা আছে।

আমার জীবনের এই কথাগুলো এভাবে কখনো জানাতে চাইনি, কিন্তু এখন এত দিন পর নাজমুল ভাই এর দ্বিতীয় জীবনকে এতো কাছ দেখে মনে হচ্ছে, শুধু মা হিসাবেই না একজন মানুষ হিসাবেও আমার একটা দায়িত্ব আছে। নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে এটুকু অনুরোধ তো করতেই পারি যে, যারা এখনো অর্গান ডোনেট করেননি তারা যদি বিষয়টা একবার ভেবে দেখেন। আর যারা ইতিমধ্যে করেছেন তারা একটু খেয়াল করবেন তা সঠিক পদ্ধতিতে হয়েছে কি না, কারণ আমি একটা কার্ড পেয়েছি, কিন্তু শুনেছি অনেকেই কোন কার্ড পাননি। অনেকের মনে হতে পারে এরকম একটা সিদ্ধান্ত নিতে মনে হয় অনেক সাহস থাকা লাগে কিন্তু আমি বলতে পারি যে আমি কিন্তু মোটেও অতটা সাহসী মানুষ না, আসলে যেটা লাগে সেটা শুধু একটু মানসিক ইচ্ছা।

কোন মৃত্যুই কাঙ্ক্ষিত না, কিন্তু কোন অবস্থাতেই মৃত্যুকে এড়িয়ে যাওয়াও সম্ভব না, মৃত্যু জীবনেরই শেষ অংশ, তার মেয়াদ আমাদের কারোর জানা নাই। একটু গভীর ভাবে ভাবলে এটাই মনে হয় যে আমরা আমাদের শরীরের মধ্যে অমূল্য সম্পদ নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি। বেঁচে থাকতে যেগুলো ছাড়া আমাদের এক মুহূর্ত চলে না অথচ সেই সম্পদগুলোই আমাদের মৃত্যুর পর আর কোন কাজেই লাগে না, সব নষ্ট হয়ে যায় মাটির সাথে মিশে যায়, কারো হয়ত পুড়ে ছাই হয়ে যায়। তাই মনের ভয় সংশয় দূরে ঠেলে আমাদের সেই এক একটা অর্গান যদি আমরা জীবিত থাকতে ডোনেট করার সিদ্ধান্ত নেই, তাহলে আমরা এই সুন্দর পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলেও আমাদের অর্গান নিয়ে বেঁচে থাকবে আরও কিছু মানুষ, আরও কিছু প্রিয়জন। একথা ভাবলে বেঁচে থাকতে এই অনুভবটা পাওয়া সম্ভব যে মৃত্যু মানেই সব শেষ হয়ে যাওয়া না। প্রিয়জনের মনে যেভাবে বেঁচে থাকা যায়, প্রয়োজনে অন্য কারো শরীরেও বেঁচে থাকা যায়।

৩০/১২/২০১৯


আগের অংশ



নওরোজ খালিদ বর্ণী, সিডনি, অস্ট্রেলিয়া




Share on Facebook               Home Page             Published on: 21-Feb-2020

Coming Events:





Lakemba Blacktown Mascot
Minto Money raised so far





Lakemba Blacktown Mascot
Minto Money raised so far



Blacktown Lakemba Mascot
Minto Money raised so far







Blacktown Lakemba Mascot
Minto Money raised so far